পুরী জগন্নাথ মন্দিরে ভ্রমণ পর্ব:২

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে পুরী জগন্নাথ মন্দিরে ভ্রমণ দ্বিতীয় পর্বটি উপস্থাপন করছি ।আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



দেখে দেখে পুরীতে যাওয়ার সময় চলে এলো। আমাদের ট্রেন রাত নয়টা সাড়ে নয়টার দিকে ছিল। যাবার দিন সকালে খুব ভোরে উঠে নিজের জামা প্যান্ট এবং একজন মানুষের চলার জন্য সবকিছু গুছিয়ে নিলাম যাতে পুরীতে যাওয়ার পরে কোনরকম সমস্যার মধ্যে না পরতে হয়। আমার বেশিরভাগ সময় ফোনের চার্জার নিতে ভুলে যাই এমনটি আপনাদের সাথেও হয় কিনা আমি জানিনা। সে কারণে আগে থেকেই আমার দুইটি ফোনের চার্জার ব্যাগের ভিতর গুছিয়ে রাখলাম। দিদিরা ও তাদের ব্যাগ সবকিছু যাবার একদিন আগেই গুছিয়ে রাখলো যাতে যাওয়ার দিন কোন রকম সমস্যা না হয়। যাইহোক দেখতে দেখতে আমাদের যাওয়ার সময় হয়ে এলো। আমরা বাসা থেকে সন্ধ্যার একটু আগেই রওনা করলাম। স্টেশনে যেতে যেতে আমাদের প্রায় সন্ধ্যা পার হয়ে গেল। চারিদিকে অন্ধকার নেমে গিয়েছিল কিন্তু অন্ধকার মনে হচ্ছিল না কারণ এত আলো ছিল যার কারণে মনে হচ্ছিল না যে রাত হয়ে গিয়েছে। আগে থেকেই আমাদের ট্রেনের টিকিট কাটা ছিল। আমরা একসাথে অনেকেই গিয়েছিলাম তার জন্য আগে থেকেই আমরা টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম যার কারণে কোনো রকম সমস্যার মধ্যে আমাদের পড়তে হয়নি।
IMG20231228170238.jpg
IMG20231228162602.jpg

IMG20231228153519.jpg

IMG20231228153503.jpg



স্টেশনে যে দেখলাম আমাদের ট্রেনটি দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিন্তু আমাদের অভার ব্রিজ পার হয়ে ট্রেনের কাছে যেতে হবে। খালি হাতে অভার ব্রিজ পার হওয়া কোন বিষয় নয়।কিন্তু হাতে যদি পাথরের মতন ভারী একটি লাগেজ থাকে তাহলে অভার ব্রিজ পার হওয়া খুব কষ্টদায়ক হয়ে যায়। দিদিদের লাগেজটি এত ভারী ছিল আমি না পেরে দিদিকে বললাম এর ভিতরে কি পাথর ভরেছো এত ভারী কেন। যাইহোক অনেক কষ্টে অভার ব্রিজ পার হলাম শীতকাল ছিল কিন্তু তারপরও পুরোটাই ঘেমে গিয়েছিলাম। তাহলে বুঝুন কতটা কষ্ট হলে মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে যায় তাও আবার শীতের সময়। যাইহোক এরপর হলো আরো বড় একটি সমস্যা সেটি হল আমাদের কেবিন নাম্বার খোজা। খুঁজতে খুঁজতে দেখা গেল আমাদের কেবিন নাম্বারটি ট্রেনের সবথেকে লাস্ট বগিতে। যাইহোক কোন কিছু করার নেই কষ্ট করে লাগেজ নিয়ে আর সঙ্গে আমার ব্যাগ নিয়ে চলতে শুরু করলাম। তাড়াহুড়ো ছিল না কারণ আমরা ট্রেন ছাড়ার অনেক আগেই এসেছি। একটা কথা সবসময় মনে রাখা উচিত আমাদের দূরে কোথাও যেতে হলে বা কোথাও যেতে হলে সব সময় বাড়ি থেকে একটু আগে রওনা হওয়া উচিত। কারণ বলা তো যায় না কখন কোন বিপদ এসে সামনে দাঁড়ায়।
IMG20231228200119.jpg

