মধ্যরাতের ট্রেন ( শেষ পর্ব )

in আমার বাংলা ব্লগ8 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

DALL·E 2024-12-14 23.59.34 - A stunning and mysterious image of a train that runs only at midnight, designed with an extraordinary and fantastical appearance. The train glows with.webp

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে "মধ্যরাতের ট্রেন" এর অন্তিম পর্ব শেয়ার করবো। তো তন্ময় যখন সেই অচেনা শহরে গিয়েছিলো, তখন তাকে বৃদ্ধ লোকটি বলেছিলো যে, তুমি হয় এখানে থাকো, নাহয় নিজের শহরে ফিরে যাও। এরপর এই কথা শোনার পরে তন্ময় থমকে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে ছিল এবং ভাবছিলো যে, সে কি করবে এখন। এদিকে তার রহস্য উন্মোচন হয়নি, আবার তার নিজের শহরে আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। এখন ফিরে গেলে আবার সেখানে কোনোদিন যেতে পারবে না, কিছুক্ষন এইসব ভাবার পরে সে সিদ্ধান্ত নেয় যে, নিজের শহরে আবার ফিরে যাবে। কারণ তার কাছে তার প্রিয় মানুষগুলো আগে, তাদের ছাড়া সে কোথাও সুখী হতে পারবে না বা শান্তিতে থাকতে পারবে না। আর তাছাড়া সে যে শহরে ছিল, সেটা অন্য্ জগত অর্থাৎ সেখানে জীবিত প্রাণী বেশিক্ষন থাকতে পারবে না।

তাই বৃদ্ধ লোকটি তাকে এই কথা বলেছিলো যে, না ফিরে গেলে আর কোনোদিন ফিরতে পারবে না। এখন বৃদ্ধ লোকটির কাছে সে তার নিজের শহরে ফিরে যাওয়ার কথা বললে, বৃদ্ধ লোকটি বলে যে, তন্ময়- তুমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছো। কারণ এইসবের প্রলোভনে অনেকে নিজেকে নিজের মানুষজনদের কাছ থেকে আলাদা করে ফেলে। কিন্তু তুমি সেই প্রলোভনকে উপেক্ষা করে প্রমান করেছো যে, ভালোবাসা আর পরিচিতি কোনো রহস্যের থেকে বড়ো কিছু নয়। এরপর তন্ময় যখন পুনরায় আবার ট্রেনে উঠে ফিরে আসার জন্য তৈরি হলো, তখন সেই বৃদ্ধ লোকটি তাকে একটি পকেট ঘড়ি দিয়েছিলো, তবে ঘড়িটির কাঁটা যেন এক জায়গায় থমকে ছিল অর্থাৎ প্রায় অচল অবস্থার মতো।

এই ঘড়িটা তাকে মূলত দিয়েছিলো, যাতে সে যখন আবার কোনো রহস্যের পিছনে দৌড়াবে, তখন তাকে মনে করাতে সাহায্য করবে যে, নিজের জীবন আর প্রিয় মানুষগুলোর মূল্য কোনোকিছুর থেকে বড়ো না। এইসব এর পরে বৃদ্ধ লোকটি তাকে ট্রেনের দিকে ইশারা করে এবং বলে যাও, ট্রেনটি তোমাকে তোমার জগতে পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তন্ময় সোজা গিয়ে ট্রেনে উঠে বসলো এবং ট্রেনটি আবার তার শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হলো। ট্রেনে যেতে যেতে তার কাছে সেই আগের মতোই আভাস হতে থাকে যে, সবকিছুই আবার কুয়াশার ঘন আবরণে আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং ট্রেনটি সময়ের স্রোতে যেন ভেসেই চলেছে।

এইভাবে কয়েক ঘন্টা পরে ট্রেনটি থেমে যায় এবং তন্ময় তখন বাইরে এসে দেখে যে, সে তার নিজের শহরে চলে এসেছে এবং সেই আগের মতো চারিদিকে কোলাহলে পরিপূর্ণ। বৃদ্ধ লোকটি সেই ভিন্ন জগৎ থেকে তাকে যে ঘড়িটা দিয়েছিলো, সেই ঘড়িটা তখনও একইভাবে বন্ধ ছিল। তো যাইহোক, তন্ময় নিজের শহরে ফিরে অনেক খুশি হয় ঠিকই, কিন্তু তার মনে আফসোস থেকে যায় যে, রহস্যটা আর জানা হলো না। তবে তন্ময়ের কাছে এই পকেট ঘড়িটা আর জীবনের এই অভিজ্ঞতা প্রতিটা সিদ্ধান্তে ছাপ রেখে গেলো।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 days ago 

তন্ময় একেবারে সঠিক একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে নিজের প্রিয় মানুষগুলোর থেকে আর অন্য কোনো কিছুই বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ওই বৃদ্ধ লোকটার দেওয়া বন্ধ ঘড়ি পদে পদে তাকে এই বিষয়গুলো মনে করায়। যদি সে ওই আজব দুনিয়ায় থেকে যেতো, তাহলে হয়তো আর কোনোদিন নিজের শহরে আর নিজের প্রিয় মানুষগুলোর কাছে ফিরে আসতে পারতো না। দাদা আপনি অনেক সুন্দর করে এই গল্পের শেষ পর্বটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে এই পর্বটা।

 7 days ago 

আসলেই নিজের জীবন এবং প্রিয় মানুষগুলোর চেয়ে বড় কিছু পৃথিবীতে আর নেই। তন্ময় একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ রহস্য উন্মোচন করতে গেলে সে আর কখনোই ফিরতে পারতো না। আসলে কিছু কিছু রহস্য না জানাটাই উত্তম। গত পর্বের মতো এই পর্বটা পড়েও ভীষণ ভালো লাগলো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 7 days ago 

গল্পের শেষটা জানার অপেক্ষায় ছিলাম।যাক আজ পড়ে ভালো লাগলো। তন্ময় যা করেছে ঠিক ই করেছে।নিজের জীবন আর প্রিয় মানুষ গুলোর কথা ভেবে ভালো কাজ ই তিনি করেছেন।ঘড়িটি তাকে অনেক সহযোগিতা করেছে।আপনি খুব সুন্দরভাবে গল্পটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা।আমার খুব ভালো লেগেছে গল্পটি।

 7 days ago 

দাদা আজকে আপনি অনেক বেশি সুন্দর করে মধ্য রাতের ট্রেন গল্পের শেষ পর্ব শেয়ার করেছেন। আর আমার কাছে এই পর্বটা অনেক বেশি সুন্দর লেগেছে। তন্ময় রহস্যটা ভালোভাবে জানার জন্য আসলেও, এখন সে নিজের শহরে যাওয়ার সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে। সে একেবারে ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে এসব রহস্য না জানলেও চলে। রহস্যের জন্য নিজের জীবনটাকে সারা জীবনের জন্য শেষ করে দেওয়ার মানেই হয় না। গল্পটা সত্যি অনেক বেশি ভালো লেগেছে।

 6 days ago 

এই কথাটা একেবারে ঠিক দাদা। নিজের জীবন এবং আপনজনের থেকে কোন কিছুই মূল‍্যবান না। শেষপর্যন্ত তন্ময় ফিরে এলো মৃত্যুর দ্বার থেকে। এবং সেটাও ঐ বৃদ্ধ লোকের জন্য। বেশ দারুণ লাগল গল্পটা। ধন্যবাদ দাদা আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য আপনাকে।।