ক্রিয়েটিভ রাইটিং : প্রিয়সীর প্রণয়ব্যাথা
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলে সব দিক থেকে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় পরিবার সহ যেমন আছি, বেশ ভালো আছি। আজ বরাবরের মতো আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করবো আমার পোস্ট টি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। এবং আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন। তো আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি চলে যাই মূল পোস্ট এ।
Photo: made by @tithyrani with canva app
আজ মার্চ এর ১০ তারিখ। অন্য দিনের চেয়ে প্রিয়সীর মন সকাল থেকেই উদাস হয়ে আছে তা চোখ এড়ায় নি প্রিয়সীর বর রাজেশ এর। নানা ভাবে কারণ ও জানতে চেয়েছে তবে প্রিয়সী কিছুই বলতে পারে নি, বরং বলেছে কিচ্ছু হয় নি, সব ঠিকঠাক ই আছে। যথাসময়ে রাজেশ অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো বাসা থেকে। এখন প্রিয়সীর অফুরন্ত সময়। দুইজনের ছোট সংসার এ যা টুকটাক কাজ আছে, তা করতে বেশিক্ষণ সময় লাগে না। তবে আজ কোনো কাজেই মন বসছে না প্রিয়সীর। বারবার মাথায় আসছে আজ মার্চ এর ১০ তারিখ। তার প্রাক্তন সুমন্তের জন্মদিন।
সুমন্তের সাথে প্রিয়সীর প্রেম টা সবদিক থেকেই ভালো, ভীষণ হ্যাপেনিং ছিলো। তবে সুমন্ত কোন চাকরি করতো না। তাই বাসায় যখন প্রিয়সীর জন্য পাত্র খুঁজছিলো, ওর মা জিজ্ঞেস করার পরও প্রিয়সী সুমন্তের নামটা মুখে আনতে পারে নি। কারণ প্রিয়সী খুব ভালো করেই জানতো যে একটা বেকার ছেলে সে যতই প্রিয়সীর মনমতো হোক না কেন, তার সাথে কিছুতেই বিয়ে দিবে না তার পরিবার। বরং সীন ক্রিয়েট করে পুরো পরিবারে নানা মানুষের থেকে হাজারটা কথা শুনতে হবে! তাই কিছুটা প্রাকটিকাল বা সেল্ফফিশ হয়েই সুমন্তর নাম বলতে পারে নি প্রিয়সী। বরং সুমন্তের সাথে বিষয় টি ডিসকাস না করেই হুট করে মেজাজ খারাপ করে ব্রেক আপ করে ফেলে এবং সব জায়গা থেকে ব্লক করে দেয়। পরের দিন অবশ্য সুমন্ত দেখা করেছিলো রাস্তায়, তখনও প্রিয়সী বলে দেয় যে এ সম্পর্কে কোন ভবিষ্যত দেখছে না সে, বাসায় তার বিয়ের জন্য তাড়াহুড়ো শুরু হয়েছে! এই সিচুয়েশনে কিছুই বলার থাকে না সুমন্তের৷ শুধু নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যায় একটা চাকরির জন্য। ভাগ্য সহায় হলেও কিছুটা দেরি করেই সহায় হয়েছিলো সুমন্তের। ঠিক প্রিয়সীর বিয়ের ২ মাস পর সুমন্ত খুব বড় একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে যায়!
তার বছর দুয়েক পর পরিবারের চাপে সুমন্তেরও বিয়ে হয়ে যায়। এদিকে প্রিয়সী যে খারাপ আছে তার বরের সাথে, সেটাও না। তার বর রাজেশ ও সব দিক থেকেই বেশ খেয়াল রাখে এবং ভালোবাসে প্রিয়সীকে। তবে কোথাও যেন বারবার প্রিয়সীর সুমন্তের কথাই মনে পরে! সুমন্তের সাথে অবিচার করেছে এমন গাট ফিলিং এড়াতে পারে না প্রিয়সী! পরিবারের কাছ থেকে আরোও কিছুটা সময় নিলে হয়তো সুমন্ত-প্রিয়সীর একটা সংসার হতো! অথচ তখন সাহস করে সুমন্তর বিষয় এ কিছুই বলতে পারে নি প্রিয়সী তার পরিবারকে- এই বিষয়টিই বারবার প্রিয়সীকে আঘাত করে! ভাগ্য হিসেবেই মেনে নিতে চাইলেও মন মাঝে মাঝে মানে না। আবার মনে হতে থাকে যে এখন রাজেশ কেও ঠকাচ্ছে প্রিয়সী, নইলে বারবার ঘুরে ফিরে সুমন্তর কথাই কেন মনে পরে তার! এই দোটানা বেশি করে শুরু হয় যখন একদিন হুট করেই রাস্তায় সুমন্তর সাথে দেখা হয়ে যায় প্রিয়সীর! জানতে পারে ভালোই আছে সুমন্ত, তাদের ঘরে একটা ছোট্ট পরীও এসেছে ইতিমধ্যে! রাতে এসে সুমন্তর ফেসবুক প্রোফাইল ঘাটতে ঘাটতে তাদের সুখী পরিবারের ছবি দেখে দেখেই প্রিয়সীর সেই কথা মনে হতে থাকে যে কিছুটা সময় দিলে সুমন্তর পাশে অন্য কেউ না থেকে সেই থাকতে পারতো!
