গল্প পোস্ট || টাটকা প্রেম কাহিনী - শেষ পর্ব
হাই বন্ধুরা!
আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করি বন্ধুর মুখে শোনা এই গল্প আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাই চলুন আর দেরি না করে গল্পটার দ্বিতীয়বার লাস্ট পর্ব পড়ি এবং গল্প পড়ার আনন্দ উপভোগ করি।
Infinix Hot 11s
সোহেলের মনের মধ্যে টানটান উত্তেজনা। ওদিকে মেয়েটা প্রেমিকের সাথে কথা বলতে বলতে ঢুকেছে টয়লেটে। কিন্তু পানি ব্যবহার করতে গিয়ে মোবাইলটা যে ব্যবহার করে ফেলেছে সেটা আর কে জানতো। মোবাইলটা হাত থেকে স্লাবের মধ্যে পড়ে সরাসরি পায়খানার নিচে। হায়রে প্রেম প্রেমিকের সাথে এতই কথা বলতে বলতে শেষ পর্যন্ত মোবাইলটা পায়খানার নিচে। সোহেল উঠানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, আর মাঝেমধ্যে যেদিকে টয়লেট রয়েছে সে দিকে তাকাচ্ছে, কখন খালাটা বের হয়ে আসবে। হঠাৎ এর লক্ষ্য করে দেখে মেয়েটা কান্নারত অবস্থায় টয়লেটের ওপার থেকে বাড়ির ভেতরের দিকে ঢুকছে। সোহেল প্রশ্ন করল কি হয়েছে কিন্তু মেয়েটা উত্তর দিচ্ছে না। সোহেল মনে করছিল আনন্দের সাথে টয়লেটের দিকে গেছে, মনে হয় প্রেমিকের সাথে গল্প করতে করতে ঝগড়াঝাঁটি হয়ে গেছে টয়লেটে বসে। তাই মেয়েটা কান্নারত অবস্থায় বের হয়ে আসছে। সোহেল একাধিকবার প্রশ্ন করে কিন্তু মেয়েটার উত্তর দেয় না। সোহেল যখন বারবার প্রশ্ন করে তখন মেয়েটা আরো চোখের পানি নাকের পানি ফেলতে থাকে। এমন দৃশ্য দূর থেকে সোহেলের মামনি লক্ষ্য করে। সোহেলের মামনি এসে সোহেলকে প্রশ্ন করে কি হয়েছে? সোহেল তার মামনিকে বলে আমারও তো একই প্রশ্ন? সোহেলের মামনি তার বোনকে ঘরে মধ্যে নিয়ে প্রশ্ন করে কিন্তু সে কোন উত্তর দেয় না। কোন কিছু না জেনে না ভেবে ছোট বোনকে বকতে থাকে। সে বোনকে বলে কোন পর পুরুষের সাথে যেন শুনি না প্রেম করছিস। তোর দুলাভাই ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দিবে। যদি শুনে পর পুরুষের সাথে সম্পর্ক রয়েছে তাহলে হাত পা ভেঙ্গে ঘরে রেখে দেবো। সোহেল এ কথাগুলাই শুনতে পাচ্ছে। কিন্তু সোহেলের মনের মধ্যে চিন্তা অস্থির করে তুলেছে। কখন মামনির বোন বাইরে আসবে এবং অচেনা সুন্দরীর রূপসী এক মেয়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে দেবে,মোবাইলে কথা বলিয়ে দিবে।
মামনির বোন সে তো ঘরে গেছে তা গেছে। সোহেলের মেজাজ বিগড়ে উঠলো। মেয়ে মানুষের কথা শুনে কেউ অপেক্ষা করে। সোহেলের মনের খবর পড়ছে না মামনির বোন। সে বারবার ইঙ্গিত দিয়ে মামনিকে জোরেশোরে বলছে মামনি বাড়ি চলে গেলাম। সে মূলত মামনির বোনকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, সোহেলে বাড়ি চলে যাওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে। সে যেন দ্রুত এসে সোহেলকে সেই রূপসী মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং মোবাইল নম্বর দেয়। কিন্তু সোহেল তো আর জানে না মামনির বোনটা টয়লেটে বসে প্রেমিকের সাথে কথা বলতে গিয়ে মোবাইলটা টয়লেটের মধ্য পড়ে গিয়েছে। আর এজন্য মেয়েটার মন