৪৪৩ রানের এক ধামাকাদার ম্যাচ
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে খেলাধুলা বিষয়ক একটি পোস্ট শেয়ার করে নেবো। গতকাল আমাদের কলকাতার ইডেনে খেলাটা হয়েছে। কলকাতায় খুব কমই সিডিউল করে যেকোনো খেলায়। কলকাতার মাঠে খেলা দেখতে অনেকেই যায় আমাদের এখান থেকে। আসলে যাওয়া যায়, কিন্তু ওখানে গিয়ে শুধু মজাটাই হয়, খেলাটা আসলে সেভাবে ভালোমতো দেখা যায় না। এই যেমন আমরা পর্দায় যে আউটটা রিপ্লেতে দেখতে পাই, সেটা কিন্তু ওখানে দূর থেকে বোঝা যায় না তেমন এই আর কি। আমিও মাঝে যাওয়ার চিন্তা করেছিলাম, কিন্তু আর যাওয়া হয়নি, ভালো লাগে না আসলে হট্টগোলের মধ্যে দেখা। যাইহোক, কালকের ম্যাচটা ধামাকাদার একটা ম্যাচ হয়েছে বলতে গেলে। ইডেনের পিচে এতো ভালো খেলা হবে ভাবাই যাইনি, কারণ তুলনামূলক ইডেনে এতো রান এর খেলা খুবই কম হয়। ব্যাঙ্গালুরু আর কলকাতার মধ্যে এই ম্যাচটাতে আসলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও আসলে ব্যাঙ্গালুরুর অবস্থা খুব খারাপ এইবারের আইপিএল-এ।
পয়েন্ট তালিকায় একদম শেষে অবস্থান করছে তারা বর্তমানে। এখন হাতে আর যে কয়টা ম্যাচ আছে সব কয়টা জেতা লাগবে যদি ঘুরে দাঁড়াতে চায়, আর না হলে বিদায় খুব তাড়াতাড়ি। কলকাতার অবস্থান স্ট্রং আছে পয়েন্ট এর দিক থেকে। বিশেষ করে নেট রান রেট ভালো খুব। এখানে আবার পয়েন্ট সমান সমানে থাকলে এই নেট রানের ভিত্তিতেও বিচার করা হয়ে থাকে তাদের। কলকাতা গতকাল আগেই ব্যাট করেছিল, যদিও ব্যাঙ্গালুরু টসে জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই পিচে কিন্তু আবার শেষে ব্যাটিং করলে একটা ভালো অবস্থান থাকে, মানে রান চেজের ক্ষেত্রে ভালো। আর এটা বরাবরই আমি দেখে এসেছি। সে যাইহোক, কলকাতা ব্যাটিং-এ এসে একপ্রকার ঝড় তুলে দিয়েছিলো সল্ট, নারিন তেমন কিছু এই ম্যাচে করতে পারেনি। সল্ট একাই পিটিয়েছে পাওয়ারপ্লে ওভারে। ম্যাচ এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলো যে রান রেট ১১ এর উপরে চলে গিয়েছিলো প্রতি ওভারে, আমি তো ভেবেছিলাম রান ২৫০ পার হয়ে যাবে আজকেও যদি এইভাবে ব্যাটিং করে।
তবে অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটেছে সল্ট আউট হয়ে যাওয়ার পরে। মাত্র ১৪ বল খেলে যে ঝড় তুলেছিল সেটাই থিম যায় হঠাৎ করে। ৮ ওভারে তো ১০০ করে দিয়ে গিয়েছিলো পার্টনারশিপে, কিন্তু পরপর ঝড়ের মতো আবার ৩ জন আউট হয়ে যায় নারিন সহ। আর এখানেই রানের গতি অনেকটাই কমে যায় বলতে গেলে। এরপরে শ্রেয়াস, রিঙ্কু আর রাসেল এসে মোটামুটি রানটা আবার ভালো পর্যায়ে নিয়ে যায়। মোটামুটি যে কয়জন এসেছে লাস্টে তারা বল কম খেলে তার থেকে অধিক রান করে দিয়ে গিয়েছে। যার ফলে রানটা ২২২ এ গিয়ে পৌঁছায়। এখন ব্যাঙ্গালুরু এই রানের ক্ষেত্রে কোহলি আর ডু প্লেসি সুবিধা করতে পারেনি, ওপেনেই ধস নামে তাদের। এই ম্যাচটা জ্যাক্স আর রজত ভালো পার্টনারশীপ গড়ে। মানে এখানে তারা যে ভূমিকা রেখেছিলো তাতে ম্যাচ একদমই ব্যাঙ্গালুরুর কন্ট্রোলে চলে গিয়েছিলো। কারণ যেখানে ১১ ওভারেই রান ১৪০ এর উপরে, সেখানেই ভেবেই নেওয়া যাচ্ছে যে এই ম্যাচ কলকাতার কন্ট্রোলে আর নেই।
