লাইফস্টাইলঃ-পিকনিক স্পট-ইনানীতে আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত।

in আমার বাংলা ব্লগ14 days ago

শুভ দুপুর সবাইকে,

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ @amarbanglablog পরিবারের সকল ব্লগার ভাই ও বোনেরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? নিশ্চয়ই আপনাদের দিনকাল বেশ ভালোই যাচ্ছে? আমিও ভালো আছি বন্ধুরা গতকালকের চেয়ে আজকে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি। গতকালকে প্রচুর পরিমাণ মাথা ব্যাথা ছিল কারণ ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারণে। বেশ কয়েকদিন হল ঠান্ডা লেগেই আছে সহজেই যাচ্ছেনা। বিশেষ করে এই সমস্যা গুলো হলেই সহজে যেতে চাই না। যাক যতটুকুতেই রাখছে সৃষ্টিকর্তা আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালোই আছি। সব সময় চেষ্টা করি আপনাদের সাথে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পোস্ট শেয়ার করার। চেষ্টা করি বিভিন্ন ধরনের পোস্ট আপনাদের সাথে তুলে ধরার।

F2.jpg

F3.jpg

আমরা সবাই চেষ্টা করি পোস্ট ভেরিয়েশন বাড়ানোর। সেই ধারাবাহিকতায় আমি আজকে আবারো উপস্থিত হয়েছি একটি লাইফ স্টাইল পোস্ট নিয়ে। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনেক কিছু করতে হয়। সেগুলো খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে হোক কিংবা কোন সমাজিক অনুষ্ঠানে কিংবা কোন অফিসিয়াল প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে। অনেক সময় দেখা যায় যে ইচ্ছে না থাকলেও সামাজিকতা মেইনটেইন করে চলতে হয়। যেহেতু আমরা সামাজিক জীব সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করা আমাদের ধর্ম। তাই আমরা নীতির বাইরে নিয়মের বাইরে যেতে পারি না। অনেক সময় বাধ্য হয়ে অনেক কিছু করতে হয়।

F1.jpg

কিছুদিন আগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম ইনানীতে পিকনিকে গেছিলাম। পিকনিকটা অবশ্যই আমার হাজবেন্ডের অফিসিয়াল একটি পিকনিক ছিল। সেখানে অবশ্যই পরিবারের সদস্যরা যাওয়ার সুযোগ ছিল। যদিও বাধ্য ছিল না কিন্তু মন চাইলে যাওয়ার সুযোগ ছিল। বিষয়টি অবশ্যই আমার কাছে আগে শেয়ার করেছিল আপনাদের ভাইয়া। কিন্তু এত গরমের মধ্যে বাচ্চাদেরকে নিয়ে না যাওয়া আমার একদম ইচ্ছে ছিল। কারণ যে সময় গেছিলাম তখন প্রচুর পরিমাণ গরম ছিল। কিন্তু বাচ্চাদের মন বলে কথা! তারা ভালো মন্দ আর গরম ঠান্ডা কিছুই বুঝতে চাই না। যাবে সে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল বাচ্চারা। কিন্তু ওদের বাবা বারবার বলছিল বেশি গরম বাচ্চাদেরকে না নিয়ে গেলে ভালো হবে।

F7.jpg

F10.jpg

আমিও সেই চিন্তা নিয়ে বসে থাকছিলাম যাব না পিকনিকে এত গরমে। তাছাড়া ঈদের পর থেকে গ্রাম থেকে আসার পর থেকে আমার শরীরটাও ভালো যাচ্ছিল না বেশ খারাপ লাগছিল। যেহেতু আমার হাই প্রেসার আছে গরমের কারণেই একটু খারাপ লাগছিল। ঘুম ঠিকমত না হলে তো আমার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। অবশেষে পারলাম না বাচ্চাদেরকে দমিয়ে রাখতে বাধ্য হয়ে পিকনিকে চলে যেতে হলো। যদিও মেয়েদের বাবা সকাল ৮ টায় চলে গেছিল আমাদের যেতে বলছিল আমি যাই নি এত সকাল। কারণ ওনার অনেক কিছু ফরমাল কাজ করতে হয়েছিল পিকনিকে। উনি ছিলেন উখিয়ার ক্যাম্প ৬ এর দায়িত্বরত UNHCR অফিস এর পক্ষ থেকে।

