একজন পেটুক মানুষের গল্প
Copyright Free Image Source:Pixabay
আজ একজন খাইয়ে মানুষের গল্প করবো আপনাদের কাছে । জীবনে পেটুক মানুষ অনেক দেখেছি, আমি নিজেও একজন পেটুক মানুষ কিন্তু, আজ যাঁর কথা বলতে যাচ্ছি এঁনার মতো পেটুক মানুষ আমার লাইফে আর দু'টি দেখিনি । ব্যক্তিটি আবার আমাদের আত্মীয় স্বজনের মধ্যেই পড়ে । আজকে যে কথাগুলি বলতে যাচ্ছি তার সবকিছুই একদম দিনের আলোর মতো সত্যি কথা, এক বিন্দুও বাড়িয়ে বলা নেই কোথাও ।
বেশ ক'বছর আগের কথা । তখন আমি উচ্চমাধ্যমিকে পড়ি । এমন সময় আমার বাবার ছোট এক বোনের মেয়ে অর্থাৎ, আমার আপন পিসতুতো বোনের বিয়ে হয়ে গেলো । এই বোনের স্বামীই আমার আজকের কথামালার নায়ক । আজ্ঞে হ্যাঁ, ইনিই তিনি । আমার জীবনের দেখা সেরা খাইয়ে মানুষ ।
বিয়ের পর পরই তাঁর খাওয়ার বহরের কিঞ্চিৎ নমুনা দেখেই আমার সেই যে মাথা ঘোরা শুরু হয়েছিল, সেই যে মুগ্ধতার আবেশ লেগেছিলো আজও তা পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান । বিয়ের দিন প্রথম টের পেলুম পেটুক কাকে বলে । বিয়ে ছিল গোধূলি লগ্নে । তাই সন্ধ্যার কিছু পরেই বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে গেলো । রাত ন'টার দিকে নতুন জামাইকে সাথে নিয়ে আমরা খেতে বসলুম । এরপরেই তাজ্জব বনে গেলুম তাঁর খাওয়ার বহর দেখে ।
সে কী খাওয়া ! বাপরে বাপ্ !! বিয়ের মেন্যুতে ছিল সব বাঙালি খাবার, গ্রামের দিকে যেমন হয়ে থাকে । ভাত, মুড়িঘন্ট, মাছের কালিয়া, খাসির মাংস, রাজহাঁসের মাংস, চাটনি, দই-মিষ্টি । তো উনি প্রথমেই মুড়িঘন্ট নিলেন ছয় বার । সাথে দুই বার ভাত । কি মাথা ঘুরছে ? আরো আছে । মাছ ১২ পিস্ । খাসির পিস্ আর গুনিনি, তবে তিরিশ-বত্রিশ পিসের কম হবে না । না, রাজঁহাসও ফেলেননি । তবে এই সময়টায় খাওয়ার পরিমান কমে এসেছিলো । মাত্র ১০-১২ পিস্ রাজহাঁসের মাংস খেয়ে খাওয়া ফিনিশ করলেন । না না, চাটনি, দই-মিষ্টি এসব ফালতু খাবার দিয়ে ওঁনার বহুমূল্যবান পেট ভর্তি করেননি ।
এবার আসি দ্বিতীয় ঘটনায় । আমার দাদার (বড়ো ভাই) বৌভাতের দিনের খাওয়ায় কি হলো সেটা শুনলে মাথা ঘুরে যাবে । এদিনও আমি তাঁর পাশেই ছিলুম । এদিন উনি মাত্র ৪৯ পিস্ খাসি খেয়েছিলেন । আর ১ পিস্ খেলেই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হতো । কিন্তু, তার আগে বিঘৎ খানেক লম্বা এক একটা মাছের পিস্ একটানা খেয়ে গিয়েছিলেন ১৮ পিস্ অব্দি । চোখ বুজে একদম নিবিষ্ট চিত্তে । খাসি খেয়ে শেষে চিকেনও ছাড়েননি উনি । তবে পিস্ আর গোনার সাহসে কুলোয়নি আমার ।
এবার আসি তৃতীয় ঘটনায় । সেবার আমি বাড়িতে একাই ছিলুম । কোনো কারণে বাড়ির সবাই গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলো । আমি, আমার ভাই আর আমার এক ভাইপো ছিলাম শুধু বাড়িতে । তো, বিকেলে বাজারে গিয়ে কি মনে করে তিনটে বড় দেখে তাগড়াই সাইজের মোরগ কিনলুম । কেটেকুটে মোট মাংসের পরিমাণ হলো প্রায় পাঁচ কিলো । বাড়িতে তো আমরা সর্বসাকুল্যে ৩ জন । এতো মাংস খাবো কি করে । এখানে বলে রাখি, আমরা মাংস ফ্রিজারে রেখে খাই না ।
তাই আমি আমার এক কাজিন-কে ফোন করে রাতে খেতে বললুম । এরপরে, ভাবলুম আমার ওই ভগ্নিপতিকেও ডাকি রাতে খেতে । তাহলে মোট পাঁচজন হয়ে যাবো । যে কথা সেই কাজ । রাতে খেতে বললুম তাঁকে । পাঁচ কিলো মাংস । কত আর খাবে ? রাতে রান্না হলো ভাত, ডিম্ ভাজা আর মাংস । পুরো পাঁচ কিলো মাংসের সবটাই রান্না হলো । রান্না করলো আমার সেই কাজিন আর আমার ভাইপো ।
