আমার লাইফের প্রথম ইফতার উপভোগ করলাম
আমার জীবনে প্রথম ইফতার করলাম এ বছর । মুসলমানদের ধর্মীয় এ আচার সম্পর্কে আমার খুবই ভাসা ভাসা জ্ঞান ছিল আগে । রোজা কি ? ইফতার কি ? এসব কিছুই জানতাম না । প্রায় জিরো নলেজ ছিল এসব ব্যাপারে । এবছর রমজান শুরু হওয়ার আগে এ নিয়ে একটু পড়াশোনা করলুম । এবং, অনেক কিছুই জানতে পারলাম ।
মানুষ আসলে সব সময় ভোগ বিলাসে মত্ত থাকতে পছন্দ করে । এই অতিরিক্ত ভোগ-বিলাস মানুষকে দিন দিন আরো স্বার্থপর, নীচু মানসিকতার এবং উদারহীন করে তোলে । রমজান হলো সেই মাস যে মাসে মানুষকে এই অতিরিক্ত ভোগ বিলাস থেকে বিরত রাখে, এই মাস হলো সংযমের মাস । এই মাস হলো নিজেদের সকল ইন্দ্রিয়সুখ এবং যাবতীয় ভোগ বিলাস বিসর্জন দিয়ে ঈশ্বরের কাছে নিজেকে উৎসর্গ করার মাস । এক মাস ধরে প্রতিদিন পুরো ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১২ ঘন্টা সকল রকমের খাদ্য , পানীয়, সুখ, বিলাস ব্যাসন ত্যাগ করে মহান সৃষ্টিকর্তার উপাসনায় নিজেকে ব্যাপৃত রাখার মধ্যে একটি অন্যরকমের ভালো লাগা আছে সেটা বুঝলুম ।
যাই হোক, আমাদের বাড়িতে বিগত তিন দিন ধরে ইফতার করেছি আমরা পরিবারের সবাই মিলে । আমাদের পরিবারে কোনো ধর্মের গোঁড়ামি নেই, এবং পরিবারে প্রতিটা সদস্য খুবই উদার মনস্ক এসব ব্যাপারে ।
তো ভালোই কেটেছে ইফতার পার্টি আমাদের । কালকের ইফতারে কি কি আয়োজন ছিল সেটাই এখন বলি । আমি তো বাইরে খাই না, কদাচিৎ রেস্টুরেন্টে খাই । তাই সবগুলি আইটেমই তনুজার বানানো । তো চলুন দেখা যাক আমাদের গতকালের ইফতারের আয়োজন -
শরবত দিয়ে শুরু করলুম । রুহ আফজা, খেতে ভালোই লেগেছে ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
এরপরে ছিল আমার খুবই প্রিয় একটি আইটেম । রান্না করা মাখো মাখো "ছোলা আলু দম" । প্রথমে পুরো ১২ ঘন্টা ছোলা ভিজিয়ে রাখা হয়, এরপরে, ছোট করে আলু কেটে সিদ্ধ করে রাখা হয় । পেঁয়াজ, রসুন, গরম মশলা , লঙ্কা গুঁড়ো সহেযোগে ছোলা কষাতে কষাতে যখন জল একদমই কমে যায় তখন সিদ্ধ আলু দিতে হয় । এরপরে দমে বসাতে হয় ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
এরপরে ডালপুরি । বেশ বড় সাইজের ৬-৭ খানা ডালপুরি খেলুম পেট পুরে । ভিতরে ডালের পুরটা খেতে জাস্ট অসম লাগে আমার ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
এরপরে শুধু আমার নয়, সবারই প্রিয় বেগুনি । বেগুনি আমার আবার একটু বেশি প্রিয়, তার ওপর এসব তেলেভাজা জিনিস খাওয়া আমার একদম নিষেধ, কতকাল যে খাই না আমি । তাই কাল একটু বেশিই বেগুনি খেয়ে ফেলেছিলাম ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
এগুলি কি বলুন তো ? পেঁয়াজী । তনুজার স্পেশ্যাল পেঁয়াজী । এই পেঁয়াজী-তে পেঁয়াজ ছাড়াও থাকে বেসন, চালের গুঁড়ো, ডাল বাটা আর ডিমের গোলায় চোবানো ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
এগ ডেভিল । তনুজা দারুন করে এটি । কালকেও দারুন হয়েছিল । তাই একটু বেশিই খেয়ে ফেলেছিলাম । ৮ টা এগ ডেভিল খেয়েছি কাল ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
জিভে জল আনা আলুর চপ । এক একটা কামড়ে মনে হবে মর্ত্যে নয়, স্বর্গে বিচরণ করছি । ৬-৭ টার মতো খেয়েছি কাল ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
সবার শেষে ছিল ফলমূল আর হরেক রকমের মিষ্টি, লাড্ডু, প্যাড়া । আমি মিষ্টি খাই না ।
তারিখ : ০৪ এপ্রিল ২০২২
সময় : সন্ধ্যা ৫ টা ৫২ মিনিট
স্থান : কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ
