এক বিকেলে সবজি বাগানে
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। আপনারা অনেকেই জানেন আমাদের পুকুর পাড়ে বেশ কয়েকটা সবজি বাগানো রয়েছে। সেই সবজি বাগানে আমার রাজ বাবুর আব্বু এবং ছোট আব্বু অনেক শাকসবজি উৎপাদন করে থাকে। তাই মাঝেমধ্যে সুযোগ পেলে আমিও সেখানে সবজি সংরক্ষণের জন্য উপস্থিত হয়ে। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করব পড়ন্ত বিকেলের এই সবজি সংরক্ষণের কিছুটা মুহূর্ত আপনাদের ভালো লাগবে।
আমাদের সবজি বাগানটা বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিটের রাস্তা। রাস্তার ক্রস করে একটু ধানের জমি এরপরে পুকুরপাড়। তাই সুযোগ পেলে যে কোন মুহূর্তেই পুকুর পাড়ে যাওয়া সম্ভব হয় এবং সবজি তুলে আনা যায়। বেশ কিছুদিন আগে আমরা পরিবার থেকে সবাই একটু বেড়ানোর উদ্দেশ্যে গেছিলাম। সবজি বাগানে বেড়াতে গেলে কিছু সবজি সংরক্ষণ করা হবে এটাই স্বাভাবিক। ঐদিন আমাদের উদ্দেশ্য ছিল যে যার মত শুধু ফটো ধারণ করব। আপনারা অনেকেই জানেন আমাদের বাড়ি থেকে চারজন ইউজার এখানে রয়েছি। তার মধ্যে তিনজন ভেরিফাইড মেম্বার। তাই মাঝেমধ্যে যেখানেই আমরা উপস্থিত হই না কেন সুযোগ পেলে একটু ফটো ধারণ করার চেষ্টা করি ব্লগ করার জন্য। যেন এ প্লাটফর্ম আমাদের জন্য নতুন দিগন্ত এনে দিয়েছে। তাই বাড়ির কাজ হাতের কাজ শেষ করে সবাই যখন ফ্রি থাকি উপস্থিত হয়ে যায় বাগানের মধ্যে অথবা পুকুরপাড়ের যেকোন স্থানে।
কিছুদিন আগে রাজের আব্বুর ছোট আব্বু দুই ভাই টমেটো আর বেগুন গাছ লাগিয়েছিল। গাছের চারা আনতেই সন্ধ্যা পার হয়ে গেছিল। এরপর গাছগুলো নাকি মোটামুটি বেঁচে গেছে। তাই সে গাছগুলো দেখার ইচ্ছে ছিল এছাড়া অন্যান্য শাকসবজি। আমরা প্রথমে বাগানের লাস্ট প্রান্তে চলে গেলাম সবাই। দেখলাম হ্যাঁ সত্যি কথা সকল সবজি গাছগুলো বেঁচে গেছে। তারা কাজগুলো পরের দিন না লাগিয়ে রাতে লাগিয়ে ছিল যেন রাতের মধ্যে গাছগুলো সুন্দরভাবে তরতাজা হয়ে উঠতে পারে। যদি পাশে থাকা বেগুন গাছগুলো একদিন দেখে গেছিলাম রোগা সোগা মরা জীর্ণ হয়ে রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন যত্ন নেওয়ার পর গাছগুলো অনেক সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠেছে এবং অনেক বেগুন ধরেছে। জায়গায় জায়গায় দেখলাম পাখিতে খেয়ে গেছে তাই কিছুটা আমি তুলতে থাকলাম। দেখলাম বাবুকে ভেজে খাওয়ানো যাবে।
এরপর একদম পুকুর পাড়ে বানে ঝুলছিল দুইটা কুমড়া। চাল কুমড়া দুইটা তারা কোনদিন খেয়াল করেনি। ভাগ্যিস আমি পুকুর পাড়ে সবজি বাগানে তাদের সাথে এসেছিলাম। বেগুনের ফটো ধারণ করার মুহূর্তে আমার চোখে বেঁধেছিল শিম গাছের নিচ দিয়ে। তাই আর দেরি না করে তাদের বললাম দুইটা তুলে আনতে। এরপর দুইটা তারা তুলে এনে দেয়। এরই সুযোগে ভাইয়াকে বললাম কিছু পালন শাক আর মুলা তুলে দিতে। দেখলাম এসে যখন পড়েছি শুধু ফটো ধারণ কেন সবজি তুলে নিয়ে যায়। এই সুযোগে অনেকগুলো সবজি সংরক্ষণ করা হয়ে গেল। তাদের পাশাপাশি আমারও ফটো ধারণ করা হয়ে গেল। একদিকে পুকুরপাড় বেড়ানো, মাছের খাবার দেওয়া দেখা, আবার সবজি সংরক্ষণ, ফটো ধারণ, সব মিলে বেশ আনন্দের সময় ছিল আমাদের।
