হাই বন্ধুরা!
কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে। তাই সুযোগ পেলে আমারও ভ্রমণ করতে যেতে ইচ্ছে জাগে দেশের যে কোন প্রান্তে। তবে ভ্রমণ করতে যাওয়ার পিছনে থাকে মেলা রকম অনুভূতি। ঠিক তেমনি ভ্রমণ কাহিনী আজকে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। আর এটা হচ্ছে আমাদের নিকটস্থ বামন্দি বাজার।
Selfie device: Infinix Hot 11s
বামুন্দি বাজার
একদিন মন মানসিকতা খুবই খারাপ ছিল আমার। ইচ্ছে হচ্ছিল না কোন কাজ করি বা কোথাও যায়। সেদিন আমি স্টিমিটেও কাজ করি নাই। বসেছিলাম মাঠে পুকুর পাড়ে একটি বাগানে। হঠাৎ মারুফ আমাকে ফোন দিয়ে বলল কোথায় আছিস কি করিস। আমি বললাম বসে রয়েছি। বিস্তারিত শোনার পর সে বলল চল তাহলে একটু বামুন্দি বাজার ঘুরে আসি। আমি তখনও খাওয়া দাওয়া করিনি গোসল করিনি বামুন্দি বাজারে যাব কি। এরপরেও সে আমার জন্য অপেক্ষা করলো আর অনুরোধ করলো তাড়াতাড়ি রেডি হয়নি আমি তোর জন্য অপেক্ষা করছি। তখন মনটা আমার খুবই খারাপ ছিল বসে বসে বিরহের কবিতা লিখছিলাম। মারুফের এমন কথা শুনে বাড়ির দিকে ধীরে রওনা দিলাম। গোসল খাওয়া-দাওয়া শেষ করে প্রায়ই দেড় ঘণ্টা সময় লেগে গেল। ততক্ষণ সে আমার জন্য অপেক্ষা করলো। এরপর বামুন্দি বাজারে উপস্থিত হলাম। বেশ কিছু জিনিস কেনাকাটার উদ্দেশ্য ছিল কিন্তু আমি তো টাকা আনতেই ভুলে গেছি। আসলে মন খারাপ থাকলে কোন কিছুই মনে থাকেনা। আমি বাইরে গেলেই এমনিতে ফটো ধারণ করতে পছন্দ করি। কিন্তু সেই দিন ফটো ধারণ করার কোন মুড ছিল না।
মারুফ প্রথমে কেনাকাটা করতে শুরু করল। আর আমার নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বারবার খালি বলতে থাকলো ব্লগ করবি না ছবি ওঠা। যেন সে আমাকে জোর করে করে ফটো ধারণ করিয়ে নিল। সে যে কয়বার বলেছে ঠিক আমি সেই কয়বার ফটো উঠিয়েছি তার বেশি নিজের মন থেকে ফটো ওঠাতে যায়নি। শুধু তার কথায় কথায় একটি সেলফি তুলে ফেলেছিলাম মনের অজান্তে। কারণ আমাকে দাঁড় করিয়ে রেখে সে যে বাজার করছে, এটা আমার কাছে খুব বিরক্তিকর মনে হয়েছিল। এতটাই মন খারাপ ছিল ঐদিন। শুধু মনে মনে অনুভব করছিলাম কোন নিরিবিলি নির্জন এলাকায় একলা বসে থাকি অথবা বন্ধুদের সাথে কিছু গল্প করি একা একা। প্রথমে সে পেঁয়াজ রসুন কেনাকাটা করল বামন্দি বাজারে ফলের বাজারের দিকে থেকে। কারণ বামুন্দি বাজারে সবজি বাজার দুই তিনটা। আর সবগুলাই অনেক বড় বড়। বুঝতে পারছেন সেখানে কত জনবহুল। তাই মনটা খারাপ বেশি লাগছিল।
