কবিতা:- স্মৃতির পাতায়! Poetry:-On the page of memory!

in Incredible India8 days ago (edited)
1000043436.png

শীতের মরশুম অনেক কারণেই আমার খুব কাছের!
আবহাওয়া যেমন একটি কারণ, তেমনি এই শীতের অনেকগুলি দিক আমাকে বিভিন্ন দিক থেকে সতেজ রাখে, শারীরিক তথা মানসিক।

যদিও শারীরিক দিক থেকে আমার অবস্থান বর্তমানে অনুকূলে নেই, তবুও এই সময়টা গোটা বছরের মধ্যে আমার বেশ পছন্দের।

আজকে, এই চলমান শীতের একটি দিনকে নিয়ে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে হাজির হয়েছি।

গত দুদিন ধরে আমার শহর আমাকে শীতের অনুভূতি প্রদান করছে, এর আগে যদিও অনেক জায়গায় ঠান্ডা পড়ে গেছে, তবে আমি যেখানে থাকি, সেখানে বিশেষ ঠান্ডা সেভাবে এতদিন অনুভব করিনি।

গত সোমবার একটু সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম, বিছানা ছাড়ার আগে মাথার উপরে থাকা ঠাকুরকে প্রণাম করে, প্রথম কাজ হয়, আমার পশ্চিমের জানালা খোলা!

যদিও দিকটি আমাকে দিনশেষে বার্তা দেয়, তবুও দক্ষিণ দিকের জানালার পরিবর্তে পশ্চিমের জানালা আমাকে এটা বুঝতে সাহায্য করে, আর একটা দিন ফুরিয়ে যাবার আগে, নিজের দিনটিকে সঠিক ভাবে যেনো পরিচালনা করি!

1000043148.jpg
(ভোরের আকাশ)

জানালা খুলে দেখলাম, বাইরেটা কুয়াশায় ভরে আছে! কি ভীষণ ভালোলাগা কাজ করে, এই দৃশ্য যেটা ভাষায় প্রকাশ এক্ অর্থে প্রায় অসম্ভব!

সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তকে মোবাইলে বন্দী করতে তৎপর হয়ে উঠলাম! ভোরের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল কতদিন পর চাক্ষুষ করলাম সেটা গুণে বলা সম্ভব নয়।

প্রকৃতির ভারসাম্যের পরিবর্তনের ফলে, আগের সাথে এখনকার আবহাওয়া মেলে না!
কতক্ষন জানালা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম তারপর জানিনা!
সম্বিত ফিরে পেয়ে দেখলাম, কালো দুটি পাখি দু জায়গায় নিজ নিজ অবস্থান গ্রহণ করে আছে, খালি চোখে বোঝার উপায় নেই, তাই মোবাইল জুম করে দুটি ছবি তোলার সময় তারা আমাকে দিয়েছিল, এই যা বাঁচোয়া!

1000043275.jpg
1000043274.jpg

চিনতে পারিনি বলে গুগল বাবাজীবনের সাহায্যে জানলাম দুটি কোয়েল পাখি যার ইংরিজি নাম ব্ল্যাক ফর্ক টেইলড ড্রঙ্গ (black fork-tailed Drongo)!

পাশের বাড়ির ছাদের যে জবা ফুলের ছবি প্রায়শই আপনাদের মাঝে তুলে ধরি, সেই গাছে সঙ্গী বিহীন একাকী একটি ফুল ফুটে রয়েছে দেখলাম! একটু মুচকি হেসে বললাম আজ তুইও আমার মতই একলা!

1000043147.jpg
1000043144.jpg
1000043143.jpg
1000043146.jpg

তোকে সঙ্গ দিতে তাও মাঝে মধ্যে তোর পাশে আরেকজন আসে, আমার সে উপাও নেই!
এরপর, দিনের অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।

এই সময় শারীরিক পরিশ্রমে বিশেষ ক্লান্তি আসে না, তবে সকাল সকাল কাজ শুরু করতে না পারলে, কখন যে বেলা না বলেই শেষ হয় যাবে, টেরও পাওয়া যাবে না!

এই সময় তাই আগে ঘরের কাজ সেরে তবে কাজ নিয়ে বসি, নইলে বেলা ফুরিয়ে যাবার পরে স্নান করে করে আজকে আমার শরীরের এই পরিস্থিতি।

বাইরে থেকে মানুষ কত কিছুই ভাবে, আসলে যার যার জীবন সঠিক উপলব্ধি সে বৈ অন্য কেউ কি করতে পারে?

মন খারাপ হয় বেশি যখন অসুস্থ্য হয়ে পড়ি, আসলে পরনির্ভরশীলতার অভ্যেস হারিয়ে গেছে অনেক বছর, কিন্তু অসুস্থ্য হয়ে পড়লে চোখ কি জানি কাকে যেনো খোঁজে!
এই সময় মনকে বোঝানো বড় দায়!

1000042655.jpg
1000042654.jpg

নারকেল গাছের পাতার শেষ প্রান্ত ছুঁয়ে থাকা বেলা শেষের তুমি যেনো নিঃশব্দে বলে গেলে, শেষ হবার আগে শেষ হতে নেই!

