কচুর মুখি ও আলু দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপি ।।
পরম করুনাময় অসীম দয়াল মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি।
হে আমার প্রিয় ভাই বোনেরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে কচুর মুখি ও আলু দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপি শেয়ার করবো।
বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে কচুর মুখি আমাদের বাংলাদেশের খুবই পরিচিত একটি খাবার। কচু শাক যেমন আমাদের শরীরে অনেক উপকারে আসে, ঠিক তেমনি কচুর মুখি ও আমাদের শরীরে অনেক ভিটামিন পূরণ করে থাকে। কচু গাছের নিচের অংশটাকে সাধারণত কচুর মুখি বলা হয়। কচু গাছ তুলে নিচের অংশটা কেটে পরিষ্কার করে তারপরে বাজারে বিক্রি করা হয়। যেটা খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। আমাদের ফ্রিজে বেশ কিছু টেংরা মাছ ছিল। সে টেংরা মাছগুলোর সাথে কয়েকটি কচুর মুখি, একটি আলো ও দুইটি টমেটো দিয়ে একটি সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করেছিলাম। রেসিপিটি আমাদের কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আশা করি আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে ।
টেংরা মাছ | ২৫০ গ্রাম |
---|---|
আলু | এক পিচ বড় |
কচুর মুখি | ২০০ গ্রাম |
কাঁচা মরিচ | তিন পিস |
পেঁয়াজ কুচি | পরিমান মত |
রসুন কুচি | পরিমান মত |
আঁদা বাটা | পরিমান মত |
তেল | পরিমান মত |
হলুদের গুঁড়ো | পরিমান মত |
জিড়ে গুঁড়ো | পরিমান মত |
লবন | পরিমান মত |
রন্ধন প্রক্রিয়া নিচে বর্ণনা করা হলো
প্রথমে আমি কচুর মুখি ও আলুর বাকল গুলো ছুলিয়ে নিলাম। তারপর চুলাতে একটি পাতিলে পানি দিয়ে কচুর মুখি ও আলু গুলো সিদ্ধ করে নিলাম। অনেক সময় দেখা যায় কচুর মুখি খেলে মুখ চুলকায়। এজন্য এগুলো সিদ্ধ করে নিলে আর চুলকাবে না।
যে সময় কচুর মুখি ও আলু গুলো সিদ্ধ হচ্ছিল, সে সময় আমি টেংরা মাছগুলোতে হলুদ মরিচ এগুলো মিশিয়ে ভাজি করার জন্য রেডি করে নিলাম।
তারপর অপর পাশে চুলাতে একটি কড়াই বসিয়ে তাতে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে দিলাম। তেল যখন গরম হয়ে আসলো, তখন আমি তাতে টেংরা মাছগুলো ছেড়ে দিলাম। টেংরা মাছগুলো ভালো করে উল্টিয়ে পাল্টে ভাজা ভাজা করে একটি পাত্রে রাখলাম।
তারপরে আমি আগের কড়াইতে দুইটি টমেটো কেটে পিস পিস করে তেলের মধ্যে ছেড়ে দিলাম। টমেটোগুলো হালকা ভাজা ভাজা করে উঠিয়ে নিলাম।
তারপরে আমি এই কড়াইতেই সিদ্ধ করা কচুর মুখি ও আলু গুলো দিয়ে দিলাম। তারপর সেটাতে অল্প পরিমাণে হলুদ ও লবণ দিয়ে একটু ভাজা ভাজা করে নিলাম।
আলু ও কচুর মুখি মোটামুটি ভাবে ভাজাভাজা হয়ে গেলে, আমি তাতে পেঁয়াজ কুচিগুলো ছেড়ে দিলাম। তারপর অল্প পরিমাণে আদা বাটা দিয়ে কিছুটা নেড়েচেড়ে নিলাম।
তারপরে আমি একটি বাটিতে পরিমাণ মতো মরিচের গুঁড়ো, হলুদের গুঁড়ো, জিরে ও ধনিয়া গুঁড়ো নিয়ে অল্প পরিমাণে পানি মিশিয়ে কড়াইতে কচুর মুখির মধ্যে দিয়ে দিলাম।
কচুর মুখি ও আলু গুলোর সাথে মসলাগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিলাম। তারপর তিন-চারটি কাঁচামরিচ দিয়ে রেসিপিতে পানি দিয়ে দিলাম। গরম পানি বা ঠান্ডা পানি যেকোনো পানি দেওয়া যাবে।
এ অবস্থায় কিছুক্ষণ রান্না করে তারপরে ভাজাভাজা করে রাখা টেংরা মাছগুলো কড়াইতে দিয়ে দিলাম। তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট রান্না করার পরে চুলা থেকে রেসিপিটা নামিয়ে নিলাম
পরিবেশন-
বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের রেসিপি। রেসিপিটা করার পরে খেয়ে দারুন স্বাদ লেগেছিল। আপনারা ধনিয়া পাতা থাকলে অবশ্যই দিবেন। তাতে স্বাদ ও ঘ্রান বেড়ে যাবে। কেমন হলো আমার রেসিপি অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | কচুর মুখি ও আলু দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপি ।। |
স্থান | নিজবাসা, নারায়নগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ১০-০৯-২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
