আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ শীতের শীতল ভাবনা ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। শীতের শীতল উষ্ণতার সাথে আপোষ করে আরো বেশী চঞ্চল থাকার চেষ্টা করছি, যদিও ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ার কারনে সেটা কিছুটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কারন সকলের হয়তো শীতের শীতলতা আড়াল করার কিংবা নিজেকে একটু বেশী গরম কাপড়ের উষ্ণতায় আবৃত করার সুযোগ নেই, তাই হয়তো শীতের উষ্ণতা আমরা যতটা সুন্দরভাবে উপভোগ করছি অনেকেই হয়তো ততোটা কঠিনভাবে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রামে সংগ্রামী হয়ে উঠছেন। তাই নিজেদের অবস্থান হতে যতটা সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
যদিও আজকাল আমরা খুব বেশী ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয়ে গেছি, তাই অন্যদের সমস্যা আমাদের চোখে সমস্যা মনে হয় না, অন্যদের দুঃখ কষ্ট আমাদের হৃদয়ে সামান্যতমও আচড় কাটতে পারে না। আমরা নিজের সুখের অনুভূতি নিয়ে শুধুমাত্র চঞ্চল থাকতে চাই কিন্তু মানবতার সুন্দর দাবী নিয়ে যন্ত্রণায় কাতর হওয়া মানুষগুলোর পাশে থাকতে চাই না। উন্নত জীবনের উন্নত ভাবনা আমাদের খুব বেশী আরষ্ট করে দিচ্ছে, তাই আমাদের অনুভূতি যেমন এখানে কাজ করছে না, ঠিক তেমনি আমাদের বিবেকও এখানে জাগ্রত থাকছে না। আফসোস, আমাদের অতীত ঐতিহ্য কিন্তু এমনটা ছিলো না।
সুবিধাবাদী মানসিকতা এবং ব্যক্তি কেন্দ্রিক সুবিধা পাওয়ার চেষ্টাটাও অতীতেও ছিলো কিন্তু সেটা এতো বেশী ব্যক্তি কেন্দ্রিক ছিলো না। তখন মানুষের মাঝে বিবেক নামক বস্তুটির বেশ সবল অবস্থা ছিলো এবং সেটা জাগ্রত ছিলো। যে কোন বিষয়ে খুব সহজেই মানুষগুলো বিপদে পড়া ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়ে যেতেন না, এখনকার মতো এতো বেশী হৈ চৈ করা লাগতো না কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এতো বেশী আওয়াজ তোলা লাগতো না। বরং যার যার অবস্থান হতে, বিবেকের তাড়নায় এবং মানবতার দাবী নিয়ে এগিয়ে আসতেন। আর এখন তো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বেশ হৈ চৈ করে, ইভেন্ট এর মাধ্যমেও তেমন কিছু করা যায় না।
কারন ঐ যে একটা সন্দেহ তৈরী হয়ে গেছে আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে, এগুলো যথাযথভাবে সেই সকল মানুষদের কাছে পৌঁছাবে কিনা সেটা নিয়ে। নাকি আড়ালে বসে সবগুলোই নিজে ভোগ করার চেষ্টা করবো। এমন ভাবনার জন্যই হয়তো অনেক মানুষ আজকাল এগিয়ে আসার চেষ্টাও করেন না। যে সামান্য কিছু দেয়ার ইচ্ছা ছিলো এই মানুষগুলোর মনে সেই সন্দেহের কারনে সেটাও নিঃশেষ হয়ে গেছে। সত্যি আমরা এবং আমাদের চরিত্রগুলো নিদারুণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে, নষ্ট হয়ে গেছে আমাদের মাঝে থাকা সততা নামক বস্তুটিরও। যার কারনে আমরা যেমন কারো সমস্যায় এগিয়ে যাই না, ঠিক তেমনি আমরা আওয়াজ দিলেও কেউ আমাদের পাশে এগিয়ে আসতে চায় না।
অথচ আমি যখন ছোট ছিলাম, তখনও দেখেছি বিশেষ করে শীতের প্রকোপ যখন বেড়ে যেতো, তখন এলাকার স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠদের নেতৃত্বে ছাত্র সমাজ এগিয়ে আসতো এবং এলাকার প্রতিটি বাড়ি বাড়ি যেতো, যার যা সামর্থ থাকতো তাই দিয়েই তারা পাশে থাকার চেষ্টা করতো। কেউ যেমন শীতের পুরনো কাপড় দিতো, ঠিক তেমনি কেউ কেউ আবার বেশ ভালো অংকের টাকাও দিতো। সত্যি আমাদের অতীত এবং ঐতিহ্যগুলো কতটা সুন্দর ও ভালোবাসাপূর্ণ ছিলো। আর আজ আমাদের বর্তমান কতটা মানবতাহীন ও কুৎসিত হয়ে গেছে। সততা আর ভালোবাসা দুটোই যেন কালো কাপড়ে আবৃত হয়ে গেছে।
Image Taken from Pixabay
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আধুনিকতার পাশাপাশি মানুষের বিবেক বুদ্ধি যেন দিনের পর দিন লোপ পাচ্ছে। হ্যাঁ একটা সময় আধুনিকতার ছোঁয়া ছিল না তবে মানুষের মধ্যে ঐক্য ছিল। একটা মানুষ বিপদগ্রস্ত হলে নিঃস্বার্থে তার পাশে দাঁড়াতে হবে এমন মন মানসিকতা সবার মধ্যে ছিল যেটা দিনের পর দিন কমে আসছে।
দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে, আমরা ততই স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি। কারো সমস্যা দেখার পরেও, আমরা না দেখার ভান করে থাকি। মোটকথা সারাক্ষণ নিজের ভালো মন্দ নিয়েই ভাবি। যাইহোক আমাদের সবার উচিত যথাসম্ভব সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ কিছু কিছু মানুষ এই শীতে পাতলা কাপড় জড়িয়ে রাতের বেলা রাস্তায় পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকে। তারা যে কতো কষ্ট করে, সেটা স্বচক্ষে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দারুন লিখেছেন ভাইয়া। আপনি বেশ দারুন করে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। আসলে এখন মানবতা দেখালেও কোন লাভ নেই। কারন এখন আর কেউ মানবতায় বিশ্বাস আনতে পারে না। ঐ যে চুন খেয়ে মুখ পুড়লে তো দই দেখে ভয় লাগবেই। যা হোক সুন্দর ছিল আজকের টপিকটি।
এই অল্প বয়সেই বিভিন্ন জায়গায় থাকার কারণে অনেক মানুষ দেখেছি। আর সত্যি বলতে কি মানুষ যে কত রকম ভাবে ভেবেছেন এবং স্বার্থপর হতে পারে ধারণার বাইরে। এক এক বার অদ্ভুত ভাবে মানুষ দেখি আর অবাক হই। আপনি আজকের পর সামাজিক মাধ্যমের কথা বলছেন! এটি একটি কিম্ভুত প্ল্যাটফর্ম, মানুষ যে কখন কি করছে তা হয়তো মানুষ নিজেও জানে না। তবে সত্যিই আজকাল মানুষ যেন বড্ড বেশি স্বার্থপর বিবেকহীন হয়ে উঠেছে৷