IMG20231228211146.jpg

IMG20231228200402.jpg

IMG20231229010840.jpg



যাইহোক অবশেষে আমরা যার যার সিটে এসে বসলাম। আমাদের প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘন্টার জার্নি ছিল। যার কারণে আমাদের ট্রেনের ভেতর ঘুমাতে হয়েছিল। কারণ এতটা সময়ে রাত জেগে থাকা সম্ভব নয় আর জেগে থাকলেও সকালে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি। যার কারণে ট্রেনে উঠেই আমি আমার সিটে উঠে পড়লাম। আমার সিট সব থেকে উপরে ছিল। রেস্ট নেওয়ার জন্য এখানে একটি বালিশ ছিল একটি বেডশীট ছিল এবং যেহেতু শীতকাল ছিল সেহেতু একটি কম্বল ছিল গায়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমি সিটটিতে ঠিকভাবে না বসতে পারছিলাম না শুতে পারছিলাম। যখন বসছি তখন মাথা উঁচু করতেই ট্রেনের ছাদে মাথা ছুঁয়ে যাচ্ছিল যার কারণে সঠিকভাবে বসতেও পারছিলাম না। আর যখন সিটে শুয়ে পড়ছিলাম তখন দুপা ভাজ করে তারপর শুতে হচ্ছিল। একটা কথা আছে লম্বা মানুষের সব জায়গায় সমস্যা। যাইহোক একটু পরে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য ডাক দিল। আমরা সবাই একসাথে মিলে খাবার খেয়ে আবারো যার যার মত সিটে যে শুয়ে পড়লাম। কারণ অনেকটা সময়ের পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে তাই একটু রেস্ট অবশ্যই দরকার। আমার ট্রেনে ঘুমানোর আগে পরে কোন অভিজ্ঞতা নেই যার কারণে একটু সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু তারপরেও নিজেকে মানিয়ে নিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।


সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিল কিন্তু আমাদের তিনজনের ঘুম কিছুতেই আসছিল না। দাদা দিদিও সারারাত বসে বসে কাটিয়ে ছিল আর আমি চেষ্টা করছিলাম একটু ঘুমানোর জন্য কিন্তু কিছুতেই পারলাম না। এমন করতে করতে সকাল হয়ে গেল। সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আর কিছুক্ষণ পর আমরা ট্রেন থেকে নেমে পড়লাম। সবকিছু যেন অন্যরকম লাগছিল কারণ নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ একটু আন ইজি ফিল করছিলাম। সেদিন বাইরে খুব কুয়াশা পড়েছিল আর খুব ঠান্ডা। যার কারনে যেখানে আমাদের ৮ ঘন্টা জার্নি ছিল সেখানে আমাদের প্রায় ৯ ঘণ্টা জার্নি করতে হয়েছিল মানে এক ঘন্টা বেশি। এটার কারণ হলো কুয়াশা পড়ার কারণে ট্রেনটি খুব ধীরগতিতেই চলছিল। যাইহোক ভালোভাবে পৌঁছাতে পারলাম এটাই সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক বড় পাওয়া।
IMG20231229063230.jpg

IMG20231229064052.jpg

IMG20231229062435.jpg

IMG20231229062504.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরার মডেল:oppo A79 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:4.05mm
তারিখ:১৪.০১.২০২৪
সময়: ০৭.১১মিনিট


আজ পর্বটি এখানেই শেষ করছি। বাকি পর্বটি খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 2 months ago 

এই ভ্রমণের প্রথম পর্ব আমার দেখা হয়নি৷ তবে আজকে এর দ্বিতীয় পর্ব দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ খুব সুন্দর ভাবে আপনি এই ভ্রমণের মধ্যে দিয়ে অনেক কিছুই আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন৷ এই স্থানে গিয়ে খুব সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন৷ যা খুবই সুন্দর হয়েছে৷ আশা করি পরবর্তীতে আরো অনেকগুলো পর্বের মাধ্যমে এই বিষয়টি আপনার কাছ থেকে জানতে পারবো৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম একটি ভ্রমনের পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷

 2 months ago 

আসলেই ভাই দূরে কোথাও যাওয়ার আগে অবশ্যই হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হতে হয়। নয়তো অনেক সময় আমরা অনাকাঙ্খিত ঝামেলায় পরতে পারি। যাইহোক জার্নি করার সময় আমারও তেমন ঘুম হয় না। আর আপনি যেহেতু লম্বা, তাই ট্রেনের সিটে শুয়ে বা বসে কোনো আরাম পাচ্ছিলেন না বলে,কোনো ভাবেই ঘুমাতে পারেননি। আসলে রিলাক্সে না থাকলে ঘুম একেবারেই আসতে চায় না। যাইহোক অবশেষে গন্তব্যে ঠিকমতো পৌঁছে গিয়েছেন,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 68436.55
ETH 3750.49
USDT 1.00
SBD 3.66