নিঃশব্দ শহরের রাত!
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে একটি স্টোরি শেয়ার করবো । স্টোরি কিছুটা রহস্যময় এবং কিছুটা বলা যায় হরর টাইপের। নক্ষত্রপুর নামের একটি শহর ছিল এবং সেখানে মানুষজন সাধারণ ভাবে ভালোই চলাচল করতো, সবার সাথে মিলেমিশে গল্প-গুজব করতো। এইভাবে মোটামুটি সবার জীবন যাত্রা ভালোই আনন্দে কেটে যেত। এই শহরে প্রদীপ নামের একটি ছেলে বসবাস করতো এবং সে এখানে অন্য একটি শহর থেকে আসে। ফলে নতুন অবস্থায় মোটামুটি সবার সাথেই আশেপাশের মানুষজনের সাথে মিলেমিশে যায়। তবে এই শহরে একটা সমস্যা আছে, যেটা শুধু মাত্র রাতের বেলা ঘটে থাকে। দিনের বেলা সাধারণভাবে কাজকর্ম এবং সবকিছুই চলতে থাকে। কিন্তু যখনই রাত নামে, তখনই সবকিছু নিঃশব্দ হয়ে যায়।
চারিদিকে একদম যেন একটা শূন্যতায় ভরে ওঠে। সন্ধ্যা হলেই মানুষজনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় এই শহরে। রাত যত গভীর হতে থাকে, এই শহরের লাইটগুলো কোনো কারণ ছাড়াই জ্বলতে শুরু করে এবং এছাড়াও দূরে কোথাও একটা জায়গা থেকে অদ্ভুত ধরণের আওয়াজ আসতে থাকে, যেটা ভয়ানক একটা সুরের মাধ্যমে ভেসে ওঠে। এই ঘটনা প্রদীপ লক্ষ্য করে বেশ কয়েকদিন এবং তার এই বিষয়ে জানতে আগ্রহ প্রকাশ পায়। তবে এই শহরের অনেকেই এই রাতের সময়টুকু বাইরে বেরোতে মানা করে সবাইকে বা এড়িয়ে চলতে বলে। কারণ রাতটা এই শহরের জন্য একটা অভিশাপ রূপে রয়েছে। প্রদীপ এই বিষয়টা অনেকদিন থেকে লক্ষ্য করতে থাকে এবং একদিন তার জানালা খুলে দেখতে গেলে বাইরের থেকে ভেসে আসা একটা সুর শুনতে পায় অর্থাৎ যেমনটা একটা গানের সুরের মতো হয়।
তার মনে হতে থাকে, কেউ হয়তো গান গাইছে। এইভাবে বেশ কয়েকদিন একইধরনের সুর শুনতে যখন পায়, তখন তার মনে কৌতূহল জন্ম নেয় যে, রাত হলেই এমন কেন শোনা যায়! যেন একটা অদ্ভুত মায়াভরা সুর, যে কাউকে আকৃষ্ট করে থাকে এই সুরের মাধ্যমে। প্রদীপের মনে তখন জানার ইচ্ছা পোষণ হয় যে, এই নক্ষত্রপুর শহরে আসলেই কি কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে! এই ইচ্ছা পোষণ থেকে প্রদীপ একদিন ভয়ে ভয়ে দরজা খুলে বাইরে আসে এবং সে দেখে চারিদিকে একদম নিস্তব্দ, যেন রাতের শহরটা সবকিছুতেই শূন্য হয়ে গিয়েছে, রহস্যভরা দূরে সে লক্ষ্য করে একটি ঘরে টিপ্ টিপ্ করে লাইট জ্বলছে। তবে এই লাইট এর জ্বলার সাথে একটা গভীর রহস্য উৎপন্ন হয়, কারণ এই লাইট এক জায়গায় স্থির থাকে না।
