ওয়েব সিরিজ রিভিউ: নিকষ ছায়া ( সিজন ১: পর্ব ৩ )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে 'নিকষ ছায়া' নামের ওয়েব সিরিজ এর তৃতীয় পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "অভিশাপ". গত পর্বে শেষ দেখা গিয়েছিলো এক পুলিশ অফিসারের মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। এই পর্বে ঘটনা কি হয় সেটা দেখা যাক তাহলে।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
❂মূল কাহিনী:❂
ওই অফিসারের মেয়ে যে কিডন্যাপ হয়ে গিয়েছে, সেটা কেউ জানে না। দুইদিন আগে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে কেউ এতটা ধ্যান দেয়নি, কারণ সবাই জানে সে কলেজের স্কার্শনে গিয়েছে। কিন্তু ওইদিন রাতে জঙ্গলের ভিতরে ওই পিশাচ তাকে ধরে নিয়ে যায়। এখন এই বিষয়টা মোটামুটি চিরঞ্জিত আর সে পুলিশ অফিসাররা মোটামুটি বুঝতে পেরেছে। এখন চিরঞ্জিত একজন দক্ষ তান্ত্রিক হলেও এই পিশাচ সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই অর্থাৎ তার সম্পর্কে না জানলে কিছুই করা যাবে না। এখন ওখানে সঞ্জয় নামের একটি ছেলের সাথে কথা বলে, কারণ সে ছোট বয়েস থেকে এই বিষয়টার সাথে পরিচিত। আর এইজন্যই তার সাথে কথা বলে। এখন কথা বলতে গিয়ে তাকে বিস্তারিত অর্থাৎ এই ঘটনা কিভাবে কি শুরু হয় সেটা বলতে বলে। এর এই ঘটনা বলতে গেলে তার মামার বিষয়ে ফিরে যেতে হবে অর্থাৎ তার মামা ভানুও একজন তান্ত্রিক ছিল, কিন্তু তার উদ্দেশ্য অসৎ ছিল আর এই পিশাচটাকে তৈরিও করেছে সে বলতে গেলে।
সঞ্জয় এর বয়েস তখন মাত্র ১০ বছর আর ওই সময়ে তার মামার বাড়িতে যায়, কারণ তার মা-বাবা দুইজনেই মারা যায়। এইবার একদিন তার মামাকে দেখে একটি মেয়েকে গলা চেপে মেরে ফেলতে। মেয়েটার বয়েস ওইরকম ৭-৮ বছর হবে। তো মেরে ফেলে ওই মেয়েকে দিয়ে তন্ত্র সাধনার পুজো করতে থাকে আর ওই পিশাচ এসে তাকে খেয়ে ফেলে। এই ঘটনা দেখে সে ভয় পেয়ে যায়। তবে তার মামী ভালো ছিল, তাকে বাঁচানোর জন্য সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেয়। কিন্তু প্রথম দিন সে যখন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যেতে থাকে, তখন ওই পিশাচ তার সামনে এসে পড়ে আর তাকে ধরে নিয়ে চলে আসে।আসলে ওই পিশাচ একমাত্র ওই ভানু নামের লোকের ইশারা ছাড়া কাউকে কিছু বলে না। এরপরে তার মামা তাকে ১ বছর রেখে দিতে চায় তার কাছে, কারণ তার ১১ বছরের একজন দরকার আর সঞ্জয়ের ১১ বছর হলেই তাকে একইভাবে মেরে ওই পিশাচকে উৎসর্গ করবে।
এরপর তার মামী আবারো শেষ একবার তাকে পালিয়ে যেতে বলে ওইভাবে আর এইবার সফল হয় আর রোডের পাশেই থানা ছিল। এইভাবে সে বেঁচে যায়। এখন এদিকে মেয়েটার বাবা তো খুঁজে বেড়াচ্ছে, যেভাবেই হোক খুঁজে পাওয়া লাগবে। এখন পরে তার কিছু বন্ধুদের সাথে কথা বলে এবং একটি মেয়ের কাছে জানতে পারে যে ওইদিন তার নাকি শরীর খারাপ লাগছিলো আর গৌরব নামের একটি ছেলে নাকি তাকে বাড়িতে এগিয়ে দেওয়ার নাম করে নিয়ে যায়। এরপর তাকে গিয়ে ধরে, কিন্তু পুলিশ দেখেই সেখান থেকে পালায়। যদিও তাকে ধরে ফেলে আর বিষয়টা বলতে বলে অর্থাৎ সেই মেয়েটা কোথায় এখন! তবে ছেলেটি মেয়েটার সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না অর্থাৎ সে এখন কোন পরিস্থিতিতে কোথায় আছে। এদিকে চিরঞ্জিত একজন এর সাথে কথা বলতে থাকে এবং তার দরোজায় নক করতে থাকে এক অদ্ভুত শক্তি।