খারাপ। সোহেল কোন সাড়াশব্দ পেল না। প্রচন্ড রাগ আর খোব নিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি চলে আসলো। কবে কখন মেয়েটা বাড়ি চলে যায়। হঠাৎ একদিন সোহেলদের মোবাইলে মেয়েটা তার বাবার মোবাইল দিয়ে ফোন করেছেন। মেয়েটা বলে যে আমি দুলাভাইদের বাড়িতে আসবো মামা আপনি আসেন। সোহেল ঘটনা জানতে চাই, সেই দিন গিয়ে অপেক্ষা করে কোন কাজ হয়নি আজকে কেন আবার যাবে। সে বলেছিল আপনি আসেন, বিস্তারিত বলবো। রাগ যতই হোক না কেন অচেনা একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক হবে প্রেম হবে মোবাইল নাম্বার পাবে এমন আশাতে সোহেল আবার চলে যায়। নানি বাড়ি গিয়ে সোহেল অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু মামনির বোন মামা বাড়িতে এখনো আসলো না। আবারো সোহেলের মনের মধ্যে রাগ বাতাসের বেগে ছুটে চলছে। সোহেল মনে মনে ভাবছে এলাকায় কত মেয়ে রয়েছে। ক্লাসে কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে হয়েছে। সে নম্র ভদ্র একটা ছেলে যার জন্য প্রেম করতে পারে না। গ্রামের মানুষ কি বলাবলি করবে না বলবে বাড়ি থেকে সমস্যা সৃষ্টি হবে তাই সে গোপনে প্রেম করার ইচ্ছে করে রয়েছে। তাই বলে এত ভোগান্তির শিকার হতে হবে তার। সোহেল যখন সন্ধ্যাবেলায় বাড়ি চলে আসবে সেই মুহূর্তে মামনির বোন মামনির কাছে ফোন দিয়েছে। জানতে পারলে সোহেল এসেছিল এখন বাসায় চলে যাবে। তখন মেয়েটা বলল সোহেল মামাকে আজকে থেকে যেতে বল। আমি কালকে তোমাদের বাসায় আসব। সোহেল মামার সাথে একটু দরকার আছে। তখন সোহেলের মামনি ভাবতে থাকলো ভাগ্নের সাথে আমার বোনের কি এত দহরম মহরম যা আমাকে বলা যাবে না। মামনি সোহেলকে কোন সন্দেহ করে না। সে ভাবছিল হয়তো তার বোন কোথাও প্রেম করেছে, সোহেলের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। সে আবারো তার বোনকে শাসিয়ে কথা বলল। কখনো যেন শুনিনি কোন ছেলের সাথে প্রেম করছিস। এদিকে সোহেলকে কিছু বলতে পারেনা। মামনি হলেও সমবয়সী। আর কিবা বলবে ভাগ্নের কাছে।
পরের দিন সোহেলের মামনির ছোট বোনটা এসে সোহেলের নানি বাড়িতে উপস্থিত হল। সোহেলের মধ্যে আবারো উৎসাহ জেগে উঠেছে। হয়তো এবার কোন একটা মেয়ের সাথে কথা বলতে পারবে যোগাযোগ হবে প্রেম হবে। যেহেতু মামনির ছোট বোন। নিশ্চয়ই খালা তার মামাটার জন্য মানান মেয়ে ম্যানেজ করেছে। নিশ্চয়ই তার সাথে সুন্দর মিল মহব্বত রয়েছে। এমন কত চিন্তা সোহেলের মনের মধ্যে। অতঃপর সুযোগ বুঝে মামনির বোনের সাথে সোহেলের অনেক কথা হতে থাকলো। কিন্তু সে লাইনের বাইরে কথা বলছে সব সময়। সোহেলের মনের মধ্যে রয়েছে কখন সে কথা বলিয়ে দিবে আবার মোবাইল নম্বর দিবে সে মেয়েটার। এরপর সোহেল জানতে চাইলো সেই দিন কি হয়েছিল। মেয়েটা মন খারাপ করে সবকিছু খুলে বললো সোহেলের কাছে। বিষয়টা সোহেল জানতে পারলে বুঝতে পারল, মনে মনে হাসি ঠেকাতে পারছে না। তখন সোহেল বুঝলো প্রেম করাতে অনেক যন্ত্রণা রয়েছে দেখছি। আবারো নাকি খালার সেই প্রেমিকা একটা মোবাইল ম্যানেজ করে দিয়েছে। গল্প শুনতে শুনতে আমাদের এক বন্ধু বলে উঠলো "সত্যি তো প্রেমের মরা জলে ডুবে না,মোবাইল টয়লেটে গিয়েছে তা কি হয়েছে!" এই নিয়ে অনেক হাসাহাসি। এরপর সহেল আবারো গল্প বলতে থাকলো।