তবে এই দিন আমি ভাল রকমের একটা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলাম। এই অভিজ্ঞতাটা হচ্ছে চুন পানিতে দেওয়া মাত্র টগবগ করে ফুটে উঠেছিল। এর আগে আমি শুনেছিলাম চুন পানির মধ্যে পড়লে নাকি গরম আগুন হয়ে যায়। সেই দিন স্বচক্ষে দেখেছিলাম। হাড়ির মধ্যে চুন দিয়েছিল। চুনগুলো দলা হয়ে থাকে। পানির মধ্যে দিলে গলে যায় পরে পুকুরে ছিটাতে পারে। কিন্তু হাড়ের মধ্যে রেখে পানি দেওয়ার পর এমন ভাবে টগবগ করে ফুটতে থাকলো মনে হল যেন মাংস ফুটছে। আর সেই আকারে ধোঁয়া বের হয়েছিল। এটা আমার কাছে একদম স্বচক্ষে নতুন দেখলাম। কারণ প্রায় তারা চুন কিনে আনে পুকুরে নিয়ে যায়। কিন্তু এভাবে চুনের পানির সাথে প্রতিক্রিয়া কোনদিন দেখিনি। প্রচন্ড গরম হয়ে ফুটতে থাকায় হাঁড়ির চারপাশে অনেক সিটে পড়েছে।
সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
বিষয় | সবজি সংরক্ষণ |
---|---|
What3words Location | Gangni-Meherpur |
মোবাইল | Huawei mobile |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
আপনাদের সবার পোস্টে কম বেশি আপনাদের সবজি বাগানের কথা শুনেছি। বিভিন্ন সময় ফটোগ্রাফি তে দেখেছিলাম। নিজেদের এরকম একটা সবজি বাগান থাকলে সত্যি দারুন লাগে। নিজেদের গাছের ফ্রেশ শাকসবজি খাওয়ার মজাটাই আলাদা। নিজেদের সবজি বাগানে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন এবং সবজি সংগ্রহ করেছেন। বিভিন্ন সবজির ফটোগ্রাফি দেখে ভালো লাগলো।
হ্যাঁ আপু, সত্যি বলেছেন।
আপনাদের সবার পোস্টেই আমি এই সবজির বাগানের গল্প শুনি। কি যে ভালো লাগে দেখতে। এবং টাটকা টাটকা সবজিগুলো বাসা গুলো যখন ছবিতে দেখান তখন সত্যিই ভালো লাগে মনে হয় আপনারা নিজের জমির অর্গানিক খাবার খাচ্ছেন। আপনার আজকের পোষ্টটিও পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন। একদম টাটকা ছিল সব।
দারুন লাগলো দেখা গুলো পড়ে। তবে পোষ্টের মধ্যে আমার ফটোগ্রাফি টা না দিলেই ভালো হতো 🤩🤩। যাহোক এবার অতিরিক্ত যত্ন নেওয়ার কারণে আমাদের পুকুর পাড়ের সবজি বেশ ভালোই হয়েছে। এখন পর্যন্ত পুকুরপাড়ের সবজি গুলোকে যথার্থভাবে যত্ন নেওয়া হচ্ছে। আর এভাবেই মাঝেমধ্যে আমাদের সবজি বাগানে বেড়াতে যাবে।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
X-promotion
আজকের কাজ সম্পন্ন
সবজি বাগানের ছবিগুলো কিন্তু ভীষণ সুন্দর ভাই। প্রত্যেকটি গাছ খুব তরতাজা। এবং আপনি খুব সুন্দর ভাবে তাদের ফটোগ্রাফি গ্রহণ করেছেন। জল এবং চুন মিশলে গরম হয়ে যায় আমিও শুনেছি। যদিও নিজে কখনো চোখে দেখিনি। কিন্তু আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে আমার ভালো লাগলো। একটা নতুন জিনিস আপনি দেখতে পেয়েছেন এই গবেষণার মাধ্যমে।
হ্যাঁ দাদা আমিও দেখে খুব আশ্চর্য হলাম।
আজ আপনি আপনাদের সবজি বাগানে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনাদের সবজি বাগানের সবজিগুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। আপনাদের পুকুর পাড়ে সবজি গুলো দেখতে খুবই সুন্দর হয়েছে। টাটকা টাটকা সবজি খাওয়ার মজাই আলাদা। যেহেতু আপনারা সবজি চাষ করেন সেহেতু অনেক টাটকা টাটকা সবজি খেতেও পারেন। টাটকা সবজির অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। সবগুলো ফটোগ্রাফি দেখতে অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। ফটোগ্রাফির সাথে বর্ণনা করেছেন অনেক সুন্দর করে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ নিজেরা চাষ করতে পারলে ভালো।
গ্রামের মানুষ টুকটাক সবজি চাষ করে। আর সেই সবজি গুলো খেতে অনেক ভালো লাগে। আপু আপনি অনেক সুন্দর করে সেই অনুভূতি এবং দৃশ্যগুলো তুলে ধরেছেন। অনেক ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট দেখে।
ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।