১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ও ভারত-পাক যুদ্ধে বৃটেন, আমেরিকা এবং রাশিয়ার ভূমিকা
Copyright free image source : Pixabay
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ ।
মানব ইতিহাসে ভয়ানক মানবতা বিপর্যয়ের একটি দিন । ২৫শে মার্চের কালরাত্রি, ইতিহাসের অন্যতম ভয়ানক গণহত্যার সূচনা হয়েছিল পাক সামরিক জান্তার হাতে । "অপারেশন সার্চলাইট" নামের এই বিশেষ সামরিক অভিযান এর মূল উদ্দেশ্যই ছিল জেনোসাইড । রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দের গ্রেপ্তার ও হত্যা এবং সাধারণ জনগণকে শিক্ষা দেওয়া । এই শিক্ষা দেওয়াটা ছিল স্রেফ গণহারে নিরীহ মানুষদের হত্যা করা ।
গা শিউরে ওঠার মতো সেই গণহত্যার প্রতক্ষ্য বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন প্রচুর ভারতীয়, মার্কিন এবং ব্রিটিশ সাংবাদিক । প্রচুর প্রামাণ্য দলিল পাওয়া যায় ৭১ সালের জেনোসাইড নিয়ে । রক্তের হোলি খেলা সেদিন শুরু হয়েছিল সবুজ বাংলার বুকে । নিমেষে সবুজ বাংলা হয়ে উঠেছিল রক্তবর্ণ, মানুষের বুকেরই তাজা রক্তে ।
'৭১ সালের এই ন্যাক্কারজনক গণহত্যার মেইন কালপ্রিট হিসেবে সবার আগে আমাদের মাথায় আসে একটি নাম "জেনারেল ইয়াহিয়া খান" । কিন্তু, আসলে এই অপারেশন সার্চলাইট এর মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন "জুলফিকার আলী ভুট্টো" । জেনারেলকে তিনিই উস্কে ছিলেন । ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভুট্টোর দল পশ্চিম পাকিস্তানে জয়লাভ করে, কিন্তু পূর্বপাকিস্তানে শেখ মুজিব বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে ভুট্টো সেটি মেনে নিতে পারেননি । জাতিগত বিদ্বেষ ছিলো তার প্রবল । ভুট্টো কোনোদিনই চাননি বাঙালি কেউ এক জন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন । তাই তিনি এমন একটি গা শিউরে ওঠার মতো পরিকল্পনার জন্ম দিলেন যা ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ এক গণহত্যার সূচনা করলো ।
ভুট্টো '৭১ সালে পাকিস্তানের পরাজয়ের পরে সব দোষ ইয়াহিয়া'র ঘাড়ে চাপিয়ে তাকে অপসারিত করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন । কিন্তু, কথায় বলে না, পাপ ছাড়ে না বাপকেও । নির্বাচনের প্রতিপক্ষ এক ব্যক্তিকে হত্যার পরিকল্পনার দায়ে ১৯৭৯ সালে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় । আসলে প্রেসিডেন্ট "জিয়াউল হক" এক সামরিক অভ্যুত্থানে ভুট্টোর সরকার'কে ক্ষমতাচ্যুত করে এক মিথ্যে খুনের মামলায় জড়িয়ে ভুট্টোকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেন । জেলে থাকাকালীন অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে হয় ভুট্টোকে ।
এবার আসা যাক মূলপর্বে ।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস । পাকিস্তানের পরাজয় তখন জাস্ট কিছু সময়ের অপেক্ষা মাত্র । মুক্তিবাহিনীর গেরিলা আক্রমণে, ভারতীয় বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে, গোলা-বারুদ, অস্ত্র-শস্ত্র, সৈন্যবাহিনী আর রসদের অভাবে পাকিস্তান সেনা তখন ভীষণ কোনঠাসা পূর্ব পাকিস্তানে । ভারত আকাশ ও নৌপথ সিজ করে রেখেছে, তাই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সাহায্য পাওয়ার কোনো আশা নেই । এমতাবস্থায় বহু ঘুরপথে পৌঁছানো পাকিস্তানী একই নৌবহর চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করা অবস্থায় গেরিলা আক্রমণে মাইন বিস্ফোরণে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় । সেই সাথে কফিনে শেষ পেরেকটিও ঠোঁকা হয়ে যায় পাকিস্তানের ভাগ্যে ।
