শিলাইদহ কুঠিবাড়ি পর্ব-৪
আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন আশা করি ভাল আছেন। ইতিমধ্যে আমি আপনাদের মাঝে প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্ব শেয়ার করেছি। আজ আমি চলে এসেছি চতুর্থ পর্ব নিয়ে। আশা করি আগের তিনটি পর্বই আপনাদের কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে এই পর্বটিও আপনাদের কাছে খুবই ভালো লাগবে। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলন শুরু করা যাক আমার আজকের চতুর্থ পর্বের গল্প।
কুঠিবাড়ির নতুন গেটটি চোখে পড়ার মতো। এটি শুধু একটি প্রবেশদ্বার নয় বরং ভেতরের অভিজ্ঞতার একটি ভূমিকা। গেট পেরোতেই বোঝা যায় জায়গাটিকে নতুনভাবে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পথঘাট পরিষ্কার গাছপালা ছাঁটা খোলা মাঠগুলো গোছানো। কোথাও বিশৃঙ্খলা নেই কোথাও অযত্নের ছাপ নেই। এই পরিবর্তনগুলো কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয় বরং দর্শনার্থীদের জন্য একটি পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা তৈরির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এটা স্পষ্ট বোঝা যায়। ভেতরে ঢুকে প্রথমেই হাঁটতে শুরু করলাম। হাঁটার পথগুলো এমনভাবে তৈরি যেন মানুষ শুধু এগিয়ে না যায় চারপাশটাও দেখুক অনুভব করুক। দুই পাশে সবুজ ঘাস দূরে লাল রঙের দালান মাথার ওপরে খোলা আকাশ। এখানে হাঁটতে হাঁটতে মনে হচ্ছিল গন্তব্যের চেয়ে পথটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই পথগুলো যেন চিন্তার মতো ধীরে স্থির গভীর কুঠিবাড়ির মূল ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হলো এটি শুধু একটি বাড়ি নয়। এটি একটি সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে। লাল দেয়াল সাদা নকশা প্রশস্ত বারান্দা সবকিছু মিলিয়ে ভবনটি এক ধরনের নীরব ব্যক্তিত্ব ধারণ করেছে। ভেতরে ঢোকার আগে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলাম। মনে হচ্ছিল এই দেয়ালগুলো অনেক কিছু দেখেছে নিঃসঙ্গতা সৃষ্টির আনন্দ ভাবনার ভার আবার প্রকৃতির নীরবতা।
ভেতরে ঢুকে একে একে চোখে পড়লো নানা জিনিস। সাধারণ কাঠের খাট টেবিল চেয়ার দেখতে খুব সাধারণ কিন্তু এগুলোর ভেতরে জমে আছে অসাধারণ সময়। এগুলো স্পর্শ করলে হয়তো কিছুই হবে না কিন্তু তাকিয়ে থাকলেই মনে হয় এই জিনিসগুলো একসময় জীবনের অংশ ছিল কেবল প্রদর্শনীর বস্তু নয়। এই ঘরগুলোতে দাঁড়িয়ে বোঝা যায় সৃষ্টিশীলতা বিলাসিতার ওপর নির্ভর করে না। সাধারণ পরিবেশেও গভীর চিন্তা জন্ম নিতে পারে। কুঠিবাড়ির ভেতরে সংরক্ষিত কিছু যন্ত্রপাতি আলাদা করে দৃষ্টি কেড়েছে। ঘাস কাটার মেশিন পালকি সিন্দুক এসব দেখে মনে হয় সেই সময়ের জীবনযাপন কতটা ভিন্ন ছিল আবার কতটা গোছানোও ছিল। এই জিনিসগুলো আমাদের বলে দেয় সাহিত্যিক জীবন মানেই আলাদা কোনো জগৎ নয়। বরং সেটি ছিল দৈনন্দিন জীবনের মধ্যেই গড়ে ওঠা এক গভীর চর্চা এটাই ছিল আমার আজকের চতুর্থ পর্বের গল্প আশা করি আপনাদের কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনারা কম বেশি জানেন আমি সবসময়ই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার বিভিন্ন ফটোগ্রাফি এবং গল্প আপনাদের কাছে শেয়ার করতে খুবই পছন্দ করি। আশা করি আমার পুরো গল্পটি আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগছে। পরবর্তীতে আপনাদের মাঝে আমি শেয়ার করব পঞ্চম পর্ব। তাহলে আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি আবার দেখা হবে পঞ্চম পর্বতে সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনা রইল।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |



