ঈদের ছুটিতে বাবার বাড়িতে আসা
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব ঈদের ছুটিতে বাবার বাড়িতে আসার অনুভূতি । আসলে সব সময় তো ইচ্ছা করে যে ঈদটা বাবার বাড়িতে করি এদিকে নিজের বাসা ছেড়ে অন্যের বাসায় ঈদ করতে পছন্দ করে না ছেলের বাবা । যার কারণে আর ঈদের আগে আসা হয়নি ।এজন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম যে ঈদটা নিজের বাসায় করে ঈদের একদিন পরে আমরা আমার বাবার বাড়িতে যাব । আমি আর আমার ছেলে যাবো । এজন্য আগে থেকেই আমরা দিন নির্ধারণ করে রেখেছিলাম ।
ঈদের সময় সবকিছুর আয়োজনে আমি বাসায় করেছিলাম । আমার বাসায় খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন ছিল পাশের বাড়িতে পরের দিন খাবারের আয়োজন ছিল । সবকিছু সেরে এবং তার জন্য কিছু খাবারের ব্যবস্থা আমাকে ফ্রিজে করে রেখে আসতে হয়েছে । কারণ কাজের মেয়েটা ঈদের ছুটিতে গিয়েছে যার কারনে ঝামেলাটা আমার একটু বেশি হয়েছে । কারণ মেয়েটা যখন থাকে তখন আমার আর তার খাওয়া-দাওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হয় না । রান্নার আয়োজনটা সেই সারে । এবার নেই দেখে একটু বেশি প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হয়েছে ।
প্রথমে ভেবেছিলাম যে ট্রেনে করে আমরা ফরিদপুরে আসব । ট্রেনের টিকিট আবার অগ্রিম কেটে রাখতে হয় । আমি যদিও এ পর্যন্ত ট্রেনে করে ফরিদপুরে আসিনি যার কারণে ট্রেনে করে আসতে আমার মন সায় দিচ্ছিল না । কারণ একবার দুবার কারো সাথে আসলে হয়তো বা একটু স্বাভাবিক হতে পারবো । আবার ট্রেনে নাকি প্রচন্ড পরিমাণে জ্যাম থাকে নিজের সিটে বসে থাকলেও ঘাড়ের উপর দিয়ে লোকজন দাঁড়িয়ে থাকে যেটা আমার একদমই পছন্দ না । আমি সব সময় বাসে করে অভ্যস্ত আর বাসে করে আসলে নিজের ব্যাগ নিয়ে কোন চিন্তা করতে হয় না । কারণ বাসের লোকজনই উঠানো নামানোর কাজটা করে । আর ট্রেনে আসলে এই কাজটা নিজেকেই করতে হয় । যেহেতু কোনো পুরুষ মানুষ সাথে থাকবে না সে কারণে বড় লাগেজ উঠানো নামানো আমার কষ্ট হয়ে যাবে যার কারণে ট্রেন জার্নি টা বাদ দিলাম । বাসে করে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম ।
আমরা নরমালি আগে থেকে টিকিট কেটে রাখি কিন্তু এবার আর আগে থেকে টিকিট কাটেনি । কারণ বাসা থেকে সায়েদাবাদ যেতে এই গরমের ভিতর একটু অসুবিধা হয়ে যায় । আমরা ভেবেছিলাম যে সরাসরি গিয়ে যে টিকিটটা পাব সেটাই নিয়ে নিব । আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম বারোটার দিকে নাস্তাটা সেরে বের হব কিন্তু ওই যে ঘুম থেকে দেরিতে ওঠার অভ্যাস সকলে উঠতেই পারিনি । উঠতে উঠতে দেরি হয়ে গিয়েছে এইজন্য নাস্তা সারতে একটা বেজে গিয়েছিল । একবারে দুপুর বেলায় ভাত না খেয়ে ওই নাস্তাটা খেয়ে নিয়েছি । তারপর রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হতে হতে আড়াইটা বেজে গিয়েছিল । ঈদের পরে রাস্তায় খুব একটা জ্যাম থাকে না এই কারণে আমরা ১৫ মিনিটে সায়দাবাদে এসে পৌঁছে গিয়েছি । সেখানে গিয়ে দেখলাম যে বাস অ্যাভেলেবল রয়েছে সেটা নন এসি আমি আগে থেকে ভেবে রেখেছিলাম এসি গাড়িতে যাব ।তারপর ১৫ মিনিট পরে একটা এসি গাড়ি রয়েছে সেটার জন্য আমরা অপেক্ষা করলাম ।