আপনার লেখাগুলো যখন পড়েছিলাম তখন চোখ থেকে পানি বের হয়ে গিয়েছিল অটোমেটিক। আসলে আপনার মত মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া সত্যিই বিরল দাদা। আপনি অন্য ধর্মালম্বী হওয়া সত্ত্বেও মুসলমানদের ধর্ম কে এত শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা দেখানো এটি সত্যিই আমার হৃদয় কে অনেক নরম করে দিয়েছে। আপনার প্রতি ভালোবাসা শতগুণ বেড়ে গেল।
এটা ঠিক কথা যে রমজান মাস আল্লাহ তালা পাঠিয়েছেন সংযমের মাস হিসেবে।
সবকিছু শেষে তনুজা বৌদি কে আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাবেন। গতকালকের ইফতারিতে এত সুন্দর সুন্দর আইটেম তৈরি করার জন্য বৌদির জন্য রইল অবিরাম ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা।
আর আপনার প্রতি তোর ভালোবাসা এবং স্যালুট সব সময়।
Thank You for sharing...
আপনি একদম মনের কথা বলেছেন। আমিও যখন দাদার পোস্ট করছিলাম কেন জানিনা ভিতরে একটা অদ্ভুত অনুভুতির জোয়ার এসে গিয়েছিলো। সবার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো।
দাদা আমার লাইফের প্রথম ইফতার উপভোগ করার মহূর্ত গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। আর বৌদির হাতের বানানো খাবার গুলো স্পেশাল ছিলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। আজকের পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনার পুরো পরিবারের জন্য শুভ কামনা রইলো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
দাদা আপনার জন্য মন থেকে ভালোবাসা রইলো ✨
আপনি যেভাবে রোজার মহত্ব তুলে ধরেছেন আমাদের মুসলমানদের অনেকেই তা পারবেনা।
আর দাদা ইফতারের আয়োজন দেখে আমার নিজের মনের হচ্ছিল চলে যাই আপনার বাসায় ইফতার করতে। আর বৌদির হাতের রান্না তো অসাধারণ 😍। আপনি সোয়াবের ভাগিদার হলেন। আমরা আপনার জন্য দোয়া সবসময়ই করি 🤲
ঠিকই বলেছেন দাদা পবিত্র মাহে রমজান মাসে আত্মসংযমের মাস এই মাসে অনেক বেশি বেশি আত্মত্যাগী হওয়া শেখায়।অন্যান্য মাসির যে এই মাসের তাৎপর্য তা অনেক বেশি।সিয়াম সাধনার এই মাসে আমরা আরো বেশি বেশি ইবাদত করে নিজেকে আত্মসংযমী করার তোলার জন্য।
সর্বোপরি তনুজা বৌদির হাতের ইফতার গুলি সত্যি অনেক সুন্দর অনেক আকর্ষনীয় এবং অনেক মজাদার হয়েছে যা আপনার মুখ থেকে শোনা।এত সুন্দর সুন্দর ইফতারের আয়োজন করার জন্য তনুজা বৌদিকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি মন থেকে।সপরিবারে চলে আসেন আমার বাসায় ইফতারের দাওয়াত থাকলো প্রিয় দাদা বৌদি♥♥
আপনি একদম ঠিক বলেছেন দাদা আমরা প্রত্যেকেই চেষ্টা করি দিনের বেশিরভাগ অংশই সকল প্রকার পানাহার ভোগবিলাস থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে। এই একটি মাস আমরা নানা ধরনের শিক্ষা গ্রহণ করি। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে এই একটি মাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বাকি ১১টি মাস আমল করার জন্য বলেছেন। এই একটি মাস আমাদের সকলের জন্য ট্রেনিং পিরিওড। আমাদের এই এক মাসের ট্রেনিং থেকে আমরা বাকি মানুষগুলোকে জীবন পরিচালিত করার ইচ্ছা পোষণ করি। এই একটি মাস রোজা রাখার ফলে আমরা বুঝতে পারি অসহায় গরীব দুঃখী মানুষের যারা দিনে এক বেলা খেতে পায়না তারা কত কষ্টে জীবন যাপন করে। এই একটি মাসে সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে বুঝিয়েছেন ক্ষুধার যন্ত্রণা কতটুকু।
দাদা আপনি রমজান সম্পর্কে অনেক সুন্দর ধারনা লাভ করেছেন এটা জেনে আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি। আপনি সত্যিই একজন উদার মনের মানুষ দাদা।
Thank You for sharing...
