শেষ বিকেলের মায়া - আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পার্ট ০২
দিতে চেষ্টা করল। নাহ কথাটা মাথার ভেতর ঢুকে গিয়েছে। ৯০ দশকের ভাঙা টেপের মতো বেজেই চলছে। ‘বিলকিইইইস, এই টেবিলে এক কাপ চা দিয়ে যাও তো।' একটু উঁচু গলায় চা চেয়ে হাতে একটা ফাইল নিয়ে বসল নীরা। কিন্তু সেই একই কথার প্রতিধ্বনি থামছে না। মহিলাটার কণ্ঠ খুব ক্যানক্যানে ধরনের। এ কারণেই হয়তো কথাটা এত কানে লেগেছে। নীরা নিজেই এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা, কী সমস্যা আপনার? আমাকে বলুন।' নীরার কথায় মহিলাটা বেশ খুশি হয়েছে মনে হলো।
রিজিওনাল ম্যানেজারের সামনে থেকে উঠে নীরার সামনে এসে বলল, ‘আফা, আমার ঋণ লাগব।' ‘জি তা তো বুঝেছি। সমস্যার কথা বলুন।’ ‘আমার জামাই আইজ ৭ বচ্ছর ঢাহা থাকে। রিশকা চালায়। পতম পতম মেলা ট্যাকা পাড়াইত। সোনু, ক্রিরিম, চুরি, আলতাও পাড়াইত।’ ‘হুম’ ‘দুই বসর পরতুন আর পাড়ায় না। ট্যাকা চাইলে কাইজ্জা লাগাই দেয়।' ‘কেন?’ ‘আমিও তো বুজি পাই নাই, আফা। গেরামের মুক্ষ মাইয়া আমি। আমি কি আর আমনেগো মতোন পড়া জানি। আমনেরা ইস্মাট মাইয়া মানুষ। কিছু...' ‘আচ্ছা, তারপর...?’ মহিলার কথার মাঝেই নীরা জিজ্ঞেস করল। ‘পরে খবর নিয়া জানি হেয় আরেক বেডিরে বিয়া করসে হেইখানে।' কথাটা বলেই মহিলাটা একেবারে হুট করেই শাড়ির আঁচল নাকে চেপে স্বশব্দে কান্না জুড়ে দিল। এমন কান্না এই রুমের নিত্য ঘটনা। সবার চোখে সয়ে গিয়েছে। নীরারও। তবে আজ একেবারে অজানা কোনো কারণে এই মহিলার কান্নায় নীরার বুকের ভেতরটা চিরে যাচ্ছে। হয়তো সেতুর কথা মনে পড়ছে তাই। নয়তো নীরা নিজেও একজন মেয়ে বলেই। কারণটা অজানাই না হয় থাক।
কোনো কাজেই মন বসছে না নীরার। মনটা ঐশীর কাছেই পড়ে আছে। শাহেদ ঠিকমতো খেতে পারছে কিনা খুব চিন্তা হচ্ছে। আটপৌরে সংসারী মেয়ে হতে কখনোই চায়নি নীরা। শাহেদের কাছ থেকে ও সব সময়ই পেয়েছে সুখ স্বাধীনতা। এমন ভাগ্য এ দেশে খুব কম মেয়ের কপালে জোটে। তবে ঐশীর জন্মের পর থেকে সবই কেমন যেন একটু একটু করে বদলাতে শুরু করেছে। যে নীরার আগে একটা দিন ঘরে কাটানো অসহ্য লাগত, তারই এখন মনে হয় ঘরের বাইরে দু' দণ্ড শান্তি নেই। তবে এবারের কাজটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তা না হলে হয়তো এত দূর আসতই না নীরা। জার্মানি থেকে ফান্ডিং এসেছে। এই গ্রামের অসহায়, বিধবা আর ডিভোর্সি মেয়েদের ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রজেক্ট আপডেট জমা দিতে হবে; কিন্তু নীরা বসে বসে ভাবছে ঐশীর ফিডারটা সেতু ঠিকমতো ধুতে পেরেছে কিনা। কোনো মানে হয়! মনটা আজ বড় অবাধ্যতা করছে। রিজিওনাল ম্যানেজারের কাছে কিছু মহিলা এসেছে ঋণ চাইতে। পাশের টেবিলেই যে যার সমস্যার কথা বর্ণনা করে কী কাজে ঋণ নিতে চাইছে তা জানাচ্ছে। পুরো রুম জুড়েই গমগম আওয়াজ। ‘আমার জামাই মইরা গেসে আগের বছরে।' ‘স্যার, আমার ৫টা বাচ্চা। মানুষ করন লাগবো।' ‘ঋণের ট্যাকা দিয়ে মুরগি কিনমু।' “হেয় আরেক বেডির লগে থাহে। আমাগো কোনো ট্যাকা দেয় না।’ ‘তিন তালাক দেওনের পর দুইবার নিতে আইসিল। আমি যাই নাই। ক্যান যামু।' এমন অনেক কথার ভিড়ে নীরার কানে একটা কথাই পুনরাবৃত্তি হতে লাগল। ‘হেয় আরেক বেডির লগে থাহে। আমাগো কোনো ট্যাকা দেয় না।' কিছুক্ষণ অন্যদিকে মন
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @fxsajol,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community