পরাজয় যখন নিশ্চিত তখন ইয়াহিয়া মরিয়া হয়ে সর্বশেষ একটি চাল দিলেন । পাকিস্তান সরকার তাদের সব চাইতে বড় বন্ধু আমেরিকার কাছে কাতরভাবে সাহায্য ভিক্ষা চেয়ে পাঠালো । অবিভক্ত ভারত যেদিন ভারতের কিছু কাপুরুষ দেশনায়ক আর এক অর্বাচীন বৃদ্ধের উদ্যোগে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম নিলো সেদিন থেকেই অনন্ত এক নরকের সৃষ্টি হলো । দেশবিভাগের সব চাইতে বড় কৃত্তিত্ব না তো নেহেরুর, আর না তো জিন্নাহ্ । এ কৃতিত্ব হলো ব্রিটিশ সরকার আর এক অর্বাচীন বৃদ্ধের । অনন্ত এক নরক সৃজনের পরিকল্পনাকারী ব্রিটিশ সরকারের সব চাইতে আস্থাভাজন ছিলো সেই বৃদ্ধ লোকটিই ।
দেশভাগের পরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা সব চাইতে খারাপ ছিলো ভারতের তুলনায় ।কিন্তু, চতুর পাকিস্তান সামরিক সরকার নিজের দেশকে গোপনে বিক্রি করে দিলো আমেরিকা ও ব্রিটিশদের কাছে । চীন ও রাশিয়াকে চাপে রাখতে পাকিস্তান নিজের দেশকে আমেরিকা ও ব্রিটেনের করিডোর করতে রাজি হলো । আর ভারতের সামরিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা অতি নিকৃষ্টমানের হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধিকারের প্রশ্নে কোনো কম্প্রোমাইস করতে রাজি হলো না । ফলশ্রুতিতে, ভারতের সাথে আমেরিকা ও ব্রিটেনের কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকলো নেহেরু কন্যা আয়রন লেডি ইন্দিরা গান্ধীর সময়কালে ।
আর এই সময়টাই ছিল সেই '৭১ সালের অস্থির সময়কাল । তড়িঘড়ি কাতর সেই সাহায্যের আবেদনে আমেরিকা জানতে চাইলো যদি তারা হেল্প করে তবে বিনিময়ে পাকিস্তান কি করবে তাদের জন্য ? ইয়াহিয়া সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি হলেন । পাকিস্তানের স্থলভাগকে এবং নৌবন্দরগুলিকে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হতে রাজি হলেন । আমেরিকা দেখলো এতে তাদের চূড়ান্ত লাভ হবে । প্রতিনিয়ত রাশিয়া এবং চীনকে চাপে রাখা যাবে ।
হেনরি কিসিঞ্জার, ঘৃণ্য এক ব্যক্তি, যিনি অন্তত সাতটি বৃহৎ জেনোসাইডে মদতদাতা ও সমর্থক ছিলেন তিনি ইয়াহিয়ার সাথে সব আলোচনা করে নীল নকশা রেডি করে ফেলেন । তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিক্সনের জাতীয় নিরাপত্তার প্রধান উপদেষ্টা কিসিঞ্জার প্রেসিডেন্টকে রাজি করিয়ে ফেললেন পাকিস্তানের প্রস্তাবে । ফলশ্রুতি, সারা বিশ্বে যখন পাকিস্তানের বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে নিন্দার ঝড় বইছে তখন নিজেদের স্বার্থের জন্য চোরের মতো বিশাল এক নৌবহর প্রেরণ করলো বঙ্গোপসাগরে আমেরিকা; যাদের কাছে মানবতার কোনো মূল্য নেই । ধিক্কার জানাই সেই কাপুরুষ কিসিঞ্জার ও নিক্সনকে ।
তৎকালীন বিশ্বের সব চাইতে বড় নৌবহর মার্কিন সেভেন্থ ফ্লিট বা সপ্তম নৌবহর ছিল ৭৫০০০ টনের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন, ৭০+ নিউক্লিয়ার উইপন দিয়ে সাজানো এয়ারক্রাফট এবং অনেক গুলি দূরপাল্লার কামান দিয়ে সজ্জিত । কামানগুলি থেকে ১২০০ মাইল দূরেও গোলা নিক্ষেপ করা যেত । নৌবহরের উদ্দেশ্য খুবই সাধু ।বঙ্গপোসাগরে ঘাঁটি গেঁড়ে পাকিস্তানের আকাশ ও নৌপথ পুনরুদ্ধার করা, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের পুরোপুরি ধ্বংস করা এবং ভারতকে একটি উচিত শিক্ষা দেওয়া ।
