"মতুয়া সম্প্রদায়ের মিলন মেলা ও তার ফটোগ্রাফি"

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

হ্যালো বন্ধুরা

আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, আমার এই পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



মতুয়া বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে যারা হরি চাঁদ ঠাকুরের ভক্ত যারা হরি চাঁদ ঠাকুরের পথ অনুসারী তাদেরকে মতুয়া বলা হয়ে থাকে। মতুয়াদের মধ্যে মহান একজন ব্যক্তি ছিলেন তার নাম হচ্ছে অশ্বিনী গোসাই। তিনি ছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুরের পরম ভক্ত। ব্যক্তি হিসেবে সে ছিল অনেক গরীব তার এক চোখ অন্ধ ছিল সে সবসময় ঈশ্বরের আরাধনা করতো। সে এতটাই গরীব ছিল যে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে নিজের সংসার চালাতো। কিন্তু সে ঈশ্বরের আরাধনা কোনদিনই ছাড়তে পারেনি। সে হরিচাঁদ ঠাকুরের এতটাই পাগল ভক্ত ছিলো। ভিক্ষা করে যাই পেতো সব ঈশ্বরের পায় সমর্পণ করত। একদিন হঠাৎ হরিচাঁদ ঠাকুর তার সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে তাকে দেখা দিল। হরিচাঁদ ঠাকুর অশ্বিনীকে বলল অশ্বিনী আমি তোমার সেবায় সন্তুষ্ট। তুমি আমার কাছে কি চাও তুমি যা চাইবে আজ আমি তোমাকে তাই দিব। স্বয়ং ঈশ্বর তাকে দেখা দিয়েছে সে চাইলে অনেক কিছু চাইতে পারতো কিন্তু সে কি চেয়েছিল জানেন। সে যা চেয়েছিল আজ পর্যন্ত তা হয়তো কেহ ঈশ্বরের কাছে চায়নি আর তা কোনদিন পায়নি। সে চেয়েছিল হে ঠাকুর আমি যে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করি। কাল থেকে আমাকে যেন কেহ ভিক্ষা না দেয়। হরিচাঁদ ঠাকুর তাকে আশীর্বাদ করে অশ্বিনী তোমার খুব নাম কাম হবে সবাই তোমাকে চিনবে তোমার বাড়ি ভক্ত আসবে দলে দলে কিন্তু তোমার কোনদিন ভাতের অভাব হবেনা আমি তোমাকে আশীর্বাদ করছি।


অশ্বিনী গোসাইয়ের জীবন কাহিনী আমি বইতে পড়েছি কিন্তু বাস্তবে অশ্বিনী গোসাইয়ের মত একজন ব্যক্তি আমি দেখতে পেয়েছি তার নাম হলো নিরাপদ গোসাই আসলে তিনি আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী। উনার কাছে যে কোন সমস্যা নিয়ে গেলে তিনি চেষ্টা করেন সেগুলো সমাধান করতে। বাংলার ফাল্গুন মাসের ৯ তারিখে তার বাড়িতে মতুয়া সম্প্রদায়ের মিলন মেলা হয়ে থাকে সেখানে অনেক মানুষ এসে থাকে শুধু তাকে একবার চোখের দেখা দেখার জন্য। আমি প্রত্যেক বছর উনার বাড়িতে এই মহা মিলন মেলায় অংশগ্রহণ করে থাকি। খুব ভালো লাগে অনেক দূর থেকে নানান ধরনের মানুষের সমাগম এখানে ঘটে থাকে জাতি বর্ণ নির্বিশেষে এখানে যেন মহা মিলন হয়ে থাকে। তিন দিনের অনুষ্ঠানে তিন দিনই রাত দিন শঙ্খের ধনী, ঢোল,কাশী সব সময় বাঁচতেই থাকে।

IMG20240224060029.jpg

IMG20240222211033.jpg

IMG20240222211028.jpg
এখানে হাজার হাজার লোক এসে থাকে। তাদের জন্য প্রসাদ দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে রান্না করার জন্য আলাদা লোক রয়েছে তারা প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের রান্না করে চলেছে । এই হাজার জনকে প্রসাদ দেওয়ার জন্য অনেক জায়গার দরকার হয়। বড় একটি মাঠ রয়েছে সেখানে ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয় হাজার হাজার লোক সেখানে প্রসাদ নেওয়ার জন্য ভিড় করে।


