ফিরে আসুক প্রকৃত উপলব্ধি || জীবনের গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ্য আছেন। সুন্দর প্রকৃতির সুন্দর পরিবেশের সাথে নিজেদের আরো বেশী চঞ্চল রাখার চেষ্টা করছেন। কারন শীতের সকাল কিংবা প্রকৃতি মানেই ভিন্নভাবে সজীবতা অনুভব করা এবং নিজেকে আরো বেশী মানসিকভাবে শক্তিশালী করা। প্রকৃতি আমাদের জন্য সেরা কিছু নিজেদের চঞ্চল রাখার এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে আরো বেশী শক্তিশালী হওয়ার। এটা অস্বীকার করার সুযোগ সেই নেই যে, প্রকৃতি আল্লাহ তা’য়ালার অন্যতম সেরা নিয়ামত, যেখানে প্রবেশ করার সাথে সাথে হৃদয়ে সজীবতা অনুভব হয়, যেখানে প্রবেশ করার সাথে সাথে সকল ধরনের বিষন্নতা দূর হয়ে যায়। সুবহানআল্লাহ।

আসলে আমরা অনেক কিছু যেমন বুঝি ঠিক তেমনি অনেক কিছুই আবার বুঝি না, কারন আমরা সব কিছু সঠিকভাবে উপলব্ধি করি না কিংবা গভীরতায় প্রবেশ করতে পারি না। তাই যেটা যেভাবে বুঝা উচিত আমরা সেটাকে সেভাবে বুঝতে পারি না। আজকের জীবনের গল্পে তেমন কিছু কথা উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো। এই তো সেদিন অফিসের কলিগের বিয়ে খেতে গিয়েছিলাম। প্রতিটি অনুষ্ঠান আমাদের জন্য যেমন নতুন স্মৃতি তৈরী করে ঠিক তেমনি নতুন অভিজ্ঞতাও তৈরী করে। তবে আমরা যেমন স্মৃতিগুলোকে আনন্দের সাথে উড়িয়ে দেই কিংবা খানিক বাদেই সেগুলোকে আড়ালে রেখে দেই। ঠিক তেমনি অভিজ্ঞতাগুলোকে আমরা বুক পকেটে রেখে দেই তারপর সেগুলোর কথা ভুলে যাই, সেগুলোকে বের করে কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করার সুযোগ যে আমাদের আছে সেটাও ভুলে যাই।

food-8294132_1280.jpg

আসলে আমরা জাগতিক বিষয়গুলোকে নিয়ে এতো বেশী ব্যস্ত ও মাতামাতি করি যে, চলমান বিষযগুলো শুধুমাত্র আমাদের সম্মুখে থাকে কিন্তু অতীত কিংবা অভিজ্ঞতাগুলোকে আর সামনে আনতে পারি না। যার ফলশ্রুতিতে আমরা যেমন স্মৃতিগুলোকে স্মৃতির পাতায় রেখে দেই ঠিক তেমনি অভিজ্ঞতাগুলোকেও বুক পকেটে ভিতর চলে যায়। যখন আমরা খুব বেশী বিষন্নতা কিংবা হতাশায় ভোগি ঠিক তখনই কেমন অতীতের স্মৃতিগুলোকে মনে করি আর আফসোস করি, আবার ব্যর্থতার খাদে যখন আমরা পড়ে দিশেহারা হয়ে যাই ঠিক তখনই অভিজ্ঞতাগুলো সামনে ভাসতে থাকে যখন সেগুলো ব্যবহার করার কোন সুযোগ আর থাকে না। সুতরাং আমরা সবটাই মনে রাখি কিন্তু সেটা সঠিক সময়ে ব্যবহার করতে পারি না।

