টাকা জমে,মানুষ কমে।ব্যস্ততা কমে,দূরত্ব বাড়ে। "।
প্রথমেই সবাইকে জানাই সালাম,আদাব। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আশা করছি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকলেই ভালো এবং সুস্থ আছি।
আজকে আমি হাজির হয়েছি একটি লিখা নিয়ে।
লিখতে ভালা লাগোটা আমার বহুদিন এর। কেও যদি জিজ্ঞেস করে তোমার লিখার কারণ কি?
তাহলে আমার একটাই উত্তর আসবে তা হলো জানিনা।
তাহলে আজকের লিখাটা শুরু করি।
আজকের লিখার বিষয় হলো " টাকা জমে,মানুষ কমে।ব্যস্ততা কমে,দূরত্ব বাড়ে। "।
কিছু ব্যাপার:-,
টাকা আমাদের যতো জমতে শুরু করে আমাদের জীবনে আপন মানুষগুলো ততই কমতে শুরু করে।
এবং
আমাদের জীবনের একটা সময়ে গিয়ে ব্যস্ততা যখন কমতে থাকে।
তখন দেখবেন আমাদের আপন মানুষ গুলোর সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
আমার কথাটা কি আপনাদের কাছে পরিষ্কার লাগছে?
নাকি একটু ধোঁয়াশা লাগছে?
- সেই কারণে আমি আমার এই মতামতের প্রেক্ষিতে আমার বক্তব্যটি আজকে আপনাদের সামনে রাখবো।
আপনারাই বিবেচনা করে দেখবেন আমি কি ঠিক বলছি নাকি ভুল।
হয়তো ঠিক ভুলের বিচার করতে গেলে আমার এবং আপনার মতামত ভিন্ন হতে পারে।
কারণ আমরা ভিন্ন মানুষ,
আমাদের চিন্তা-ভাবনা ভিন্ন,
আমাদের চিন্তাধারা ভিন্ন,
আমাদের পৃথিবী একই হলেও
আমাদের পৃথিবী কে দেখার এবং আমাদের মন ভিন্ন,সেই ক্ষেত্রে মতামত ভিন্ন।
মানে কোনো কথা ভুল হবে অর্থাৎ আমার কথা ভুল হবে কিংবা আপনার কথাগুলা ভুল হবে তা নাও হতে পারে।
কারণ আমাদের একজনের দেখা আর অন্যজনের দেখা সমান হয় না কখনোই।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হলেও সব সময় হয় না।
- আর্থিক অবস্থা:-,
টাকা জমা মানে আমি এখানে বুঝাতে চেয়েছি আমরা যখন স্কুল-কলেজের গণ্ডিটা তে থাকি।
তখন আমাদের কাছে সেই ভাবে টাকা থাকে না। অর্থাৎ,
আমাদের পরিবার যদি স্বাবলম্বী হয়। তাও আমাদের কাছে সেই ভাবে আর্থিক অবলম্বন কিংবা আর্থিক দিকটা আমাদের শক্ত হয় না।
কারণ আমাদের সব কাজই দেখাশোনা করেন আমাদের মাতা পিতা।
সেই হিসেবে আমাদের যা যা লাগে,
বা,
আমাদের প্রয়োজনীয় সব কিছুই আমাদের বাবা মায়েরা আমাদের দিয়ে থাকে।
সেই ক্ষেত্রে আসলে আমাদের সাথে কখনো সেভাবে টাকা-পয়সা থাকেনা।
যদি আরও সহজভাবে বলতে যাই তাহলে অবশ্যই সন্তানদেরকে বাবা-মা একটা সময় পর্যন্ত টাকা দেয় না।
এবং,
আমি মনে করি তাই ভালো।
কারণ বয়স এর আগে যদি সবকিছু পাওয়া যায়। তাহলে আসলে সব কিছু বুঝা যায় না
এবং
