বিবর্তন ও একটি ভবিষ্যৎবাণী -পর্ব ০১
Copyright Free Image Source : Pixabay
আমরা মোটামুটি সবাই ডারউইনীয় মতবাদ সম্পর্কে জানি । পৃথিবীতে প্রাণের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বিবর্তন এর সূত্রপাত । বিবর্তন এমনি একটি চলমান প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জীবজগৎ ক্রমবর্ধমান এর ধারাটি অব্যাহত রাখে এবংপরিবেশের সাথে নিজেকে অভিযোজিত করে বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদকুল নিজেদের অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখে । আর এটা করতে গিয়েই একটি প্রজাতির থেকে আরেকটি প্রজাতির উদ্ভব হয়ে থাকে । এই বিবর্তনের প্রক্রিয়াটি অতিশয় ধীর গতির । লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একটু একটু করে বিবর্তিত হয়ে এক প্রজাতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অন্য প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয় ।
আমরা সবাই জানি বর্তমানের মানুষ প্রজাতি অর্থাৎ হোমো স্যাপিয়েন্সও কিন্তু লক্ষ বছরের বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এসেছে । সবারই একটা কমবেশি ভুল ধারণা আছে যে বানর থেকে মানুষের উৎপত্তি । কথাটি সম্পূর্ণ সত্য নয় । মানুষ ও এক প্রজাতির বাঁদর শ্রেণীর মাঝমাঝি একটি উন্নত মস্তিষ্কের প্রাণীর বিবর্তনের থেকেই হোমো জেনাসের বিভিন্ন স্পিসিস এর সৃষ্টি । মানব বিবর্তনের তথা সমগ্র মানব ইতিহাসের সব চাইতে অমীমাংসিত রহস্য এটিই । সেই বানর সদৃশ প্রাণীর যা থেকে বিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন মনুষ্য প্রজাতির সৃষ্টি তা কিন্তু অধরাই থেকে গেলো । আজ পর্যন্ত সামান্য পরিমাণ কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি এই রহস্যময় মানুষের আদিপুরুষ এর । একে বলা হয় মানব বিবর্তনের মিসিং লিঙ্ক বা হারানো যোগসূত্র।
প্রাইমেট বর্গের সকল প্রাণীই বাঁদর শ্রেণীর । এরা মানব সদৃশ হলেও, কারো লেজ লম্বা কারো লেজ খাটো আর কারো মোটেও নেই । দু-একটি প্রজাতি বাদে সবাই খাড়া হয়ে চলাফেরা করতে পারে । কিন্তু, কোনো প্রজাতিই আগুনের ব্যবহার জানে না এবং হাতের বুড়ো আঙুলকে অন্য আঙ্গুলগুলোর বিরুদ্ধে বাঁকাতে পারে না । হাতের বুড়ো আঙুলকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পেরেছিলো কোটি বছর আগে প্রথম যে প্রজাতিটি তারাই আমাদের পূর্বপুরুষ । লেজ ছিল না তাদের । গাছেও বাঁদরের মতো ঝুল খেতো না । উন্নত মস্তিষ্কের অধিকারী ছিল প্রাইমেট বর্গের এই প্রাণিকুল । এদের থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে মানব সৃষ্টি ।
কিন্তু, প্রাচীন মানুষের অসংখ্য প্রজাতির মধ্যে সব চাইতে কাছাকাছি হলো মাত্র দুটি প্রজাতির মানুষ । প্রথমটি হলো হোমো ইরেক্টাস, অর্থাৎ প্রথম মানব প্রজাতি যারা একদম আধুনিক মানুষের মতো খাড়া হয়ে চলাফেরা করতে পারতো, এরাই আমাদের সরাসরি পূর্বপুরুষ বলা যেতে পারে । এবং দ্বিতীয়টি হলো হোমো নিয়ান্ডারথ্যালসিস, এদের মস্তিষ্কের গঠন আধুনিক মানুষের মস্তিষ্কের গঠনের খুব কাছাকাছি । খুবই বুদ্ধিমান ছিল এই প্রজাতি । অবশ্য প্রায় সব গুলো হোমো জেনাস এর মানব প্রজাতিই কম বেশি বুদ্ধিমান ছিল । সবগুলো প্রজাতির মধ্যে একটাই অনন্য বৈশিষ্ট্য ছিল । আর তা হলো হাতের বুড়ো আঙুলের সৃষ্টিশীল কাজে ব্যবহার করতে পারাটা ।
এদের মধ্যে সেই প্রজাতিগুলো দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে গেলো যারা আগুনের আবিষ্কার করতে পারেনি । এরপরে যারা ধাতু নিষ্কাষণের জ্ঞান অর্জন করে তারাই শুধু বিবর্তনে টিকে থাকে । হোমো নিয়ান্ডারথ্যালসিস আধুনিক মানুষের সব চাইতে কাছের প্রজাতি । তবে, হোমো স্যাপিয়েন্স হলো বিবর্তনের বর্তমান ধাপ । ক্ষুরধার এদের ব্রেন এবং আগ্রাসী মনোভাব । আগুন, ধাতু এসবের ব্যবহারে পাকা । তাই অনায়াসেই এই প্রজাতির মানুষের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে হোমো গণের আর সব প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেলো পাকাপাকিভাবে ।