বিয়ের অনুষ্ঠানে আমাদের মুল লক্ষ্য কি থাকে? নিজের সামর্থ এবং আভিজাত্য প্রকাশ করার, কতটা খাবার নষ্ট হবে কিংবা হলো সেটার বিষয়ে আমাদের কোন চিন্তা থাকে না। তখন চিন্তা করি একটু নষ্ট হলে হোক না তাতে কি? নিজের সম্মান কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠানতো ঝাঁকজমকভাবে পূর্ণ হলো। কিন্তু আসলেই কি এটা আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ছিলো? স্বাভাবিকভাবে একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে যে পরিমান খাবার নষ্ট করা হয়, সেগুলো দিয়ে কয়েকটি পরিবারের কয়েক দিক খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যেতে পারে। এটা হয়তো আমরা কখনো চিন্তা করি না, এটা হয়তো আমরা কখনো বিবেচনায় আনি না যে এটাও এক ধরনের অপচয় এবং এই অপচয়ের জন্য আমাদেরকে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে।

apples-3040132_1280.jpg

প্রতিটি জিনিষের বিপরীত কিছু বিষয় আছে, আমাদের সকলের উচিত প্রতিটি আয়োজন কিংবা কাজ করার পূর্বে সে বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রাখা। স্বাভাবিক বিষয়গুলোর সাথে অস্বাভাবিক বিষয়গুলোকেও চিন্তা করা উচিত। আমার যা আছে তা শুধুই আমার জন্য নয় বরং এর মাঝে অনেক গরীবের হকও আছে। আমারগুলো শুধুমাত্র যেন তেনভাবে নষ্ট করার একক অধিকার আমার নেই। তাই সব কিছু নিজের ইচ্ছে মতো অপচয় করা মানে উপরওয়ালার সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করা, যা করার কোন ধরনের অধিকার আমার নেই। একটু পজিটিভভাবে চিন্তা করেন এবং সকলের অধিকারের বিষযটি মাথায় রেখে নিজের কাজগুলোকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন।

আমরা সবাই কোন না কোন বিষয়ে একেকজন দায়িত্বশীল বা জিম্মাদার, আমাদের সকলের কিন্তু সে বিষয়ে জবাবদিতি করতে হবে এবং নিজেকে দায়িত্বশীল হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। সুতরাং আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে প্রতিটি ভালো কাজের জন্য যেমন ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করতে পারবো ঠিক তেমনি প্রতিটি খারাপ কাজের জন্যও শাস্তি পেতে হবে। তাই নিজের আছে বলে আভিজাত্য প্রকাশ করতে হবে, অপচয় করে সবাইকে নিজের সামর্থ দেখাতে হবে, সেটা শুধুমাত্র বোকামী ছাড়া অন্য কিছু নয়।

Image taken from Pixabay 1 and 2

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  
 5 months ago 

অনেক ভাল লাগল ভাই আপনার লেখাটি পড়ে। আমার কাছে খাবার নষ্ট করা একটা ক্রাইমের সমান। আমি মানতেই পারি না এটা। উপলব্ধি হবার বয়স থেকে কখনো খাবার নষ্ট করি নাই। আসলে অনুষ্ঠানের বাড়িতে গেলে মানুষের মন পেট সব ভরে কিন্তু চোখ ভরে না। তারই ফলশ্রুতিতে এই অপচয়। ধন্যবাদ ভাইয়া এই টপিক নিয়ে সচেতনতা মূলক পোস্ট লেখার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই, আসলে আমাদের সকলের দৃষ্টিভঙ্গি যদি এমনটা হতো তাহলে হয়তো খাবারের অপচয় যেমন হতো না ঠিক তেমনি কাউকে না খেয়ে কষ্ট করতে হতো না।

 5 months ago 

এই ব্যাপারে চট্টগ্রামের এর অবস্থা তো খুব শোচনীয়।নিজের পরিবার কেই বোঝাতে পারিনা,বাইরের লোক কে আর কি বলবো।কতোগুলো খাবার যে নষ্ট হয়।এগুলোর জবাব আল্লাহ কে সব দিতে হবে।