আজ আবারো মোবাইল টা নিয়ে সুমন্তর প্রোফাইল খুঁজতে গিয়ে পায় না প্রিয়সী, বুঝতে বাকি থাকে না হয়তো ব্লক করে দিয়েছে ওপাশ থেকেই। তবুও সুমন্তর ওয়াইফ এর প্রোফাইল এ ঘুরে দেখে। প্রোফাইল পিকচার এ সুমন্ত ও ছোট্ট পরীর সাথে হাস্যজ্বল ছবি! মেয়েটার নামেও একটা পেইজ চোখে পরে, সেটাও ঘুরে দেখে প্রিয়সী! কত শত মুহুর্তের ভিডিও, ছবি সেই পেইজে! এমন সময়েই ফোনে রাজেশ এর ফোন আসে। অফিসে পৌঁছে খোঁজ নেয় যে প্রিয়সী খেয়েছে কিনা, কি করছে- এসব! রাজেশ এর সাথে কথা বলা শেষ করেই কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকে প্রিয়সী! কি খুঁজতে থাকে কে জানে! তবে তার চোখে রাজেশ এর সাথে সুন্দর সুন্দর স্মৃতি গুলোই ভেসে উঠে। চোখ খুলে ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সবজায়গা থেকে সুমন্তর স্ত্রী, মেয়ের পেইজ সবকিছু ব্লক করে দেয় প্রিয়সী! যা তার হয় নি, তা নিয়ে আর ভাববে না সে। বহুদিন ই তার বিয়ের আগের ডিসিশন নিয়ে আক্ষেপ করে কাটিয়েছে সে, আর না। যা হয় নি, সেটা কল্পনাও করবে না আর। বরং তার ভাগ্যে যে সুন্দর মনের মানুষ টা জুটেছে, তাকেও আর ঠকাবে না প্রিয়সী। ব্লক করা শেষ এ চোখেমুখে বেশি করে জল দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয় প্রিয়সী! মনে যেনো অনেকটা প্রশান্তি চলে এসেছে এখন, মনের মাঝের অনেক বড় পাথর যেনো নেমে গিয়েছে। হুট করেই দিনটা ভীষণ সুন্দর লাগতে থাকে প্রিয়সীর। রাজেশ কে একটা ম্যাসেজ দিলো- "ভালোবাসি জনাব !" ম্যাসেজ দেখে ওপাশে রাজেশের দিনিটাও ভালো হয়ে যায় এবং বুঝতে বাকি থাকে না সকালের দেখে আসা উদাস মনটা এখন শান্ত হয়েছে! 😇
আজকের লেখা আর বাড়াচ্ছি না। সকলের সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি। সাথে রহমতের এই পবিত্র মাসে সকলের কাছে আমার জন্য, আমাদের জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো। শুভরাত্রি।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শিক্ষগত যোগ্যতায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। দীর্ঘ ৬ বছর চাকরির পর বর্তমানে পুরোদমে একজন গৃহিণী। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
OR
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।






Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এটা আমাদের Dao Proposal। অবশ্যই সকলে ভোট দিবেন, কমিউনিটির সকলের জন্য এটা বাধ্যতামূলক। এ বিষয়ে সহজ টিউটোরিয়াল দেখুন এখানে- https://steemit.com/hive129948/@rex-sumon/dao-reserve-fund
এই প্রপোজাল এ আমি রবিবারের আড্ডার সময়েই ই ভোট দিয়েছি ভাইয়া। নিচে স্ক্রিনশট যুক্ত করে দিচ্ছি।