হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি উপস্থিত হয়েছি শীতকালে স্টিমিটের টাকা তুলে মায়ের কাপড় কিনে দিয়েছিলাম সেই অনুভূতি নিয়ে। আশা করি আমার এই ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।
সকল পিতা-মাতা আশা করেন তার সন্তান মানুষ হোক, ভালো কোন কর্মে নিয়োজিত হোক অথবা সরকারি চাকরি করুক। আর সেই কর্মের উপার্জনের টাকা দিয়ে তাদের কোন কিছু কিনে দিক। ঠিক তেমনি প্রত্যেকটা সন্তানের মধ্যেও আশা থাকে পিতা-মাতা কষ্ট করে লালন পালন করে মানুষ করেছে বড় করেছে। যদি প্রথম উপার্জন করতে পারি বাবা মাকে প্রথম খুশি করব। ঠিক তেমনি আমার আজকের এই বিষয়টা।
একদিন স্টিম বিক্রয় করে তিন হাজার মত টাকা উঠেছিলাম। এই মুহূর্তে আমি আশা করেছিলাম এই টাকার মধ্যে থেকে দুই হাজার টাকা মায়ের জন্য খরচ করব। প্রথমে মনে করলাম গাংনী বাজারের মার্কেট থেকে মায়ের জন্য শাড়ি কিনে আনব। তবে এরপর আবার মনে হলো মায়ের মনের মত হবে কিনা সেটাও তো ঠিক বলতে পারছি না। এর সাথে ইচ্ছে ছিল ছায়া ব্লাউজের সিট কিনে আনব। প্রথমে মনে করেছিলাম সারপ্রাইজ আকারে দেবো পরবর্তীতে দেখলাম তারা নিজের হাতে নিজের মত করে যদি কিনে নেন তাহলে বেশি ভালো হয়। তাই এই বিষয়টা আমি আমার মায়ের কাছে বললাম। জীবনে প্রথম মাকে শাড়ি কিনে দিবো এটা শোনা মাত্র মা খুবই আনন্দের সাথে হেসে উঠছিল। এরপর বলেছিল বাপ তোর বড় ভাই কিনে দেয় এতে আমার হবে, তুই বেকার, তোর টাকা তুই তোর কাজে লাগা। আমি বলেছিলাম, মা বেকার বলে কি আমার শখ ইচ্ছে নেই। এই কথা শোনা মাত্র মা আর কিছু বলল না।
পরবর্তীতে মা বলেছিল আমার ছোট বউকে কিছু কিনে যাও। মনে মনে ভাবলাম এ মাসের মধ্যে তার পিছনে বেশ কিছু টাকা খরচ করেছি কসমেটিক কাপড়ের আর অন্যান্য জিনিসের জন্য। আমি বলেছিলাম আমি তো তাকে অনেক কিছুই দিচ্ছি কিন্তু আজ পর্যন্ত মায়ের জন্য তো কিছু কিনে দেয়া হলো না। এরপর মা আর কথা বাড়ালেন না। বললেন আমাদের গ্রামে অনেক শাড়ি বিক্রেতা আসে তার মধ্যে তোমার আব্বা আশরাফুল গাড়িয়ালার কাছ থেকে কিনে দেয়। তাহলে ওই ছেলেটা যেদিন আসবে, সেদিন তাকে দাঁড় করাতে বোলবো। আমি বলেছিলাম আচ্ছা ঠিক আছে মা যখনই আসবে তখনই আমাকে বলবে তোমার পছন্দমত কাপড় নিয়ে নেবে। আর আমি টাকা দিয়ে দিব। ঠিক তেমনি একদিন উনি আসলেন তাকে ডাকা হল। এরপর সেখানে দেখার মত দুই টা শাড়ি বের করে আব্বা আমার হাতে দিয়ে বললেন দেখো এই দুইটা আমার পছন্দ হচ্ছে। আমি বলেছিলাম আমার পছন্দের কিছু নেই পছন্দ হতে হবে আম্মার। আম্মা যদি দুইটাই পছন্দ করে দুইটা কিনে দিন।
আব্বা কাপড়ের ভ্যান গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে থাকলে। আমি কাপড় দুইটা নিয়ে মায়ের কাছে আসলাম। এরপর আমার হাতের কাপড় দেখে মা অনেক খুশি হলেন। আব্বা চেয়ে থাকলে, এরপর সে দুইটার মধ্যে থেকে একটা বাছাই করলেন আম্মা, আমি দুইটাই নেওয়ার কথা বলেছিলাম কিন্তু উনি বলেছিলেন না আমার নতুন কাপড় আছে। এরপর তবে আমি একটা জিনিস বেশি লক্ষ্য করে দেখলাম কাপুরের গাড়ির পিছনে বিক্রেতার নাম মোবাইল নম্বর দেওয়া রয়েছে। হয়তো পরিচিত হওয়ার জন্য আবার প্রয়োজনে মানুষ যেন ফোন দিতে পারে এজন্য তার পরিচয় লিখে রেখেছে। আমিও সুযোগে ফটো করে রাখলাম।
