আম পাড়তে গিয়ে রতনের হাত ভাঙ্গার গল্প //পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ25 days ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

এখুন গাছে গাছে কাঁচা আম গুলো পাঁকতে শুরু করেছে। আর এই পাকা আম দেখতে পেয়ে আমার বন্ধু রতনের কথা মনে পড়ে গেল। আসলে আমি যখন ক্লাস টেনে ছিলাম। তখন আমাদের স্কুল মাঠে দুটি বড় বড় আম গাছ ছিল। আর আম গাছ থেকে সকলে আম পেরে খেতো। আমরা বন্ধুরা মিলেও আম পারতাম। তবে একদিন আমার বন্ধুর মতন এই গাছে উঠে আম পারা সিদ্ধান্ত নিলো।আসলে গাছটা অনেক মোটা এবং বড় ছিল, যার কারণে কেউ আম গাছে উঠতে সাহস পেত না। যার কারণে নিজ থেকে আমগুলো ঢিল দিতে পারতো। নিজ থেকে ঢিল দিয়ে আম পেড়ে খাওয়ার মধ্যে অন্যরকম একটা মজার হয়েছে। এই ঢিল দিয়ে আমরা অনেক আম পারতাম। আসলে প্রতিদিনই ঢিল দিয়ে আম পাতার মুহূর্তগুলো অসাধারণ ছিল। একজন ঢিল দিয়ে আম পারতো সেই আমটি পড়ার সাথে সাথে সবাই দৌড়ে গিয়ে ধরতো। সেই দিনের কথা আজ খুবই মনে পড়ে যাচ্ছে। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার বন্ধু রতন আম গাছ থেকে পড়ে হাত ভেঙে গিয়েছিল, সেই গল্পটি শেয়ার করছি। আশা করছি গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


bird-5634173_1280.jpg

Source

আমাদের স্কুল মাঠে যে দুটি আম গাছ রয়েছে, এই আম গাছ থেকেই ছোট ছোট আম সকলের পেরে খেতো। তবে আমরা কাঁচা আম খেতাম না, কারণ কাঁচা আম গুলো মিষ্টি লাগতো না। যখন পাঁকতো তখন এই আম অনেক বেশি মিষ্টি হতো, অল্প অল্প পাঁকা যখন শুরু করে দিল তখন আমরা বন্ধুরা মিলে নিজ থেকে ঢিল দিয়ে আম পারতাম। একদিন আমার বন্ধুর রতন বলল যে স্কুল ছুটির শেষে বিকাল বেলা আমি এই গাছে উঠব। বললাম এত বড় এবং মোটা গাছেতে উঠতে পারবি না। বললো যে আমি সকল গাছে উঠতে পারি। কোন সমস্যা নেই। তবে আমরা এই আম কাসেম দিয়ে বানিয়ে খাবো। তাই আমরা বন্ধুরা মিলে পরের দিন স্কুলে আসলাম। তারপর ক্লাস শেষে আমরা আমতালা আসলাম। রতন বলল যে মানিক তুই কি কাশেম নিয়ে এসেছিস। মানিক বলল হে নিয়ে এসেছি। বললো আম পেরে নিয়ো আমরা ব্রিজে গিয়ে বসে আম খাব, সবাই বললাম ঠিক আছে।


তারপরে আস্তে আস্তে রতন গাছে উঠল, আসলে গাছটি অনেক বড় এবং মোটা ছিল। ভেবেছিলাম ও উঠতে পারবে না, কিন্তু রতন ঠিকই গাছে উঠলো। গাছে উঠে সে আম পারা শুরু করে দিল। মাঝেমধ্যে আম নিচে ফেলে দিতো। এবং রতন গাছের উপরে বসে আম খাচ্ছিল পাঁকা আম। তখন আমরা নিচ থেকে অনেকবার বলেছিলাম যে খাস না বন্ধু নিচে এসে খাস। তো কথাই শুনছে না। তারপরে অনেকগুলো আম পারলো এবং এই আমগুলো একটা ব্যাগের ভিতর রাখলো। নিচে ফেলে দিলে ফেটে যাবে বলে একটি ব্যাগ নিয়ে উঠেছে।