❂ব্যক্তিগত মতামত:❂
এখানে আসলে বিষয়টা অর্থাৎ এই পিশাচের বিষয়ে সঞ্জয়ের কাছ থেকে শুনে আপাতত বুঝতে পেরেছে। এখন ওইদিন যে সঞ্জয় থানার কাছে পৌঁছিয়েছিলো, সেটা ওই ভানু তান্ত্রিক জেনে ফেললে তার মামীকে মেরে ফেলে। এদিকে সঞ্জয় সব বিস্তারিত পুলিশকে বলে সেখানে ডেকে নিয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষনে তার মামীকে তো মেরে ফেলে এবং ওখানে আরো দুটি যমজ ছেলে-মেয়েকেও মেরে ফেলে। আর এই দুই যমজ ছেলে-মেয়ে মাঝে মাঝে চিরঞ্জিতকে দেখা দেয় অর্থাৎ তাকে কিছু বলতে চায় মনে হচ্ছে এবং সেটা বিভিন্ন ইশারার মাধ্যমে বোঝাতে চাচ্ছে সেটা । আর ওই গৌরব নামের ছেলেটিই মেয়েটাকে ওই তান্ত্রিকের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলো। মানে এখানে ওই ছেলেটার কথা বলার সময় বেঁধে যেত, আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য ওই তান্ত্রিকের কাছে গেলে বলে একটি মেয়েকে এনে দিতে হবে। আর তখন ওই লোভে পড়ে ওই মেয়েকে তাদের হাতে তুলে দেয়।
❂ব্যক্তিগত রেটিং:❂
৮/১০
❂ট্রেইলার লিঙ্ক:❂
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এ ধরনের ওয়েব সিরিজ গুলো দেখলে একটি সিরিজের পর আর একটি সিরিজ দেখার আকর্ষন অনেকটা ই বৃদ্ধি পায়।আপনি আজকের পর্বটিও খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা চমৎকার রিভিউটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
তার মানে সঞ্জয়ের মামা ভানু তান্ত্রিক সেই পিশাচকে তৈরি করেছে। ভানু তান্ত্রিক তো দেখছি খুবই ডেঞ্জারাস। সে পরবর্তীতে নিজের ওয়াইফকেও মেরে ফেললো। তবে গৌরব নামের ছেলেটা খুবই জঘন্য একটা কাজ করেছে। মেয়েটাকে সেই তান্ত্রিকের হাত থেকে মনে হয় না কেউ রক্ষা করতে পারবে। দেখা যাক চিরঞ্জিত শেষ পর্যন্ত কি করে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
না। ওই পিশাচকে তৈরি করেনি দাদা৷ গল্প অনুযায়ী গেনু একটি আফ্রিকান আত্মা। ভানু তার সাধনার জোরে গেনুকে নিজের বশে এনেছে৷ এই আত্মাকে দিয়েই অনেক কাজ ও করায়। গেনু এখানে ভানুর আদেশ বাহক। যা আদেশ করবে তাই পালন করবে৷ এবং খুবই শক্তিশালি পিশাচ৷ এই পিশাচই মর্গ থেকে দেহ তুলে নিয়ে যেত ভানুর জন্য। কারণ ভানু শবসাধনা করত। এই দিকটা তন্ত্রের খুবই ভয়ানক এবং ক্ষতিকারক দিক বলেই বর্ণনা করা হয়েছে। যা চিরঞ্জিত জানে। চিরঞ্জিতেরই এই বিষয়ে থিসিস ছিল আর সেটা ভানু চুরি করেছিল। মূল গল্পে এরম অনেক ডিটেলস আছে যা সিরিজে বাজে ভাবে কেটে দিয়েছে। ফলত অনেক জায়গাই কেমন যেন খাপছাড়া লাগছে৷
সিরিজে এভাবে কেটে দেওয়াটা মোটেই উচিত হয়নি। পুরো গল্পটা ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে তুলে ধরা উচিত ছিলো।
হ্যাঁ দাদা। নীরেন ভাদুড়িকে নিয়ে ভাদুড়ি সমগ্র বলে একটি বই আছে৷ যেখানে চমৎকার সব গল্প রয়েছে। আমি আগেই পড়েছি। তাই আমার ধারণা টা আছে। এই যেমন এখানে দেখিয়েছে গেনু পিশাচকে তৈরি করেছে। আসলে আত্মা বা পিশাচ যাই বলি না কেন তাকে আমরা কেউই কোনভাবেই তৈরি করতে পারি না৷ একি মাটির পুতুল?