![image.png](
বেশ সুস্বাদু একটি রেসিপি শেয়ার করলেন আপু আপনি। বিশেষ করে শীতকালে টেংরা মাছ খেতে খুবই ভালো লাগে। আপনি যেহেতু কচুর মুখি এবং আলু দিয়ে রান্না করলেন খেতে খুবই মজার হবে। কয়েকদিন আগে আমি বড় বড় টেংরা মাছ মুলা দিয়ে এবং কাঁচামরিচ দিয়ে রান্না করেছিলাম খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। আপনার রেসিপিটি দেখতে অসাধারণ হয়েছে।
জী আপু এই সবজি গুলো দিয়ে টেংরা মাছ খেতে ভালোই লাগে।
কচুর মুখি এবং আলু দিয়ে টেংরা মাছের লোভনীয় একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আপু। রেসিপি প্রত্যেকটা ধাপ খুবই সহজ হবে উপস্থাপন করেছেন। প্রসেস গুলি দেখে মনে হচ্ছে এটি আমিও তৈরি করতে পারব। আপনার আজকের রেসিপিটি তৈরি করার প্রসেস গুলি ধাপে ধাপে এবং সুন্দর বর্ণনার সাথে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাইয়া কচুর মুখি এবং আলু দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপিটা দারুন স্বাদ হয়েছিল।
কচুর মুখী আমার কাছে ও অনেক ভালো লাগে। আর নদীর টেংরা মাছ হলে তো কথায় নেই। আপনার রেসিপি খেতে নিশ্চয় অনেক মজার ছিল। কালারটা দারুণ এসেছে। প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে মধ্য শেয়ার করার জন্য।
জী আপু টেংরা মাছ গুলো নদীর। খেতে ভালোই লেগেছে। ধন্যবাদ।
আজকে বেশি কচুর মুখি অনেকেই খায় তবে আমাদের মেদিনীপুরে খুব একটা প্রচলিত নয়। দিন কয়েক আগে যখন বাবার বাড়িতে ছিলাম তখন দেখলাম বিরাট একটা কচুর বন কেটে পরিষ্কার করে দিয়েছে। আমার সত্যিই তখন আপনাদের কথা মনে হচ্ছিল। আমি ভাবছিলাম আপনারা যদি থাকতেন এরকম অবহেলায় কচুগুলো পড়ে থাকত না।
কচুর মুখী দিয়ে টেংরা মাছ খেতে নিশ্চই ভালই হয়। আচ্ছা কচুরমুখী কি চুলকোয়?
অনেক সময চুলকায়। সবসময় না। মাঝে মাঝে মধ্যে। ধন্যবাদ।
কচুর শাক তেমন খেতে পারি না তবে কচুর মুখী খেতে আমি খুব পছন্দ করি। কচুর মুখী দিয়ে যেকোনো মাছ রান্না করলে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। আমি প্রায় সময় কচুর মুখীর রেসিপি তৈরি করি। আপনি কচুর মুখী দিয়ে টেংরা মাছের খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার উপস্থাপনা লোভনীয় হয়েছে। ধন্যবাদ আপু মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
কচু শাক ও মুখি দুইটাই শরীরের জন্য ভালো। ধন্যবাদ।
টেংরা মাছ এবং কচুর মুখি দুটি ভীষণ প্রিয় খাবার। আপনার রেসিপিটি দেখে খেতে ইচ্ছা করতেছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে আসলে খেতে অনেক লোভনীয় হইছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাই খেতে ভালোই স্বাদ লেগেছিল। ধন্যবাদ।
কচুরমুখী খুব জনপ্রিয় ও সুস্বাদু খাবার।দারুণ লাগে মাছ দিয়ে কচুরমুখী রান্না করলে।আপনি লোভনীয় টেংরা মাছ দিয়ে চমৎকার সুন্দর করে লোভনীয় রেসিপিটি করেছেন।ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
জী আপু কচুর মুখি আমার কাছেও খেতে দারুন স্বাদ লাগে। ধন্যবাদ।
কচুর মুখি ও আলু দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপি দেখে দেখে খুবই সুস্বাদু মনে হচ্ছে। তাই খেতে ইচ্ছা করছে। আপনার রেসিপি পরিবেশন আমার কাছে দারুন লেগেছে।
আসলেই ভাই খেতে ভালোই লেগেছিল। ধন্যবাদ।
টেংরা মাছের রেসিপি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে, আপনি দেখছি আজকে ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে টেংরা মাছের রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা কচুর মুখি ও আলু দিয়ে টেংরা মাছের রেসিপি টি অসাধারণ হয়েছে আপু। রেসিপি টি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল।
জী ভাই একটু ভিন্ন ভাবেই রেসিপিটা তৈরী করেছি। ধন্যবাদ।
আপনার রেসিপি টা দেখে মনে পড়ল। টেংরা মাছের রেসিপি অনেক দিন খাইনি। এটা আমাদের দেশি মাছ। টেংরা মাছের রেসিপি টা দারুণ তৈরি করেছেন ভাই। বেশ লাগল দেখে। চমৎকার উপস্থাপন করেছেন রেসিপি টা। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।