জাহাজের গুপ্তধন-২
গতপর্বে:
একে একে সব মাঝি ও কালাম মিয়ে এসে হাজির হল।কিছু ছোট খাট কাজ সেরে নিয়ে ট্রলার রওনা দিলো সমুদ্রের দিকে।সবাই মনে মনে স্মরণ করছে সৃষ্টিকর্তা কে।
আজকের পর্বে:
আস্তে আস্তে ট্রলার গভীর সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল।কিন্তু বেলা যত বাড়তে থাকল আকাশ তত কালো হয়ে আসতে লাগল।বাতাস থেমে গেল।সমুদ্রের শব্দও যেন থেমে গেল। এটা খুবই খারাপ লক্ষণ।দক্ষ মাঝিরা বিষয়টা বুঝতে পারল। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে,শুরু হয়ে গেল সমুদ্রের ঝড়।সমুদ্রের ঢেউগুলো ফুলে ফেপে উঠতে লাগল।
ট্রলারের মাঝিরা এমন ঝড় দেখে অভ্যস্ত তাই তারা খুব একটা বিচলিত হল না। তাদের একটাই চিন্তা টাকার দরকার আর সেই দরকার মেটানোর জন্য দরকার মাছ। কিন্তু এই ঝড়ের মাঝে মাছ ধরা সম্ভব না।ফলে তারা হাত পা গুটিয়ে ঝড় থামার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু ঝড় থামার কোন লক্ষণ নেই।
এভাবে দুইদিন ঝড় তার তান্ডব চালাতে লাগল। তৃতীয় দিনের দিন ঝড় কিছুটা থেমে এলো। মাঝিরাও মাছ ধরার জন্য জাল নামালো।কিন্তু জালে যেন মাছ পড়ছিলই না।এভাবে অনেক ক্ষণ চলার পর হঠাৎ জালে খুব ভারি কিছু একটা আটকায়। তখন জেলেরা খুবই খুশি হল যে অবশেষে বড় কোন মাছ জালে আটকেছে। তারা সবাই মিলে জাল টাকে টেনে তুলল, কিন্তু ওমা! মাছ কোথায় এ যে একটা মানুষ আটকে আছে। ২৪-২৫ বছরের যুবক একটি ছেলে।
তারা দ্রুত জালটিকে গুটিয়ে ট্রলারে তুলে নিল। কালাম মিয়া নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখল এখন অল্প অল্প শ্বাস চলছে।কিন্তু ছেলেটি অজ্ঞান। তখন কালাম মিয়া ছেলেটিকে ছাউনিতে নিতে বললেন আর তার গা মুছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। অবশ্য তার নির্দেশ দেওয়ার আগেই মাঝিরা কাজ শুরু করে দিয়েছে।একজন তো ছেলেটির হাতে পায়ে সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করে দিচ্ছে।
আস্তে আস্তে ছেলেটির নিশ্বাস স্বাভাবিক হতে লাগল,কিন্তু জ্ঞান ফিরল না। তখন কালাম মিয়া ছেলেটিকে কম্বল জড়িয়ে দিয়ে সবাইকে কাজে ফিরতে নির্দেশ দিলেন।কারন এমনিতে ঝড় তাদের দুদিন নষ্ট করে দিয়েছে, এখন আর সময় নষ্ট করা যায়না।প্রচুর মাছ ধরতে হবে।তিনি ও চলে গেলেন মাঝিদের সাথে।
এরপর রাতে যখন সবাই মাছ ধরা শেষ করে ছাউনি তে ঢুকল তখন দেখল ছেলেটি চোখ মেলেছে,তাদের দেখে উঠে বসার চেষ্টা করল কিন্তু পারল না।তখন কালাম মিয়া বুঝলেন,ছেলেটা দীর্ঘ সময় সমুদ্রের সাথে লড়াই করে করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে,গায়ে কোন শক্তি অবশিষ্ট নেই।তাই তিনি ছেলেটাকে শুয়ে থাকতে বললেন।আরেকজন মাঝিকে বললেন নরম করে ফেন সহ ভাত রান্না করতে। ভাত রান্না হয়ে গেলে উনি ছেলেটিকে খাইয়ে দিতে বললেন।খাওয়ানো শেষ হলে তিনি ছেলেটিকে আবার ঘুমিয়ে পড়তে বলে মাঝিদের নিয়ে বাইরে চলে আসলেন।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
আজকের পর্বটা কিন্তু বেশ উত্তেজনার ভিতর দিয়ে গেল। আর গল্পটা বাংলাদেশের কিছুদিন আগে রিলিজ পাওয়া চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত "হাওয়া" সিনেমার মতো এই পর্বের কিছু অংশ লাগলো। কারণ সেখানে মেয়ে জালে আটকা পড়েছিল, আর এখানে একটা ছেলে। আমার তো মনে হচ্ছে এই ছেলেই গুপ্তধনের সন্ধান দেবে। যাইহোক সত্যিই খুব ভালো লাগছিল পড়তে। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
অনেকটা ওভাবেই আগাচ্ছে। কিন্তু প্লট আলাদা দাদা। ধন্যবাদ দাদা উৎসাহিত করার জন্য।
আমি জানি এটা আলাদা হবে। কারণ হাওয়া মুভি অনেকেই দেখেছে। ওটার কনসেপ্ট সবার মোটামুটি মুখস্ত। তবে গল্পটা পড়তে কিন্তু আমি খুব আগ্রহ অনুভব করছি। আশা করি গল্পটা অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে লিখবেন। এ ধরনের গল্প আমি পড়তে খুব পছন্দ করি।
এমন উৎসাহ পেলে তো অবশ্যই লিখতে হবে ভালভাবে।
এই পর্বটা কিন্তু বেশ টানটান উত্তেজনা ছিল। বিশেষ করে আচমকা একটা ছেলের জালে আটকা পড়ে যাওয়া এবং এতদিন ঝড়ের মধ্যে সারভাইভ করে বেঁচে থাকা। আমার কাছে তো বেশি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। গল্পটা ভালো দিকেই এগোচ্ছে ভাই। দেখা যাক আগামী পর্বে কি হয়।
ধন্যবাদ দিদি এভাবে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।