একদম ঠিক বলেছেন আপনি। আত্মা বা পিশাচকে কখনোই তৈরি করা যায় না। তাহলে তো এই ওয়েব সিরিজটা বাস্তবসম্মত হলো না। নিজেদের মনমতো ওয়েব সিরিজ তৈরি করলেই তো হবে না।
নিকষ ছায়া সিরিজ টি দেখা হয়নি। আপনার রিভিউ পরে দেখার ইচ্ছে হলো। হইচই প্লাটফর্ম থেকে সময় করে দেখে নিব। যদিও ভৌতিক বা তান্ত্রিক বা হরর কোন সিরিজ বা সিনেমা দেখতে একটু ভয় পাই!! বেশ ভালো লেগেছে আপনার রিভিউটি দাদা। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দাদা আজকে আপনি অনেক সুন্দর করে এই ওয়েব সিরিজের তৃতীয় পর্ব শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। আমার কাছে এই পর্বটা অনেক ভালো লেগেছে। এ পর্বে বুঝতে পারলাম সঞ্জয়ের মামা ভানু তান্ত্রিক ওই পিশাচকে তৈরি করেছে। আর এর দ্বারা বোঝাই যাচ্ছে তিনি কতটা ভয়ংকর। এরকম গল্প গুলো একটু ভয়ানক হয়। ওই মেয়েটাকে দেখছি লোভে পড়ে তাদের হাতে দিয়ে দিয়েছিল। এখন দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হবে।
দেখলাম দাদা সিনেমাটা। পর্ণশবরীর অভিশাপ সিনেমাটা গল্পের থেকে সামান্য আলাদা হলেও মোটামুটি ভালোই সাজিয়েছিল। কিন্তু নিকষছায়াতে গল্প এতো বেশি কাট করে দিয়েছে যে অনেক জায়গায় কন্টিনিউটি ব্রেক হয়ে গেছে বলে আমার মনে হয়েছে৷ আরও গোছানো হতে পারত। হয়তো গল্পটা আমি আগেই পড়েছি বলে আমার এমন মনে হচ্ছে।
এটা দেখার সময় আমার কাছেও কিছু এলোমেলো লেগেছে। কারণ এই পর্বে সঞ্জয় ছেলেটা যখন পুলিশ ডেকে নিয়ে আসলো, সেই দৃশ্যটা এখানে দেখায়নি । কিছু কিছু জায়গায় দৃশ্য কাট আছে।
দাদা আজ আপনি নিকষ ছায়া ওয়েব সিরিজটার আরেকটা পর্ব আমাদের সবার মাঝে শেয়ার করেছেন, এটি দেখতে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। এই ওয়েব সিরিজের আগের পর্বগুলোর রিভিউ আমার পড়া হয়েছিল। আর আজকে এই পর্বটার রিভিউ পোস্ট পড়তে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। ওই পিশাচের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম। মামীকে দেখছি ভানু তান্ত্রিক মেরে ফেলেছে। আমি একে একে চেষ্টা করবো এই ওয়েব সিরিজের প্রত্যেকটা পর্বের রিভিউ পড়ার জন্য।