আর কী ঘুরতে যাওয়া হবে না!?
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। কিন্তু আমার মুড একদম ভালো নেই। বিগত ২-৩ মাস হলোই একটা ব্যাপার নিয়ে মনটা খুব খারাপ।আসলে আমার প্রশ্ন হল, আমি কি আর কোথাও ঘুরতে যেতে পারবো না!? সেই কবে থেকে ঘুরতে যাওয়া নিয়ে জেদ করছি বাড়িতে। কেউ কোন কথা শুনছে না।আজকের পোস্ট সেটা নিয়েই।
মোটামুটি লাস্ট কবে ঘুরতে গিয়েছিলাম, ঠিক মনে পড়ে না। ঘুরতে যাওয়া বলতে এখানে আমি এই দশ বারো দিনের টুরের কথা বলছি। বাবা মার সাথে এরকম লাস্ট কবে ঘুরতে গিয়েছি ,সত্যিই মনে পড়ছে না ।যেটুকুনি মনে আছে কাশ্মীরের কথাই মনে আছে। কাশ্মীর গিয়েছি আজ থেকে প্রায় চার বছরের কাছাকাছি হয়ে গেল। Covid এর প্রকোপ যখন আস্তে আস্তে কমে গেল ,তার পর পরই আমাদের কাশ্মীর যাওয়া হয়েছিল। তাও সেটা আমার জেদেই। আসলে বাড়িতে জেদ না করলে কিছুই হয় না। ঘুরতে যাওয়া তো আরো হয় না।
আসলে সেই সময় বাবা কাশ্মীরে কাজের জন্য গিয়েছিল ।মানে কাজ এখান থেকে করে যখন সেই মূর্তিগুলো মিউজিয়ামে বসাতে হয় ,তখন বাবা তার কর্মচারীদের নিয়ে ৫/৬ দিনের জন্য যেতে বাধ্য হয় এবং সে সমস্ত যাওয়া আসার খরচা ,থাকার খরচা সেগুলো সমস্ত কিছু অথরিটি প্রোভাইড করে।
বাবা কাশ্মীর পৌঁছে যাবার পর, দেখতে পাচ্ছিলাম বাবার সাথে ভিডিও কল করে যে, ওখানে বরফ পড়ছে। এবং বাবার প্রচন্ড পরিমাণে দুঃখ হচ্ছিল যে বাবা আমাদের নিয়ে যেতে পারেনি। আর সেই সুযোগের ব্যবহার করে আমি খুব জেদ করলাম ,আর তারপরেই আমাদের ফ্লাইটের টিকিট কেটে দেওয়া হলো। আর আমি মাকে এবং ভাইকে নিয়ে কাশ্মীর পৌঁছে গিয়েছিলাম।। তারপরে কত কত আনন্দ করেছি, সেই নিয়ে প্লাটফর্মে অনেক পোস্ট করেছি।
কিন্তু যেমনটা বললাম আজ t অনেক বছর হলো কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না ।টুকটাক একদিনের জন্য এদিক-ওদিক ঘোরা হয়েছে। আমি বন্ধুদের সাথে এদিক-ওদিক ঘুরেছি। কিন্তু এরকম বড় একটা ট্যুরের প্ল্যান অনেক দিনই হচ্ছে না। আমি আমার এক বাবার বন্ধুর ফ্যামিলির সাথেই বেশিরভাগ জায়গায় ঘুরতে গিয়েছি। আমাদের ফ্যামিলি এবং ওদের ফ্যামিলি প্রত্যেকবার যেখানে যাওয়া হয়, একসাথে যাই ।
ওই জেঠুরই মেয়ে অর্থাৎ আমার সহেলী দি।ওর সাথে বিগত একমাস ধরে নানান জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানিং হচ্ছিল। সত্যি কথা বলতে একদম ভালো লাগছে না আর বাড়িতে। প্ল্যানিং প্রথমে শুরু হল কালিম্পং যাওয়া নিয়ে। তারপর সেই জিনিস হলো না। বাবা-মা কিছুতেই রাজি তো হতে চাইছিল না।জেঠু আর বাবার যেহেতু ব্যবসা অর্থাৎ মূর্তির কাজ। সারাক্ষণ কাজের প্রাসারে এরা এত ব্যস্ত থাকে ,যে যাওয়ার চান্স পায় না। সবসময় বললেই সব জায়গায় যাওয়া হয় না।
তো আমরা সে ব্যাপারটা বুঝলাম, শান্ত হলাম এবং তারপরে ঠিক করলাম আমি আর ও মিলে কাছেপিঠে ঘুরে আসব। ঠিককরা হলো মন্দারমনি যাওয়ার কথা এবং আমাদের সাথে আমার পিসেমশাই থাকবে, মানে যিনি আমাদের গাড়ি ড্রাইভ করেন ।সেটা নিয়ে কথা হতে হতে দু চার দিন কেটে যাওয়ার পর ,সহেলী দির মা বলে বসলো যে, চল আমরা সবাই মিলে কোথাও যাই। সবাই মিলে যখন যাওয়ার কথা ঠিক হলো, তখন প্রথমেই শান্তিনিকেতনের কথা ভাবা হলো।
আর এর মধ্যেই শান্তিনিকেতনের কথা ভাবতে ভাবতে দু চার দিনে বাবা এবং জেঠুর আরো কিছু মূর্তির অর্ডার আসলো। এবং সেগুলো খুব ফাস্ট ডেলিভারি দিতে হবে, এ কারণে সেটাও ক্যান্সেল হয়ে গেল।। আপনারা নিজেরাই ভাবুন ,আমি আর আমার দিদি কতটা হতাশ হয়ে পড়েছিলাম।
তারপরে আমার মা আমাদের হতাশ মুখগুলোকে হাসিখুশি করার জন্য আমাদের বলল ,চল আমরা বাড়ির কাছাকাছি মায়াপুর থেকে ঘুরে আসি।আর ওই মুহূর্তে আমাদের গাড়িটা গেল নষ্ট হয়। গাড়ির পেছনের কাচ কিভাবে ভেঙে ছিল, সেই নিয়েও আমি পোস্ট লিখেছি।এবার আপনারাই বলুন কিভাবে কি হবে। সত্যিই কি আর ঘুরতে যাওয়া হবে না!?
যাইহোক আমার এই হতাশজনক প্রশ্ন নিয়েই আমি আজকে আমার পোস্ট শেষ করছি পরবর্তী পোস্টে আবার নতুন কিছু আসতে চলেছে।
@isha.ish কি লিখবো বুঝতে পারছি না! কারণ যার পায়ের তলায় সর্ষে তার যদি এমন মনে হয়, আমাদের কি অবস্থা সেটা বোধহয় ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়।
অনেক সময় কাছাকাছি যাবার সুযোগ পাই না! যদিও তাতে আমি খুশি, আর আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি আমি যেনো সবসময় এমন ভাবেই ব্যস্ত থাকতে পারি।
সমাজে কর্ম হীনতায় কোটি কোটি মানুষ ঘরে বসে আছে, তারাই বোঝে জীবনে কাজের গুরুত্ব কতখানি।
চার বছর আগে কাশ্মীরে ঘুরতে কিভাবে গিয়েছিলে সেটা পুরোটাই আমি জানি। তোমার ঘুরতে যাওয়া নিয়ে মন খারাপ কিভাবে তোমার মন ভালো করব সেটা আমি জানি না। তবে চলো আমরা কাজে কোথাও ঘুরে আসি তোমার মন ভালো হয়ে যাবে।