খাওয়ার সময় আমরা পাঁচজনে বসলুম । শুধু মাংস আর ভাত । তাই বেশিক্ষন লাগলো না খেতে । আমরা সবাই খেয়ে উঠে গেলুম শুধু আমার ভগ্নিপতি তখনো চালাচ্ছেন । তাঁকে খেতে দিয়ে আমরা টিভি দেখতে চলে গেলুম । প্রায় ঘন্টা খানেক পরে এসে তিনি জানালেন তাঁর খাওয়া শেষ, এখন বাড়ি যাচ্ছেন । আমরা ঘাড় কাত করে সম্মতি জানালাম । এর প্রায় ঘন্টা খানেক পরে আমার ভাইপো ডাইনিং রুমে গেলো বেঁচে যাওয়া ভাত আর মাংস ফ্রিজে তুলে রাখতে । একটু পরেই তার ঘর ফাটানো চিৎকার শুনে দৌড়ে ডাইনিং রুমে গেলাম সবাই । গিয়ে কি দেখলাম ? মাংসের বিরাট গামলা যাতে পুরো পাঁচ কিলো মাংস রান্না করে রাখা ছিল, যার কিছু অংশ দিয়ে সকালে আমরা ভাত খাবো বলে ভেবেছিলুম তার মধ্যে এক টুকরো আলু আর ফ্রেশ চার টুকরো মাংস পড়ে রয়েছে । আমি বললুম গভীরস্বরে - "হুঁ, মাথা পিছু এক টুকরো করেই আছে" ।
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)
তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪
টাস্ক ৫৩১ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : be3b0c603d4635e28c785e628c2752c56d012428373e3a3d686b59ac35084625
টাস্ক ৫৩১ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাইরে ভাই 😂🤣😂🤣🙆♂️🙆♂️🙆♂️!! এটা কি শোনাইলেন দাদা। আমার তো পুরা মাথা ঘুরে যাচ্ছে শোনে। কঠিন লেভেলের খাদক উনি 😂😂😂। উনি এখনও গিনেস বুক ওয়ার্ল্ডে নাম লেখাননি কেন 😂। শেষে যে এক পিস করে পেলেন এটাই তো অনেক 😂। উনাকে একদিন দাওয়াত দিতে হবে আমার বাড়িতে। 🙆♂️😂।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.
Congratulations, your post has been upvoted by @upex with a 41.11% upvote. We invite you to continue producing quality content and join our Discord community here. Keep up the good work! #upex
Hahaha 😃, this is a great post Dada.
This post reminds of my immediate younger brother, he is a gluttonous person too.
Hw loves eating and eats more than everybody in the family.
He eats almost 5x of what each of us eats 😃😃
Maybe one day I'll tell of his story too.
Thanks for sharing this post with us Dada ❤️❤️❤️
অবাক হয়ে গেলাম পোস্ট পড়ে।এতো খেও খেতে পারে!আমি ভাবছি উনাকে নিয়ে বুফে তে গেলে কি হবে!সব তো একাই শেষ করে দেবে।তবে পড়ে বেশ মজা পেলাম।
হা হা হা 😄
দাদা এই পেটুক মানুষের গল্প শুনে আমার মাথা রিতীমত ঘুরছে 🤓
দাদা এটুকু পেটে কিভাবে এতো খাবার আঁটে আমি তো সেই চিন্তা করছি। সবথেকে বেশি হাসি পেয়েছে শেষের অংশটা পড়ে। সত্যিই তিনি খেতে পারেন বটে 🤪
একটা মানুষ এতো কেমনে খাই???
পুরোটা পড়ে সত্যি খুব অবাক হলাম। মজাও পেয়েছি খুব। পোস্টটি পড়ে বুঝলাম তার মুখের রুচির পাশাপাশি পেটেও প্রচুর জায়গা।
দাদা আপনারা সকালে খাবেন বলেই,উনি চার টুকরা মাংস রেখেছিলো 😂। এমন পেটুকের গল্প তো কখনো শুনিনি। একজন মানুষ এতো খায় কিভাবে সেটাই তো ভেবে পাচ্ছি না। দাদা উনাকে ব্যুফে রেস্টুরেন্টে খেতে পাঠাবেন কয়েকদিন পরপর। আমার মনে হয় উনাকে দ্বিতীয়বার কোনো ব্যুফে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে দিবে না। কারণ উনি বারবার গেলে,এমনিতেই লস হবে এবং একটা সময় রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে🤣। আপনার শেয়ার করা তিনটি ঘটনা পড়ে হাসতে হাসতে আমার পেট ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। যাইহোক উনি যেনো আরও বেশি বেশি খেতে পারেন,সেই কামনা করছি। এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
দাদা হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে গেল।🤩 গল্পের শেষটা দারুন ছিল 5 কেজি মুরগির মাংস রান্না করেছেন। সেই মাংস পাঁচজন লোক আপনারা যাইহোক খেয়েছেন । কিন্তু আপনার ভগ্নিপতি এত বড় খাতক আপনারা টিভির রুমে গিয়েছেন। ঐদিকে তিনি গোপনে গোপনে সব মাংস ভাত সাভার করে দিয়েছেন ।সত্যিই এইরকম পেটুক মানুষ আমিও দুই একজনকে দেখেছি অনেক খাইতে পারে। তাদের সাথে এরকম খাওয়ার মুহূর্তটা উপভোগ করতে ভালোই লাগে।অনেক ভালো লাগলো গল্পটি দাদা।
একটা মানুষ এতো কেমনে খাই???
পুরোটা পড়ে সত্যি খুব অবাক হলাম। মজাও পেয়েছি খুব। পোস্টটি পড়ে বুঝলাম তার মুখের রুচির পাশাপাশি পেটেও প্রচুর জায়গা।