ব্যাগ বদল❤️

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

হ্যালো,

আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।

InShot_20241217_201931555.jpg

পৃথিবীতে ব্যাগ বদলের মতো কষ্ট মনে হয় আর কোথাও নাই।আসলে আমাদের ব্যাগে যা কিছু থাকুক না কেন মানে হোক তা কমদামি বা বেশি দামি তাই আমাদের অনেক কিছু। যারা তাদের ব্যাগ হারিয়েছে বা কারো সাথে ব্যাগ বদল হয়েছে চলার পথে বাস বা ট্রেনে সে ছারা এই কষ্ট কারো বোঝার ক্ষমতা নাম।

আবার যারা চিটার বাটপার লোক তাদের কথা ভিন্ন। বাটপার লোকজন তাদের ব্যাগ অন্য যাত্রীর ব্যাগের সাথে ইচ্ছে করে বদল করে এবং অন্যদের জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। অনেক কম দামী জিনিসপত্র রাখে ব্যাগে।আবার অনেক যাত্রীর ব্যাগে দামি জিনিসপত্র ও গহনা থাকে আর সেগুলো হাতিয়ে নেয় সেই চক্র টি ব্যাগ বদলের মাধ্যমে।কারণ এরকম ব্যাগ বদল করতে পারে ট্রেনে এবং নরমাল বাস গুলোতে।

অনেকের আবার আকাঙ্খিত ভাবে ব্যাগ বদল হয়ে যায়।সেরকমই একটা ঘটনা আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো।তো চলুন দেখা যাক ঘটনাটি কেমন ছিলো।

আমার বর তিন বছরেরর ও বেশি সময় ধরে সৈয়দপুর ক্যান্টমেন্টে কর্মরত আছে।প্রথম যখন খাগড়াছড়ি থেকে সৈয়দপুরে আসে তখন থেকে আজ অবদি প্রতি সপ্তাহে বাড়িতে আসতো সাপ্তাহিক ছুটিতে।বাড়িতে আসার সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে আনতেন সিএসডি থেকে।

তখন বাইক কেনেনি বাসে বাড়িতে আসতে হতো।বাড়িতে আসার সময় মাঝে মাঝে রেশন নিয়ে আসতো।রেশনের প্রথম আকর্ষণ ছিলো তেল।তেলের চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে রেশন আনতে বলতাম।

তো রেশনের তেল দশ লিটার,আটা বারো কেজি,চিনি দশ কেজি,চা পাতার প্যাকেন দুই কেজি,মসুর ডাল পাচ কেজি ছিলো।এগুলো সব একটি বস্তায় ভরিয়ে বাসের লকারে দিয়েছিলো বাড়িতে আসার সময়।

যেহেতু গেটলক সার্ভিস তবে শুধু নামেই গেট লক মাঝ রাস্তায় দাঁড়ায় ও যাত্রী ওঠা নামা করায়।সৈয়দপুর থেকে বাড়িতে আসতে সব মিলিয়ে সময় লাগে দু থেকে আড়াই ঘন্টা। তো বাসের লকারে রেশনের বস্তা রেখে বাসে ছিলো।

কোন এক যাত্রী মাঝ রাস্তায় নেমেছে এবং সে তার ব্যাগ ভেবে ভুলবশত তার বস্তা রেখে আমার বরের রাখা রেশনের বস্তা টি নিয়ে চলে গেছে।

আমার বর যখন নেমেছে এবং হেল্পার বস্তা টি সিএনজিতে তুলে দিয়েছে। সিএনজি নিয়ে সোজা বাড়িতে চলে এসেছে এবং বস্তুা নামানোর সময় বস্তুা ভেজা ভেজা লাগছিলো তখন বস্তার মুখ খুলে দেখে যে তার ভীতরে দুধের বোতল চার পাঁচটি, ফ্রিজে রাখা মাছ,দেশি মুরগি,দেশি মাছ,ছোট মাছ এসব দেখে তো আমার খুব খারাপ লেগেছে কারণ আমার দশ লিটার তেল ও এতো কিছু সব চলে গেলো।

