২য় পর্ব || গল্পঃ- " পালকি "
21-03-2025
০৭ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২১ রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে চলে এলাম গল্পের ২য় পর্ব শেয়ার করার জন্য। ইতোপূর্বে আপনাদের সাথে পালকি গল্পের প্রথম পর্বটি শেয়ার করেছিলাম। তো আজকের পর্বটিও ভালো লাগবে এবং পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই আসবে।
১ম পর্বের পর থেকে
তাহলে বাড়ি থেকেই খাতাটা নিয়ে আসো! বাড়ি তোমার কাছেই এখান থেকে!
স্যারের এমন কথা শোনে আসলে অবাক হলাম না। কারণ স্যার প্রায়ই এমন করে। যারা খাতা নিয়ে না আসে তাদের নিয়ে আসতে বলে। কিন্তু এতো ঠান্ডার মধ্যে আবার যেতে হবে খাতা নিয়ে আসতে! হেটেঁ গেলে সময় বেশি লাগবে। স্যার তখন বলে উঠলো, আসিফ তুমি তায়েফের সাইকেল নিয়ে যাও। তায়েফ আমার আরেক বন্ধু। সাইকেল চালানোটা আগেই শিখে ফেলেছিলাম। বলতে গেলে ক্লাস ফাইভে থাকার সময়ই সাইকেল চালানো শেখা। বাবার ফনিক্স সাইকেল দিয়ে সাইকেল চালানোটা শেখা হয়েছিল।
-তায়েফ,তোমার সাইকেলের চাবিটা দাও!
তায়েফের সাইকেলের চাবিটা নিয়ে উঠে গেলাম সাইকেল নিয়ে। শীতের সকালে সাইকেল চালানো বেশ কষ্ট! পা তো পুরো জ্যম হয়ে যায়। আর নাকের কথা কি বলবো। প্রচন্ড ঠান্ডায় জমে বরফের মতো অবস্থা! স্যারের প্রাইভেট থেকে বাড়িতে আসতে বেশিক্ষণ লাগে নি। পাচঁ মিনিটের মতো লাগে।
বাড়িতে ডুকতেই দেখি আমার মা সকাল সকাল বাড়ির উঠোন ঝাড়ু দিচ্ছে। এই কনকনে শীতেও আমার মা সকাল সকাল উঠে পরে। তারপর রান্নার কাজ শুরু করে দেয়। সংসারটাকে সুন্দর করেই সামলে নিয়েছে মা।
-কিরে আসিফ! তুই আবার ফিরে এলি যে! আর এই সাইকেল কার?
- এটা তায়েফের সাইকেল। স্যারের বাড়ির কাজের খাতা নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। এজন্য স্যার পাঠালো খাতা নিয়ে যেতে!
বেশি কথা বাড়ালাম না মায়ের সাথে! খাতা নিয়েই আবার দিলাম দৌড়! সাইকেল চালিয়ে মাঝ রাস্তায় আসতেই গেল সাইকেলের চেইন পরে। পরে গেলাম আরেক বিপদে! বড় সাইকেলগুলার এই একটাই সমস্যা। বেশি জোরে সাইকেলের প্যাডেল মারলে সাইকেলের চেইন পরে যায়।
কোনো রকমে সাইকেলের চেইন ঠিক করে আবার উঠে পরলাম। স্যারের প্রাইভেটের সামনে এসে সাইকেল রেখে ভিতরে প্রবেশ করলাম!
-আসিফ, খাতা নিয়ে এসেছো?(একটু হেসে বললো স্যার)
-জ্বি স্যার। নিয়ে এসেছি।
-শেষের দিকে খাতা দেখিয়ে যেও!
- ঠিক আছে স্যার।
তারপর ক্লাসে মন দিলাম। সকাল সকাল ক্লাসের সময় মনে হয় খুব দ্রুত চলে যায়। আমাদের ক্লাস শেষ হয় ৭:২০ এর দিকে। তারপর মেয়েদের ব্যাচ। মেয়েরা বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকে। ক্লাস শেষ করে বের হলাম! বের হতেই মীমকে পেলাম। আমার বাল্য বান্ধবী। সে আমাকে এখনো টিমটিম নাম ধরেই ডাকে। আর আমি তাকে ডিম বলেই ডাকি!
-কি টিমটিম! প্রেমে পরেছিস শুনলাম!
- আস্তাগফিরুল্লাহ, এইসব কই থেকে শুনলি রে ডিম! আমাকে দিয়ে কি প্রেম হয় নাকি রে!
- হয় হয়! যা তাহলে আমাদের ক্লাস আছে এখন।
এটা বলে মীম চলে গেল। শাহআলম স্যারের প্রাইভেট শেষে মিনহাজ স্যারের প্রাইভেট। সেখানে ইংরেজি পড়ি। মিনহাজ স্যার ভালোই বুঝায় ইংরেজি। গুরুদয়াল কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স মাস্টার্স করেছে । শাহআলম স্যারের প্রাইভেট শেষ করে বের হওয়ার পর রাস্তার মোড়ে রাকিব দাঁড়িয়ে আছে আমার জন্য!
- কিরে! তুই না কিসের গরম খবর বলবি আমাকে! বলতো গরম খবরটা!
- আগে কি খাওয়াবি বল!
- এখানে খাওয়ার প্রশ্ন চলে আসলো কেন, শালা?
- টিমটিম এজন্যই বলে তোকে মীম! তুই বলছিলি না একটা প্রেম করায় দিতে!
- হ্যা! তো কি হয়ছে?
- মোটা দোলা তো রাজি হয়ছে! তোর কথা আমি বলেছি সব দোলাকে!
- শালা! কাজটা করলি কি! আমি কি কখনো বলছি দোলাকে পছন্দ করি। আমি তো বলছিলাম মেয়েটা ভালো আছে। আর তুই ডিরেক্ট প্রপোজাল পাঠিয়ে দিলি!
- রাজি হয়ে যা! মোটা হলেও মেয়েটা ভালো আছে!
- আচ্ছা আমি ভেবে দেখবো!
রাকিবকে নিয়ে হাটঁতে হাটঁতে চলে এলাম মিনহাজ স্যারের প্রাইভেট এর এখানে। এখানে এসে তো আমি পুরা থ হয়ে গেছি!
চলবে,,,,,,,
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Congratulations @haideremtiaz, your post was upvoted by @supportive.
Twitter share
Comment link
পালকি গল্পটার প্রথম পর্ব পড়া হয়েছে। আর আজকে এই গল্পের দ্বিতীয় পর্বটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। রাকিব দেখছি গরম খবরটা অবশেষে দিয়েছে। তাও আবার সরাসরি একটা প্রপোজালের কথা। অন্যদিকে মিনহাজ স্যারের প্রাইভেটে এসে কেন ও থ হয়ে গেলো, এগুলো জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন।
জি আপু পরের পর্বটি খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। ধন্যবাদ আপু আজকের পর্বটি পড়ার জন্য।