আমার সখের ফটোগ্রাফি সাথে ও কবিতা - পর্ব ৮
“ও-গাঁর বধূ ঘট ভরিতে যে ঢেউ জলে জাগে, কখন কখন দোলা তাহার এ-গাঁয় এসেও লাগে । এ-গাঁর চাষী নিঝুমরাতে বাঁশের বাঁশীর সুরে ওইনা গাঁয়ের মেয়ের সাথে গহন ব্যথায় ঝুরে । এ-গাঁও হতে ভাটির সুরে কাঁদে যখন গান, ও-গাঁর মেয়ে বেড়ার ফাঁকে রয় যে পেতে কান ৷ এ-গাঁও ও-গাঁও মেশামেশি কেবল সুরে সুরে, অনেক কাজে এরা ওরা অনেকখানি দূরে।” ভাব -বনিময় সত্ত্বেও সময়ে সময়ে সুরটা বেসুরো হইয়া বাজে 66 'এ-গাঁর লোকে করতে পরখ ও-গাঁর লোকের বল অনেক বারই লাল করেছে জলীল বিলের জল ।”
“দুখাই ঘটক নেচে চলে নাচে তাহার দাড়ী বুড়ো বটের শিকড় যেন চলছে নাড়ি নাড়ি ৷ ধানের জমি বাঁয়ে ফেলিয়া ডাইনে ঘনপাট, জলীর বিলে নাও বাহিয়া ধরল গাঁয়ের বাট।” বিবাহের আসরের বর্ণনা খুব একটা জমকালো রকমের— “বিয়ের কুটুম এসেছে আজ সাজুর মায়ের বাড়ী কাছারি ঘর গুমগুমাগুম লোক হয়েছে ভারি ৷ গোয়াল ঘরে ঝেড়ে পুছে বিছান দিল পাতি, বসল গাঁয়ের মোল্লা মোড়ল গল্পগানে মাতি ৷ পড়ে কেতাব গাঁয়ের মোড়ল নাচিয়ে ঘন দাড়ী পড়ে কেতাব গাঁয়ের মোল্লা মাঠ ফাটা ডাক ছাড়ি।” তারপরে মিঞারা কত কেচ্ছা শুনাইয়া সমবেত লোকদের মন- তেছেন,— হানিফের কথা, জয়গুন বিবির কথা শুনিয়া লোকেরা মাতি ছে— হানিফের যুদ্ধ-বর্ণনায় খুব বাহাদুরী— “কাতার কাতার সৈন্য কাটে যেন কলার বাগ, মেষের পালে পড়েছে যেন সুন্দরবনি বাঘ ।” এদিকে আবার— “উঠান 'পরে হল্লা করে পাড়ার ছেলেমেয়ে, রঙীন বসন উড়ছে তাদের নধর তনু ছেয়ে।”