মন খারাপের কথা জানাতে একাকী সেই আবার উপস্থিতি হয়েছিলাম পশ্চিম ধারে, দেখি সূর্য্য মামা পাটে যেতে ব্যস্ত, তার সাথে কিছু অনুভূতি ভাগ করে নিতে নিতে বললাম খানিক অপেক্ষা করো, তোমায় তো এখন বিশেষ দেখতে পাই না, দুটো ছবি তুলে রাখি।

1000042493.jpg
1000042492.jpg
1000042491.jpg
(হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে, ভাসবো পেজা তুলোর মত সকাল, সাঁঝে)
স্মৃতির পাতায়!

আমি হেলায় হারিয়েছি বহুকিছু;
যন্ত্রণা গুলো তার, আজও চলে পিছু!
কখনো শব্দে, কখনও নিঃশব্দে বহিঃপ্রকাশ,
তবে, চাপা রয়ে গেছে আজও অনেক কিছু।

সুপ্ত দাবানল মাঝেমধ্যে
দুমড়ে মুচড়ে ওঠে;
অমলিন এক্ চিলতে হাসি
আজও অক্ষুন্ন ঠোঁটে!

যদি যাই চলে,
না বলে কোনোদিন;
নালিশের ঝোলা
খালি করে স্বাধীন!

স্মৃতির পাতায়
অঙ্ক কষে দেখো;
লাভ ক্ষতির হিসেব
তখনো কিন্তু রেখো!

বিষন্নতার ভার
বয়ে দেখো কোনোদিন;
বুঝবে সেদিন,
এটি কতখানি ভারাক্রান্ত ঋণ!
পরিশোধ করার
সামর্থ্য থাকে না কারো;
বাঁচিয়ে রেখো স্মৃতির পাতায়,
যদি সেদিন সম্ভব হয়,
দেখ যদি পারো!

IMG_20241212_225551.jpg

বেদনার আসলেই কোনো ভাষা হয়না বোধহয়, তার চাইতে অর্থের ভাষা বোঝা আজকাল বেশি সহজ।

চলতে ফিরতে সব মানুষের ক্ষমতার দিকে নজর, ব্যবহার আজ সস্তা দামে বিকোয়, ভালোবাসা নির্ধারিত হয় একদিকে ক্ষমতা আর সামাজিক প্রতিপত্তির উপরে!

কি অবাক করা আজকের মানুষের চিন্তাধারা! আমি কি সত্যি সেকেলে? নাকি এটাই আমার শিক্ষা? আমার সত্যি মাঝে মধ্যে গুলিয়ে যায়!

মেঝেতে কার্পেটের মত অর্থ বিছিয়ে থাকতে দেখেছি, আলমারিতে জামাকাপড়ের চাইতে অর্থের পোটলা ছিল অনেক বেশি, তবুও তার আঁচ পড়েনি আচরণে, কি জানি আজকাল কেনো সবাই খানিক অর্থের মালিকানা পেলেই ধরাকে সরা জ্ঞান করে, আমার তো জানা নেই, আপনাদের আছে?

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
 7 days ago (edited)

আপনার শহর এবং আমাদের এখানকার আবহাওয়ায় বেশ সাদৃশ্য রয়েছে দেখছি। তাছাড়া বর্ষাঋতুতেও সাদৃশ্যতা লক্ষ্য করেছি। পাশাপাশি, পশ্চিম দিকের জানালা খোলার পেছনে লুকিয়ে থাকা অভিব্যক্তি চমৎকার ছিল।

ঈশ্বর আপনার মাথাতে অতিরিক্ত কি দিয়ে রেখেছেন জানা নেই তবে নিঃসন্দেহে দুর্লভ দিদি।

দুর্ভাগ্যবশত আমি ইদানিং এতোটাই অলস যে এখন অবধি ভোরের কুয়াশা দেখার সুযোগ করে উঠতে পারিনি। কারণ আলসেমি করে সকালে বিলম্ব করে ঘুম থেকে ওঠা।

সবই মোবাইল ক্যামেরা এবং আপনার ইচ্ছা যে কারণে দূরে থাকা সত্ত্বেও ছবিতে পাখি দুটোকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

আপনার কবিতার অর্থ যদিও আমি কিছুটা বুঝতে চেষ্টা করেছি তবে সারসংক্ষেপ আমার সাধ্যের বাইরে। এটা তো সঠিক যে যার ব্যাথা শুধুমাত্র সেই সেটা উপলব্ধি করতে পারে। একটা চেপে রাখা কষ্টানুভুতি এখানে আমি অনুভব করেছি।

দিদি, ঈশ্বর সবসময়ই আপনার সাথে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। আপনি যেমন আছেন তেমনটাই ভালো। তবে শারীরিক সুস্থতার প্রয়োজনীয়তাটা এই মুহূর্তে আপনার জন্য খুব দরকার।

এটা ঠিক পকেটা ভারী হলেই যেন কথার ওজন ও ভারী হয়ে যায়। তবে আপনি যেমন এটাই উত্তম দিদি। ঈশ্বর যেন এভাবেই আমাদেরকে আপনার সাথে থাকার সুযোগ করে দেন।

Loading...
Loading...