বিষয়টা বড্ড জটিলতা সম্পন্ন
বছর তিনেক আগের ঘটনা, কোন এক দুপুরে হাবিবের স্ত্রী বেশ নার্ভাস ছিল অপারেশন রুমে ঢুকতে। যদিও সবকিছু ঠিকঠাক ছিল তবে তারপরেও সে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছিল। কেননা গতরাতের পর থেকেই পেটের ভিতরের বাচ্চার হঠাৎই নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, যদিও আরো কয়েকদিন ডেট ছিল, তবে হাবিব আর বিলম্ব না করে দ্রুত তার স্ত্রীকে সিজারের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে বলে।
যেহেতু বাড়ির পাশেই ক্লিনিক ছিল, তাই দ্রুত সিজারটা হয়েও যায়। তবে সে যাত্রায় হাবিবের স্ত্রী সুস্থ ছিল কিন্তু সিজারের পরে মৃত বাচ্চা পেট থেকে বের হয়। বিশাল একটা মানসিক ধাক্কা বয়ে যায় হাবিব এবং তার পুরো পরিবারের উপর দিয়ে।
হাবিব আমার বাল্যবন্ধু হলেও ঐ ঘটনার পর থেকে ঠিকঠাক মতো ওর সঙ্গে আর দেখা হতো না। অনেকটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল ও। তারপরে তো আমার জীবনেও অনেকটা পরিবর্তন চলে এসেছিল। চিরচেনা শহর ছাড়লাম, নিজের মতো করে থাকার জন্য গ্রামে আসলাম।
তবে তাও টুকটাক কথা সোশ্যাল মিডিয়াতে হাবিবের সঙ্গে হত, তবে বাস্তবে আর সেভাবে দেখা হয়েই ওঠেনি। এবারও দীর্ঘ সময় পরে কয়দিন আগে ওর সঙ্গে আবার দেখা হয়েছিল, অনেকটাই প্রফুল্ল দেখলাম ওকে। বেশ হাসি আনন্দেই বলল, নতুন মানুষ আসতে যাচ্ছে শীঘ্রই।
খানিকটা সময় একসঙ্গে গল্প-গুজব করেছিলাম, শৈশবের বিষয়গুলো নিয়ে কিছুটা সময় হাসিঠাট্টা করলাম। তারপরে আবারো যে যার জীবন নিয়ে ব্যস্ত। মাস দুয়েক পরে আজ হঠাৎই অন্য রকম একটা খবর শুনলাম। যা অনেকটাই আমার মন কে বড্ড ব্যথিত করেছে।
এবার হাবিরের নতুন অতিথির আগমন ঠিকই ঘটেছে,হাবিবের স্ত্রী এবং নবজাতক সন্তান দুজনেই বেশ ভাল ছিল। তবে ক্লিনিক থেকে যেদিন স্ত্রী আর বাচ্চাকে নিয়ে হাবিব বাসায় এসেছিল, তখনই মূলত তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয় ওকে। হঠাৎই ওর বাচ্চার জন্ডিস ধরা পড়ে, বহু চেষ্টা করেও শেষমেষ রক্ষা করতে পারে নি নবজাতক বাচ্চাকে।
হাবিবের মানসিক পরিস্থিতি কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছি, ওকে যে ফোন করে সান্ত্বনা দেব, সেই সাহসটাও নিজের থেকে পাচ্ছি না। তবে তারপরেও সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা খুদেবার্তা পাঠিয়ে দিলাম, তাতে স্পষ্ট করে লিখলাম হাবিব ধৈর্য ধরার চেষ্টা কর।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
উপরওয়ালা আপনার বন্ধু হাবিব কে এবং তার পরিবারকে এই শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি দান করুক। যার যায়, সেই বোঝে ভাই কী গেলো!! দুই দুই বার একই শোক, হাতে পাওয়ার পরও হারানো! তাদের জীবন সহজ হোক সেই দোয়া রইলো।
সবার জীবন সহজ হোক, এমনটাই আমিও প্রত্যাশা করি।
ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে আপনার বন্ধু হাবিব এর জন্য সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। মহান আল্লাহ তায়ালা হয়তো তাকে আরও ভালো কিছু উপহার দিবেন তারজন্য হয়তো এভাবে পরীক্ষা করে নিচ্ছেন। উনার ধৈর্য ধরা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এমন পরিস্থিতিতে কাউকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষাও খুঁজে পাওয়া যায় না, শুধু উপলব্ধি করা যায়। যাই হোক আপনার বন্ধু হাবিবের জন্য দোয়া রইল যেন তিনি পরবর্তীতে সুস্থ সবল সন্তানের বাবা হতে পারেন।
কখন কার কি হয়ে যায়, তা বলা বড্ড মুশকিল।
এত ভীষন খারাপ পরিস্থিতি ভাই। হাবিব ভাইয়ের জন্য খুব খারাপ লাগছে। তার প্রথম শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখল না, আবার দ্বিতীয়টিও রইল না, এ অবস্থায় তাদের মানসিক পরিস্থিতি যে কোন জায়গায় আছে বুঝতেই পারছি। তবে মনে হয় আপনি যোগাযোগ করুন। সেটাই তাদের জন্য এখন ভালো হবে। কারণ পাশে থাকাটা খুব প্রয়োজন।
যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি ভাই।
এই ধরনের ঘটনা গুলো শুনলে সত্যিই খুব খারাপ লাগে। নবজাতক বাচ্চাদের যে কেনো এতো অসুখ বিসুখ হয়। আমার মহল্লার দীন ইসলাম ভাইয়ের বাচ্চারও একই অবস্থা। গত সপ্তাহে উনার বাচ্চা হয়,কিন্তু উনার বাচ্চার জন্ডিস ধরা পড়েছে বলে, এখনও হসপিটালে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। তবে এখন কিছুটা সুস্থ হয়েছে। যাইহোক হাবিব ভাইয়ের জন্য বেশ খারাপ লাগছে। উনার ভাগ্যে কি আছে, সেটা আল্লাহ তায়ালা ভালো বলতে পারবেন।
আপনার মহল্লার ভাইয়ের বাচ্চার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
হাবিবের ঘটনাটি পড়ে নিজেরই খুব কষ্ট লাগছে। প্রথম বাচ্চাটির হওয়ার মুহূর্তে এসে মারা গেল আবার দ্বিতীয় বাচ্চাটিও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার মুহূর্তেই মারা গেল। এরকম অবস্থায় বাবা মায়ের অবস্থা কিরকম হয় কিছুটা উপলব্ধি করতে পারছি। দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কি বা করার আছে এইসব ক্ষেত্রে।
আসলেই ব্যাপারটা বেশ দুঃখজনক আপু।