দুটা টিকিট আমরা নিয়ে নিলাম আমি আর আমার ছেলে । ছেলেটা যেহেতু ছোট তারপরও ওর জন্য একটা টিকিট নিয়েছি যাতে দুজনে আরামে আসতে পারি । বাসে যখন বসেছি তখন হেলপাররা বারবার বলছিল যে আপনাদের কয়টা টিকিট ।আমি বলেছি যে আমাদের দুইটা টিকিট ।তারপর বলল বাচ্চার জন্য টিকিট নিয়েছেন আমি বললাম হ্যাঁ নিয়েছি । তারপরও আমরা বাসের ভেতরে গিয়ে বসলাম ওর বাবা কিছু সময় আমাদের সাথে ছিল । বাস ছাড়ার আগ মুহূর্তে সে আমাদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গিয়েছে । এরপর আমরা দুজন আরামে ঘুমোতে ঘুমোতে আসতে থাকি । মাঝে মাঝে যদিও ছেলে আমাকে ডেকে তুলেছে যে মা আর কতদূর যেতে হবে কখন শেষ হবে আর ঘুমিয়ো না আমার অনেক বোরিং লাগছে । কিন্তু আমার তো না ঘুমিয়ে উপায় নেই কারণ আমি বমির ওষুধ খাই যার কারণে আমি ইচ্ছা থাকলে জেগে থাকতে পারি না চোখ এমনিতেই লেগে আসে ।
কিছু সময় পরে ছেলেটা বসে থেকে ও আমার কোলের ভিতরে ঘুমিয়ে গিয়েছে । দুজন মিলে আরামে ঘুমাতে ঘুমাতে ফরিদপুরে চলে এসেছি । কাছাকাছি আসতে আমাদের ঘুম ভেঙেছে । মাঝেমধ্যে দুই একটা ছবি তুলে নিয়েছি যদিও ভালো ছবি তুলতে পারেনি একেতো এসি গাড়ির ভেতর থেকে দেখা যাচ্ছিল না তারপর আবার ঘুমের ঘোরে কি ভালো ছবি তোলা যায় । এরপর আমরা যখন স্টেশনে পৌঁছাব তার কিছুক্ষণ আগে ভাই ফোন দিলো কত দূরে আছো তখন ওকে সময়টা বললাম এবং ও যথা সময় আমাদেরকে নিতে চলে আসলো । তারপর আমরা বাস থেকে নেমে পড়লাম এবং একটা অটোতে করে বাসায় চলে আসলাম । এখানে এসেই শান্তি । মানুষ যত যেখানেই যাক না কেন নিজের বাপের বাড়িতে আসা যেন অন্যরকম একটা শান্তি কাজ করে ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
ট্রেন জার্নিতে ভিড় একটু বেশি হয়। এ কারণে ট্রেন জার্নি আমারও ভালো লাগেনা। সবশেষে ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাদ দিয়েছেন এই জিনিসটাই ভালো হয়েছে। ছেলেকে নিয়ে নিজের বাড়িতে ঈদ উপলক্ষে ঘুরতে গিয়েছেন। কাজের মেয়ে ছুটিতে থাকায় কিছুটা কষ্ট করতে হয়েছে। তবে ঈদের ছুটিতে নিজের বাড়িতে গিয়ে নিজের কাছের মানুষগুলোকে সামনাসামনি দেখতে পারার অনুভূতিটাই আলাদা।
অতিরিক্ত ভিড় হলে সেখানে ভালোই লাগে না । আর এসি গাড়িতে আমরা আসা-যাওয়া করে একটু আরামে যেতে পারি এইজন্য ট্রেনের ওদিকে আর গেলামই না ।
অবশেষে ফরিদপুর আসলেন তাহলে। যদি আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কেটে রাখা যায় তাহলে কিন্তু বর্তমানে ঢাকা থেকে ফরিদপুর ট্রেনে আসা সবচেয়ে সুবিধা। তবে আপনি যেহেতু এসি বাসে এসেছেন তাই বেশ আরামের সাথেই ফরিদপুর আসতে পেরেছেন।
এই গরমের ভেতরে ট্রেন জার্নি করে মজা নেই কারণ এসি গাড়িতে যেতেই ভালো লাগে তা না হলে তো গরমে ভর্তা হয়ে যেতে হয় ।
ঈদের ছুটিতে সবাই কম বেশি ঘুরতে যাচ্ছে। কিন্তু বাবার বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার মধ্যে অন্যরকম একটা শান্তি রয়েছে। ঈদের ছুটিতে আপনি এবং আপনার ছেলে মিলে বাবার বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
তা ঠিকই বলেছেন অন্য জায়গার থেকে বাবার বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার অন্যরকম একটা শান্তি রয়েছে ।