যাহোক এরপর আম্মা পছন্দ করলেন সেই কাপড়টা নিয়ে এসে উনার কাছে দেখানো হলো। এরপর বিষয় আসলো দামের। এখানে দাম নিয়ে আমি কোন কথাই উল্লেখ করবো না। তাই আমি আমার আব্বার হাতে দুই হাজার টাকা আগেই ধরিয়ে দিয়েছি। শুধু আব্বার কাছে এটুকুই বলে রেখেছিলাম মায়ের যেটা পছন্দ হবে সেটাই যেন কিনে দেওয়া হয়। এরপর আমি সেখান থেকে সরে আসলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি মায়ের পছন্দের কাপড়টা আব্বা আমাকে ডেকে হাতে দিলেন। আমি দাম জানতে চাইলাম না শুধু এটাই ভালো লাগলো জীবনে প্রথম মায়ের জন্য একটা শাড়ি কিনছি। আর এই জন্য আমার অনেক ভালো লাগছিল। এদিকে আব্বাকে বলেছিলাম বাকি টাকা দিয়ে মায়ের জন্য ছায়া ব্লাউজের সিট কিনে এনে দর্জিবাড়িতে দিবেন। টাকা লাগলে আবারও আমি দিবো। আম্মাকে খুশি করাতে চাই। কথা শুনে আব্বা বেশ হাসছিলেন। এখন হয়তো আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন আপনার আব্বার জন্য কোন কিছু কিনে দিলেন না কেন? আমি আমার ছোট্ট এই জীবনের যাই ইনকাম করেছি তার তিন ভাগের দুই ভাগ সবসময় আব্বাকেই দিয়ে দেই। তাই এক্ষেত্রে আর আব্বাকে কোন কিছু নিজ থেকে কিনে দিতে হবে নতুন কোন ভালো লাগা বা ইন্টারেস্টিং এর মধ্যে ছিল না। তবে সবাই খুশি হয়েছিলেন আমার এই শাড়ি কিনে দেওয়া দেখে।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি অনুভূতি শেয়ার করার জন্য। কি আর বলব ভাইয়া ছেলের কাছ থেকে যখন মা কোন উপহার পেয়ে থাকে মায়ের কাছে সেটি একদম সোনার চেয়ে ও দামি মনে হয়। মনে হচ্ছে গ্রামের যে কাপড় বিক্রি করতে আসে সেখান থেকে আপনি আপনার মায়ের জন্য খুব সুন্দর একটি কাপড় ক্রয় করলেন। কাপড়টির কালার দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে দারুন হয়েছে কাপড়টি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এতো সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাই, বাইরে থেকে এনে দিলে যদি পছন্দ না হতো। তাই তার ইচ্ছেমতো নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলাম।
মায়ের তুলনা কারো সাথে করা যায় না। মায়েরা ছোটবেলা থেকে যেভাবে আমাদের বড় করেছে সেটা যদি আমরা একবার চিন্তা করি তাহলে হয়তো লক্ষ কোটি টাকা মায়ের জন্য খরচ করলেও বিন্দুমাত্র শোধ হবে না।তবে আপনি প্রথমবার মায়ের জন্য শাড়ি কিনে দিয়েছেন শুনে খুব ভালো লাগলো।মায়েরা দোয়া দিয়েই সন্তানদের উপরে তুলে দেয়। ভালো লাগলো পোস্টটা পড়ে।
একদম ঠিক বলেছেন আপু
আপনার অনুভূতি পড়ে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে সন্তান যখন মায়ের জন্য কোন কিছু কিনে দেয় তখন অনেক বেশি খুশি হয়ে যায়। হোক সেটা অল্প টাকার জিনিস। কিন্তু তার কাছে মনে হয় এটা পৃথিবীর সবচেয়ে দামি জিনিস তার জন্য কিনে দেওয়া হয়েছে। আপনি আপনার মায়ের জন্য প্রথম শাড়ি কিনে দিয়েছেন দেখে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