যেন কারো হাঁটাচলার মতো লাইটও সাথে সাথে চলছে। প্রদীপ তখন এই বিষয়টা দেখার জন্য আরো সামনের দিকে এগিয়ে যায় এবং সেই লাইট এর এমন লক্ষণকে অনুসরণ করে বোঝার চেষ্টা করে, কিন্তু সে যেদিকে যেতে থাকে লাইটটাও যেন তার সাথে সেদিকে যেতে থাকে একটা ছায়ার মতো। এরপর ওখানে এই নিস্তব্দ শহরে হঠাৎ তার সামনে একটি বৃদ্ধ লোককে দেখতে পায় এবং এই বৃদ্ধ লোকটিও একটি রহস্যে ঘেরা এই শহরের মতো। প্রদীপ প্রথমে তাকে দেখে শিহরে ওঠে এবং পরে তাকে কিছুক্ষন হতবাক হয়ে দেখার পরে জিজ্ঞাসা করে সে কে! বৃদ্ধ লোকটি হালকা হাসি দিয়ে প্রদীপকে জিজ্ঞাসা করে এই রাতের রহস্যের ব্যাপারে কিছু জানো কি! প্রদীপও বৃদ্ধ লোকটিকে বলে না, আমি জানতে চাই এই শহরের রহস্যের ব্যাপারে।
তখন বৃদ্ধ লোকটি তাকে বলে যে, বহু বছর আগে এই শহরে একটা এমন ঘটনা ঘটে যায়, যেখানে কিছু মানুষ হারিয়ে যায় এবং পরে আর কোনোদিন ফিরে আসেনি বা তাদের কেউ আর দেখিনি। আর তখন থেকেই এই শহরে যখন রাত ঘনিয়ে আসে, তখন শহরটা যেন তাদের ডাক শুনতে পায় এবং তাদের করুন কণ্ঠস্বর যেন হাওয়ায় ভেসে আসে। আর এইসবের কারণেই এই শহরের রাতটা দিনের বেলার থেকে একটা আলাদা রূপ নেয়। এইসব শুনে প্রদীপের তো গা-হাত, পা কাঁপতে শুরু করে। কিন্তু তার পরেও তার যেন আরো জানার আগ্রহ বেড়ে যায় অর্থাৎ তাদের কেউ দেখতে পায় কিনা! বৃদ্ধ লোকটি বলে তোমার মতো সাহসী লোকজনই দেখতে পায়, এরপরেই বৃদ্ধ লোকটি আবারো রহস্যের মতো গায়েব হয়ে যায় সেখান থেকে। এইসব কিছুতে প্রদীপ বুঝতে পারে যে, আসলেই এই নক্ষত্রপুর শহরটির রাতের বেলাটা মোটেও স্বাভাবিক নয়, একটা রহস্যময় নিঃশব্দ রাত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজ খুব চমৎকার একটি রহস্যময় গল্প শেয়ার করেছেন দাদা।,এ ধরনের রহস্য গল্পগুলো পড়লে ভীষণ ভালো লাগে। মনে হয় এর পর কি হল? কি হল? তবে হরর টাইপ গল্প হলে গা ছমছম করে ই। প্রদীপ নামের ছেলেটির গা ছমছম করলে ও খুব জানার কৌতুহল। ঠিক আমার মতোই তার অবস্থা। খুব সুন্দরভাবে স্টোরিটিকে শেয়ার করেছেন। এজন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।
গল্পটি হরর টাইপের হলেও তেমন কোনো ভয়ানক কান্ড দেখলাম না পড়ে।তারপরও মনে হয় এমন শহর কোথাও না কোথাও তো এখনো আছে।যাইহোক হরর গল্পগুলি পড়তে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।আরো ভয়ানক গল্প চাই দাদা,ধন্যবাদ আপনাকে।
তার মানে বৃদ্ধ লোকটা ছিলো একটা আত্মা। প্রদীপ সাহসী বলেই বৃদ্ধ লোকের দেখা পেয়েছে। যাইহোক হরর মুভি দেখতে কিংবা হরর গল্প শুনতে আমার খুব ভালো লাগে। গল্পটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
গল্পটা ছোট কিন্তু পড়ার পরে শরীরের মনে একটা শিহরণ এর সৃষ্টি হয়েছে। সত্যি দারুণ লাগল দাদা। নক্ষত্রপুর জায়গার এমন নিঃশব্দতা একটা কৌতূহলের সৃষ্টি করেছিল। চমৎকার লিখেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে।।