আমার সখের ফটোগ্রাফি সাথে ও কবিতা - পর্ব ২

in #poetry27 days ago

কেউ কেউ বলে, “তাহারি মতন দেখেছিনু একজনে, আমাদের সেই ছোট গাঁর পথে চলে যেতে আনমনে।” “আচ্ছা, তাহারে শুধাও নি কেহ, কখন আসিবে বাড়ী, পরদেশে সে যে কোন্ প্রাণে রয় আমার সাজুরে ছাড়ি ?” গাঙে-পড়া-লোক যেমন করিয়া তৃণটি আঁকড়ি ধরে, তেমনি করিয়া চেয়ে রয় বুড়ী তাদের মুখের পরে। মিথ্যা করেই তারা বলে, “সে যে আসিবে ভাদ্র মাসে, খবর দিয়েছে, বুড়ী যেন আর কাঁদে না তাহার আশে!” এত যে বেদনা তবু তারি মাঝে একটু আশার কথা, মুহূর্তে যেন মুছাইয়া দেয় কত বরষের ব্যথা । মেয়েরে ডাকিয়া বার বার কহে “ভাবিস না মাগো আর, বিদেশী চাষীরা কয়ে গেল মোরে – খবর পেয়েছে তার।” মেয়ে শুধু দুটি ভাষা-ভরা আঁখি ফিরাল মায়ের পানে; কত ব্যথা তার কমিল ইহাতে সেই তাহা আজ জানে । গণিতে গণিতে শ্রাবণ কাটিল, আসিল ভাদ্র মাস, বিরহী নারীর নয়নের জলে ভিজিল বুকের বাস।

IMG_6599.JPG

আজকে আসিবে কালকে আসিবে, হায় নিদারুণ আশা, ভোরের পাখির মতন শুধুই ভোরে ছেড়ে যায় বাসা। আজকে কতনা কথা লয়ে যেন বাজিছে বুকের বীণে, সেই যে প্রথম দেখিল রূপারে বদনা-বিয়ের দিনে তারপর, সেই হাট ফেরা পথে তারে দেখিবার তরে, ছল করে সাজু দাঁড়ায়ে থাকিত গাঁয়ের পথের পরে। নানা ছুতো ধরি কত উপহার তারে সে যে দিত আনি, সেই সব কথা আজ তার মনে করিতেছে কানাকানি । সারা নদী ভরি জাল ফেলে জেলে যেমনি করিয়া টানে, কখন উঠায়, কখন নামায়, যত লয় তার প্রাণে; তেমনি সে তার অতীতেরে আজি জালে জড়াইয়া টানে, যদি কোন কথা আজিকার দিনে কয়ে যায় নব-মানে। আর যেন তার কোন কাজ নাই, অতীত আঁধার গাঙে ডুবারুর মত ডুবিয়া ডুবিয়া মানিক মুকুতা মাঙে ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.13
JST 0.033
BTC 61511.66
ETH 2989.02
USDT 1.00
SBD 3.63