এরপর দ্বিতীয় সবজি বাজারে প্রবেশ করলাম। এই বাজারটা গোহাটের দিকে। আর প্রথম বাজারটা চালপোট্টির দিকে। যাইহোক এ বাজারে কাঁচা সবজি বেশি দেখা যায়। অনেক সবজি বিক্রেতা আমাকে দেখে বলছিলেন কি নেবেন মামা কম দামে পাবেন এটা নেন ওটা নেন। কিন্তু আমি নীরব শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম। এরপর মারুফ আমাকে ভালো রাখতে বারবার ফটো উঠাতে বলল। যে কয়টা ফটো ধারণ করেছি সেই কটায় শেয়ার করে দিলাম। এই বাজারের এসে সে বেশ কিছু সবজি কেনার চেষ্টা করল। আমি যে টাকা বাড়িতে ফেলে এসেছি টাকা কাছে না থাকলে নিজেকে বোকা বোকা মনে হয়। আর বাজারে উপস্থিত হলে তো টাকা বিহীন আরো বোকা মনে হয়। কিন্তু ঐদিন সবজি বাজার থেকে শুরু করে বামুন্দী বাজারের যত প্রকার বাজার রয়েছে সব জায়গা আমরা ঘুরে এলাম।
আমার কাছে টাকা নেই ভালো কথা। ওর কাছে তো টাকা আছে। আমি এমনিতেই কাঁচা শসা খেতে খুবই পছন্দ করি। কিন্তু সে গুনে গুনে কয়েকটা হবে এমন শসা কিনেছিল এক কেজি। এরপর আমার সামনে এসে উপস্থিত হয়ে বলছে নে ছবি উঠা সুন্দর একটা ব্লগ করে দিবি আজ। তখন যেন আমার মেজাজটা আরো খিটখিটে হয়ে গেল। তারপরেও নিজেকে শান্ত করে ছবি উঠাইয়ে ছিলাম। এরপর সে বেশ কিছু কেনাকাটা করছিল আমি এমনিতেই অটোমেটিক শুধু বাজারটা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম। একদিকে সবজি বাজার। আরেক দিকে জামা কাপড়ের বাজার। তারপর রয়েছে গোহাট। যেন বিশাল এরিয়া ২/ ৩ চক্কর মারলাম মন ভুলার মত। এদিকে হঠাৎ মারুফ কখন যেন আমার মোবাইলে ফোন দিয়েছে আমি নিজেও জানিনা। কিন্তু যতক্ষণ মারুফ কাছে ছিল না ততক্ষণ কোন ফটো উঠায়নি। তাই মোবাইলটা পকেটে সাইলেন্ট অবস্থায় ছিল। তবে আমি জানি বাজার শেষে মারুক একটি দোকান থেকে ডাল মসলা কিনে থাকে। এত ঘুরাঘুরি পরিবেশে উপস্থিত হয়ে দেখি হ্যাঁ মারুফ সেই দোকানে। এবার আমাকে দেখে সে রাগ ঝাড়তে থাকলো। সে যত রাগ ঝাড়লো আর আমার মন খারাপ তত কমে গেল। আমি তাকে না বলে নিরুদ্দেশের মতো বাজারে ঘোরাঘুরি করেছি। সব দ্রুত বাড়ি চলে আসবে যেহেতু তার মোটরসাইকেলে গিয়েছিলাম। আমাকে পেলে তো আর আসতে পারবে না। বিষয়টা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং হয়ে উঠল আর বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম। এরপর বলল কোন কিছু কিনবি নাকি। আমার কাছে যে টাকা নেই, কথাটা তার মনে ছিল না।
আমি হঠাৎ ইয়ার্কি করে তাকে বলে উঠলাম হ কিনব। কে বলল কি কিনবি। আমি বলছিলাম একটা দাঁ কিনব। সে আমার কথা সত্যি মনে করে দ্রুত চলে আসলো আমার আগে আগে যেখানে লোহার জিনিস বিক্রয় হয়। তারপর তাকে বললাম যে একদিন একটা ভালো দাঁ পছন্দ কর। সে পছন্দ করে ফেলল কাটারি জাতীয় একটি দাঁ। এরপর আমি তাকে বললাম টাকা বের কর। দারুন একটা দাঁ পছন্দ করেছিস। তখন ওর সরন হলো আমার কাছে তো টাকা নেই। তার এমন রাগানো ও বোকা বানানোর পর মনটা আমার আস্তে আস্তে ফ্রেস হতে থাকলো। অবশ্য দাঁ বিক্রেতা আমাদের পরিচিত ছিল। আমাদের স্কুলে লেখাপড়া করেছে আমাদের ২ ক্লাস উপরে। সেও আমাদের সাথে হাসাহাসিতে যুক্ত হলেও। এরপর সে ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিলাম।