F11.jpg

এছাড়াও এখানে সরকারি একজন প্রতিনিধি ছিলেন যাকে ক্যাম্পে সিআইসি নামে মেনশন করা হয়। RRRC পক্ষ থেকে উনাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে। প্রতিটি ক্যাম্প একজন করে ইন্সপেক্টর আছেন সরকারিভাবে। এছাড়াও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রতিনিধি ছিলেন। ক্যাম্প প্রতিনিধি প্রধান সরকারি কর্মকর্তার সহায়তায় আপনাদের ভাইয়ের সহায়তায় ক্যাম্প ৬ এর অন্যান্য প্রতিনিধিদের সহায়তাই পিকনিকের আয়োজন করা হয়। যেহেতু পিকনিক করা হয়েছিল ক্যাম্প ৬ এর পক্ষ থেকে। তাই ক্যাম্প ৬ এর দায়িত্বরত সকল এনজিও সংস্থার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সেখানে দাওয়াত করা হয়। প্রায় ৭০-৮০ জনের মত হবে পিকনিকের সদস্য সংখ্যা বাচ্চারা ছাড়া।

F4.jpg

আমরা সকাল দশটা দিকে বাসা বের হই বাচ্চাদের নিয়ে। আমি সরাসরি কলাতলীর ডলফিন মোড় থেকে একটি সিএনজি নিলাম। সিএনজি নেওয়ার পরে সোজা ইনানীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এমনিতে আমাদের যেতে দেরি হয়ে গেছিল। কারণ সেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা ছিল। তাই আপনাদের ভাইয়া বারবার আমাকে ফোন করতে থাকছিল বাচ্চাদের নিয়ে কতদূর গেলাম। আর বাচ্চারা খেলাধুলার অংশগ্রহণ করতে না পারলে বেশ কান্নাকাটি করবে তাই আমিও তাড়াহুড়ো করছিলাম। পিকনিকের স্পট নির্বাচন করা হয়েছিল ইনানীর পেবল স্টোন রিসোর্টে। সেখানে আমরা সোজা চলে যায়।

F13.jpg

F9.jpg

পৌঁছে যাওয়ার পরে আমাদেরকে প্রথমেই নাস্তা দেওয়া হয়। নাস্তা খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা খেলার দিকে চলে গেলাম। যেহেতু সেখানে অলরেডি খেলাধুলা শুরু হয়ে গেছিল। আমিও জয়েন হয়ে গেলাম খেলাধুলায়। তবে আগে বড়দের খেলাধুলা শুরু হয়ে গেছিল। যখন গেছি আমি তখন অলরেডি একটা খেলা শেষ হয়ে গেছিল হাঁড়ি ভাঙ্গা। জয়েন করতে বলছিল হাঁড়ি ভাঙ্গায় কিন্তু আমি জয়েন করি নাই। পরবর্তীতে আমি বালিশ খেলাই এবং বল নিক্ষেপে অংশগ্রহণ করেছিলাম। যদিও অংশগ্রহণ করেছিলাম কিন্তু জিততে পারি নাই হা হা হা। এত মানুষের ভিড়ে খেলাধুলা করতে একটু আনইজি ফিল করছিলাম।

F.jpg

এরপরেই বাচ্চাদের খেলাধুলা শুরু হয়। বেশ সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছিলাম। বাচ্চারা বেশ সুন্দরভাবে খেলাধুলা করেছিলেন। বাচ্চাদের খেলার আইটেম ছিল বেলুন ফুটানো এবং বিস্কুট খেলা। তবে খেলাধুলার আইটেম এত বেশি ছিল না সীমিত আকারে ছিল। যেহেতু খেলাধুলা শেষ করতে করতে দুপুর হয়ে গেছিল। তখন খেলাধুলা আপাতত শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ লাঞ্চের শেষে আবারো ফুটবল টুর্নামেন্ট এরপরে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছিল। সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালো সময় উপভোগ করেছিলাম পিকনিক স্পটে। এরকম পিকনিকে গেলে বেশ ভালো লাগে যেহেতু সবাই জড়ো হয় অনেক আনন্দ করা যায়।

