শৈশবের বন্ধু
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে ভালো আছি, সুস্থ আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট উপস্থাপন করছি। আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
আমার এখনো মনে পড়ে আমার সেই শৈশবের বন্ধু গুলোর কথা। কতই না তাদেরকে সঙ্গে দুষ্টুমি করেছি এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু জীবনের একটা পর্যায়ে সবকিছু ফেলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাতে হয়। সেই সময়টাতে না থেকে সেই শৈশবের বন্ধু গুলো। তখন বারবার সেই বন্ধু গুলোর কথা মনে পড়ে যায়। জীবনে চলার পথে অনেক বন্ধু হয়ে যায় আমাদের কিন্তু শৈশবের বন্ধুর মতো বন্ধু আর কখনোই তৈরি হয় না। কারণ ওই বন্ধুত্বের ভিতর একটি মায়া কাজ করে একটা ভালোবাসা কাজ করে যা কখনো অন্য বন্ধুদের মাঝ থেকে পাওয়া যায় না। শৈশবের সেই বন্ধুগুলো সঙ্গে মাঠে ফুটবল নিয়ে ধোলাই গড়াগড়ি। বৃষ্টির সময়টাতে বন্ধুদের সঙ্গে নদীতে লাফালাফি। অন্যের বাড়িতে বন্ধুরা মিলে ফল চুরি করা সেই ফল সবাই মিলে ভাগাভাগি করে খাওয়া। এর ভিতর অনেক আনন্দ কাজ করে যা অন্য বয়সে পাওয়া যায় না।
আমার এখনো মনে পড়ে আমার সেই শৈশবের বন্ধু গুলোর কথা। তাদের সঙ্গে একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর কথা। আমি ছোটবেলায় অনেক দুষ্টু ছিলাম। এই দুষ্টুমির জন্য আমার প্রতিদিনই মার খেতে হতো মায়ের হাতে 😁😁😁। একদিন এক ঘটনা বলি। আমি তখন ক্লাস টু তে পড়াশুনা করি। স্কুলে গিয়েছিলাম ক্লাসও শুরু হয়ে গিয়েছিল ম্যাডাম আমাদের ইংরেজি ক্লাস নিচ্ছিল। হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে বৃষ্টি পড়তে শুরু করল। ক্লাস চলাকালীন বন্ধুদের সাথে প্ল্যান করে ফেললাম আর ক্লাস করা যাবে না এখনই ফুটবল নিয়ে মাঠে যেতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ ক্লাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বই নিয়ে এই দৌড়ে চলে গেলাম বাড়িতে। আমার একটি ফুটবল ছিল সঙ্গে সঙ্গে ফুটবল টি বের করে দৌড়ে চলে গেলাম মাঠে। বন্ধুদের জন্য ওয়েট করছিলাম হঠাৎ দেখি বন্ধুরা ভিজতে ভিজতে চলে এসেছে মাঠে। প্রচুর বজ্রপাত হচ্ছে আর বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু তা আর দেখে কে আমরা মাঠে খেলেই চলেছি। লোকে আমাদের বারণ করছিল কিন্তু আমরা কারো বারণ শুনছিলাম না। হঠাৎ দেখি আমার মা লাঠি হাতে নিয়ে তীর বেগে মাঠে দিকে আসছে। মাকে দেখে দৌড়ে পুকুরে লাফ দিয়ে পড়লাম। মা বলল উপরে উঠতে আমরা বললাম উপরে উঠলে তুমি মারবে। তাই আমরা উপরে উঠবো না। অনেক চেষ্টার পর মা ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে চলে গেল। মা চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারো পুকুর থেকে উঠে মাঠে খেলতে শুরু করলাম।
আমি গ্রামে বসবাস করতাম আর আপনারা জানেন যারা গ্রামে বসবাস করেন তাদের শৈশবটা কত সুন্দর কাটে। একটা সময় এমনও হয়েছে একটি বল কিনতে আমরা সবাই মিলে টাকা দিয়েছে তারপর একটা বল কিনেছি। এই যে সবাই মিলে টাকা দিয়ে কোন কিছু কিনা এটার আনন্দটাই অন্যরকম। আর এখন আমি দশটি বল কিনতে পারি কিন্তু সেই শৈশবের ওই আনন্দটা আর পাব না। আমি এখনকার ছোটদের দেখে অবাক হয়ে যাই,তারা সবসময় ফোনে ভিতর ব্যস্ত থাকে। তাদের শৈশবটা ফোনের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। বর্তমান টেকনোলজি এত উন্নত হয়েছে আর আমরা এই টেকনোলজির উপর এত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যে আমাদের শৈশব যৌবন বৃদ্ধ সবকিছু এর ভিতর ঢুকে গিয়েছে।। আগের মত সেই আনন্দটা এখন আর নেই। এখন হাজার চেষ্টা করলেও মাঠে একটি ছেলে পাওয়া যায় না খেলার জন্য। এই টেকনোলজির যুগের মানুষগুলো ভুলে গেছে তার শৈশবের বন্ধু গুলোর কথা শৈশব আনন্দ এটাই মানুষ ভুলে গেছে।
যাইহোক আমার এখনো পর্যন্ত আমার শৈশবের বন্ধুর কথা মনে পড়ে।অনেক বন্ধু হয়েছে কিন্তু তাদের মতন বন্ধু আমি খুঁজে পাইনি। আমি এখন ও সময় পেলে আমি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চলে যাই। সবাই মিলে আড্ডা দিতে দিতে যখন ছোটবেলার কথা আমরা একে অপরকে বলি তখন আর হাসি থামাইতে পারি না। যত বয়স বাড়ছে আর ততই ইচ্ছা করছে সেই শৈশবে ফিরে যেতে। কারণ শৈশবের সময়টা কোনদিন ভোলা যায় না। আপনি সব কিছু ভুলে যেতে পারবেন কিন্তু আপনার শৈশবের ওই দিনগুলোর কথা আপনি কোনদিনও ভুলতে পারবেন না। যত বয়স হবে ততই আপনার সেই ছোটবেলার সেই বন্ধুগুলোর কথা সেই শৈশবের সময়গুলোর কথা আপনাকে বারবার মনে করিয়ে দেবে। একটা বাস্তব কথা। আমরা যখন সংসারের থেকে রিটায়ার্ড গ্রহণ করব। তখন সময় দেওয়ার মতন কেউ থাকবে না।তখন বারবার মনে পড়বে সেই বন্ধুগুলোর কথা। মনটা চাইবে ছুটে যেতে শৈশবের বন্ধুগুলোর সঙ্গে একটু সময় কাটাতে।