সন্তান অসুস্থ হলে বাবা মায়ের ঘুম হারাম হয়ে যায় ।।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি।

photo_2024-09-14_04-46-41.jpg

হ্যালো প্রাণপ্রিয় আমার বাংলা ব্লক বাসি বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার একমাত্র কলিজার টুকরা মেয়ের অসুস্থ হয়ে যাওয়া ও ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনে নিয়ে আসার অনুভূতি শেয়ার করবো।

সুস্থতা হলো সৃষ্টিকর্তার বিশাল বড় একটি নিয়ামত। অসুস্থ হলে, সুস্থ থাকা যে কত বড় নেয়ামত সেটা বুঝা যায়। আমরা মানুষ সৃষ্টিকর্তার অনেক নেয়ামত ভোগ করেও শুকরিয়া আদায় করি না। আমরা মানুষ জাতি কখনোই কোন কিছুতে সন্তুষ্ট থাকতে পারিনা। আমরা অসুস্থ হলে সৃষ্টিকর্তার নাম জপি, আর সুস্থ হলে আমার সাথে লাগে কে... এমন একটি ভাব দেখায়। এটা কখনোই কাম্য নয়। সদা সর্বদা সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করা দরকার। কারণ তিনি ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় যে কাউকে অসুস্থ বানিয়ে হসপিটালে শুয়ে রাখতে পারে। কখন কে অসুস্থ হবে সেটা কেউ জানেনা।

আপনাদের যাদের ঘরে ছোট বাচ্চা কাচ্চা আছে, আপনারা জানেন বাচ্চারা কিভাবে অসুস্থ হয়। আর বর্তমানে যে গরম পড়েছে, জোয়ান মানুষই গরম সহ্য করতে পারতেছে না। সে জায়গায় বাচ্চাদের অবস্থা কেমন হবে সেটা একবার চিন্তা করে দেখুন। আমি জানি যাদের ঘরে বাচ্চাকাচ্চা রয়েছে, প্রতিনিয়তই বাচ্চারা অসুস্থ হচ্ছে। আমি প্রায় সময় আমার বাংলা ব্লগের মধ্যে অসুস্থতার পোস্ট পড়ি। একটি ফ্যামিলিতে কেউ না কেউ অসুস্থ থাকেই। আর যদি বাচ্চারা অসুস্থ হয়, তাহলে মা-বাবা বা গার্জিয়ানদের চোখে ঘুম আসেনা, পেটে খাবার যায় না, টেনশনে কিছুই ভালো লাগেনা। আমি যখন মা হয়েছি তখন আমি এই বিষয়টা ফিল করতেছি।

কিছুদিন আগে সিলেটে থাকা অবস্থায়, আমি এবং আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। যদি বাবু অসুস্থ হয়, তাহলে আমি তার সেবা করতে পারি, কিন্তু আমি যখন অসুস্থ হয়ে যাই, তখন বাবুর খুবই কষ্ট হয়ে যায়। সেই জায়গায় দুইজন যখন অসুস্থ হয়ে গেলাম, তখনকার অবস্থাটা আমি আপনাদেরকে বলে বুঝাতে পারবো না। বাচ্চারা অসুস্থ হলে ঠিকভাবে খায় না, ঠিকভাবে ঘুমায় না, শুধু কান্নাকাটি করে। সব থেকে বড় প্রবলেম হলো বাচ্চারা অসুস্থ হলে মায়ের কোল থেকে, অন্য কারো কোলে যায় না। আমার মেয়ের প্রথমে হালকা হালকা জ্বর দেখা দিয়েছিল। এজন্য আমি নিজেই ফার্মেসি থেকে প্যারাসিটামলের একটি এইচ সিরাপ এনে খাইয়ে ছিলাম। এইচ সিরাপ খাওয়ানোর পরে জ্বর একেবারে ছেড়ে দিয়েছিল। তখন ভেবেছিলাম হয়তো বাবু সুস্থ হয়ে গেছে।

photo_2024-09-14_04-46-37.jpg

কিন্তু দুইদিন পরেই আবার বাবুর তাপমাত্রা বেড়ে গেল। থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মেপে ১০৩ ডিগ্রী পাওয়া গেল। সেই সাথে পেটেও প্রবলেম ছিল, ঠান্ডা কাশি সবকিছু যেন একেবারে আমার মেয়েকে পেয়ে বসলো। আমার মেয়ের এ অবস্থা দেখে আমার জ্বর যেন কোথায় চলে গেল। আমি জানি আমি অসুস্থ, কিন্তু আমার মেয়ের অবস্থা দেখে আমার অসুস্থতার কথা ভুলে গেলাম।

সাথে সাথে আমার হাজব্যান্ড কে বিষয়টা জানালাম। তিনি আমাকে একজন ডাক্তার দেখিয়ে বাবুর ওষুধ আনার জন্য বললেন। আমি তখন আমার আপুর বাসাতেই ছিলাম। আর আপুর বাসার পাশেই অনেক ফার্মেসিতে ডাক্তার বসেন। রাতের বেলা বেশি অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল, সেজন্য আর বড় কোন ডাক্তারের কাছে যাইনি। ফার্মেসির ডাক্তারের কাছে গিয়ে সবগুলো বিষয় খুলে বললাম। ফার্মেসির ভিতরে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার ছিল। তিনি আমার বাবুকে দেখে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। এটি কোন প্রেসক্রিপশন ছিলনা। একটি সাদা কাগজের মধ্যে কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। আমি বাবুকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। ওষুধের লেখা কাগজটি আমার বড় ভাগিনাকে দিয়ে বললাম যেন ওষুধ গুলো নিয়ে আসে।

