তাপ প্রবাহের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে নদীর শীতল পানিতে গা ভেজানোর অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ15 days ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত কিছুদিন ধরে পুরো দেশ তীব্র রোদের তাপে যেন পুড়ে যাচ্ছিলো। দেশের প্রত্যেকটা মানুষের মনে একই চিন্তা কাজ করছিলো যে কখন বৃষ্টি নামবে। সবাই যে কোনোভাবেই হোক এই তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে চাইছিলো। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ এলাকা গত বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি শুন্য রয়েছে। যার ফলে মানুষের হাহাকার বেড়েই চলেছে। এই প্রচন্ড গরমের ভেতর আমি চেষ্টা করছি সব সময় বাড়িতেই থাকার। বাড়ির এসি রুমের ভেতর থেকে বের হলেই মনে হয় যেন আগুনের ভিতরে ঝাপ দিলাম। তাই গত বেশ কিছুদিন থেকে চিন্তা করছিলাম বন্ধু ফেরদৌস ফরিদপুরে থাকলে এখন নদীর ভিতরে গা ডুবিয়ে বসে থাকা যেতো। প্রচন্ড গরমের ভেতরে নদীর ঠান্ডা পানির ভেতরে গা ভেজানোর মজায় আলাদা।

IMG_20240501_142017.jpg

এই চিন্তা করছিলাম আর ফেরদৌসের ফরিদপুরে আসার দিন গুনছিলাম। শেষ পর্যন্ত ফেরদৌস কিছুদিন আগে আমাকে জানালো ৩০শে এপ্রিল সে ফরিদপুর আসবে। শুনে আমি তখন থেকেই পরিকল্পনা করতে লাগলাম যে ফেরদৌস যেদিন ফরিদপুর আসবে। তারপর দিন আমরা দুই বন্ধু মিলে পদ্মায় গোসল করতে যাবো। শেষ পর্যন্ত গতকাল ফেরদৌস ফরিদপুর আসার পরে ওকে ফোন দিয়ে আজকের পরিকল্পনার কথা জানালাম। নদীতে গোসল করার কথা শুনে ফেরদৌস রাজি হয়ে গেলো। তখন চিন্তা করলাম দুই বন্ধু থেকে তিনজন হলে ভালো হয়। তখন বন্ধু রাফসান কেও ফোন দিলাম। এই প্রচন্ড গরমের ভেতরে রাফসান ও আমাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলো।


IMG_20240501_142033.jpg

তিনজনে মিলে ঠিক করলাম বেলা বারোটার দিকে তিনজন এক জায়গায় দেখা করবো। তারপর সেখান থেকে আমরা পদ্মা নদীর উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। যাইহোক যথা সময়ে আমি নির্ধারিত স্থানে পৌঁছলাম। সেখানে পৌঁছে ফেরদৌস কে ফোন দিতেই ফেরদৌস সেখানে হাজির হয়ে গেলো। তারপর যখন বন্ধু রাফসানকে ফোন দিলাম তখন সে জানালো সে এখন রওনা দিবে। তখন রাফসান আমাদের প্রস্তাব দিলো নদীর পাড়ে চলে যাওয়ার জন্য। সে সরাসরি ওখানে আসবে। রাফসানের সাথে কথা বলে আমি আর ফেরদৌস টুকিটাকি কিছু কেনাকাটা করে রওনা দিলাম পদ্মা নদীর উদ্দেশ্যে। পদ্মার পাড়ে পৌঁছে আমার আর পানিতে নামতে তর সইছিলো না। কিন্তুু তখনও বন্ধু রাফসান সেখানে এসে পৌঁছায়নি। সেই কারণে আমি রাফসানকে ফোন দিয়ে লোকেশন টা ভালোমতো বলে দিলাম। তারপর আমি আর ফেরদৌস কাপড়চোপড় পাল্টে নেমে গেলাম পদ্মার শীতল পানিতে। এই প্রচন্ড গরমের ভেতরে পদ্মার পানিতে নামতেই মনে এক অন্যরকম প্রশান্তি চলে এলো। মনে হচ্ছিলো সারাদিন এখানেই থেকে যায়।


