নিঝুম রাত ভুতের গল্প পর্ব:২

in আমার বাংলা ব্লগ24 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে নিঝুম রাত ভূতের গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি উপস্থাপন করছি।আশা করি, গল্পটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-mike-jones-9740518.jpg
সোর্স



পায়েলের মৃত্যুর কিছুদিন পর থেকে শুরু হয় গ্রামে নানান ঘটনা। লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে পায়েলকে তারা দেখেছে। এই ঘটনাটি পায়েলের পরিবার ও জানতে পারে কিন্তু তারা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না। তারা তাদের মেয়েরা সৎ কাজ নিয়মকানুন মেনেই করেছিল। তারা মনে মনে ভাবতে তাকে হয়তো গ্রামের মানুষ একটি গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। পায়েলের মৃত্যুর পর থেকে তার পরিবার পায়েলকে কখনোই দেখেনি। একদিন হঠাৎ গ্রামের এক যুবক শহর থেকে বাড়ি ফিরছিল। সে জানে না তার গ্রামের পায়েল মেয়েটি মারা গিয়েছে কারণ সে পড়াশোনার জন্য শহরে থাকে। তার পরিবার ও তাকে পায়েলের মৃত্যুর ব্যাপারে কোন কিছুই জানায়নি। ছেলেটির নাম অন্তর। অন্তর দুর্গা পূজার ছুটিতে সে বাড়িতে আসছিল। পরিবারকে জানায় সে বাড়িতে আসছে তখন তার পরিবার তাকে বলে সকাল সকাল বাড়িতে আসতে অন্তর বলে হ্যাঁ আমি সকাল সকাল বাড়িতে আসবো।


বিকাল হতেই অন্তর ম্যাচ থেকে বেরিয়ে পরে বাড়ির উদ্দেশ্যে। কিন্তু রাস্তায় সে যে গাড়িতে আসছিল সেই গাড়িটি হঠাৎ নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে সন্ধ্যা হতে শুরু করে আর অন্যদিকে অন্তরের পরিবার চিন্তা করতে থাকে কারণ তারা জানে রাত হলেই পায়েলের আত্মা বাইরে বের হবে। এ কারণে অন্তরের পরিবার তাকে ফোন দেয়। অন্তর তখন বলে গাড়িটি হঠাৎ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে তার একটু রাত হবে বাড়িতে আসতে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর গাড়িটি ঠিক হলো। গাড়ির যাত্রী সবাই যার যার সিটে বসে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হল। গাড়ির সব যাত্রী ওঠার পর গাড়িটি আবার চলতে শুরু করল প্রায় 25 মিনিট গাড়িটি চলার পর অন্তর তার স্ট্যান্ডে নেমে পড়ল। সেখান থেকে একটি টোটো করে এসে বটতলা পর্যন্ত এল। এরপরে সেই টোটোর মালিক তাকে বলল সে আর যাবে না। অন্তর বলে আপনি কেনো যাবেন না? আর তো কয়েক মিনিটের পথ আমাকে একটু আগায় দিয়ে আসেন। টোটোর মালিক অন্তরকে বলে সে আর যেতে পারবে না কারণ সামনে বিপদ হতে পারে। অন্তরে এই কথাটি শোনার পর তাকে সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞেস করে কিসের বিপদ? তখন সেই টোটোর মালিক বলে আপনি যেখানে যাওয়ার কথা বলছেন সেখানে আজকাল ভুতের উত্তাপ বেড়ে গিয়েছে। আর যেহেতু রাত হয়ে গিয়েছে আমারও আপনাকে পৌঁছে দিয়ে একা একা আসতে হবে যদি পথে কোন দুর্ঘটনা ঘটে তার জন্য আমি যেতে পারব না।


