দীর্ঘদিন পর হঠাৎ কোনো উপলক্ষ ছাড়াই হাতে মেহেদি দেওয়ার গল্প।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে দীর্ঘদিন পর হঠাৎ কোনো উপলক্ষ ছাড়াই হাতে মেহেদি দেওয়ার গল্প শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে মেহেদি সামনে চোখে পড়তেই মনের ভেতর একটা অদ্ভুত অনুভূতি জেগে উঠল। যেন পুরোনো কোনো স্মৃতি হঠাৎ করে হাতছানি দিয়ে ডাকল। অনেক দিন হাতে মেহেদি দিইনি। তবু মেহেদির সেই চেনা গন্ধ আর রঙের ভাবনাটুকুই মনে একটা আলাদা ইচ্ছা তৈরি করে দিল। তখন আর কিছু ভাবিনি।কোনো উপলক্ষ দরকার হয়নি।সময় ঠিক আছে কি না সেটাও মাথায় আসেনি। শুধু মনে হলো, আজই হাতে মেহেদি দিতে ইচ্ছে করছে। এই হঠাৎ ইচ্ছাটার মধ্যেই একটা স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ ছিল।যেটা অনেক সময় পরিকল্পনা করে পাওয়া যায় না।ইচ্ছাটা মনে আসার সাথে সাথেই আর দেরি করিনি। মেহেদির কনটা হাতে নিয়ে বসে পড়লাম। মনে হচ্ছিল, অনেক দিন পর আবার নিজের জন্য কিছু করছি। হাতের ওপর প্রথম দাগটা দেওয়ার সময় একটু অচেনা লাগলেও সেই অনুভূতিটা অস্বস্তিকর ছিল না।বরং বেশ ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল, মন যেটা চাইছে, সেটাই করছি। কোনো চাপ নেই, কোনো তাড়া নেই।শুধু নিজের ইচ্ছেটাকে গুরুত্ব দেওয়া। এই কারণেই হয়তো মেহেদি দেওয়ার পুরো সময়টা এতটা শান্ত আর উপভোগ্য লেগেছে। দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে মেহেদি সামনে দেখে হাতে দেওয়ার ইচ্ছেটা হয়তো খুব সাধারণ মনে হতে পারে।কিন্তু এই সামান্য মুহূর্তটাই সেদিন আমার জন্য ভীষণ বিশেষ হয়ে উঠেছিল।

• প্রথম ধাপ:

---

প্রথমে কনটা হাতে নিয়ে হাতের মাঝখানে একটা ছোট গোল এঁকে নিলাম। অনেক দিন পর মেহেদি দিচ্ছি বলে হাতটা একটু সাবধানে চালাতে হচ্ছিল। তবু প্রথম দাগটা দেওয়ার পরেই মনে হলো। ঠিক আছে এভাবেই আস্তে আস্তে এগোনো যাবে।এরপর সেই গোলটার চারপাশে আরেকটা লাইন টানলাম। ধীরে ধীরে গোলটা একটু মোটা করে তুললাম। যেন মাঝখানের অংশটা পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে।

• দ্বিতীয় ধাপ:

---

এবার একটু নকশা যোগ করার জন্য, গোলটার চারদিকে ছোট ছোট পাপড়ির মতো ডিজাইন করতে শুরু করলাম। একটার পর একটা করে আঁকতে গিয়ে সময় যে কীভাবে চলে গেল বুঝতেই পারিনি। মাঝে মাঝে থেমে থেমে হাতটা দেখছিলাম। সব পাপড়ি ঠিকঠাক হচ্ছে কি না।

• তৃতীয় ধাপ:

এরপর গোল নকশার বাইরে হালকা বাঁকানো লাইন আর ছোট ফুল যোগ করলাম। এবং বাঁকানো লাইনের দুই দিকে ছোট পাতা আকৃতি নকশা করলাম ।

• চতুর্থ ধাপ:

---

এরপর আঙুলের ওপর লম্বা করে লাইন টেনে। তার মাঝে ছোট ফুলের ডিজাইন করলাম। এতে পুরো হাতটা দেখতে বেশ গোছানো লাগছিল। প্রতিটা আঙুলে একই ধরনের রাখার চেষ্টা করেছি।যেন দেখলেই মনে হয় সবকিছু একসাথে মিলিয়ে করা।

• পঞ্চম ধাপ:

---

সবশেষে একবার পুরো হাতটা ভালো করে দেখলাম। কোথাও ফাঁকা লাগছে কি না, কোথাও একটু ঠিকঠাক করার দরকার আছে কি না।এসব দেখে নিয়ে ছোট খাটো কাজ শেষ করলাম। মেহেদি তখন ধীরে ধীরে শুকোচ্ছিল, আর রংটা গাঢ় হয়ে উঠছিল। দীর্ঘদিন পর হাতে দেওয়া এই মেহেদিটা তখন শুধু একটা নকশা নয়।বরং নিজের জন্য কাটানো একটা সুন্দর সময়ের স্মৃতি হয়ে গেল।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।