photo_2024-09-14_04-46-32.jpg

ওই বাজারে আমার ভাগিনার ও একটি দোকান রয়েছে। সে আবার ওই কাগজটির মধ্যে লেখা অনুযায়ী ঔষধ কিনে একটি ছোট ছেলের মাধ্যমে বাসায় পাঠিয়ে দিলো। কিন্তু ওষুধগুলো কিভাবে বাবুকে খাওয়াতে হবে সেটা লিখে আনে নাই। আবার ডাক্তার যেই কাগজের মধ্যে ঔষধ গুলো লিখে দিয়েছিল, সেই কাগজটিও ফেলে দিয়েছে। তারপর আমি ওষুধগুলো ছবি তুলে আমার হাজবেন্ডের কাছে পাঠালাম। তিনি আবার ফার্মেসির কোর্স করতেছেন। তিনি আমাকে বলে দিলেন ওষুধ গুলো কি কিভাবে খাওয়াতে হবে।

এ ওষুধগুলো খাওয়ানোর পরে আমার মেয়ে পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ। আমার মেয়ে সুস্থ হওয়ার পরে আমি প্রচুর অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। আমারও এমন অনেকগুলো ওষুধ লেগেছিল। এ বিষয়টা আমি আপনাদের সাথে অন্য একদিন শেয়ার করবো, ইনশাআল্লাহ।

photo_2024-09-14_04-46-35.jpg

তো বন্ধুরা, এই হল আমার আজকের ব্লগ। কেমন হলো আমার আজকের ব্লগটি। আপনাদের নিকট কমেন্টের মাধ্যমে জানতে চাই। আশা করি কমেন্ট করে আমার ব্লগটির বিষয়ে মতামত পেশ করবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
শিরোনামসন্তান অসুস্থ হলে বাবা মায়ের ঘুম হারাম হয়ে যায় ।
স্থানসিলেট,বাংলাদেশ।
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@titash

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

image.png

image.png

Sort:  
 2 months ago 

ভীষণ খারাপ একটি সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছেন শুনে খারাপ লাগছে। তবে ঈশ্বরের কৃপায় এখন আপনার মেয়ে ভালো আছে এটা শুনে বড় আশ্বস্ত হলাম। সাবধানে থাকুন। সময়টা খারাপ বলে ভীষণ জ্বর এবং শরীর খারাপ হচ্ছে। অবশ্যই শিশুর যত্ন খেয়াল রাখবেন। কারন শিশুদের শরীর খারাপ হলে আমরা বড়রা কখনোই ভালো সময় কাটাতে পারি না। মাথায় সবসময় সেইটাই করতে থাকে। সপরিবারে ভালো থাকুন এই আশাই করি।

 2 months ago 

আসলে এই সময়টাতে মানুষ সব থেকে বেশি অসুস্থ হয়। এইতো কিছুদিন আগে আমি অনেকদিন অসুস্থ ছিলাম। আসলে বড়রা এই ধরনের অসুস্থতার সময় সব থেকে বেশি কষ্ট পায়। তাহলে একবার ভেবে দেখুন সন্তানদের কি অবস্থা হয়। যাইহোক আপনাদের সুস্থতা কামনা করছি।

 2 months ago 

বাচ্চারা অসুস্থ থাকলে নিজের খুবই কষ্ট হয়। আবার নিজে অসুস্থ থাকলে বাচ্চার যত্ন হয় না। এমন সমস্যার সম্মুখীন অনেকবার হয়েছি। যাই হোক আমি দোয়া করি আপনার বাবুর জন্য এবং আপনার জন্য। সৃষ্টিকর্তা যেন সবসময় আপনার বাচ্চাকে সুস্থ রাখেন সেই কামনা করি।

 2 months ago 

এই গরমে বাচ্চারা অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আর এই সময় সুস্থ থাকাটাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বাচ্চারা অসুস্থ থাকলে বাবা মায়ের চিন্তা অনেক বেড়ে যায়। আর খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাতে হয়। আপু আপনার বাচ্চার সুস্থতা কামনা করছি।

 2 months ago 

নিজের সন্তানের অসুস্থতা সত্যিই অনেক কষ্টদায়ক আপু। আর এখন এমনিতেও ওয়েদার খুব খারাপ, তাই সকলেরই কম বেশি শরীর খারাপ হচ্ছে। আপনার মেয়ের ১০৩ ডিগ্রী জ্বর হয়েছিল, তার মানে তো যথেষ্ট বেশি ছিল। যাইহোক, এখন সে সুস্থ আছে ওষুধ খেয়ে, এটা জেনে খুব ভালো লাগছে।

 2 months ago 

সুস্থ থাকাটা হচ্ছে আল্লাহর বড় নেয়ামত। হ্যাঁ আপু পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে তখন খুব খারাপ লাগে। আর ছেলে মেয়ে অসুস্থ হলে মা বাবা এবং গার্জিয়ানদের ঘুম হারা হয়ে যায়। সিলেট গিয়ে আপনি এবং আপনার মেয়ে দুজন অসুস্থ হয়েছেন। আসলে মা যদি সুস্থ থাকে বাচ্চাকে দেখাশুনা করতে পারে। আপু আপনি এবং আপনার মেয়ের জন্য দোয়া রইল যেন সুস্থ হয়ে যান। আর এই মুহূর্তে গরমের কারণে সব জায়গাতে ছোট বাচ্চারা বেশি অসুস্থ হচ্ছে। আমার মেয়েটি ও গরমের কারণ অসুস্থ।