সোহেল তখন প্রশ্ন করলো তাকে নিয়ে খালা কিছু ভেবেছে নাকি। তখন মেয়েটা বলল মামা আপনার জন্য একটি সুন্দর মেয়ে ম্যানেজ করেছিলাম। আপনার ছবি আমার আব্বার মোবাইলটার মধ্যে ছিল। মেয়েটাকে আপনার ছবি দেখিয়েছিলাম। মেয়েটা আপনাকে পছন্দ করেছিল। তবে কিছুদিন আগে মেয়েটার এক চাকরিজীবী ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে গেছে। সোহেল প্রেম না করতে হৃদয়ে আঘাত পেল। এমন কথা শোনার জন্য এতদিন অপেক্ষা করছে সে। তার খুব ইচ্ছে হলো মেয়েটা দেখতে কেমন ছিল। বিয়ে হোক আর না হোক সেটা বড় কথা নয়। সোহেল সেই মেয়েটাকে এক পলক দেখতে চাই। খালা সান্ত্বনা দিয়ে বলল মামা আপনি চিন্তা করবেন না, কোন একদিন আপনার সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দিব কিন্তু ভালোবাসতে যাইয়েন না। আমি আপনার সাথে অন্য মেয়ের লাইন করিয়ে দিব। এদিকে সোহেল জানতে চাইলো তাদের প্রেমের কি খবর। তখন মামনির বোন অর্থাৎ খালাটা সোহেলকে বলল সে তার সাথে প্রেম করছে কিন্তু এখন বিয়ে করতে রাজি নয়। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তারপরে বিয়ে করবে। ততদিন আমার বাবা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিবে কিন্তু তার ঠিক নেই। তখন সোহেল ভাবল এটাও তো আরেক যন্ত্রণা। ছেলেটা প্রেম করে প্রেমিকাকে ঘরে আনার সাহস পাচ্ছে না। এদিকে প্রেমিকার জন অস্থির কবে তার সাথে বিয়ে হবে। এদিকে মনের মধ্যে ভয় রয়েছে না জানি পিতা-মাতা জোর করে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। যাই হোক সোহেল অনেক কথাই বিস্তারিত বুঝতে পেরেছিল শুধু প্রেম করা প্রেম নয় এর মধ্যে অনেক যন্ত্রণা রয়েছে। সে প্রেম করার জন্য অস্থির রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা দেখে বুঝতে পারল প্রেম করার জন্য মন অস্থির হোক আর নাই হোক, প্রেম করার পরে যন্ত্রণা অনেক বেশি হয়। যদি এখন এই ছেলে মেয়ে দুইটার বিয়ে না হয় তাহলে তাদের অবস্থা কোন দিকে যাবে। যারা চুরি করে হলেও দিনরাত যে কোন ভাবে যোগাযোগ রাখে। এরপর এ বিষয়ে আর তেমন কোন কিছু জানা হয়নি। তবে এটাই বুঝতে পারলাম এই সমস্ত ঘটনাগুলো মানুষের শিক্ষা দেয়। যে বিষয়গুলো বুঝতে পেরে এ থেকে বিরত থাকবে তার জন্যই মঙ্গল। যাই হোক, আমাদের বন্ধুরা সোহেলকে সান্ত্বনা দিয়ে বলছিল তোর তো এখনো প্রেম হয়নি। মনের মধ্যে প্রেম প্রেম ভাব রয়েছে অর্থাৎ তোর প্রেম টাটকা। তোর টাটকা প্রেম বাসি করার দরকার নেই। এই নিয়ে বন্ধুদের মাঝে সত্যিই অনেক হাসি আনন্দ ছিল।
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
| ফটোগ্রাফি | ফুল |
|---|---|
| বিষয় | অতীত ঘটনা |
| ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
| ব্লগার | Sumon |
| ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ |




Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
07-03-2025