পাঙ্গাস মাছের খাবার তৈরির অটমিল ভ্রমণ

in আমার বাংলা ব্লগ13 days ago


আসসালামু আলাইকুম




হাই বন্ধুরা!

কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে ভ্রমণ করে ধারণা দিতে চলেছি পাঙ্গাস মাছের খাবার তৈরির অটোমিল সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে এখনই বিস্তারিত আলোচনা শুরু করি।


IMG_20240421_084434942_BURST0003.jpg
Photography device: Infinix Hot 11s
লোকেশন


মাছের খাবার তৈরির অটোমিল ভ্রমণ:



আমাদের পার্শ্ববর্তী গ্রাম "১৬ টাকা"। গ্রামটা গাংনী মেহেরপুরের উত্তর পূর্ব দিকে অবস্থিত। আমাদের গ্রাম থেকে কিছুটা পশ্চিম উত্তর কোণ। এলাকার মধ্যে পাঙ্গাস চাষ এর জন্য বিখ্যাত। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ তাদের পরিবারের উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে মাছ চাষের উপর নির্ভর করে। দীর্ঘ ১৫ থেকে কুড়ি বছর ধরে এখানে পাঙ্গাস চাষ হয়ে আসছে। তাই এখানে মাছ চাষ বিষয়ে বেশ অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যেমন বিভিন্ন কোম্পানির খাবারের ডিলার, দোকান থেকে শুরু করে খাবার তৈরির ছোট মিল অথবা বড় অটমিল কারখানা। শীতের সময় পেরিয়ে গেছে, ফাল্গুন চৈত্র মাসে পাঙ্গাসের প্রত্যেক বছর একটা ভাইরাস লেগে থাকে। এতে মাছের অনেক ক্ষতি হয়। ঠিক সেই পর্যায় সবাই কাটিয়ে উঠেছে কোন মতে। এখন মাছের অতিরিক্ত খাবার দেওয়া এবং পুকুরে পানি দেওয়ার সময়। অর্থাৎ মাছ চাষের উপযুক্ত সময় চলছে এখন। তাই যে যার মত মাছের খাবার সংরক্ষণ করছে যেভাবে পারে। অনেকে প্যাকেটজাত কোম্পানির খাবার খাওয়াচ্ছেন। আবার অনেকে আমাদের মত অটো মিল থেকে খাবার তৈরি করে এনে খাচ্ছেন।


IMG_20240421_084415_465.jpg

IMG_20240421_084409_799.jpg



পাশের গ্রামটাতে বড় একটি অটমিল থাকায় আমরা সেখানে উপস্থিত হলাম। সেখানে ম্যানেজার এবং ক্যাশিয়ারের সাথে বেশ আলাপ-আলোচনা করলাম। বর্তমান বিভিন্ন খাবারের উপাদান গুলোর দাম কেমন অটমিল ঠিক আছে কিনা, লেবাররা ঠিকঠাক কাজ করে দিবে কিনা। কবে খাবার তৈরি করে দিতে পারবে, কত খরচ হবে বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনা হল। তবে এই মুহূর্তে আব্বুকে সাথে নিয়ে গেছিলাম। উনি হিসাব নিকাশের বিষয়টা সহকারী ক্যাশিয়ার হাসান চাচার সাথে কথা বলল। আর এরি ফাকে আমি অটো মিলের চারিপাশ ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম। অটমিল আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। দেখলাম বড় এরিয়া সর্বত্র জুড়ে বিভিন্ন প্রকার মাছের খাবার সংরক্ষণ করেছে আমাদের মত মাছ চাষীরা এবং সেখানে জমা করে রেখে গেছে। মাছের খাবারের উপাদান হিসাবে পালিশ গুড়া, বিভিন্ন ডালের গুড়া, সরিষার খোল, ভুট্টো, গমের ময়দা, লবণ, এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির ভিটামিন জাতীয় খাবার সংরক্ষণ করতে হয়, আমরা বেশ কিছু বাইরে থেকে সংরক্ষণ করে এনেছি। এদিকে কুষ্টিয়ার পোড়াদহ খাজা নগর জয়নগর থেকে পালিশ গুড়া গুলো সংরক্ষণ করি আনি। আর সেগুলা এখানে জমা করে রাখি সিরিয়াল মোতাবেক। যখন যতটুক প্রয়োজন খাবার তৈরি করে নেওয়া হয়। আশা করি কিছুটা বুঝতে পেরেছেন। যাইহোক এই সমস্ত বিষয়ে এরপর খাবার তৈরি লেবার খরচ মিলে কত খরচ হবে সে বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। আর এই বিষয়ে যেহেতু আব্বা আলোচনা করছে তাই আমার সুযোগ হলো সম্পূর্ণ এরিয়াটা ঘুরে দেখার। ভেতরে ঠিক সেই সমস্ত খাবারের উপাদান অনেক মানুষ সংরক্ষণ করে এনে জমা করে রেখে গেছে।