তবে এখানে কলকাতার বোলারদের মধ্যে একজন মুখ্য ভূমিকা পালন করে রাসেল, কারণ এই একজনই এক ওভারে এই দুইজনকেই আউট করে বিশাল এক পার্টনারশীপ ভাঙ্গে, কিছুটা স্বস্তির নিস্বাশ ফেলে যেন তারা। তবে আসলে তাদের আউট করলেও কি হবে রানটা অধিক করে দিয়ে গিয়েছিলো তারা দুইজনেই। কিন্তু ওই যে একজনের কথা বারবার বলি, দীনেশ কার্তিক, এই একটা প্লেয়ার, কি করে যে ফিনিশিং এর সময়ে ভালো খেলে। লো ফুলটাস , ইয়র্কার সব বলেই সমানে পিটিয়ে যাচ্ছে যেন। তবে ভুল করে রাসেল এর বলেই ক্যাচটা তুলে দেয়। রাসেল এই ম্যাচে ব্যাটিং খুব একটা সুবিধা না করতে পারলেও বোলিং-এ অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলো, কারণ ওই দুইজনকে আর কার্তিককে না আউট করলে এই ম্যাচ নিঃসন্দেহে ব্যাঙ্গালুরু জিতে যেত সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
লাস্টে বুদ্ধি করে এই রাসেল আর স্টার্ক এর ওভারটা রেখে দিয়েছিলো। একজন তো আগের ওভারেই কার্তিককে আউট করে দিলো, কিন্তু পরের ওভারেই যেন মিরাক্কেল হতে যাচ্ছিলো ব্যাঙ্গালুরুর। কারণ এখানে ৬ বলে ২১ রান কি কোনো মতে সম্ভব আর যেখানে ব্যাটিং এ আছে বলার। করণ শর্মা যে এসেই তাও আবার স্টার্ক এর বলে ৩ টা ৬ মারবে উঠে উঠে সেটা কি ভাবা যায় ! আমি তো মাঝে মাঝে মনে মনে বলছিলাম এই শালাটাকে ২৫ কোটি টাকা দিয়ে কেন কিনেছে হা হা। কিন্তু দুৰ্ভাগ্যবশত স্টার্ক এর বলেই ক্যাচ তুলে দেয়, তবে এই ক্যাচটা স্টার্ক এর কাছে মোটেও সুবিধার ছিল না, ওই গতিতে বল করে আবার সেই সাথে সাথে ক্যাচ ধরা খুবই কঠিন। অনেক কষ্টে ম্যাচটা জিতেছে বলা যায় কলকাতা। মাত্র ১ রানের ব্যবধানে জিততে পারে, বেশ ইন্টারেষ্টিং এবং নাটকীয় একটা ব্যাপার ছিল এই ম্যাচে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত দাদা, মাঠে যেয়ে ক্রিকেট খেলা দেখা মানে আনন্দ আর হুল্লোর। কিন্তু বল টু ব্যাটের মজাটা পাওয়া যায়না। গ্রামের বাড়িতে থাকার কারণে বিদ্যুত এর আসা যাওয়া আর বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে আইপিএল দেখা হচ্ছেনা। আপনার রিভিউ থেকে ব্যাঙ্গালুরু বনাম কলকাতার ধামাকা ম্যাচ সম্পর্কে জানতে পারলাম। বিগ রানের ম্যাচে কলকাতার এক রানে জয় দারুণ। অভিনন্দন কলকাতা টিমকে। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আসলেই দাদা মাঠে গিয়ে খেলা দেখার থেকে টিভি বা মোবাইলের স্ক্রিনে সামনল বসে খেলা দেখাটা বেশি স্বস্তির! খেলাটা আমিও দেখেছিলাম। আসলে এনন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে কে জানতো! রাসেল যদি এক ওভারে দুজনকে আউট না করতো তাহলে খেলার ফলাফলটা হয়তো অন্যরকম আসতে পারতো। কারণ দুজন ইনফর্ম ব্যাটারকে সে আউট করেছিল। শেষের দিকে করণের ম্যাজিক! আর স্টার্কের কথা কি বলবো! কলকাতা স্টার্ককে বিশ কোটি দিয়ে কিনে লসই করেছে বোধ হয়, হাহা।