এত বড় অনুষ্ঠান যেখানে হচ্ছে সেখানে মেলা না হয়ে কি পারে। যাইহোক দেড় কিলোমিটার দূরে মেলা বসেছে সেখানে হরেক রকমের দোকান কিন্তু এসেছে। যেমন নৌকা, নাগরদোলা, কসমেটিকের দোকান, নানা ধরনের পিঠার দোকান, খাবারের দোকান, চায়ের দোকান ইত্যাদি। একটি স্কুল মাঠে এই মেলাটি বসেছে আর এত দোকান এসেছে যে এখানে যদি কেউ হারিয়ে যায় খুব সহজে কিন্তু তাকে পাওয়া সম্ভব নয়। যাইহোক আমিও সেই মেলাতে গিয়েছিলাম আমার কিছু ফ্রেন্ড এর সঙ্গে তাদের সঙ্গে নাগর দোলাতে উঠেছিলাম খুব ভালো লেগেছিল নৌকাতে উঠেছিলাম। বন্ধুদের কথা শুনে নৌকাতে যখন উঠেছিলাম তখন খুবই ভালো লাগছিল কিন্তু যখন নৌকাটি দোল দেওয়া শুরু করল তখন মনে হচ্ছিল আমি কখন নামতে পারব। যারা আমার মত নৌকাতে উঠেছেন একমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন যে নৌকার একদম মাথার সিটে বসলে তার অবস্থা কেমন হয়। সত্যি বলতে আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি ভয়ে জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকি আর আমার বন্ধুরা হাসতে থাকে কিন্তু কিছুই করার নেই নিজের ভয়টাকে কাটানোর জন্য চিৎকার করছিলাম।

IMG20240223221216.jpg

IMG20240223220804.jpg

IMG20240223220753.jpg

IMG20240223220731.jpg

IMG20240223195939.jpg

IMG20240223195655.jpg

IMG20240222234108.jpg

IMG20240222231733.jpg

IMG20240222230020.jpg

IMG20240222225847.jpg

IMG20240222225739.jpg

IMG20240222225514.jpg

ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:২২.০২.২০২৪
সময় :১১.২৪ মিনিট
স্থান: কালেখারবেড় পূর্ব পাড়া

নৌকা থেকে নেমে সোজা চলে গেলাম খাবারের দোকানে সেখানে যে বারো ভাজা, ঝাল মুড়ি, পিঠা, গলদা চিংড়ির মাথা ভাজি, বেগুন ভাজি, এবং লাস্টে কুলফি খেয়েছিলাম। বাজারে এত কিছু খাবার খাওয়ার পর রাতে আর ভাত খাইতে পারেনি। তার জন্য সকালে মায়ের বকা ও খেয়েছিলাম। কারণ মা আমার জন্য রাতের রান্না করে রাখে কিন্তু প্রায় সময় আমি রাত্রে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আর সকালের মায়ের বকা খাই😃😃😃😃। যাইহোক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যে নিজের মনটাও খুব ভালো হয়ে গিয়েছিলো এবং বাজারে বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি করে আরও বেশি ভালো লেগেছিলো কারণ অনেকদিন পর অনেক পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছিলো।

আজ এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 3 months ago 

আপনি শুরুতেই মতুয়া সম্প্রদায়ের সম্পর্কে কিছু কথা বলে নেওয়ায় মতুয়া সম্প্রদায় সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো। বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে আপনারা বেশ ভালই মজা করেছেন যা দেখলাম। আপনার বন্ধুরা নৌকায় আপনাকে নিয়েও তাহলে বেশ মজা করেছে 🤣🤣। আমার তো জল ভীষণ পছন্দের আমি নৌকায় উঠলে একদম কোণাতেই বসি, আমার বেশ ভালো লাগে। আপনাকে ধন্যবাদ দারুণ কিছু ফটোগ্রাফি এবং মুহুর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 68494.93
ETH 3762.21
USDT 1.00
SBD 3.65