অতঃপর বাজারে ঝালমুড়ি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে। তেলপাম থেকে মোটরসাইকেলের জন্য তেল নেওয়া হল। আর এভাবেই বামুন্দি বাজার ভ্রমণ করা হলো মন ফ্রেশ হল। আসলে মন খারাপ থাকলে, সেই মুহূর্তে বন্ধু পাশে থাকলে অটোমেটিক কোন কারণে না কারণে মন ভালো হয়ে যায়। আর ঠিক এমনই এই দিনটা ছিল ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকের একটি দিন।
পোস্ট বিবরণ
ব্লগার | sumon09 |
ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | বামুন্দি বাজার |
ক্যামেরা | 50mp |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার পোস্ট করে জানতে পারলাম যেদিন আপনার মন খারাপ ছিল সত্যি কথা বলতে ভাইয়া মন খারাপ হলে কোন কিছুই করতে ভালো লাগেনা। যাইহোক ওই মুহূর্তে আপনার বন্ধু ফোন দিয়ে বলল চলো বাংলাদেশ যাই। আসলে ভাইয়া মন খারাপের সময় বন্ধুদের সাথে কোথাও যেতে খুবই ভালো লাগে। তবে যাই হোক বা মন্ত্রী যে আপনার মনটা ভালো হয়েছে বিষয়টা জানতে পেরে খুশি হলাম। আর আপনার পছন্দের খাবার হচ্ছে শসা সেটাও আপনার বন্ধু কিনেছিল এবং খেয়েছেন বেশ ভালো লাগলো ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ তবে বানানে কিছু ভুল ছিল
মন খারাপের কারণটা এখনো ক্লিয়ার হতে পারলাম না তবে সেদিন আপনি এবং মারুফ আঙ্কেল দুজনে মিলে বাজারে কিছু কেনাকাটা করার জন্য গিয়েছিলেন । আপনার মন খারাপ থাকলেও মারুফ আঙ্কেল আপনাকে অনুরোধ করাতে আপনি রাজি হয়েছিলেন। আসলে মাঝেমধ্যে মানুষের মন খারাপ করবে এটাই স্বাভাবিক তবে সবকিছু মানিয়ে নিয়ে আমাদের চলতে হবে ভাই 🙂
সব সময় সব কারণ জানতে হয় না
অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। আপনি ঠিক বলছেন যখন মন খারাপ থাকে তখন কিছুই ভালো লাগেনা। যেহেতু আপনার বন্ধু মারুফ ডেকে নিয়ে আপনাকে বামুন্দি বাজারে নিয়ে গেল। মন খারাপ থাকলে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালো লাগে। আর আপনি বিরক্ত হয়েও খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো নিলেন। আজকে সেই মুহূর্তটি আমাদের সাথে শেয়ার করে নিলেন অনেক ভালো লাগলো পড়ে।
হ্যাঁ আপু বন্ধুর মাধ্যমে মনটা ভালো হয়েছিল।
আসলে মানুষের মন যখন খারাপ থাকে তখন ঘরের মধ্যে একা বসে থাকলে মনটা আরো বেশি খারাপ লাগে, আর মন ভালো করার একটি উত্তম পদ্ধতি হলো যখন মন খারাপ থাকবে তখন বন্ধুদের সাথে বাইরে ঘুরতে যাওয়া বা বাইরে আড্ডা দেওয়া তাহলে মনটা হয়তো হালকা পরিবর্তন হবে, তবে আপনাকে মন খারাপ দেখতে একটুও ভালো লাগে না। আমরা চাই আপনি সব সময় হাসি খুশি থাকেন এবং পরিবারের সাথে অনেক ভাল থাকেন। ধন্যবাদ আপনাকে
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।