মানুষ ভালো পথে থেকে খারাপ পথে বেশি চলে যায়।
আরেকটি ব্যাপার:-
আরেকটি ব্যাপার হল আমরা দিনকে দিন বড় হই।
এবং
আমাদের এসব সমস্যা কমতে থাকে। কারণ আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি
এবং
বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়ে যায় এতে।
সে কারণে আমরা যখন স্বাবলম্বী হয়ে যায় তখন অবশ্যই আমাদের টাকাও জমতে থাকে আমি এই কথাটি বোঝাতে চেয়েছি।
আপনি একটা জিনিস খেয়াল করবেন।
আমাদের গণ্ডি যখন স্কুল-কলেজ কিংবা আমাদের বয়স যখন কম থাকে তখন আমাদের চারপাশে মানুষ অনেক বেশি থাকে।
অর্থাৎ,
আমাদের আপনজন অনেক বেশি থাকে।
কিন্তু দিন যত যেতে থাকে আমাদের আপন মানুষ তত কমতে থাকে।
- এটি আমাদের জীবন চক্রের মধ্যে পরে।
কারণ আমরা যত বড় হতে থাকি ততই আমাদের সাথে অন্যের মতের অমিল হতে থাকে।
এবং
সেইভাবেই আসলে আমাদের জীবনে মানুষ কমতে থাকে
এবং
যার যার জীবনে তার তার ব্যস্ততা তো থাকেই। সেই কারনেই, একটা সময়ে গিয়ে দেখা যায় আমাদের জীবনে মূলত মানুষ অনেক কমে গিয়েছে।
ব্যস্ততা:-
ব্যস্ততা কমে মানে একটা সময় আমরা যখন কর্ম ক্ষেত্রে থাকি। তখন আমাদের জীবনে অনেক বেশি ব্যস্ততা থাকে।
এতটাই ব্যস্ততা থাকে যে আমরা আমাদের আশেপাশের মানুষের খোঁজ খবর নিতে পারি না।
কিন্তু আস্তে আস্তে আমরা আসলে আর ব্যস্ত থাকি না। কারণ জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে আমাদের কাজকর্ম ফুরোয়।
অফিস থেকে রিটায়ার্ড নেওয়া হয়,
চাকরি বাকরি থেকে চলে আসা হয়।
সেই সময়টাতে দেখা যায় মানুষ ঘরে বসেই সারাদিন থাকছে কিংবা টুকটাক কাজ থাকলেও অতিরিক্ত যে ব্যস্ততা থাকে তা কি করেই কেমন যেন নিমিষেই শেষ হয়ে যায়।
যে ব্যস্ততার জন্য আমরা এক সময় মানুষের খোঁজখবর রাখতে পারতাম না।
সেই ব্যস্ততাই একটা সময় একেবারে নেই হয়ে যায়। একটা মানুষ তখনই হঠাৎ করে নিঃসঙ্গ হয়ে যায়।
- দূরত্ব কমানো মানে হলো আমি উপরে যেই কথাটা বললাম যে একটা মানুষের ব্যস্ততা একটা সময় অতিরিক্ত থাকে। সেই সময়টাতেই মূলত আমাদের জীবনের আপন মানুষ গুলোর সাথে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
যে দুরত্বটা আমরা শেষে এসে চাইলেও ঠিক করতে পারি না।
কারণ আমরা এমন সময়ে সেই বিষয়টি বোধ করি যে সময় মূলত আমাদের আর সময় থাকে না।
কিংবা,
আমাদের আর সুযোগ থাকে না সেই ব্যাপারটি শুধরানোর। সেই কারণেই আমাদের আসলে সময় থাকতে সবকিছু করা উচিত।
তা না হলে সব সময় আমাদের জীবনে এভাবে এই কাজগুলোই ঘটতে থাকবে।
অপর একটি বিষয় হল দূরত্ব,
- কখন কমে দূরত্ব?
