টাকাই কি সুখের মাপকাঠি?
"মানি ইজ সেকেন্ড গড"। কথাটি কোন মহামানব বলেছেন আমার জানা নেই। কিন্তু তিনি যে একদম নির্জলা খাটি কথাটি বলেছেন এতে কেউ দ্বিমত করবে না। টাকা থাকলে জীবনে সব মেলে। টাকা জীবন কে একদম সহজ করে দেয়।তবে অনেক মানুষ বলে টাকা দিয়ে নাকি সুখ কেনা যায়না।কথাটা কতটা খাটি আমি জানি।
আজ শুক্রবার। সকাল থেকে অখন্ড অবসর। তাই ভেবেছিলাম একটা মুভি দেখব। মুভির গ্রুপ গুলোতে কয়দিন থেকেই একটি মুভির হাইপ দেখতেছিলাম। মুভিটির নাম লাকি ভাস্কার।মুভিটির রিভিউ কালকে দেব।আজ আলোচনা করব মুভির একটি দৃশ্য নিয়ে। মুভির যে হিরো সে একটু গরীব থাকে,তার শ্বশুড় বাড়ির অবস্থা তার থেকে বেটার।
নায়িকা যখন নায়ক কে বিয়ে করে তখন পরিবারের অমতে বিয়ে করে। তাই নায়ক ভাস্কর যখন শ্বশুড় বাড়ি যায় তখন তাকে অপমান করা হয়। এই বিষয়টার সাথে নিজের দেখা একটা ঘটনা রিলেট করতে পারি।সেই ঘটনাটিই আমি শেয়ার করি।
আমার খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড এর সাথে ঘটা। বন্ধুর নাম ধরলাম রুদ্র। নিপাট ভদ্রলোক বলতে যা বোঝায় রুদ্র একদম তাই। লেখাপড়ায় টপার,নেশাটেশার ধারেকাছে নাই। মানুষের বিপদে আপদে কাউকে পাশে না পেলেও ধরে নিতে পারেন রুদ্র কে পাবেনই।তার খারাপ দিকের মাঝে একটাই সেটা হল তার পরিবার গরীব।নিদারুন অর্থকষ্টের মাঝে বড় হয়েছে। ফ্যামিলি খারাপ না,তবে কিছু ভুল সিদ্ধান্তের জন্য
তার একটা রিলেশন ছিল। প্রায় পাচ বছরের রিলেশন। মেয়েটা আমাদের পাড়ারই।এরপর রুদ্র যখন একটা কর্পোরেট জব পায় তখন মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।কিন্তু মেয়ের বাড়ি থেকে না করে দেওয়া হয়। প্রথম দিকে মেয়ের মত ছিল,কিন্তু বাড়ির লোকজনের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল এর কারনে মেয়েও আস্তে আস্তে দূরে চলে যায়।
তবে রুদ্র বাস্তবতা মেনে নেয়।ও শুধু আমাকে বলেছিল,বন্ধু টাকাই কি সব? আজ না হয় নেই,ভবিষ্যতেও কি হবে না? যাই হোক এরপর ও নিজের ক্যারিয়ারে মনোযোগ দেয়। এখন বেশ ভালই আছে।কিন্তু আসি মেয়েটার কথায়,মেয়েটাকে বাবা মা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে দিয়েছিল এক বড়লোকের ছেলের সাথে বিয়ে।
তাদের কথা ছিল টাকা থাকলে সুখ আসবেই। কিন্তু ভগবান বুঝি আড়ালে বসে হাসছিল। যে ছেলের সাথে বিয়ে দেয় তার একটু চরিত্রগত সমস্যা ছিল।কিন্তু মেয়ের বাবা মা টাকার মোহে ভেবেছিল বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বিয়ের পর ঠিক তো হয় নি উলটা এগুলা নিয়ে প্রতিদিন ঝামেলা হত।এরপর মেয়েটির গায়ে হাত উঠাতে থাকে।
একপর্যায়ে অত্যাচার এত বেড়ে গেল যে তাকে বাপের বাড়ি চলে আসতে হয়,এবং একপর্যায়ে ডিভোর্স হয়ে যায়। আজকে মেয়েটার ভাগ্যে কত দুর্দশা। সেদিন যদি তার বাবা মা টাকার কথা না ভেবে রুদ্রর সাথে বিয়ে দিত তবে হয়ত প্রথম কিছুদিন অভাব এর সাথে লড়াই করা লাগত,কিন্তু সুখে থাকত। দুইটা জীবন নষ্ট হত না। তবে রুদ্র ভালই আছে,জীবন নিয়ে তার অভিযোগ নাই।ভাগ্য মেনে নিয়ে এগিয়ে চলেছে,এখন বেশ স্বচ্ছল তারা।
তাইলে যারা বলে টাকা থাকলে সুখ থাকবে,বিষয়টা এমন না। কেউ কোটি টাকার মালিক হয়ে এক ফোটা সুখ পায়না আবার কেউ ফাকা পকেটে দুনিয়ার সব থেকে সুখী।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Twitter link
বাবা-মা সবসময় সন্তানের ভালোর জন্য এরকম অনেক সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরে দেখা যায় সেসব সিদ্ধান্ত সঠিক না। শুধুমাত্র টাকার কথা বিবেচনা করে মেয়ের বিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। সবকিছু দেখে শুনে ঠিক করতে হয়। তাহলে এই মেয়েটির মতো কারো জীবন আর নষ্ট হবে না। যাই হোক ভালো লাগল গল্পটি পড়ে।
ধন্যবাদ আপু।তবে এটি বাস্তব ঘটনা।
এদের মতো বোকা আমি দেখিনি যারা এটা মনে করে। টাকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ একটা ছেলের শিক্ষা, ব্যবহার মানসিকতা দেখা। কিন্তু যারা শুধু টাকা দেখে তাদের ক্ষেত্রে এমনটাই হওয়া বাঞ্চনীয়। টাকা কখনোই সকল সুখের মূল না। চমৎকার লিখেছেন ভাই। বেশ ভালো লাগল পড়ে।
ধন্যবাদ ভাইয়া।।উৎসাহ পেলাম আপনার মন্তব্য থেকে।
জীবন চলার পথে টাকার কোনো বিকল্প নেই ঠিক তেমনি টাকা দিয়েও জীবনের সবকিছু পাওয়া যায় না।অনেকের অনেক টাকা কিন্তু তাদের জীবনে কোনো সুখ নাই আবার এমনও অনেক মানুষ দেখা যায় তাদের অভাব থাকলেও সুখের কোনো কমতি নাই।তবে টাকার প্রয়োজন আছে এটাও অস্বীকার করার কিছু নাই।সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
টাকার অবশ্যই প্রয়োজন আছে জীবনে,কিন্তু টাকা টাই জীবনের মুখ্য লক্ষ্য নয়।ধন্যবাদ কাকিমা নিজের সুচিন্তিত মতামত দেওয়ার জন্য।