রতন অনেকগুলো পাঁকা পাঁকা আম পারলেও, এই গাছটি অনেক বড় ছিল, আর কাছে অনেক আম ধরেছে। আসলে নিচের যে আমগুলো ছিল এ আমগুলো পেরে খাওযা হয়েছে। কিন্তু গাছটি অনেক বড় আর উঁচু ছিল, যার কারণে কেউ এই এখান থেকে আমগুলো পারেননি। তাই রতন অনেকগুলো আম পেয়েছে। আর এই আম নিয়ে যখন নিচে নামতে বললাম রতন বললো ব্যাগের ভিতরে তো অনেক আম ভারি লাগছে খুব। আমরা বললাম যে তুই ব্যাগটা নিচে ফেলেদে। আমরা ধরবো নিচে ফেলে দিলে। রতন বললো সবগুলো আম নষ্ট হয়ে যাবে। বললো আমি আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে নিয়েছি আসবো।


রতনের এক হাতে ব্যাগ ছিল। অন্য হাত দিয়ে ডাল ধরে নামতে ছিল। তো গাছ থেকে নামতে নামতে অনেকটাই নেমেছে এবং নিচে যখনই নামবে, তখন একটা ডাল রয়েছে। আর ওই একটা ডাল দুই হাত দিয়ে ধরতে হয়। রতনের হাতে ব্যাগ থাকার কারণে অনেক রিক্স নিয়ে রতনের এক হাত দিয়ে ডাল ধরে যখন নামতে ছিল তখন একহাতে ভর দিয়ে নামতে ছিলো,আর এক হাতে ভর দিয়ে নিজেক ধরে রাখতে পারে নাই, যার কারণে রতন গাছ থেকে নিচে পরে যায়।আর রতনের ডান হাত সেই আমের ব্যাগের উপরে নিচে এসে হাতটি পড়ে, যার কারণে ওর ডান হাতে প্রচন্ড ব্যথা পায়।রতন গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার পর অনেক শব্দ হয়েছে। আশেপাশে মানুষ ছুটে আসে এবং আমরা অনেক ভয় পেয়ে যায়। রতন তো কান্না বলে দিল এবং আশেপাশের মানুষের এসে দেখতে পেল রতন হাত ধরে রয়েছে। তাদের মনে হলো যে হাত ভেঙে গেছে। তাই তারা বলল যে রতনকে হাসপাতালে নিতে বললো।


তারপরে আমরা বন্ধুরা মিলে এবং সেখানকার বড়রা মিলে রতনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো এবং রতনের বাবাকে ফোন দিয়ে জানানো হলো। হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখানো হলো।এবং রতনকে এক্সরে দিলো। দেখবে হাতের হাড্ডি আসলে ভেঙেছে কিনা। তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই পরবর্তী অংশ আপনাদের সাথে আগামী পর্বে শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আর আশা করছি সেই পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 25 days ago 

আমপাড়া নিয়ে আমার জীবনেও বন্ধুদের সাথে ঘটে যাওয়া অনেক কাহিনী রয়েছে। তবে বেশিরভাগ কাহিনী গুলোই হচ্ছে প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক। যখন সবাই প্রতিষ্ঠানে যেতাম তখন যেন মনে শয়তান ঢুকে যেত আম পেড়ে খাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। আপনার বন্ধু রতনের গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার কথা শুনে তো আমিও ভয় পেয়ে গেলাম। দেখা যাক এখন ডক্টরের রিপোর্টে কি আসে। পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। দেখা যাক রতনের হাত কি আদৌ ভেঙ্গে ছিল নাকি শুধু ব্যথা পেয়েছিল।

 25 days ago 

আম গাছ থেকে পড়ে গিয়ে হাত ভাঙ্গার গল্পটি পড়ে খারাপ লাগছে সআসলে আম গাছ থেকে আম পাড়ার মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ। ঢিল দিয়া আমপাড়ার দৃশ্যগুলো আমারও খুবই ভালো লাগে। তবে রতন এক হাতে ব্যাগ আর একহাতে নামা টাই ছিল রিক্স। যদি দুই হাত দিয়ে নামতো তাহলে এই বিপদটা হতো না। দেখা যাক আগামী পড়বে রতনের কি অবস্থা হয়। সেই অংশটুকু পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

 25 days ago 

আপনার বন্ধু রতনের আম পাড়তে গিয়ে হাত ভাঙ্গা বড়োই দুঃখজনক ঘটনা।আসলে আম পাড়তে গিয়ে এরকম দূর্ঘটনা ঘটে থাকে অনেক।গল্প টি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 25 days ago 

আসলে এমন অনেকগুলো ঘটনা আমি মোটামুটি জানি। আমাদের এখানে আমার এক ছোট ভাই জাম গাছে জাম পাড়তে উঠে হাত ভেঙ্গে ফেলেছিল। তবে যাই হোক অজানা একটা বিষয় কিন্তু আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম, বেশ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66650.28
ETH 3590.00
USDT 1.00
SBD 2.96