হ্যাঁ ভাই এটাই প্রথম কিনে দিলাম
আমি মনে করি বউদের এমন অযুক্তিক কথা না শোনা উত্তম। আপনি অনেক ভালো একটা কাজ করেছেন মায়ের পছন্দ মতো একটা শাড়ি কিনে। আসলে মাকে দিলে কখনো কমে না। আর বর্তমান সমাজে বউয়েরা ভাবে শাশুড়িদের কিছু দিলে কম হয় তাদের। আসলে এটা ভাবা মোটা ও ঠিক নয়। ধন্যবাদ আপনাকে।
সব মেয়েরা এক রকম হয়না আপু
আসলে বাবা মা কে খুশি করার জন্য বেশি কিছু লাগে না।তারা সন্তানদের থেকে অল্প কিছু পেলেই অনেক খুশি হয়ে যায়। আপনি দেখছি আপনার মা কে একটি শাড়ি কিনে দিয়েছেন।শাড়ি কিনে দেয়া দেখে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে এই সামান্য উপহারের মাধ্যমেই আপনার মা অনেক খুশি হয়েছিল।
হ্যা, উনি অনেক খুশি হয়েছিলেন
ভাই আপনি বেশ ভাগ্যবান যে আপনার মা বেচেঁ আছে। আর মায়ের প্রতি ভালো বাসা থেকে আপনি মায়ের জন্য কাপড় কিনতে পাগল ছিলেন। আসলে প্রতিটি মা ই চায় যে তার সন্তান যেনে ভালো থাকে। তাই তো আপনার মা ও তাই চেয়েছে। তবে বেশ ভালো লাগলো এতটুকু যেনে যে অবশেষে আপনি আপনার মায়ের জন্য কাপড় কিনতে পেরেছেন। বেশ ভালো লাগলো আজকের পোস্ট পড়ে।
হ্যাঁ আপু কিনে দিয়েছিলাম
প্রতিটা বাবা-মা আশা করে তার সন্তান যেন মানুষের মত মানুষ হতে পারে। প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আপনি একদিন তিন হাজার টাকার মতো স্টিম বেচে চিন্তা করলেন। বাবা মার জন্য কাপড় কিনবেন। অবশেষে আপনি আপনার মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছেন,এটাই আপনার জীবনের সার্থকতা। ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে আমরা প্রতিটা ছেলেমেয়ে চায় আমাদের বাবা মা যেন ভালো থাকে।এমন সন্তান যেন প্রতিটি ঘরে ঘরে হয়, আপনার ইনকামের দুই ভাগ আব্বাকে দিয়ে দেন।ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া। ভাইয়া দিনশেষে আপনার স্ত্রী আপনার আপন। আপনার কখনোই এটা ঠিক হয় নাই, নিজের স্ত্রীকে ছোট করা। আসলে নিজের পারিবারিক ব্যক্তিগত ব্যাপার নিজের মধ্যে রাখবেন। একটা সময় ঠিকই আপন ভাবে চলতে থাকবেন। শুধু মানুষের মধ্যে এই ধোঁয়াশা সৃষ্টি হবে। আপনাদের পরিবারের জন্য দোয়া রইল। তারা যেন সুন্দরভাবে সঠিক বুঝ দান করতে পারে। প্রতিটা মানুষ যেন সুন্দর মন মানসিকতা হয়। স্বামী হিসেবে আপনাকে দুদিকেই সমানভাবে চলতে হবে নাহলে দুনিয়া বেশ কঠিন।
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার এই সুন্দর অনুভূতিটা পড়ে। আপনি প্রথম আম্মার জন্য শাড়ি কিনে দিয়েছিলেন আমার মনে আছে। তবে সব মানুষ কিন্তু একরকম নয়। সে একটু বোকা টাইপের এটা আমি জানি, এইজন্য তার মায়ের কথায় ওঠাবসা করে। হয়তো বুদ্ধি জ্ঞান ঠিক হয়ে যাবে তার। আমি কিন্তু অনেক খুশি ছিলাম আপনার এই কাপড় কেনার দিন। আমি ওর সাথে চয়েজ করে দিয়েছি। খুব ভালো লাগলো শীতের সময়ের সেই স্মৃতি আজ ব্যক্ত করেছেন দেখে।
হ্যাঁ একদম ঠিক কথা। তাই যেন হয়