 5 months ago 

তবুও আপনার চেষ্টা করা উচিত, যতটুকু সম্ভব নিজের অবস্থান হতে।

 5 months ago 

সত্যি বলতে আমার যত বদ অভ্যাসই থাকুক না কিন্তু খাবার কখনো নষ্ট করতে পারি না। সৃষ্টিকর্তা শুধু আমাদের রিজিক আমাদেরকে খাওয়ার জন্য বলেনি। বরঞ্চ বলেছে আমাদের পাড়া-প্রতিবেশীর চল্লিশ বাড়ি পর্যন্ত খোঁজখবর নেওয়া। অনাহারীদেরকে আহার প্রদান করা। আবিদের তো প্রকাশ করলেই বড় হওয়া যায় না দান ছিল তার মাধ্যমেই নিজের পরিচয় পাওয়া যায়।

 5 months ago 

এটা আপনার সেরা একটা গুন নিঃসন্দেহে, প্রতিটি মানুষের উচিত এমন হওয়া। অনেক ধন্যবাদ।

 5 months ago 

সুতরাং আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে প্রতিটি ভালো কাজের জন্য যেমন ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করতে পারবো ঠিক তেমনি প্রতিটি খারাপ কাজের জন্যও শাস্তি পেতে হবে।

এই কথাটা আমার সবসময়ই মনে হয়।কারন বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে অনেক কিছু দেখছি।ন্যায় অন্যায়, ভালো বা খারাপ এগুলো বিবেচনা করে ভালো থাকার উপায় খুঁজি। তবে এটা ঠিক,বর্তমানে সবাই বিয়ে বা অন্য যে কোনো অনুষ্ঠানে অনেক বেশি খাবার অপচয় করে।যেটা কিছু মানুষের অনেক দিনের ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য যথেষ্ট। তবে এজন্য আমাদের নিজেদের মানসিকতা পরিবর্তন করা জরুরী।আমাদের মত কিন্তু তাদেরও হক আছে যারা না খেয়ে কষ্টে দিন পার করে।আজকের পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।

 5 months ago 

একদমই, আমরা বার বার ভুলে যাই তাদেরও কিছুটা হক আছে। পরিবর্তন আসুক আমাদের সকলের মানসিকতায়। ধন্যবাদ

 5 months ago 

ভাইয়া আপনার চিন্তা ধারা একেবারে ভিন্ন। যা হয়তো সমাজের আট দশজন মানুষের চেয়ে একেবারে ভিন্ন প্রকৃতির। আসলে আমিও মাঝে মাঝে চিন্তা করি আমাদের কি কোন দিনও উপলব্দি আসবে না, আমাদের কর্মফল গুলোর জন্য? আমরা কতই না জিনিস অপচয় করি। কিন্তু আমরা কি একবার একটু চিন্তা করতে পারি না যে কত মানুষ অসহায় আর অভাব গ্রস্থ আছে। আসলে দিন শেষে যে আমাদের কোথাও জবাব দিহি করতে হবে সেটাই আমরা ‍ভুলে যাই। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

ছোটবেলা থেকেই আমি কখনো খাবার নষ্ট করি না এবং কেউ খাবার নষ্ট করলে আমার খুবই খারাপ লাগে। কিন্তু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যে পরিমাণ খাবারের অপচয় করা হয়,সেটা দেখলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। অপচয়কারী শয়তানের ভাই, সেটা জানা সত্ত্বেও মানুষ প্রতিনিয়ত অপচয় করেই যাচ্ছে। অথচ দুমুঠো ভাতের অভাবে কতো মানুষ কষ্ট করে। শুধু খাবার না,কোনো জিনিস ই অপচয় করা উচিত না আমাদের। কারণ প্রতিটি জিনিসের একদিন অবশ্যই হিসাব দিতে হবে। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। এতো চমৎকার একটি টপিক নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

ভাইয়া আপনি আজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। গ্রামের বিয়ে গুলোতে তেমন খাবার অপচয় হয় না তবে শহরের বিয়ে গুলো বেশি খাবার নষ্ট হয়। আমাদের দেশে কত মানুষ না খেয়ে রাতে ঘুমাতে যায়। খাবার গুলো নষ্ট না করে বস্তিতে বিলিয়ে দিলেও কাজে লাগে। কিন্তুু এসব বিষয় নিয়ে কেউ ভাবে না। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.13
JST 0.032
BTC 61285.21
ETH 2922.72
USDT 1.00
SBD 3.66