আমেরিকার আরেক দোসর বৃটেন আরব সাগরে প্রেরণ করলো তাদের বৃহৎ একটি নৌবহর; এটিও পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্রে সজ্জিত ।অর্থাৎ ভারতের দুই দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণের সূচনা । পরিকল্পনা ছিলো ভারতকে প্রবল চাপে ফেলে বাংলাদেশের ৩ ভাগের ১ ভাগ জনগণকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া । ফলে পাকিস্তান রক্ষা পাবে আর বাঙ্গালিরা চিরকালের জন্য দাসে পরিণত হবে । আর কোনোদিন যাতে বাঙালিরা মাথা উঁচু করে না বাঁচতে পারে সেটাই ছিল তাদের পরিকল্পনা । পাকিস্তানের সামরিক জান্তারা যা চিন্তাও করেনি তার চাইতে বেশী নৃশংসতা সংঘটিত করার নীল নকশা রচনা করেছিল তথাকথিত সভ্য উন্নত দুই দেশ আমেরিকা এবং বৃটেন ।
আর বহির্বিশ্ব জানলো আমেরিকা আর বৃটেন নৌবহর পাঠিয়েছে পূর্ব পাকিস্তানে আটকে পড়া মার্কিন ও ব্রিটিশ নাগরিকদের ফেরাতে । যদিও এই হাস্যকর যুক্তি কেউই বিশ্বাস করেনি ।
নয়াদিল্লীতে শুরু হলো চূড়ান্ত তৎপরতা । ততদিনে পাকিস্তান বন্ধু আমেরিকা কে পাশে পেয়ে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে । নয়াদিল্লী হতে জরুরি বার্তা প্রেরণ করা হলো মস্কোতে । আর একটি খুবই কড়া বার্তা প্রেরণ করা হলো খোদ নিক্সনকে । কথিত আছে নিক্সন মেসেজটি পেয়ে এতটাই ক্ষিপ্ত হন যে ইন ইন্দিরা গান্ধীকে "কুকুর" বলে অভিহিত করেন ।
দিল্লীর জরুরি ডাকে তাৎক্ষণিক সাড়া মেলে মস্কো থেকে । তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা মাথায় রেখেই রাশিয়া প্রেরণ করে তাদের ষষ্ঠ নৌবহর, ষোলটি অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ আর ছয়টি মারাত্মক পারমাণবিক সাবমেরিন । রাশিয়ার এই পারমাণবিক সাবমেরিন ছিল সারা বিশ্বের ত্রাস । এদেরকে কোনো ভাবেই ট্রেস করা যেত না ।অথচ নিউক্লিয়ার উইপন ছুঁড়ে মারতো গহন সমুদ্রে ডুবন্ত অবস্থাতেই ।
চূড়ান্ত সতর্ক হলো আমেরিকা ও বৃটেন । দফায় দফায় বৈঠক শুরু হলো নিরাপত্তা পরিষদে । চীন শুরুতে চুপচাপ থাকলেও আমেরিকা ও বৃটেন কে দেখে উৎসাহিত হয়ে ভারত সীমান্তে সেনানিবেশ করতে শুরু করলো, অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা তখন ভারত-চীনের । কিন্তু, চীনের বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে জাপান হুঙ্কার দিলো এবং ভারতের পাশে থাকার ঘোষণা দিলো । আর যাই হোক চীন চিরকালই জাপানকে যমের মতোই ডরায় । তাই চীন চুপ হয়ে গেলো ।
আর এদিকে নিক্সন সাফ জানিয়ে দিলো ইসলামাবাদকে যে তারা এখন কোনোভাবেই কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না । এর পর পরই আমেরিকা ঘোষণা দিলো যে পূর্ব পাকিস্তানে তেমন কোনো আমেরিকান নাগরিক আটকা নেই, তাই তারা ফিরে যাচ্ছে । বৃটেন ঘোষণা দিলো যে তারা একটু বেড়ু করতে বেরিয়েছিল, এখন বেড়ু করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে । তাদের কোনো দোষ নেই আসলে, তারা আমেরিকান নৌবহরকে একটু পথ দেখতে গিয়েছিলো । এখন ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাচ্ছে ।
ফলশ্রতিতে, পাকিস্তানের হলো স্বপ্নভঙ্গ । কোনো উপায়ন্তর না দেখে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পনের সিদ্ধান্ত নিলেন । ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১, ঢাকায় প্রায় ১ লক্ষ পাকিস্তানী সেনা অস্ত্র সমর্পন করে সারেন্ডার করলো । সূচিত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের এক নতুন জয়যাত্রা ।