F5.jpg

F12.jpg

বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ থাকে। পিকনিকে গেলে অনেক সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং সেই মুহূর্তগুলো উপভোগ করার সুযোগ হয়। আমি পিকনিকের প্রতিটি মুহূর্ত বেশ ভালোভাবে উপভোগ করেছিলাম। পিকনিকে গেলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চারা অনেক বেশি আনন্দিত হয়। কারণ তাদের সময় বয়সী অনেক বাচ্চারা আসেন পিকনিকে বাবা মায়ের সাথে। এর আগেও আরেকটি পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছিল দুই বছর আগে। সেই পিকনিকের স্পট ইনানীর অন্য একটি জায়গায় ছিল।

F6.jpg

তবে এইবারের পিকনিকের স্পট আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন একদম বীচের সাথে লাগোয়া। কটেজ থেকে মূলত বসে সমুদ্রের বাতাস বেশ ভালোভাবে গায়ে লাগছিল আর সমুদ্রের দৃশ্য এবং সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন উপলব্ধি করছিলাম। আমরা দুপুরের লাঞ্চ শেষ করি কিছুক্ষণ রেস্ট নেওয়ার পরে আবার তরমুজের জুস খেয়ে সবাই মিলে সমুদ্রে নেমে গেছিলাম। একদিকে ফুটবল টুর্নামেন্ট দেখছিলাম আবার সমুদ্রের দৃশ্য ও আকাশের দৃশ্য বেশ সুন্দর উপভোগ করেছিলাম।

F14.jpg

F8.jpg

আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের পর্ব বেশ ভালো উপভোগ করতে পারলেন আপনারা। সময় দিয়ে পাশে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png

ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Locationইনানীর পেবল স্টোন রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিলাইফ স্টাইল


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

New_Benner_ABB1.png

Sort:  
 14 days ago 

অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। ইতো পূর্বে ঠিক এমনই কিছু পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছিলেন। আজকেও ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। ঠিক অজানা অচেনা বিষয় সম্পর্কে অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে। বাচ্চাদের খেলাধুলার মুহূর্তে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন যাও অনুভব করলাম। পাশাপাশি আশেপাশের ফটোগ্রাফি আর তার বর্ণনা মিলে অনেক কিছুই জানার সুযোগ হয়েছে।

 12 days ago 

আমার শেয়ার করা পিকনিকের মুহূর্তটা আপনি বিস্তারিত দেখলে সময় দিয়ে অনেক ভালো লাগলো।

 14 days ago 

বাহ তাহলে সরকারি ভাবে ইনানীতে পিকনিক করলেন। আমরা তো জানি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পিকনিক করে বছরের প্রথম দিক দিয়ে। আর আপনার হাসবেন্ড ও তার কলিগরা করলো এখন। তবে গরম হলেও পিকনিক স্পটটা সমুদ্রের কাছাকাছি হওয়ার কারনে গরমটা এত অনুভব হয়নি। খেলাতে জিততে হবে এমন নিয়ম নেই। জয়েন করেছেন,আনন্দ করেছেন। ধন্যবাদ।

 12 days ago 

হ্যাঁ আপু অনেক সুন্দর একটা সময় কাটিয়ে ছিলাম বেশ ভালো লেগেছিল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 14 days ago 

আপনাদের আনন্দঘন মুহূর্তটা আমাদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন দেখে খুবই ভালো লেগেছে আপু। পোস্ট পড়ে আর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে যা বুঝতে পারলাম খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি বেশ ভালোলাগা মুহূর্ত ছিল আপনাদের। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 12 days ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু আপনি আমার পোস্ট পড়ে গঠন মূলক মতামত দিলেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 69633.73
ETH 3805.56
USDT 1.00
SBD 3.74