এই ম্যাচের দুটি দলই ভালো খেলেছে। এর আগে কলকাতা ২০০ প্লাস রান করার পরেও ম্যাচটি হেরে গিয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম ম্যাচটি স্বাভাবিকভাবেই কলকাতা জিতে যাবে কিন্তু হেরে যায়। তেমনি ঘটনা ঘটতে চলেছিল এই ম্যাচটিতেও। যাইহোক, সর্বশেষ শ্বাসরুদ্ধকর জয় যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল কলকাতা টিমের জন্য । ম্যাচটি উপভোগ করেছি আমি নিজেও কলকাতার জন্য শুভকামনা রইল।
কলকাতা যে আজকেও বেশি রান করবে সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। কিন্তু সত্যি বলতে দাদা আরসিবি যে ম্যাচের এতো কাছে গিয়ে ম্যাচ হারবে সেটা ধারণাও করতে পারি না। শেষ ওভারে ১৯ নিয়েও এক রানে ম্যাচ হারা এটা কী মেনে নেওয়া যায়। অসাধারণ একটা ম্যাচ ছিল এইটা। দারুণ দিয়েছেন রিভিউ টা দাদা।
দাদা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে কিন্তু অনেক ভালো লাগে। আগে মিরপুর স্টেডিয়ামে খেলা হলে প্রায়ই যেতাম খেলা দেখতে। অন্য রকম উত্তেজনা কাজ করে। কিন্তু এখন যাওয়া হয় না ব্যস্ততার জন্য। তবে আমার ইচ্ছে আছে ইন্ডিয়া গিয়ে আইপিএল দেখার। যাইহোক এই গরমে ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে না গিয়ে বেশ ভালোই করেছেন দাদা। এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। কলকাতার ভাগ্য আসলেই খুব ভালো। কারণ শেষ ২ বলে ৩ রান এমনিতেই হয়ে যায়। মিচেল স্টার্ক লাস্ট ওভারে এতো বাজে বল করলো। যদি শেষ ওভারে শর্মাকে আউট করতে না পারতো এবং এই ম্যাচটি কলকাতা হারতো,তাহলে পরবর্তীতে স্টার্ককে জবাবদিহিতার মুখে পরতে হতো। যাইহোক এতো চমৎকার ভাবে এই ম্যাচের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এই খেলাটি দেখছি অনেক রানের।আমিও এটাই শুনেছি দাদা,ওখানে ভিড়ের মধ্যে কষ্ট করে শুধু যাওয়াই হয় টাকা খরচ করে। কিন্তু বাড়িতে অনেক শান্তিতে তার থেকে ভালোভাবে দেখা যায়।ভাগ্যিস ক্যাচটি ধরেছিল নাহলে কলকাতার জেতা মুশকিল হতো।তারপরও কলকাতার ইডেনের মাটিতে খেলা হয়ে কলকাতা জিতেছে এটাই ভালো লাগার বিষয়।সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন, ধন্যবাদ দাদা।
দাদা কলকাতা আর ব্যাঙ্গালুরুর দারুন ইন্টারেস্টিং একটি ম্যাচ হয়েছিল সেদিন। সবাই স্টার্ককে নিয়ে সমালোচনা করে। কেন তাকে এত টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। যায়হোক মাত্র এক রানের জন্য ব্যাঙ্গালুরুর খেলাটা হেরে গেলো। লাষ্টে উত্তেজনামূলক মুহূর্ত তৈরী হয়েছিল। ধন্যবাদ দাদা।