রমজাম মাস সম্পর্কে আপনি ভালো জ্ঞান অর্জন করেছেন। রমজান তাকওয়া ও সংযমের মাস। এ মাসে জান্নাতের দরজা গুলো খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজা গুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
দাদা আপনার ইফতার পার্টির শরবত দেখে মন শিতল হয়ে গেলো। রোজা রাখা অবস্থায় এই পোস্টটি দেখলে লোভ সামলাতে পারতামনাহ। ভালোই হলো এখন দেখেছি।
দাদা বলে বুঝাতেই পারবো না আমি কতটা খুশি হয়েছি, আপনি রোজা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এতো বিজি থাকা সত্ত্বেও। ইফতার করেছেন তাও আমরা যা যা তৈরি করি সেগুলো! মন ছুয়ে গেলো দাদা বিষয় টি। আর খাবার গুলো খুবই লোভনীয় হয়েছে। এগ ডেভিল আমার খুব প্রিয়। বৌদির হাতের রান্না খাবার সত্যি মজার। খুবই ভালো লাগলো পোস্ট টি পড়ে।
রোজার মাস হল সংযমের মাস । আসলে কি আমরা এই মাসে সংযম করি। সারাদিন না খেয়ে যে সংযম করি ইফতারির সময় এক বারে তার থেকে বেশি খেয়ে ফেলি। আর দাদা আপনি মনে হয় আরো বেশি খেয়ে ফেলেছেন। ছয় সাতটা ডাল পুরি, আটটি এগ ডেভিল , ছয় সাতটা আলুর চপ খেয়েছেন। আপনি তো পুরো এক মাসের ইফতারির খাবার একবারে খেয়ে ফেলেছেন মনে হচ্ছে।
যাইহোক খুব ভালো লাগলো দাদা আপনাদের ইফতারির আয়োজন দেখে। আসলে ধর্ম তো আমাদের এটিই শিখায়। অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা , উদারতা। আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখার আছে। কিভাবে একজন মানুষ এতটা উদার মনের হয়?
Thank You for sharing...
দাদা আপনার তুলনা হয় না।দাদা আপনি জীবনের প্রথমবার ইফতার করেছেন শুনে খুবই খুশি হলাম। মনটা আনন্দে ভরে গেল।আপনার জীবনের প্রথমবার ইফতার করার অনুভূতি পড়ে খুবই ভালো লাগছে।দাদা আপনাকে যত দেখছি আপনার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান সবকিছুই বেড়ে যাচ্ছে।
দাদা আপনার জীবনে প্রথম ইফতার উপভোগ একথা শুনে যতটা ভালো লাগছে এবং কি সে সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত এত সুন্দর করে লিখেছেন যা অনেকে হয়তো জানেই না। আপনি ঠিকই বলেছেন এই মাসটা হচ্ছে যাই সংযমের মাস। উপরওয়ালার সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখা ফরজ। আর প্রতিদিন রোজা গড়ে প্রায় 14 থেকে 15 ঘণ্টা। পরে এই 14 15 ঘণ্টা না খেয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সারাক্ষণ ইবাদত করা প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ। দাদা আপনি এতো সুন্দর করে লিখেছেন সত্যি দাদা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা কিভাবে আপনাকে ধন্যবাদ জানাবো। আপনার প্রতি ভালোবাসা অবিরাম দাদা। আর সেই সাথে তনুজা বৌদির হাতের ইফতার গুলো দেখে আমারও খেতে ইচ্ছে করছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুবই সুস্বাদু করে তৈরি করেছেন। প্রতিটি ইফতারির কালার এবং কি ইফতারি দেখে খুব লোভ লেগে গেছে। বৌদির জন্য রইল অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক অভিনন্দন।
Thank You for sharing...