অন্তর এসব ভূত-পেত কিছুই বিশ্বাস করে না তাই হাসতে হাসতে বলল আচ্ছা ঠিক আছে ফিরে যান আমি এখান থেকে একাই যেতে পারবো। এরপর অন্তর ফোনের ফ্লাশ জ্বালিয়ে হাঁটতে শুরু করল। কিছুদূর যেতে হঠাৎ বিকট একটি শব্দ তার কানে এলো সে একটু চমকে গেল। সে কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করল কিন্তু কোথা থেকে এই শব্দটা এল কিন্তু সে কিছুই দেখতে পেল না। তাই সে আবারও হাঁটতে শুরু করলো। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তার খেয়াল হলো তার পিছন পিছন কে যেন আসছে। তাই সে হঠাৎ পিছনে তাকায় কিন্তু কিছুই দেখতে পায় না। পিছন থেকে সামনে তাকাতেই হঠাৎ দমকা বাতাস তার গায়ে এসে লাগে সে ছিটকে পড়ে যায়। কোথা থেকে একটি কাপড় তার মুখের উপর পড়ে। কিছুতেই সেই কাপড়টি সে মুখ থেকে সরাতে পারছিল না। তখন আবার একটি দমকা হাওয়া এসে সেই কাপড়টি অন্তরের মুখ থেকে কোথায় জানি উড়ে যায়। অন্তর একটু ঘাবড়ে যায় কারণ তার সাথে এই প্রথম এমন কিছু হচ্ছে। তখন তার মনে পড়ে সেই টোটো মালিকের কথা। উনি বলেছিল গ্রামে ভূতের উৎপাত হয়েছে। তার একটু ভয় ও করছিল কারণ সেদিন ছিল অমাবস্যার রাত। সে ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছে অমাবস্যা পূর্ণিমা রাতে এই আত্মাগুলো বের হয়ে থাকে। তারা মানুষকে ভয় দেখায়।


এইসব ভাবতে ভাবতে সে হাঁটতে শুরু করে আর প্রচন্ড ঘামতে শুরু করে সে বুঝতে পারে তার কপাল থেকে ঘাম ঝরছে। হঠাৎ সামনে দেখতে পায় কেউ যেন হাঁটছে। অন্তরের এই ব্যক্তিটিকে দেখতে পেরে মনের ভেতর শক্তি পায়। অন্তর সেই ব্যক্তিকে ডাক দেয় কিন্তু সেই ব্যক্তিটি কোন ডাকের সাড়া না দিয়ে শুধু হাঁটতেই থাকে। অন্তর দৌড়ে যে সেই ব্যক্তিকে থামতে বলে। অন্তরের ডাক শুনে ব্যক্তিটি দাঁড়িয়ে যায়। অন্তর কাছে যেতেই দেখে একটি মেয়ে। আর মেয়েটি আর কেউ নয় পায়েল। অন্তর পায়েলকে খুব ভালোভাবেই চীনে তাই সে একবার দেখাতেই পায়েলকে চিনতে পারে। তখন অন্তর বলে এত রাতে তুই কোথা থেকে আসছিস। পায়েল কোন কথা না বলে হাঁটতে শুরু করে। কিন্তু অন্তর জিজ্ঞেস করতে থাকে কি হল তুমি আমার কথায় উত্তর দিলি না যে। অন্তর যত কথা বলছিল পায়েল তত জোরে হাঁটছিল। হাঁটতে হাঁটতে পায়েলের বাড়ির সামনে আসলে বাড়ির গলিতে ঢুকে যায় পায়েল । আর অন্তর পায়েলকে বলে সকালে দেখা হবে। এই বলে অন্তর তার বাড়ির দিকে রওনা দেয়। পাঁচ মিনিট পর অন্তর বাড়িতে এসে পৌঁছায়। তার পরিবার তাকে জিজ্ঞাসা করে রাস্তায় কোন সমস্যা হয়নি তো। অন্তর বলে কোন সমস্যা হয়নি সে খুব ভালোভাবেই আসতে পেরেছে।

আজ এখানেই শেষ করছি। বাকি পর্ব খুব শীঘ্রই আপনাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করব।আশা করি, আপনাদের গল্পটি সবার ভালো লাগবে।সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 24 days ago 

খুব সুন্দর একটা ভূতের গল্প লিখে শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। গল্প পড়ে কখনো ভয় লাগে নি।তবে এটি পড়ে মোটামুটি শিহরণ লাগলো।খুব সুন্দর লিখেছেন।ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66650.28
ETH 3590.00
USDT 1.00
SBD 2.96