আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 87
যুক্তি অকাট্য। বাবা মাথা নিচু করল, 'হুঁ।'
মা বলল, 'ও কলকাতা শহরে কিছু করার চেষ্টা করছে ওকে তাই করতে দাও।'
বাবা মুখ তুলল, 'তা হলে তুই বি এডটা কর।'
'দূর। পড়াতে আমার একটুও ভাল লাগে না। বেকার বসে আছি বলে এই টিউশনিগুলো করতে হচ্ছে। আচ্ছা মা, আমি যদি অভিনয় করি তা হলে তোমাদের আপত্তি আছে?' আচমকা কথাটা
পাড়ল তিতির। 'মানে?' মা তাকাল।
'বা। এখনতো কত মেয়ে অভিনয় করছে, টিভিতে।
'তুই কী করে পারবি। তুই কি কখনও করেছিস।' মা চলে যেতে চাইল।
'চেষ্টা করে দেখতে পারি।' তিতির বলল।
বাবা বলল, 'পাগলামি করিস না। অভিনয় করতে চাইলেই করা যায় না। সুযোগ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তা ছাড়া এখনও এদেশে অভিনয়কে সম্মানজনক প্রফেসন বলে কেউ মেনে নেয়নি।'
তিতির বলল, 'বা। চমৎকার এই কিছুদিন আগে স্টারে কারগিল যুদ্ধের উপর খবর দেখাচ্ছিল, তুমি দেখতে দেখতে উত্তেজিত হয়ে বলেছিলে, দেখ দেখ ওইটুকু মেয়েটা কীরকম সাহসী, একেবারে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আমাদের খবর পাঠাচ্ছে। এইরকম মেয়ের জন্য গর্ব হয়, কী বলনি?'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
বাবা বলল, 'বারখার কথা বলছিস। ইয়েস। গর্ব হয়।
'তা হলে?'
'ও তো অভিনেত্রী নয়। এ একজন টেলিরিপোর্টার। যা কাগজটা এখানে এনে দে।' বাবা ইজিচেয়ারে শরীর এলিয়ে দিল।
সাতদিন অনেক সময় কিন্তু তার একটা দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। অভিনয়ের প্রসঙ্গটা তোলা সত্ত্বেও মা-বাবাকে ব্যাপারটা খুলে বলতে পারেনি। দাদা এখন তার সঙ্গে কথা বলে না। বউদিও না বললে নয় এমন কথাই বলে। দুপুরে টিভিতে সিরিয়াল দেখছিল ওরা সুবর্ণা করছে। সুবর্ণা একজন উঠতি অভিনেত্রীর চরিত্র করছিল যাকে প্রয়োজন-পরিচালকরা সুযোগ দেওয়ার বিনিময়ে ব্যবহার করতে চায়। পর্বটা শেষ হলে বউদি বলল, 'নিজের জীবনটাই তো ওইরকম।'
তিতির বলল, 'মানে?'
'যা সত্যি তাই তো দেখাল। সিনেমায় নামতে চাইলে মেয়েমানুষের আর যাই থাক সতীত্ব থাকে না।' বউদি বলল।
'তুমি সেটা জানলে কী করে?'
'শুনেছি ই। বইতে পড়েছি।' বউদি গম্ভীর মুখে বলল।
'সুবর্ণার জীবনেও যে তাই হয়েছে একথা কে বলল তোমাকে?'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'কে আর বলবে? বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে জিজ্ঞাসা কোরো, সেই বলবে। ঘিয়ের কাছে আগুন
রাখলে যা হয় তাই হয়েছে।'
'তোমরা সবসময় জীবনের খারাপ দিকটার কথা ভাব কেন বলো তো?'
'যেখানে খারাপটাই বেশি সেখানে ভাল ভাবব কী করে?' বউদি বলল, 'বলুন মা, ব্যাপারটা সত্যি বলেই তো টিভিতে নাটক করে দেখাল। মিথ্যে গল্প নিশ্চয়ই দেখাচ্ছে না।' মাকে সাক্ষী করতে
চাইল বউদি। মা বলল, 'অতশত বুঝি না বাবা। সিরিয়াল দেখছি, একটা গল্প থাকছে ব্যাস। লেখকরা যা লেখে তা কি সব সত্যি কথা নাকি।'
'ওমা। সত্যি না হলে পাঠকরা বিশ্বাস করবে কেন?'
'বিশ্বাস করানোই তো লেখকদের কায়দা। যে লেখক বারবনিতাদের নিয়ে গল্প লিখবেন তিনি কি ওদের পাড়ায় গিয়ে পড়ে থাকবেন? শরৎচন্দ্র চরিত্রহীন লিখছেন বলে তাকেও কি চরিত্রহীন হতে হয়েছে।' তিতির বলল।
'আমি অতশত জানি না।' বউদি বলল।
'তাই? আচ্ছা, এখন যদি অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ এ বাড়িতে আসে তা হলে তুমি কি খুশি হয়ে আপ্যায়ন করবে না?' তিতির উঠে দাঁড়াল।