কি আর করার মন খারাপ নিয়ে থাকতে হলো।আমি ভাবছিলাম যে আমাদের রেশনের বস্তাটি পেয়েছে না জানি কতো খুশি হয়েছে।আবার আমার মতো মন খারাপও হতে পারে তার মাছ দুধ হারিয়ে গেছে জন্য তবে আমার মনে হয় খুশি হবে কারণ তখ৷ তেলের দাম বাড়া শুরু হয়েছিলো।আর রাঁধুনীদের তেল খুব পছন্দের। তেল পেলে খুশি হওয়ার কথা।

এর পর থেকে যতোবার আসতো রেশন দিয়ে বার বার তাকে বলতাম যে বাস কোথাও যাত্রী নামিয়ে দিলেই জানালা দিয়ে দেখবা নইলে হেলপারকে বলবা বার বার যে যাতে করে বদল বা হয়ে যায়।অবশ্য তার কিছুদিন পর বাইক কিনেছে এবং বাইকেই যাওয়া আসা করে।বাইকে আর ব্যাগ হারানোর কোন টেনশন নেই বল্লেই চলে।
তবে আমাদের বাড়িরতে বাইকেও বাজার থেকে আনার পথে তেল ও পোলাওয়ের চাল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা আছে।বাজার থেকে বাড়ি অবদি আসার পথে দুই লিটার তেলের বোতল মাঝ রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল আর তা এক পরিচিত ব্যাক্তি পেয়ে রেখেছিলো কারণ শ্বাশানের রাস্তায় পড়েছিলো আর
ভয়ে খাওয়ার সাহস পায়নি এবং শোনার পর দিয়েছে তবে অন্য একদিন পোলাওয়ের চাল হারিয়ে গেছে আর তা পাওয়া যায় নি।
আমার বাবার বাজারের ব্যাগ থেকে খরচ তুলে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে অনেকবারই। আমার বাবা বাজারের ব্যাগ সাইকেলে রেখে চা খেতো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতো আর এই সুযোগে ব্যাগ থেকে খরচ তুলে নিতো বাড়িতে এসে দেখতো খরচ নেই।একবার তো ইলিশ মাছ নিয়েছিলো তবে আমার দিদু ধারনা করেছিলো যে বিড়াল বা কুকুর হয়তোবা নিয়েছে তবে তারপর একদি কৃষকের জন্য পান ও সুপারি হারিয়ে গেছে তখন সিওর হয়েছে যে কেউ একজন আছে যে ব্যাগ থেকে খরচ তুলে নেন তারপর থেকে আর বাজার করে নিশ্চিন্তে রাখতো না খরচ করে নিয়েই সোজা বাড়িতে চলে আসতো।

এই ছিলো আমার আজকের ব্যাগ বদলের গল্প।আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20241217_202905.jpg

IMG_20241217_203026.png

Sort:  
 4 days ago 

এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তাই কোথাও যাওয়ার সময় নিজের ব্যাগের দিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি। নিজের ব্যাগে যত কম জিনিস থাকুক না কেনো হারিয়ে গেলে বেশ খারাপ লাগে। তাই আমাদের সবারই যাতায়তের সময় নিজের জিনিস এর দিকে খেয়াল রাখলে এই ধরনের অনাকাক্ষিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

 4 days ago 

একদমই ঠিক বলেছেন ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 4 days ago 

PhotoCollage_1734455640299.jpg

 2 days ago 

সত্যি এইরকম ব‍্যাগ বদল বেশ খারাপ ব‍্যাপার। যতই কমদামি জিনিস থাকুক না কেন এটা বেশ পেইন দেয়। যদিও আমি এখন পযর্ন্ত এই অনূভুতির স্বীকার হয়নি। তবে আপনার হ‍্যাজবেন্ডের রেশনের ব‍্যাগ বদলের কাহিনি টা শুনে বেশ খারাপ লাগছে।