চা ও পিঠা খাওয়ার কাটানো সুন্দর মূহুর্ত ❤️
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
শীত মানেই পিঠা উৎসব।আমরা ভোজনবিলাস বাঙ্গালী বাড়িতেও বাইরে সব জায়গায় আমরা খেতে ভালোবাসি।পিঠা শীতকালীন উৎসব হয়ে গেছে যেনো।
আমি ও আমার ননদ গিয়েছিলাম কিছু টুকিটাকি কেনাকাটা করতে। কেনাকাটা গুলো স্থানীয় বাজারে করা যেতো কিন্তুু আমার প্রয়োজন ছিলো গ্লু গলা। গ্লু গলা আমাদের এলাকার স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায় না আর সেজন্য আমাকে থানা শহরে যেতে হয়েছিল।বেশ কয়েকটা দোকান বন্ধ থাকার কারণে আমাকে গ্লু গান কিনতে একটু বেগ পেতে হয়েছিল। অবশেষে একটি দোকানে গিয়ে গ্লুগান পেয়েছি এবং কিনেছি।
গ্লুগান কিনতে গিয়ে দেখলাম রাস্তার ধারে ভাপা পিঠার ও পাটিসাপটার দোকান তাই সেখান থেকে ভাপা পিঠা খাওয়ার জন্য গেলাম।বসার সুন্দর ব্যাবস্থা রয়েছে। লম্বা লম্বা দু তিনখানা চেয়ার বসিয়েছে।
যতোই বিকেল হবে ততই পিঠা খাওয়ার জন্য মানুষ আসবে এবং অনেক রাত পর্যন্ত পিঠা বেচা খাওয়া চলবে।আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন দু একটা কাস্টমার। আমরা বসে অর্ডার করলাম আমাদের পিঠা ভাজা হতে না হতেই বেশ লোক আসার ধুম পড়ে গেলো।
কেউবা বাড়ির জন্য পাঁচ থেকে দশটা পার্সেল নিচ্ছে কেউ বা বসে খাচ্ছে। দোকানি মহিলা একটি বড়ো পাত্রে ভাপা পিঠার জন্য চালের গুড়ি তৈরি করে নিয়েছে এবং একটি পাত্রে চিতই পিঠার জন্য গোলা করে নিয়েছেন। দু প্রকারের ভর্তা বানিয়ে রেখেছে চিতই পিঠার সাথে দেয়ার জন্য।
একটু বসার পরেই আমাদের পিঠা হাতে পেলাম এবং গরম গরম ধোয়া ওঠা পিঠা খেলাম মজা করে।বেশ সুস্বাদু ছিলো পিঠা গুলো।আমার ননদ বল্লো যে সে চিতই পিঠা খাবে একটা তাই একটি চিতই পিঠা অর্ডার করলাম এবং সাথে সাথেই গরম চিতই পিঠা ভর্তা সহ হাতে পেলাম।আমার গ্যাস হয় জন্য আমি খেলাম না।
পিঠা খেতে খেতে লক্ষ করলাম যে একটি বয়স্ক লোক বসে শুধু সবার পিঠা খাওয়া দেখছেন এবং অনেকটা সময় থেকে বসে আছেন। প্রথম ভেবেছিলাম হয়তো বা পিঠা অর্ডার করেছে। আমরা পিঠা খেয়ে চলে আসবো তখনো তিনি শুধু বসে বসে পিঠা ভাজা দেখেই চলছে।
আমি টাকা দিতে দিতে মহিলাকে বল্লাম ওনি কি পিঠা অর্ডার করেছে ওনাকে দেন তেমন কানে তুল্লেন না আসলে অনেক ব্যাস্ততার কারণে হয়তো কানে তোলে নি কথাটা। পরে ভয়ে ভয়ে ওনাকে বল্লাম আপনি কি পিঠা অর্ডার করেছেন তিনি চুপ রইলো এবং আমার আর জানার বাকি রইলো না যে ওনি পিঠা খেতে চায় কিন্তুু টাকা নেই কাছে।আমি ওনাকে সাহস করে বল্লাম কি পিঠা খাবেন বলেন তিনি মাথা নেরে লাগবে না সূচক জবাব দিলেন তবে না সূচক জবাবটি দেখে মনে হলো আমি কিনে দিলে তিনি খুশি হবে। মন চাচ্ছে খেতে লজ্জায় বলতে পারছে না।