তাহলে দেখা গেলো যে, ক্ষমতাধর কোনো দেশ নায়কদেরই সাধারণ জনগণের জন্য কোনো চিন্তা নেই । আজকে যেমন রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমন করেছে তেমনি একসময় তারা বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে । আসল কথা হলো ক্ষমতা প্রদর্শন । এ ওকে টেক্কা দেয়া । আজকে আমরা রাশিয়াকে গালাগালি করছি, যেদিন বাইডেন বাগদাদ আক্রমন করবে সেদিন বাইডেনকে গালাগালি দেব । আসলে যে কোনো দেশেরই জনগণ ভালো, তারা নিরীহ, আপনার আমার মতোই ।
খারাপ হলো দেশ পরিচালনকারীরাই ।যুগ যুগ ধরে তা-ই হয়ে আসছে ।
দাদা আজকে আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে কারণ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে একাত্তরের ইতিহাস ভালোভাবে জানতে পারলাম। আসলে একাত্তরের ২৫শে মার্চ রাত এই রাতটি বাঙালি জাতির জন্য এক কালো অধ্যায়। নির্মমভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালীর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরকম ঘুমন্ত বাঙালির ওপরে হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর আর কোথাও নেই। নির্মমভাবে ঘুমন্ত বাঙালিদেরকে চিরতরে ঘুমিয়ে দেয়। সেই রাত যেন ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। সেই রাতের কথা মনে পড়লে এখনও বুকটা কেঁপে ওঠে।নির্মমভাবে হত্যা করে আমার ভাই -বোনদের। সত্যি দাদা আজকে আপনার পোস্ট পড়ে ইতিহাস সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে পারলাম।ইতিহাসেই অপারেশন সার্চলাইট বাঙালি জাতির জন্য খুবই বেদনাদায়ক একটি রাত। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে ইতিহাস সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। প্রত্যেকটা মানুষেরই ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা উচিত।
সবার মুখে শুনি যখন
একাত্তরের গল্প
এখনো সব জানে না
জানি শুধু অল্প
তবে আপনার এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্টে থেকে আজ অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম এত সব তথ্য আগে আমার জানা ছিল না এত চমৎকার একটি পোস্ট করে আমাদেরকে 71 সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি প্রিয় দাদা♥♥
২৫ শে মার্চের কালোরাতের কথা ভাবলে এখনও আমাদের শরীর শিহরিত হয়ে উঠে। এই ইতিহাস আমাদের জানা তবে যেটা জানা ছিল না সেটা আপনার পোস্ট থেকে জানলাম।
এটা একেবারে সঠিক বলেছেন দাদা। আমরা ছিলাম একবৃওে দুই ফুল। আমরা ছিলাম রাম রহিম দুই ভাই যারা হাজার বছর ধরে একসঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করছিলাম। কিন্তু ঐ ব্রিটিশ আমাদের মাঝে এই বিভেদের সৃষ্টি করে। অসাধারণ লিখেছেন দাদা।
দাদা নিজের দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে যে এত আন্তর্জাতিক কূটনীতি জড়িত ছিল কোনদিন জানতেও পারিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে পাঠ্যপুস্তকে অনেক পড়েছি কিন্তু সেখানে অনেক কিছুই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে অথবা নিজেদের পছন্দমত লেখা হয়েছে। সত্তিকারের ইতিহাস আমার জানা ছিল না। মনে হচ্ছে এ ব্যাপারে আপনি যথেষ্টই পড়াশোনা করেছেন। আমেরিকা, ব্রিটেন আর চিনের মতো পরাশক্তিগুলো ক্ষমতার লোভে আমাদের দেশে ধ্বংস চালানোর জন্য যে নীল নকশা রচনা করেছিল তা থেকে আমরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি বন্ধু দেশগুলোর সহায়তায়। ক্ষমতালোভী শাসকগোষ্ঠী এভাবেই তাদের স্বার্থের জন্য নিরীহ মানুষের জীবনকে তুচ্ছ করে। যখন যার স্বার্থে আঘাত লাগে তখনই তার প্রকৃত হিংস্র রূপ বেরিয়ে আসে। এদের কাছে শান্তি প্রিয় ভালো মানুষের জীবনের কানা কড়িও দাম নেই। তবে ভুট্টো সাহেবের শেষ পরিণতি যে এমন করুণ হয়েছিল এটা আজ প্রথম জানলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর তথ্যবহুল আর নিজের দেশের সঠিক ইতিহাস আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। ভালোবাসা অবিরাম
