শিরোনাম: "বন্ধুত্বের সেতু" গল্পের শুরুতে আমরা

বন্ধুত্বের সেতু
একটি ছোট্ট গ্রামে ছিল দুটি বন্ধু, রাহুল এবং সোহান। তারা একসাথে বড় হয়েছে, খেলাধুলা করেছে, এবং একে অপরের সুখ-দুঃখে পাশে থেকেছে। কিন্তু গ্রামের মাঝ দিয়ে একটি বড় নদী বয়ে যেত, যা তাদের বন্ধুত্বের মাঝে একটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নদীটি ছিল খুবই গভীর এবং প্রবাহিত, তাই সাঁতরে পার হওয়া সম্ভব ছিল না।
একদিন, রাহুল ও সোহান নদীর তীরে বসে গল্প করছিল। সোহান বলল, "আমাদের বন্ধুত্বের জন্য একটি সেতু তৈরি করা উচিত। তাহলে আমরা সহজেই একে অপরের কাছে যেতে পারব।"
রাহুল মাথা নেড়ে বলল, "হ্যাঁ, কিন্তু আমাদের সেতু তৈরি করতে অনেক কাঠ এবং সময় লাগবে।"
তাদের দুজনের মধ্যে একটি নতুন আশা জাগল। তারা সিদ্ধান্ত নিল, তারা একসাথে সেতু তৈরি করবে। শুরু হল তাদের কঠোর পরিশ্রম। তারা প্রতিদিন সকালে উঠে কাঠ সংগ্রহ করতে যেত, নদীর তীরে বসে কাঠগুলোকে একত্রিত করে সেতুর নির্মাণ শুরু করল।
দিন মাসে পরিণত হলো। সেতুর নির্মাণে তাদের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হলো। তারা একে অপরকে উৎসাহিত করত, একসাথে হাসত এবং অনেক সময় কাটাত। অবশেষে, একদিন তারা তাদের সেতুর নির্মাণ সম্পন্ন করল। সেতুটি ছিল মজবুত এবং সুন্দর, যা নদীর দুই তীরে তাদের বন্ধুত্বের প্রতীক হয়ে দাঁড়াল।
সেতু তৈরি হওয়ার পর, রাহুল ও সোহান একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত করতে লাগল। তারা একসাথে পড়াশোনা করত, খেলা করত এবং নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করত। তাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হতে লাগল।
একদিন, গ্রামের অন্য শিশুদের মধ্যে একটি সমস্যা দেখা দিল। তারা নদীর পাড়ে খেলতে গিয়ে অনেকবার পড়ে যাচ্ছিল এবং তাদের জন্য নিরাপদ স্থানে যাওয়ার পথ ছিল না। রাহুল ও সোহান বুঝতে পারল, তাদের সেতু শুধু তাদের জন্যই নয়, বরং গ্রামের সকলের জন্য উপকারে আসবে।
তারা সিদ্ধান্ত নিল, তারা সেতুটিকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করবে। গ্রামের সব শিশুরা আনন্দে তাদের সেতু ব্যবহার করতে লাগল। সেতুটি হয়ে উঠল বন্ধুত্বের একটি সেতু, যা সকলের মধ্যে মিলন ঘটাল।
এভাবে, রাহুল ও সোহানের বন্ধুত্ব শুধু তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রইল না, বরং পুরো গ্রামের মধ্যে একটি বন্ধুত্বের সেতু তৈরি করল। তাদের এই বন্ধুত্বের গল্প আজও সেই গ্রামে শোনা যায়, যেখানে নদীর সেতু এখন সকলের মিলনের স্থান।
বন্ধুত্বের শক্তি কখনোই ছোট করে দেখা উচিত নয়, কারণ এটি যে কোনো বাধা অতিক্রম করতে পারে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.