IMG_20240501_142030.jpg

খেয়াল করে দেখলাম আমাদের আশেপাশে আরো বেশ কিছু ছেলেপেলে গোসল করছিলো। আমি আর ফেরদৌসের দুই বন্ধু নদীর পানিতে গা ডুবিয়ে বসে বসে গল্প করছিলাম। এর ভেতরে খেয়াল করে দেখলাম অনেক দূরে বন্ধু রাফসানকে দেখা যাচ্ছে। আমরা হাত ইশারায় রাফসানকে আমাদের অবস্থান বোঝানোর চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু রাফসান আমাদেরকে দেখতে পেলো না। পরে ফেরদৌস যেখানে মোটরসাইকেল রেখেছিলো রাফসানকে দেখলাম সেখানে এসে পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফোন করতে যাচ্ছে। তখন আমি বুঝতে পারলাম আমাদের দুজনের যে কোন একজনকে ফোন দেবে। তাই আমি তাড়াতাড়ি পানি থেকে উঠে গিয়ে আমার ফোন হাতে নিলাম। এর ভিতরে দেখতে পেলাম রাখছেন মোবাইল হাতে নিয়ে নদীর পাড়ের দিকে তাকাচ্ছে। তখন আমি হাত ইশারা করতেই রাফসান আমাকে দেখতে পেলো। রাফসান তখন দ্রুত সেখানে চলে এলো।


রাফসান আমাদের সাথে জয়েন করলে শুরু হলো তিন বন্ধুর আড্ডাবাজি। কিছুক্ষণ পর সেখানে আমাদের এক বড় ভাই তিনিও দেখলাম গোসল করতে এসেছেন। আমাদের সাথে আড্ডায় তিনিও যোগ দিলেন। এইভাবে চারজনে মিলে দীর্ঘক্ষণ ধরে আড্ডা দিতে লাগলাম। পানির ভেতরে মাঝে মাঝে একটু মাথাটা গরম হয়ে গেলে পানিতে ডুব দিচ্ছিলাম। সে এক অন্যরকম অনুভূতি। আমার তো সহজে সেখান থেকে উঠতেই ইচ্ছা করছিলো না। কিন্তু কিছুক্ষণ গোসল করার পর বন্ধুরা রাফসান বললো চল এখন উঠি। খেয়াল করে দেখলাম তখন অনেক বেজে গিয়েছে। এদিকে কিছুটা ক্ষুধাও লেগেছে। আমার পরিকল্পনা ছিলো গোসল করা হলে দুই বন্ধুকে সাথে নিয়ে কোন একটা রেস্টুরেন্টে খেতে যাবো। তাই আমিও রাফসানের কথাই সম্মতি দিয়ে পানি থেকে উঠে গেলাম। এভাবেই এবারের গোসল করার অভিজ্ঞতা শেষ হোলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 15 days ago 

ফেরদৌস ভাইয়া বাড়িতে এলে আপনার সময়টা বেশ দারুন কাটে ভাইয়া। তিন বন্ধু মিলে গোসল করতে গিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া।যেহেতু আরো একজন বড় ভাই আপনাদের সাথে যোগ দিয়েছিল তাই চারজনে মিলে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন বুঝতেই পারছি। নদীর জলে গোসল করার আনন্দ সত্যি অনেক বেশি। কত বছর যে নদীতে গোসল করা হয় না। ছোটবেলায় নদীতে অনেক গোসল করতাম। দাদু বাড়ির সাথে এক নদী আছে। নদীতে নেমে একেবারে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতাম।

 15 days ago 

তীব্র গরমে বাসা থেকে বের হতেই ভয় লাগে। জরুরী কোনো কাজ ছাড়া বাসা থেকে বের হই না বললেই চলে। তবে এই গরমে নদী বা সুইমিংপুলে গোসল করতে ভীষণ ভালো লাগবে। যাইহোক ফেরদৌস ভাই মনে হয় ১লা মে উপলক্ষে ছুটি পেয়েছে, আর সেজন্যই ফরিদপুরে গিয়েছে। পদ্মা নদীতে গিয়ে আপনারা বেশ মজা করে গোসল করেছেন দেখছি। এমন স্বচ্ছ এবং ঠান্ডা পানি থেকে তো এখন উঠতেই ইচ্ছে করবে না। আপনারা এককথায় দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছিলেন সেখানে। এই সময়গুলো আসলেই খুব স্পেশাল। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 14 days ago 

আপনারা তিন বন্ধুরগোসল করা দেখে তো ভাইয়া গ্রামে চলে যেতে ইচ্ছে করতেছে। কারণ গরমের দিনে আমরা এভাবেই পুকুরে ডুব দিয়ে বসে থাকতাম। উপরে বসে সবাই মিলে গল্প করতাম বিশেষ করে পুকুর ঘাটে। বেশ ভালোই করলেন এই গরমে এসি থেকে বের হলে বোঝা যায় প্রাকৃতিক পরিবেশ কেমন। বেশ ভালো লাগলো আপনারা তিন বন্ধুর আড্ডা দেখে। শেষমেষ আপনারা গোসল করে আবার রেস্টুরেন্টে গেলেন। পুরো মুহূর্তটি পড়ে অনেক আনন্দ পেয়েছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.13
JST 0.032
BTC 66101.68
ETH 3023.14
USDT 1.00
SBD 3.71