@tipu curate 10
Upvoted 👌 (Mana: 0/10) Get profit votes with @tipU :)
এই ২৫ শে মার্চ কাল রাতের কথা মনে হলেই আমার কেমন যেন এখনও ভয় লাগে। হয়তো আমি সেই রাত্রে এর সেই দৃশ্য দেখি নি। শুধু শুনেছি। নিজের দেশের স্বাধীন হওয়ার অনেক ইতিহাস পড়েছি, কিন্তু আপনার পোস্ট পড়ে যে ইতিহাস জানতে পারলাম, সেটা কখনো কোন বইতে আমি পাইনি বা কারো কাছ থেকে ইতিহাস শুনিনি। আসল ইতিহাস আমাদের মাঝে তুলে ধরা হয় নি কেনো সেটা আসলে আমি বুঝতে পারছি না। তবে আপনার পোস্ট পড়ে আজকেই ইতিহাস গুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।অনেক কিছু জানতে পারলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা এরকম অজানা ইতিহাস আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
দাদা আপনার আজকের লেখা পড়ে অনেক কিছু নতুন করে জানতে পারলাম। যা আগে অজানা ছিল।
এত সিরিয়াস একটি বিষয় পড়লেও এই লাইনটি পরে না হেসে পারলাম না।রাশিয়া যুদ্ধে সাহায্য করেছিল জানতাম কিন্তু কেন করেছিলো তা আজকে জানলাম। ভালো লাগলো পুরো বিষয়টি পড়ে।
যদিও আমরা যুদ্ধ দেখিনি, কিন্তু এই ভয়াল কালরাতের কথা শুনেছি অসংখ্য বার। যতবার শুনেছি ঘৃনায় আর রাগে মুখ কালো হয়ে গেছে। দাদা আপনি আরো বেশ কিছু যুদ্ধ আর ভয়ানক আরো কিছু কিছু বিবরণ দিলেন যা সত্যিই জানা ছিলোনা অনেক গুলো। দূরদান্ত এক পোষ্ট উপহার দিলেন ❣️
1971 সালের যুদ্ধের যে নির্মমতা ভয়াবহতা আপনি আপনার পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরলেন দাদা সত্যি আপনাকে স্যালুট জানাই। এত সুন্দর ভাবে এত সুশৃংখল ভাবে আমাদের মাঝে পুরো বিষয়টি তুলে ধরেছেন তা সত্যি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। আসলে দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন আমরা নিরীহ মানুষ সব সময় মার খেয়ে যাচ্ছি, আমাদের নিরীহ মানুষের উপর দিয়েই তারা তাদের খুব ক্ষোভ প্রতি হিংসা ঝেড়ে নেয়। পরিশেষে ধ্বংস হয় নিরীহ মানুষগুলো আর তারা তাদের দালানে বসে বাহাবা করে আহাজারী করে শেষ। সত্যি দাদা অসাধারণ একটি পোস্ট লিখলে যা আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে 1971 সালে ভারত পাকিস্তান আমেরিকা রাশিয়ার যে অবস্থান সেটা সম্পূর্ন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা সত্যিই মনমুগ্ধকর। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা আপনাকে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
হয়তো অনেকেই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানেন না, হয়তো অনেকেই একটা কল্পনাও করতে পারবেন না যে, সেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলো আজকের তথাকথিত আমেরিকার। সেদিন ভারতের আহবানে রাশিয়া সাড়া না দিলে হয়তে আজকের বাংলাদেশ পেতাম না। ইতিহাস এক নির্মম স্বাক্ষী, যা বার বার ফিরে আসে আমাদের সম্মুখে। ধন্যবাদ দাদা চমৎকার কিছু ভেতরের কথা উপরে টেনে আনার জন্য।