আজ কবিতার পাতা। আজকের কবিতা - শিক্ষকের প্রতি।
আজ কবিতার পাতায় কবিতা - শিক্ষকের প্রতি
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
আজ একটি কবিতা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। কবিতাটি অবশ্যই স্পেশাল। কারণ এই কবিতাটি আমি আমার শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে লিখে তাঁদেরকে উৎসর্গ করেছিলাম। আমি বিশ্বাস করি কোন মানুষই শিক্ষক ছাড়া বড় হতে পারে না। জীবনে চলার পথে শিক্ষকের অবদান অনস্বীকার্য। আর তাই আমরা যদি আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকদের ভুলে যাই তবে তা খুব অন্যায় হবে। শিক্ষক মানে জীবনের সঠিক পথ দেখাবার অন্যতম ব্যক্তি। যাঁরা দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদেরকে পথ দেখান, তারাই তো শিক্ষক। আমরা যখন ছোটবেলায় বাবা মায়ের হাত ধরে স্কুলে ভর্তি হই, তখন থেকেই যেন আমাদের জীবনের বেশিরভাগ অংশটাই শিক্ষকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। জীবনের বিভিন্ন স্তরে আমরা বিভিন্ন শিক্ষককে লাভ করি। আর তারপরে তাঁদের দেখানো পথ অনুযায়ী ধীরে ধীরে এগিয়ে যাই লক্ষ্যমাত্রার দিকে। তাই সারা জীবন আমাদের উচিত সেইসব শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান করে কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁদের কথা স্মরণ করা। আসলে জীবনে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে যেসব মানুষগুলোর প্রধান ভূমিকা রয়েছে তাদেরকে আমরা যদি ভুলে যাই তবে তা এককথায় বেইমানি হবে। আর আমরা কোনদিন সেই বেইমানি করে উঠতে পারিনি। আজও কোন কিছু সাফল্য জীবনের এলে সেই সাফল্যের পিছনে আমার এক কালের শিক্ষকদের অবদানের কথা স্মরণ করি। আমি বিশ্বাস করি আজ যা অর্জন করেছি তার পিছনে যে মানুষগুলোর প্রবল ভূমিকা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম আমার শিক্ষকেরা। আজও কোন সমস্যায় পড়লে যাদেরকে নির্দ্বিধায় ফোন করতে পারি, তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই আমার শিক্ষক। তাঁরা আজও কেমন সুন্দর করে আমাকে পথ দেখান এবং জীবনে পথ চলতে সাহায্য করেন।
তাঁদের অবদানকে স্মরণে রেখে আমি একটি কবিতা লিখে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। কবিতাটি গদ্য কবিতা। যদি আপনাদের এই কবিতা ভালো লেগে থাকে এবং আপনাদের শিক্ষকের কথা মনে পড়তে শুরু করে, তবে অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে তা জানাবেন।
💐 কবিতা 💐
শিক্ষকের প্রতি
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
হে দ্রষ্টা
কিছু কাগজ স্বপ্নের মত দেখতে
কিছু নীহারিকায় রং ধরেছে মুহূর্মুহু
বেড়াজালের তীব্রতা ঠেলে ফুটে ওঠা পাতার ধর্ম সাদা
তুমি শিখিয়েছ বটবৃক্ষের উচ্চতা মাপতে
নির্দিষ্ট স্বপ্নাদিষ্ট দিনে তাই তোমার চোখেই লাগিয়েছি টীকা
হে গুরু
যেকোনো সংঘবদ্ধ শুরু অযান্ত্রিক
ঘোর কেটে যাওয়া দূরত্বে তখন বৃষ্টি নেমেছে সবে
দুচোখে পাতা গজানোর শব্দ
বিপরীত দিকের সহায়সম্বলহীন সহাবস্থান
শুধু তোমার সাহচর্যে আমি তাকাই সেইসমস্ত সভাতার কেন্দ্রে
হে বৃহস্পতি
অঝোরে নেমে আসা জলকণা বেছে রাখতে শিখেছি ক্রমে
বাড়ছে বন্যার সংকেত
হিসেবে ভুল হলে আমিও শ্রীহীন
তবু বৃষ্টির দিনে শুধু তোমার কথা মনে পড়ে আবার
হয়ত ছাতার শুষ্ক অঞ্চলেই এযাবৎ নির্বিঘ্ন বৃষ্টিপাত স্থায়ী
হে প্রাজ্ঞ
নির্মাণের পূর্বলগ্নে মিটে গেছে সবটুকু বিলম্বসুখ
স্থলভাগের পাশে বন্যাকবলিত বনাঞ্চল
আর একটু হেঁটে গেলে কুড়নো যায় আলোর ঘরবাড়ি
তুমি বাড়িয়েছ হাত
আমার সামনে সেই খণ্ডচিত্রে বাঁধা আছে মোহনার অভিমুখ
হে শিক্ষক
তোমার দেখানো পথ নিমগ্ন
সংযত তারাদের ভিড়েও চিনিয়েছি গ্রহাণুর গতি
আজও মনে পড়ে প্রত্যেকটি তারাখসার রাত
শ্রেণীবদ্ধ অন্ধকার ঠেলে রোশনাই
আজও একনিষ্ঠ তাকাই আকাশে
একটুকরো সূর্যোদয়ের দিকে
হে নির্মাণশিল্পী
রাতের পর আবার ভোরের অপেক্ষায় জাগি রোজ
তোমার দিকেই এগিয়ে দিই গলিপথের আলো
তোমার পায়ে পেতে দিই অজানা শ্বাসমূলের দায়।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁক ও ৫% এবিবি চ্যারিটিকে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।











https://x.com/KausikChak1234/status/1902284405885792669?t=X7oOBV0LfrQma2JWPGTK8g&s=19
Daily tasks-
শিক্ষক আমাদের শ্রদ্ধার মানুষ। যাদের কাছ থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে অনেক বড় হই। আমাদের চলার পথে যেমন মা বাবার দায়িত্ব থাকে ঠিক তেমনি আমি মনে করি শিক্ষকের দায়িত্ব অনেক বড়। ঠিক তেমনি আজকে আপনি শিক্ষকের প্রতি খুব সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন। আপনার কবিতার প্রত্যেকটি লাইন গুলো গুছিয়ে লেখার কারণে পড়তে অনেক ভালো লাগলো।
আমার কবিতা পড়ে এমন সুন্দর সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করবার জন্য ধন্যবাদ আপু।
খুবই সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন। আপনার কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। কবিতার ভাষাগুলো অসাধারণ হয়েছে।
কবিতাটি পড়ে মন্তব্য করে পাশে থাকবার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
শিক্ষক আমাদের জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দেন। শিক্ষক আমাদের শ্রদ্ধার মানুষ। মা-বাবার মতোই তারা আমাদের দিক নির্দেশনার সুন্দর একটি পথ দেখিয়ে দেন যে পথটি চললে জীবনের সফলতা নিশ্চিত।শিক্ষককে নিয়ে বেশ দারুন একটি কবিতা লিখেছেন দাদা পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।