ছোট গল্প ||| এক আকাশ পরিমাণ হৃদয় ||| original writing by @saymaakter
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই-বোনেরা আশা করছি পরিবারকে নিয়ে সুস্থ সুন্দরভাবে দিন যাপন করছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

source
বরাবরের মতো আবারো আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম আমার স্বরচিত ছোট গল্প "এক আকাশ পরিমাণ হৃদয়"।সব সময় কবিতা রেসিপি, অনুভূতিমূলক পোস্ট ডাই পোস্ট এগুলোই লিখে থাকি কিন্তু অনেকদিন হলো গল্প লেখা হয় না।তাই দেরি না করে ঝটপট একটি গল্প লেখার চেষ্টা করলাম। তবে আমার গল্পগুলো লিখে আপনাদের কাছ থেকে অনেক সুন্দর সুন্দর মন্তব্য পেয়েছি। এজন্য গল্প লেখার উৎস আরও বেড়ে গেছে। আর যে কোন কাজে উৎসাহটা আরো বাড়ে কেউ যদি উৎসাহ দেয়। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে গল্পের মূল পর্বে যাওয়া যাক।
শহরের ভিড়ে থেকেওখুব শান্ত ও নীরব ভদ্র এক মানুষ ছিল আরিব। সবার মাঝে থেকেও তার ভেতরে ছিল বিশাল এক শূন্যতা।অথচ সেসব সময় অন্যের জন্য অগাধ ভালবাসায় ভরিয়ে রাখত। সবাই বলতো এক আকাশ পরিমাণ হৃদয় আছে আবিরের। নিজের জন্য সে কখনো ভাবতো না।।কিন্তু অন্য কেউ কষ্ট পেলে এবং ভেঙে পড়া দেখলে সে নিজেই ভেঙ্গে পড়ত।আশে পাশের মানুষগুলো যেন তার হৃদয়ের আত্মা। তারএই ভালোবাসা সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
একদিন সন্ধ্যায় আবির যখন রাস্তায় বের হয়েছিল তখন হালকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। রাস্তাটাও ভেজা চার দিকটা প্রচন্ড বাতাস।আরিব দেখল একটা ছোট্ট মেয়ে ফুটপাতের ধারে বসে আছে। হাতে ভাঙা খেলনা চোখে পানি। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল মেয়েটা ফিসফিস করে বলল এই খেলনা পুতুলটা আমার একমাত্র বন্ধু ছিল আজ সেও ভেঙ্গে গেল। আবির আর কিছু বলল না। বাচ্চাটিকে দেখে আবির মুচকি হাসল।
পকেটে টাকা ছিলনা। তারপর সে চলে গেল সেই বৃষ্টির ভেতর আবার বাসায়। বাসায় গিয়ে তার মানি ব্যাগে দেখলো সামান্য কিছু টাকা আছে। তারপর সে তার বন্ধুর কাছ থেকে কিছু টাকা চেয়ে নিল। এরপর কিছু টাকা ম্যানেজ করে সে ওকে একটা নতুন পুতুল কিনে দিল। মেয়েটার চোখেমুখে আনন্দের আলো ফুটে উঠল। তা যেন আবিরের মনকে অনেক আনন্দিত করে দিল। সেদিনই আবির প্রথম বুঝল কাউকে কিছু দেওয়ার আনন্দটা অনেক বেশি। আর সেই অনুভূতিগুলো অন্যরকম।এরপর থেকে আবিরের মনে একটি অন্যরকম ভালো কাজ করার আশা জাগলো। সে নিজে নিজেই প্রতিশ্রুতি নিল যেটাই করিনা না কেন আমাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আর মানুষের পাশে দাঁড়ানো কারো মুখে হাসি ফোটানো যে কতটা আনন্দদায়ক এটা প্রথমবার অনুভব করলো।তাই কখনো বৃদ্ধ মানুষ কোন সমস্যায় পড়লে তাকে সবার আড়ালে সাহায্য করতো।প্রয়োজনে তাদের সামান্য কিছু টাকা দিয়ে উপকার করার চেষ্টা করত।কখনো অসুস্থ বা রাস্তার কুকুরটাকে খাবার দিয়ে তাকে আদর করত এবং কোন পাখি থাকলে তাদেরকেও খুবই আদর যত্ন এবং সুস্থ করার চেষ্টা করতো।আবার কখনো তার বন্ধুর মন খারাপ হলে তার কষ্টগুলো শোনার চেষ্টা করে এবং কিভাবে তার মন ভালো হবে সেটা করার চেষ্টা করত আবির।কেউ জানত না সে কাকে কী দিল। তবে সবাই টের পেত আবিরের ভেতরে অন্যরকম একটি মায়া এবং উপকারিতা রয়েছে অন্যের জন্য।
আবির মানুষকে উপকার করতে ভালোবাসতো কিন্তু মাঝে মাঝে সে নিজে এতটা আপসেট হয়ে যেত এবং নিজেকে প্রশ্ন করত আমার জন্য কে আছে আমার জন্য কে কাঁদে। উত্তর সে পেত না। তবু মানুষের উপকার করা বন্ধ করতো না। আবিরের হৃদয় যেন আকাশের মতো। যতই মেঘ জমে ততই বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে মানুষের উপর।একদিন রাতে আরিব খুব ক্লান্ত হয়ে পার্কে নিরিবিলি একটি জায়গায় খুব ক্লান্ত মনে ভাবছিল। আপন ও পর মিলাতে না পেরে মনে কিছু কষ্ট নিয়ে বসেছিল। তখনই এক অচেনা মানুষ এসে বললেন বাবা, তোমার চোখে জল আর হৃদয়ে কষ্ট কেন। তবে মনে রেখো যে ভালোবাসা দেয় সে একদিন অনেক ভালোবাসা পায়।
আরিব নীরবে হাসল। মাথার ওপর তারাভরা আকাশ আর সে অনুভব করল তার হৃদয়ও ঠিক তেমনই। মানুষ ভাবে বড় হতে হলে অনেক কিছু লাগে। কিন্তু আরিব জানল বড় হতে গেলে অন্যের জন্য নিজের মনের ভিতর একটা বিশাল আকাশ বানানো দরকার।যেখানে জায়গা হবে অন্যের কষ্ট দূর করা অন্যের জন্য আনন্দ,ক্ষমা আর ভালোবাসার।
আজ যাচ্ছি অন্য কোন দিন আবারো হাজির হব নতুন কোন ছোট গল্প নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমার পরিচয়
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার।আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।আমি উদ্যোক্তা জীবনে সব সময় গ্রামের অবহেলিত মহিলাদের নিয়ে কাজ করি।আর এই অবহেলিত মহিলাদের কাজ নিয়ে দেশের স্বনামধন্য কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রোভাইড করি এবং দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বর্তমানে বিদেশেও রপ্তানি করছি।আর এসব কিছুর পিছনে আমার এই অবহেলিত মহিলাদের উৎসহ এবং উদ্দীপনায় সম্ভব হয়েছে।তাই সব সময় আমি অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।এজন্যই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে স্টিমিটে যুক্ত হই।আমার বাংলা ব্লগে শুরু থেকে আছি এবং এখন পর্যন্ত আমার বাংলা ব্লগেই ব্লগিং করে যাচ্ছি।
🇧🇩আল্লাহ হাফেজ🇧🇩