প্রত্যেকটা মেয়ের ইচ্ছে করে ঈদের সময় বাবার বাড়িতে যাওয়ার। কিন্তু অনেকেরই সংসারের ব্যস্ততার কারণে, অথবা বিভিন্ন কাজের কারণে যাওয়া হয়না। কিন্তু ঈদের ছুটিতে বাচ্চাদের সাথে নিয়ে গেলে অনেক বেশি ভালো লাগে। তখন আরো ভালো সময় অতিবাহিত করা যায়। ছেলের জন্য একটা টিকিট নিয়ে ভালো করেছেন। টিকেটের কারণে আপনারা ভালোভাবে আসতে। এত সুন্দর করে পুরো পোস্টটা লেখার কারণে ,আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগলো সম্পূর্ণটাই পড়তে।
আমরা কোথাও গেলে ও ছোট হলে কি হবে ওর জন্য টিকিট নেই যাতে আরাম করে সবাই বসতে পারি ।
ঈদের ছুটিতে সবাই ঘুরতে যাচ্ছে আপু আপনি।
আমিও আসছি আপু বাবার বাসায়। কাজের মেয়ে থাকলে সব সুবিধা। আপনি তো সব রেডি করে যাচ্ছেন।যেহেতু কাজের মেয়ে নেই। ভাল লাগলো আপনার ব্লগ পড়ে।
কাজের মেয়ে চার দিনে ছুটি বলে গেলে কি হবে আসতে আসতে সে সাত দিন আট দিন কাটাবে এজন্য কিছু রেডি করে আসলাম ।
ঈদের ছুটিতে সবারই অনেক জায়গায় যাওয়া হচ্ছে। কারণ যাওয়া হচ্ছে ঘুরতে, আবার কারো যাওয়া হচ্ছে বেড়াতে। আপনারা ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছেন দেখে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। নিশ্চয়ই এখন সবাই মিলে অনেক ভালো মুহূর্ত অতিবাহিত করতেছেন। যেহেতু নিজের বাড়িতে এসেছেন নিশ্চয়ই অনেক আনন্দের সাথে দিন কাটতেছে। আসলে এই আনন্দটা সবথেকে বেশি আলাদা হয়। এসি বাসে করে নিশ্চয়ই ইনজয় করতে করতে এসেছেন। আসার সময় নিশ্চয়ই মনের ভেতর অন্যরকম আনন্দ কাজ করছিল বাড়িতে আসা নিয়ে।
এখানে আসলে সময়টা অনেক ভালো কাটে কোথায় দিয়ে যে সময় পার হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না।
ইচ্ছে থাকলেও বাবার বাসায় ঈদ পালন করা হয়ে ওঠে না। যাইহোক আপু নিজের বাসায় ঈদ পালন করে এরপর বাবার বাসায় গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। যেহেতু ভাইয়া যাননি তাইতো মা ছেলে দুজনকে যেতে হয়েছে। বাবার বাড়িতে সময় ভালো কাটুক এই প্রত্যাশাই করি আপু।
আপনার ভাইয়া যেহেতু যেতে চাই না এজন্য আর ঈদের আগে না গিয়ে পরেই গেলাম যাতে ইচ্ছা মতো সময়টা কাটাতে পারি ।
ঈদের ছুটিতে তাহলে বাবার বাড়িতে গেলেন। যদিও ঈদের সময় একটু যাওয়া আসা কষ্টকর। তবে এটি একদম ঠিক বলেছেন ট্রেনে নিজেদের লাকিস বা ব্যাগ গুলো নিজেকে বহন করতে হবে। সেই তুলনা পরিবহন গাড়িতে একটু সুবিধা আছে। যাহোক গ্রামের বাড়িতে গেলেন ভালো সময় কাটান কামনা করি। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
ঈদের আগে গেলে যাওয়া আসা কষ্ট কর কিন্তু পরে গেলে রাস্তা অনেক ফ্রি পাওয়া যায় চলাফেরা করে অনেক আরাম আছে।
আপু আপনারা দুজন ঘুমাতে ঘুমাতে নিরাপদেই বাসায় পৌঁছেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো ।আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন যেখানেই থাকি না কেন বাবার বাড়িতে গেলে যেন অন্যরকম সুখ খুঁজে পাই। যদিও দীর্ঘদিন হয় আমার ওখানে ঈদ করা হয় না। তারপরেও অল্প সময়ের জন্য হলেও ঈদের দিন যাই ।যাই হোক বেশ ভালো লাগলো আপনারা এসে পৌঁছেছেন ।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি তো অল্প সময়ের জন্য ঈদের দিন আসতে পারেন আমরা তো আর ঈদের দিন আসতে পারি না । তারপরও যেটুকু হয় আলহামদুলিল্লাহ ।