IMG_20240421_084407_281.jpg

IMG_20240421_084404_143.jpg



আমরা যে মুহূর্তে অটো মিলে অবস্থান করেছিলাম তখন লোডশেডিং চলছিল। এজন্য আর ভেতরে বেশি প্রবেশ করলাম না কারণ প্রচন্ড গরম। এরপর বাইরে থেকে হিসাব মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। আর এর সুযোগে প্রতিষ্ঠানটার পশ্চিম কর্নারে থাকা বাগানের মধ্যে প্রবেশ করে আমি বিভিন্ন ফুলের ফটো ধারণ করার চেষ্টা করলাম। বাইরে থেকে বড় গেটের ভেতরে প্রবেশ করতে লক্ষ্য করেছিলাম গেটের পাচিলের দুই পাশ দিয়ে খুব সুন্দর করে বিভিন্ন পর্যায়ের গাছ লাগানো। এরপর ভেতরের পশ্চিম কন্যারে বড় একটি অংশ জুড়ে ফুলের বাগান। সেখানে গোলাপ ফুল, রঙ্গন ফুল, নয়ন তারা ফুলসহ নাম না জানা অনেক ফুলের গাছ দেখতে পারলাম। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন পাতাবাহারের গাছ।


IMG_20240421_084622_717.jpg

IMG_20240421_084603_771.jpg

IMG_20240421_084659_831.jpg

IMG_20240421_084459_634.jpg



আরো ইচ্ছে ছিল চারিপাশটা আপনাদের ফটোগ্রাফি করে দেখাবো কিন্তু প্রচণ্ড রোদ গরমের কারণে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এমনিতে বুঝতে পারছেন অটো মিলের এরিয়া, ভ্যাপসা গরম লেগে থাকে সবসময়। আর এদিকে সকালের উঠতি রোদ আর লোডশেডিং এর মুহূর্তে বাইরে থেকে এসে হঠাৎ সেভাবে ঘুরে ঘুরে ছবি উঠানো সম্ভব হয়নি। তবুও এমন সুন্দর সুন্দর যদি প্রতিষ্ঠান গ্রামের মধ্যে গড়ে ওঠে তাহলে সত্যি আমাদের গ্রামবাসী যারা মাছ চাষে নিয়োজিত রয়েছে তাদের বাইরে খাবার তৈরি করে আনার জন্য যেতে হয় না। আবার কোম্পানির বেশি রেটের খাবার খাওয়ানোর প্রয়োজন হয় না। নিজেরা ইচ্ছে মতো ভালো উপাদান দিয়ে খাবার বানিয়ে দ্রুত মাছ বড় করতে সক্ষম হয়। তাই এলাকার মধ্যে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো মাছ চাষ উন্নয়নের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।


IMG_20240421_084636_677.jpg

IMG_20240421_084641_891.jpg


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

ব্লগারsumon09
মাছের খাবার তৈরিরঅটো মিল ভ্রমণ
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
লোকেশনষোল টাকা, গাংনী-মেহেরপুর
ক্যামেরা50mp
দেশবাংলাদেশ


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 13 days ago 

এই, অটো মিলে আমি এবং আপনি একবার গিয়েছিলাম আমার মনে আছে । আবারও মিলে পাঙ্গাস মাছের খাবার তৈরি করতে গিয়েছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। পাঙ্গাস অনেক লাভজনক একটা মাছ, দোয়া করি আপনাদের মাছ চাষে যেন বরকত আসে আমীন।

 12 days ago 

হ্যাঁ আমরা দুজন গিয়েছিলাম তো।

 12 days ago 

অটমিলটি যে অনেকটাই বড় সেটা আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভাই। তবে গ্রামের নাম "১৬ টাকা " প্রথমবার শুনলাম। নতুন একটা গ্রামের নাম শুনে বেশ ভালোই লাগছে। যাইহোক,লোডশেডিং থাকার কারণে ভেতরে অত্যন্ত গরম ছিল বলে আপনি বাইরে বেরিয়ে এত সুন্দর কিছু গাছ দেখতে পেলেন। বেশ অনেক ধরনেরই গাছ রয়েছে দেখলাম সেখানে। সব মিলিয়ে দারুন একটি উপস্থাপনা ছিল আপনার।

 12 days ago 

হ্যাঁ আপু গ্রামের নাম ১৬ টাকা

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 64172.03
ETH 3144.93
USDT 1.00
SBD 3.85