হোমো স্যাপিয়েন্স-ই হলো মানব ইতিহাসের একমাত্র প্রাণী যারা তাদের হাতের বুড়ো আঙুলকে বাকি চারটি আঙুলের বিরুদ্ধে সঠিক ভাবে বাঁকাতে পারতো । আর তাই খুব দ্রুত বুড়ো আঙুলের ব্যবহারে তারাই সব চাইতে পাকা হয়ে উঠলো । আর ছিল তাদের বিশালকায় মস্তিস্ক । এই প্রজাতিটিই একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল মানুষের অন্য প্রজাতির গুলোর থেকে । এরা শুধুমাত্র উদরে ক্ষুধার জ্বালা নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়তো না বা সারাদিন খাবার জোগাড়ের পেছনে পড়ে থাকতো না । তারা ভাবতো ।
খুব দ্রুতই তারা আগুনকে আয়ত্তে আনা শিখলো । অন্য প্রজাতিগুলোর যেখানে লক্ষ বছর লেগে গিয়েছিলো সেখানে খুবই কম সময়ে তারা আগুনকে করায়ত্ত করলো । আসলে পূর্বপুরুষের সঞ্চিত জ্ঞান মনে হয় আমাদের ডিএনএ তে ছাপ ফেলে । রেকর্ড হয়ে যায় । প্রজন্মের পর প্রজন্ম, তাই মানুষ আরো জ্ঞানী হয়েই চলেছে । আগুনই হলো সভ্যতার সূচনা ।
[ক্রমশঃ......]
পরিশিষ্ট
প্রতিদিন ১২৫ ট্রন করে জমানো এক সপ্তাহ ধরে - ২য় দিন (125 TRX daily for 7 consecutive days :: DAY 02)
টার্গেট ০২ : ৮৭৫ ট্রন স্টেক করা
সময়সীমা : ২৪ জুলাই ২০২২ থেকে ৩০ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত
তারিখ : ২৫ জুলাই ২০২২
টাস্ক ০৯ : ১২৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
১২৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : 28f3200ae551df6a2561d5b41a73f12249e60532fa92bcc7bda75d9b8bedde06
টাস্ক ০৯ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
Wallet Address
TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
god bless you
দাদা এখন যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে উলটো দিকে বিবর্তিত হই।এখন মানুষই সব থেকে খারাপ।মানুষ বিবর্তিত হলেও সেই পশুত্ব এখনো ভেতরে রয়ে গিয়েছে এবং দিন দিন বাড়ছে।
আমরাও আগে জানতাম যে বানর থেকে মানুষ হয়েছে,যারা খারাপ ছিলো তারা আর মানুষ হতে পারেনি🤪🤪।আস্তে আস্তে ধারনা পাল্টে গিয়েছে।আজকে পোস্টের মাধ্যমে আরো কিছু জানতে পারলাম।ধন্যবাদ
সত্যি আগুন আবিষ্কার মানুষ কে কতই না উপরে নিয়ে গেছে। মানুষ সম্পর্কে এতো ইতিহাস আগে জানা ছিলোনা। সত্যি দাদা আপনার মাধ্যমে মানুষ এর প্রজাতি সম্পর্কে অনেক তথ্য জানলাম। এসব আগে কখনো পড়িনি। সত্যি আমাদের অনেক কিছু অজানা।
দাদা খুবই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় দাদা।
হুম, দাদা এই রকম লেখা চাই আরো, যেখানে জানার ব্যাপারে একটা কৌতুহল আগ্রহ কাজ করে। আর শেষের লাইনটি সত্যি দারুণ বলেছেন, এটাই বাস্তব।
বিবর্তন সম্পর্কে নতুন কিছু তথ্য জানতে পারলাম দাদা যেটা আগে জানা ছিল না। হোমো স্যাপিয়েন্সের মধ্যে তাদের বুদ্ধির সঠিক ব্যবহারের বিষয়টি ভালই তুলে ধরেছেন। এই বিবর্তনের ফলেই আজকে পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতিভেদের সৃষ্টি।
সত্যি দাদা এই ধারণাটি আমাদের সকলের মাঝেই ছিল যে বানরের থেকেই মানুষজাতির সৃষ্টি হয়েছে। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। এই পোষ্টের মাঝে অনেক তথ্য লুকিয়ে আছে। এরকম পোস্ট আরো চাই দাদা। খুবই ভালো লেগেছে এই পোস্ট পড়ে।
সভ্যতার সূচনা বিষয়টি জানি। তবে এই সম্পূর্ণ লেখাটি নিয়ে খুব একটা ধারণা ছিল না, ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।
এক কথায় অসাধারণ একটা সিরিজ চালু করলেন দাদা। এই বিবর্তন নিয়ে লেখা পড়তে বেশ মজা লাগে। যদিও কিছু কিছু কঠিন নাম মনে থাকে না। তবু আইডিয়া থাকে অনেক কিছুর। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা । পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।