১ম পর্ব || গল্পঃ- " পালকি "
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে চলে এলাম গল্প শেয়ার করার জন্য। আজকে গল্পের প্রথম পর্বটি শেয়ার করবো। আশা করছি আপনারা উপভোগ করবেন।
শীতের সকাল! বাহিরে প্রচন্ড ঠন্ডা! গ্রামের দিকে একটু বেশিই ঠান্ডা তখন! হার কাপাঁ অবস্থা! সূর্যি মামা তখনও উদয় হয়নি পূব আকাশে! সূর্যি মামা উঠার অনেক আগেই উঠে পরতো হলো বিছানা থেকে! কারণ শাহআলম স্যারের প্রাইভেট! মহাজাগতিক অনেক কিছুই মিস হয়ে যাবে যদি প্রাইভেটে না যায়। এ ছিল আমার ধারণা! শালআলম স্যার আমার গণিত শিক্ষক! দেখতে লম্বা, শ্যামলা রঙের স্যারই হলো তিনি। গণিতের বস বললেও ভুল হবে না! সকাল সকাল স্যারের প্রাইভেটে যাওয়া ছিল আমার জন্য আরেকটা বড় চ্যালেঞ্জ!
রাতেই আমার সিম্পনি মডেলের বাটন ফোনে এলার্ম সেট করে রেখেছিলাম। উঠতে একদমই অসুবিধা হয়নি। অসুবিধা হয় তখন যখন পানি চোখে মুখে দেয়া! মনে হয় কেন যেন মুখে বরফ ঢেলে দিয়েছে! ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে গেলাম স্যার প্রাইভেটের উদ্দেশ্য। বাহিরে কুয়াশার জন্য রাস্তাও পরিষ্কার দেখতে পাওয়া যায় না। সকাল সকাল কোনো গাড়ি নেই রাস্তায়! কিছুদূর হাটঁতেই মনে হচ্ছিলসব কিছু ঝাপসা দেখছি! চোখের উপর শিশুরবিন্দু জমেছে! চোখে টাচ করতেই কিছুটা ঠান্ডা অনুভূত করলাম!।
স্যারের প্রাইভেট ৬:৩০ মিনিটে! এক মিনিট এদিক-সেদিক হলেই খবর আছে! বাহিরে থাকতে হবে! হাটাঁর গতি বাড়িয়ে দিলাম! প্রাইভেটের কাছাকাছি আসতেই রাকিবকে পেলাম! আমার স্কুলের একমাত্র ভালো বন্ধু সে। সেই ক্লাস সিক্স থেকে টেন! এখন অবধি আমাদের বন্ধুত্ব! বন্ধুত্ব কখনো হারায় না ! বন্ধুত্ব এমন একটা বিষয় যার সাথে অনায়াসে আপনি সবকিছু শেয়ার করতে পারেন, মনের কথাগুলো আরামছে বলতে পারেন। আমি বলতে গেলে সেদিক থেকে লাকি কারণ তার মতো একজন বন্ধু পেয়েছি! আমি ফ্রেন্ড সার্কেলের ভিতরে সবচেয়ে সহজ সরল ছেলে বলতে গেলে, হাহা। বলতে গেলে হাসি ঠাট্টা সবসময় আমাকে নিয়েই হয়! আমার পরিচয়টাই তো দেয়া হয়নি। আমি আসিফ। এস এস সিতে পড়ছি এখন! মনের ভিতরে তখন চির বসন্ত! কিন্তু সেই বসন্তের সুভাষ কাউকে কখনো বুঝতে দেয়নি! তবে রাকিবের কাছে মাঝে মাঝেই বলা হতো।
- কি রে! এতো সকাল সকাল উঠতে পারলি?
- না উঠে উপায় আছে ব্যাটা!
- হাহাহা! সেটাও ঠিক।
- হুমম, মামা তোমার জন্য গরম খবর আছে?
- কিসের গরম খবর?
- প্রাইভেট শেষ হলেই বলবো!
- এখন বলে ফেল!
- না না! এখন না। খবরটা শুনে তোরই মাথা ঘুরে যাবে!
- বলিস কি! মাথা ঘুরার মতো কি এমন খবর!
- চল ভিতরে। বের হয়ে বলবো, চাপ নিস না ব্যাটা!
রাকিবের কথা সব আমার মাথার উপর দিয়ে গেল! সকাল সকাল কি এমন গরম খবর সে পেল! আমার মাথায় তখন নানারকমের চিন্তা আসছে! কখন যে স্যার হোয়াইট বোর্ডে জ্যামিতি বুঝানো শুরু করেছে খেয়ালই নেই!
সবাই বাড়ির কাজ দেখাচ্ছে! আমি হোয়াইটবোর্ডে তাকিয়ে জ্যামিতি দেখছি! গণিত আমার প্রিয় সাবজেক্ট হওয়ায় বুঝতে পারি সহজে। এদিকে হঠাৎ করেই রাকিব বলে উঠল,
- তোর বাড়ির কাজের খাতা দে!
ব্যাগের চেইন খুলে ভিতরে হাত দিলাম! ভিতরে দেখি বাড়ির কাজের খাতাটা নিয়ে আসেনি! আজ তাহলে রক্ষা নেই! কতোগুলো ম্যাথ করেছিলাম! কিন্তু খাতাটা ব্যাগে ঢুকাইতেই ভুলে গেলাম। রাকিবকে কাছে ডেকে এনে বললাম!
- খাতাটা আনতে মনে নাই রে! কি করি এখন!
- শালা! খাতা আনতে ভুলে গেছিস, এখন বুঝবে মজা!
সবার খাতা দেখা শেষ। শেষ বেঞ্চে বসা একমাত্র বান্দা আমি! আসিফ বাড়ির কাজ করেছো?
-জ্বি স্যার, করেছি। কিন্তু স্যার খাতাটা মনের ভুলে বাড়িতে রেখে এসেছি!
চলবে,,,,,,,
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ডুয়েটে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত তিন বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Twitter share
Puss tweet
আপনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে শীতের সকালে এমন গরম খবর পাওয়া অনেক আনন্দের। তবে রাকিব বাড়ির কাছের খাতা আনতে ভুলে গিয়েছে।তবে স্যার কি বলবে খাতা না আনার জন্য। দেখা যাক পরবর্তী পর্ব কি হয়।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর লিখেছেন।
গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু,,, পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে!
আপনার লেখা এই গল্পের প্রথম পর্বটা অনেক সুন্দর ছিল। আর আমার কাছেও পড়তে অনেক ভালো লেগেছে। আসিফ তো দেখছি সবগুলো ম্যাথ করা সত্ত্বেও খাতা দেখাতে পারলো না স্যারকে, কারণ সে খাতাটা রেখে এসেছে। এখন দেখা যাক গণিত স্যার তাকে কি করে। আর রাকিবের ওই গরম কথাটাও শোনার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করি আপনি তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন পরবর্তী পর্বটা।
জি আপু পরের পর্বটা খুব শীঘ্রই প্রকাশ করবো।