তখনই যখন আমরা একজনের খোঁজ খবর আরেকজন কম নিতে থাকি
এবং
একজনের সাথে অন্যের মনের মিল কম হতে থাকে।
আমরা সকলেই স্বাধীনচেতা মানুষ।
কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে অন্যের মতামত নেওয়া এবং অন্যকে অসম্মান করা উচিত নয়।
এসব নানা বিষয়ে জর্জরিত হয়ে আমরা আসলে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে ফেলি।
এই টাকা জমে, মানুষ কম এই কথাটা এই সব কারণে বললাম।
আপনি একটা বিষয় চিন্তা করে দেখুন, যখন আমরা ধরুন স্কুলে পড়ি তখন কিন্তু আমাদের হাতে খুব একটা টাকা থাকতো না।
কিন্তু আমাদের ইচ্ছে করতো,
আমরা এখানে যাবো ওইখানে যাব,
এটা কিনে খাব সেটা কিনে খাব,
কিংবা এটা কিনব সেটা কিনব।
কিন্তু আসলে আমরা সেভাবে করতে পারতাম না।
কিংবা মন চাইলেই আমরা সেই কাজটা করতে পারতাম না।
সে কাজটা করতে না পারার একমাত্র কারণ ছিল মূলত এই আর্থিক সমস্যা।
সেসব এখন নেই কিন্তু একটা টাইমে দেখবেন আপনার টাকা হয়, খুব টাকা হয়।
আপনার যখন যেটা ইচ্ছা সেটাই কিনতে পারবেন। কিন্তু আপনার কাছে আপন মানুষগুলো থাকবে না। যে মানুষগুলোর সাথে আপনি এইভাবে করে জীবনটা যাপন করতে চেয়ে ছিলেন।
সেই মানুষ, বন্ধুবান্ধব গুলো আর থাকে না।
এটাই আমাদের সমাজের এবং আমাদের জীবনের নির্মম বাস্তবতা এবং আমরা সকলেই এটা দিনের-পর-দিন মেনে আসছি।
কারণ আর কোন কিছুই করার নেই কিছু বাস্তবতাকে সবসময় মেনে নিতেই হয়।
- ঠিক তেমনটাই,
যখন আমাদের ব্যস্ততার ধীরে ধীরে কমে যায়। তখন দেখা যায় আমাদের সকলের সাথে দূরত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে।
এমনভাবে দূরত্বটা বেড়েছে সেই দূরত্ব কমিয়ে এনে তাদেরকে আবার আপন করে নেওয়া সহজ হয় না। সহজ হয় না বললে হয়তো ভুল হবে, সম্ভব হয় না।
কারণ কিছু কিছু ব্যাপারে যখন আমরা একরকম হয়ে যাই। তখন সাথে সাথে নিজেকে বদলে আবার অন্য রকম রূপ ধারণ করা খুব কঠিন একটি কাজ।
তখন আমরা পাইনা।
আবার, যখন সবকিছু আমাদের থাকে,
তখন আবার আমরা সবকিছু আগের মত করতে চাইলেও মানুষগুলোকে আর এক করতে পারিনা।
এই কথাগুলোই হলো চিরন্তন বাস্তব।
হয়তো আপনার সাথে আমার মতের অমিল হতে পারে।
তবে আমি আশা করবো আপনি আপনার নিজের মতামত কমেন্টের মাধ্যমে আমার সাথে শেয়ার করবেন
এবং
আমি হয়তো নতুন কিছু জানতে এবং শুনতে পারব।
সকলকে জানাই আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।
নিজেদের মূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমার পাশে থাকবেন।
সত্যিই আপনার লেখাটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে দারুন একটি বিষয় নিয়ে আপনি লিখেছেন এবং আপনার সাথে আমি সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করছি।যখন মানুষের টাকার জমতে থাকে ঠিক তখনই আপনজনের সাথে দূরত্ব বেড়ে যায়।এটা আমি আমার জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছি।এত চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি♥♥
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আপনার লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত হলাম অনেক। আপনি সব সময় অসাধারণ ভাবে গুছিয়ে লিখেন। আপনার লেখার ধরণ সাহিত্যিকদের মতো। এভাবেই আপনার প্রতিভার বিকাশ ঘটুক।দোয়া রইলো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আপনার এই পোস্টটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। কারণ এটা সত্যি ।যার কাছে টাকা থাকে তার সকল মানুষে
কে সময় দেয় না। আপনার লেখা গুলো অনেক সুন্দর তা বাস্তব । আপনার লেখা পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ভালো লেগেছে শুনে আমার অনেক ভালো লেগেছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।