জীবীকার তাগিদে

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

|| আজ ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ || রোজ: সোমবার ||

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে ভালো আছি। আজ আপনাদের সামনে আবারো হাজির হয়েছি একটি নতুন পোস্ট নিয়ে। আশা করবো আপনারা পড়ে আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন।


জীবনের তাগিদে আমাদের অনেকেরই আলাদা আলাদা ভিন্ন পথে যাত্রা চলছে অবিরাম। প্রতিনিয়তই যেন আমরা একেকজন নিজের সাথে যুদ্ধ করে, আশেপাশের পরিবেশ-পরিস্থিতির সাথে যুদ্ধ করে জীবন পথে পথ চলছি। আমরা সবারই যেন মাঝে মাঝে নিজেকে খুব বেশি ক্লান্ত লাগে এই যুদ্ধে। ঠিক পরাজিত নই, তবে ভীষণ ক্লান্ত। কেউ কেউ তো পরাজিতও ভাবি নিজেকে। একেক জনের ব্যাকগ্রাউন্ড একেক রকম, একেক জনের পরিস্থিতি একেক রকম। আমাদের কারোড় জীবন ই একেবারে স্মুথ গোয়িং হয় না কখনো। আপস & ডাউন থাকবেই জীবনে। এটিই প্রকৃতির নিয়ম।


তবুও আমরা নিজেদের নিয়ে চলতে চলতে ভুলে যাই যে আমরা যে অবস্থাতেই থাকি না কেন, আমরা বাকি অনেকের থেকেই অনেক ভালো আছি। কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম পরিচিত ফুসকার দোকানে। উদ্দেশ্য ছিলো যে পার্সেল নিয়ে এসে বাসায় খাবো। এই দোকান থেকে মাঝে মাঝেই ফুসকা খাওয়া হয় আমার, এলাকার ভেতরে এরাই মোটামুটি ভালো মানের ফুসকা বানায়। সেদিন গিয়ে দেখি যে দোকানের মালিক নেই। মানে সবসময় মূলত মালিক নিজেই ফুসকা বানায়। কিন্তু পরিবর্তে রয়েছে দুইজন পিচ্চি। পিচ্চি মানে রীতিমতো বেশ ছোটই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, মালিক কই? বড়জন বলে, " ভাইয়ে আজকে অসুস্থ, বাসায় রেস্ট নেয়। আপনার কী লাগবে কন"। মানে এমন কনফিডেন্সের সাথে বলেছে, যে আজকে সেই এই ছোট্ট দোকানটার মালিক কিংবা ম্যানেজার। কাস্টমার স্যাটিসফাই করার দ্বায়িত্ব তার, খালি কাস্টমারের হুকুম করার অপেক্ষা!! এমনিতেই এই দোকনটিকে সবসময় ভীড় লেগেই থাকে, সেদিনও ছিলো। তবুও এই দুইজন পিচ্চি মিলেই সকল কাস্টমার দের সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে একে একে। হয়তো অন্য দিনের চেয়ে টাকার হিসেব রাখতে বা ফেরত দিতে, সার্ভ করতে একটু বেশি সময় লাগছে। তবে দুই পিচ্চি মিলে ভরা কাস্টমারের দোকান বেশ সামলাচ্ছে... আমি অর্ডার দিয়ে বসে বসে দেখলাম ওদের দুজনের কান্ড। আর ভাবছি আমাদের তো তাও শুকরিয়া আদায় করা উচিত যে আমাদের যুদ্ধটা অন্তত ওই বয়সে তো আর শুরু হয় নি। জন্মগত ভাবেই তো অনেক দিক থেকেই ব্লেসড আমরা। অনেকেই এই বয়সের শিশুদের কাজ করাটাকে ভালো চোখে দেখেন না, শিশুশ্রম বলে কথা! তবে তারাও তো আর শখ করে এই বয়সে টাকা ইনকাম শুরু করে না! তাদের এই ইনকামে তাদের পরিবারের ভার অনেকাংশেই নির্ভর করে হয়তো। আর এদিকে আমরা হয়তো শোক করি, নিজেরা ইনকাম করে শখের একটা আইফোন, শখের একটা বাইক কিনতে পারলাম না, তাহলে এত কষ্ট করে কী লাভ হয়! সবই জীবনের তাগিদ....

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 

এটা ঠিক বলেছেন আপু আমরা এখন যতই কষ্ট করি না কেন এত ছোট বয়সে তো সেটা করিনি। ওদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগলো। আমার আশেপাশেও যখন ছোট কোন বাচ্চাকে কাজ করতে দেখি তখন খুবই কষ্ট হয় আমার। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

আমাদের আশেপাশে সর্বদাই আমাদের দেখার এবং শেখার অনেক কিছু উপাদান রয়েছে। একটু চোখ কান খোলা রাখলে এমন অনেক কিছুই পর্যবেক্ষণ চোখে পরে.. যা বেশ অনেক কিছুই ভাবায়।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

জীবন যুদ্ধ সবচেয়ে বড় যুদ্ধক্ষেত্র।একেক জনের যুদ্ধ একেক রকমের। তবে এটাও ঠিক আমার সত্যিই অনেক ভাগ্য করে জন্ম নিয়েছিলাম যে অন্তত ছোট বয়স টা খুবই আনন্দ উপভোগ করে বড় হতে পেরেছি।এইটুকু বয়সে যে বাচ্চার হাতে বই খাতা কলম থাকার কথা আর দিনের বাকি সময় আড্ডা খেলাধুলা করে সময় কাটানোর কথা অথচ তারা জীবীকার তাগিদে ব্যবসার মতো কঠিন কাজ সামলাতে হচ্ছে।খুবই দুঃখজনক ঘটনা।😔সুন্দর করে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই মনা।❤️

 10 months ago 

আসলেই, যাদের হাতে এই বয়সে বই খাতা থাকার কথা, তারা এভাবে জীবিকার সন্ধানে কষ্ট করে উপার্জন করছে, বিষয়টি ভীষণ দু:খজনক।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

প্রয়োজন মানুষকে অনেক বড় করে দেয় ও অনেক কিছু শেখায়। শিশু দুটির হাতে যখন সম্পূর্ণ দোকানের দায়িত্ব তখন তাদের কনফিডেন্স সে থেকে চলে এসেছে। ওরা ঐ বয়সেই দায়িত্ব নিতে শিখে গেছে যা আমারা যারা ব্লেসড তাদের পক্ষে সম্ভব না। তবুও আমার চাহিদার শেষ নেই । শখের আইফোনের জন্য স্বল্প আয়ের বাবাকে চাপ দেই । বুঝতে চেস্টা করি না তার সামর্থ্য। বেশ ভালো লাগলো লিখাটি পরে। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।