এবার আমি বল্লাম আমি টাকাটা দেব কি পিঠা খাবেন তখন তিনি চিতই পিঠা খাওয়া ইচ্ছে প্রকাশ করলেন তবে খুবই লজ্জিত ভাবে।আমি আর ওনার পানে দ্বিতীয় বার তাকালাম না কারণ তাকালে ওনি আরো লজ্জা পারবেন।
আমি ইদানীং আর আগ বাড়িয়ে কোন মানুষ কে হেল্প করি না এর পিছনে একটা কারণ আছে।একদিন এক অসহায় বৃদ্ধ ভিখারি লোককে সাহায্য করতে গিয়ে এমন এক পরিস্থিতিতে পরেছিলাম যে আমি ভেবে নিয়েছি যে আগে থেকে কাউকে আর কখনোই সাহায্য করবো না তবে কেউ চাইলে কখনোই না করবো না।
আমি মনে করি আমার কাছে কেউ সাহায্য চাইলে আমি ধন্য।অনেক টাকা এক সাথে সাহায্য করার মতে ক্ষমতা নেই আমার কিন্তুু অল্প পরিমাণ বা নিজের সাধ্য মতো তো সাহায্য করতেই পারি।এই সুযোগ কেন হাতছারা করবো।
পিঠা খেয়ে চলে আসলাম চা খেতে। আমি চা খাই না তবে শীতের দিনে এককাপ খেতেই পারি কারণ আমার সাথে যে আছে সে তো চাখোর।পরিচিত এক চায়ের দোকানে গেলাম এবং খুব যত্নসহকারে দুকাপ চা বানিয়ে দিলেন আমরা তা খেলাম।
চা খেয়ে আসার পথে রাস্তার ধারে দেখতে পেলাম চপ সিঙ্গারার অস্থায়ী দোকান সেখান থেকে বাচ্চাদের সিংগারা কিনতেই চোখ আটকে গেলো মরিচের চপে।দুজন দুটো মরিচের চপ খেয়ে নিলাম।ঝালে আমার কান দিয়ে ধোয়া উড়ছিলো তবুও বেশ ভালো লেগেছে মরিচের চপ।
এরপর কিছু ডাল,কালোজিরে কেনার উদ্দেশ্যে গেলাম এবং পরিচিত এক দাদার কাছে গিয়ে তার দোকান থেকে নিলাম।দাদা চা অফার করলো।আমি দোকানে গেলেই ওনি চা অফার করেন।এরপর চা খেয়ে খরচ গুলো নিয়ে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি।মনে মনে শান্তি অনুভব করতে লাগলাম যে মেয়েটা আমার বড়ো হয়েছে জন্য আজ আমি মনের সুখে ঘুরতে পেলাম তাকে বাড়িতে রেখে।সব কাকাতো পুসতুতো ভাই বোন এক হয়েছে জন্য তার আর মাকে খুব কম প্রয়োজন। বেশ শান্তুি অনুভুত হলো সুন্দর সময় কাটাতে পেরে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইরিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
শীতকালীন সময়ে এই খাবারগুলো খাওয়ার মজাটাই হয় আলাদা। আর আমার কাছে তো অনেক বেশি ভালো লাগে খেতে। চিতই পিঠা দেখেই তো অনেক লোভ লাগলো। দেখেই তো অনেক বেশি খেতে ইচ্ছে করছে। পিঠা খাওয়ার পর আবার চা খেয়েছেন এটা শুনে খুব ভালো লাগলো। মজার মজার চপ গুলো দেখে তো লোভ লাগলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
গ্লু গান কিনতে গিয়ে দেখছি খুব মজা করে পিঠা খেয়েছেন। সে সাথে আবার চা খেয়েছেন চপ খেয়েছেন। আসলে মাঝেমধ্যে এরকম সুযোগ গুলো পেলে হাতছাড়া করতে ভালো লাগে না। মজা করে তো খেয়েছেন, সে সাথে আবার ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে লোভ লাগলো।
হ্যাঁ আপু গ্লুগান কিনতে গিয়ে খুব মজা করে পিঠা খেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।