আমার সখের ফটোগ্রাফি সাথে ও কবিতা - পর্ব ৪

in #post25 days ago

সকলেই জানে, সেই কোন্ কালে রূপা বলে এক চাষী, ওই গাঁর এক মেয়ের প্রেমেতে গলায় পড়িল ফাঁসি বিয়েও তাদের হয়েছিল ভাই, কিন্তু কপাল-লেখা, খণ্ডাবে কেবা ? দারুণ দুঃখ ভালে এঁকে গেল রেখা। রূপা এক দিন ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে গেল দূর দেশে, তারি আশা-পথে চাহিয়া চাহিয়া বউটি মরিল শেষে মরিবার কালে বলে গিয়েছিল তাহার নক্সী-কাঁথা, কবরের গায় মেলে দেয় যেন বিরহিণী তার মাতা ! বহুদিন পরে গাঁয়ের লোকেরা গভীর রাতের কালে, – শুনিল কে যেন বাজাইছে বাঁশী বেদনার তালে তালে । প্রভাতে সকলে দেখিল আসিয়া সেই কবরের গায়, রোগ পাণ্ডুর একটি বিদেশী মরিয়া রয়েছে হায় ! শিয়রের কাছে পড়ে আছে তার কখানা রঙিন শাড়ী, রাঙা মেঘ বেয়ে দিবসের রবি যেন চলে গেছে বাড়ি !

IMG_6604.jpg

“এই শেষ কথা !” সাজু কহে কেঁদে, “বলিবে না আর কিছু?” খানিক চলিয়া থামিল রূপাই, কহিল চাহিয়া পিছু, “মোর কথা যদি মনে পড়ে সখি, যদি কোন ব্যথা লাগে, দুটি কালো চোখ সাজাইয়া নিও কাল কাজলের রাগে। সিন্দুরখানি পরিও ললাটে—মোরে যদি পড়ে মনে, রাঙা শাড়ীখানি পরিয়া সজনি চাহিও আরশী-কোণে । মোর কথা যদি মনে পড়ে সখি, যতনে বাঁধিও চুল, আলসে হেলিয়া খোঁপায় বাঁধিও মাঠের কলমী ফুল । যদি একা রাতে ঘুম নাহি আসে – না শুনি আমার বাঁশী, বাহুখানি তুমি এলাইও সখি মুখে মেখে রাঙা হাসি । চেয়ো মাঠ পানে — গলায় গলায় দুলিবে নতুন ধান; কান পেতে থেকো, যদি শোন কভু সেথায় আমার গান । আর যদি সখি, মোরে ভালবাস মোর তরে লাগে মায়া, মোর তরে কেঁদে ক্ষয় করিও না অমন সোনার কায়া!” ঘরের খোপেতে মোরগ ডাকিল, কোকিল ডাকিল ডালে, দিনের তরণী পূর্ব সাগরে দুলে উঠে রাঙা পালে । রূপা কহে, “তবে যাই যাই সখি, যেটুকু আঁধার বাকি, তারি মাঝে আমি গহন বনেতে নিজেরে ফেলিব ঢাকি ।” পায়ে পায়ে পায় কতদূর যায়, তবু ফিরে ফিরে চায়; সাজুর ঘরেতে দীপ নিবু নিবু ভোরের উতলা বায় ।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 61232.75
ETH 2977.74
USDT 1.00
SBD 3.60