গ্রীষ্মকালে শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখার কিছু টিপসsteemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

coconut-water-6081833_1920.jpg

copyright free image source : PixaBay


এখন গ্রীষ্মকাল । আমাদের নাতিশীতোষ্ণ দেশ এখন আর নাতিশীতোষ্ণ দেশ নেই, এখন শুধুই একে গ্রীষ্মপ্রধান দেশ হিসেবেই অভিহিত করা যায় । বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে আমাদের উপমহাদেশীয় অঞ্চলের দেশ সমূহে । ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় এখন গ্রীষ্মকালে ভয়াবহ আকারে গরম পড়ে ।

বিগত বছরগুলির তুলনায় এখন আরো বেশি গরম পড়ছে, হয়তো ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে । বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এই গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন । আর এর মূলে রয়েছে যথেচ্ছ হারে গাছপালা ও বনজঙ্গল সাফ করা । যতবেশি গাছ কাটা পড়বে তত বেশি পৃথিবী উষ্ণ হবে ।

গ্রীষ্মকালে পা দেওয়ার পূর্বেই চৈত্রের শেষের দিকে এবার আমাদের কোলকাতায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী ছুঁয়েছিল । আর বৈশাখের একদম শুরুর দিকে ৪৪ ডিগ্রী ছড়িয়েছিলো । মরুভূমির চাইতেও রোডের তেজ আর বেশি খর ছিল । এই প্রচন্ড গরমে চারিদিকে বেশ কয়েকদিন ধরে লু বইছিলো । ফলশ্রুতিতে পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল হিট স্ট্রোকে ।

এই প্রচন্ড গ্রীষ্মের দাবদাহে আমাদের শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে । এই গরমে তাই সুস্থ থাকাটাই চ্যালেঞ্জ । যদিও আমরা সবাই কম বেশি গ্রীষ্মকালীন সময়ে শরীর সুস্থ রাখার টিপস জানি, তবুও আজ আমি আমার কিছু নিজস্ব মতামত ও টিপস শেয়ার করলাম আজ । আশা করি আপনাদের কাজে লাগতে পারবে ।


০১. যাঁদের প্রতিদিন সকালে হাঁটাহাঁটির অভ্যাস আছে তাঁরা এই কাজটি গরমের দিনে সূর্য ওঠার অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগের থেকে স্টার্ট করে সূর্য ওঠার ১৫-২০ মিনিট পর অব্দি কন্টিনিউ করুন । তারপরে আর ভুলেও কোনো জগিং বা মর্নি ওয়াক অথবা কোনো এক্সারসাইজ করতে যাবেন না ।

০২. তীব্র গরমে খুব কষ্ট হলেও মর্নিং ওয়াক, জগিং বা এক্সারসাইজ একেবারে ছেড়ে দেবেন না । বরং সূর্য ওঠার একটু আগে এবং সন্ধ্যার প্রাক্কালে করুন । তবে, অবশ্যই সাথে করে ওয়াটার বটল নিতে ভুলবেন না ।

০৩. এই গরমে শরীর হাইড্রেট রাখা ভালো থাকার একমাত্র কারণ । তাই বেশি বেশি করে জল পান করুন । একবারে সর্বোচ্চ ২ গ্লাস জল পান করুন । কিন্তু, দিনের বেলায় ঘন্টায় একবার অন্তত জল পান করবেন মাস্ট ।

০৪. দিনে অন্তত দুই গ্লাস লেবু, নুনের শরবত করে খান । আমরা গরমে প্রচুর ঘামি । এই ঘামের সাথে শরীর থেকে নুনও বেরিয়ে যায় প্রচুর । ফলে নুন সংকট দেখা দিতে পারে পেশীতে । ফলশ্রুতিতে পেশী ক্র্যাম্প হয়ে যেতে পারে ।

০৫. সকাল দশটার পর যদি পায়ে হেঁটে বা পাবলিক যানে বাড়ির বাইরে কোথাও যান তবে সঙ্গে করে ছাতা নেবেন মাস্ট । ভুল যেন না হয় । প্রয়োজনে একটু সানস্ক্রিনও মেখে নিতে পারেন ।

০৬. গরম কালে রাস্তার ধারের কোনো ফাস্ট ফুড ভুলেও ছোঁবেন না । একই সাথে লোকাল চায়ের দোকানের চা, রাস্তার ধারের কাটা ফল এবং খোলা রাস্তার ওপরে বিক্রি করা কোনো শরবত খাবেন না । গরমকালে নানান জীবাণু আক্রমণের সব চাইতে সহজ মাধ্যমগুলো হলো ওগুলোই । টাইফয়েড ও কলেরার জীবাণুতে এই সময় বেশি সংক্রমণ হয় ।

০৭. গরমে বেশি করে তরল খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন বাড়িতে । শরবত, স্যুপ, স্ট্যু এসবের পাশাপাশি ডাল, ভাত, মাছের ঝোল খাবেন । খাবার পাতে অবশ্যই লেবু রাখবেন । এই সময়টাতে মাংস ও গুরুপাক রান্না যথাসাধ্য কম খাবেন । খুব ভোরে ব্রেকফাস্ট করবেন । দুপুরে প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি সহযোগে ভাত, ডাল ও মাছের ঝোল খাবেন । ভাজাভুজি একদম কম খাবেন । রাতে একদম হালকা খাবার খাবেন । রাতে ভাত না খেলেই ভালো, তারপরেও যদি খান তো একদমই কম ভাত খাবেন ।

০৮. গ্রীষ্মকালীন ফলগুলি প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন । বিশেষ করে ডাব, তরমুজ, বাঙ্গি, ফুটি, বিভিন্ন মেলন জাতীয় ফ্রুট, লিচু, কলা, পেঁপে, আম (কাঁচা ও পাকা উভয়ই), কাঁঠাল, বেল, শসা, জাম এবং জামরুল ।

০৯. ডাবের জল ডেইলি এক গ্লাস করে পান করবেন । এতে শরীর সব চাইতে বেশি সতেজ থাকে । আমিও গরমকালে ডেইলি একটা করে ডাবের জল পান করি । এর সাথে চেষ্টা করবেন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি খেতে । গরমকালে প্রচুর পরিমাণে পাতি ও গন্ধরাজ লেবু ওঠে বাজারে । এক গ্লাস জলে একটি পাতি লেবুর রস চিপে বের করে তার সাথে এক চামচ চিনি ও এক চিমটি নুন মিশিয়ে ওপরে গন্ধরাজ লেবুর রস হালকা করে দিয়ে শরবত বানিয়ে খাবেন । দিনে অন্তত দুই গ্লাস ।

১০. খুব ভোরে স্নান করার অভ্যাস করুন এ দুটি মাস । প্রতিদিন বিকেলে গা ধুয়ে ফেলবেন তবে মাথা ভেজাবেন না । গায়ে ঘাম থাকলে আগে ফ্যান চালিয়ে ঘাম শুকিয়ে নেবেন । এরপরে স্নান করবেন ।


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫১০ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 510 trx)


তারিখ : ০২ মে ২০২৩

টাস্ক ২৫৩ : ৫১০ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫১০ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 0ad7656c2330d56dbb9da07a553d6ccb948324e347e8aa0c290aee9abc85f342

টাস্ক ২৫৩ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

প্রিয় দাদা, অনেক সুন্দর এবং আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত কল্যাণমূলক একটি পোষ্ট শেয়ার করেছেন আপনি।গ্রীষ্মকালে শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখার জন্য আপনার দেওয়া টিপস গুলো পড়ে সত্যি আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আপনার দেওয়া টিপস গুলো অনুসরণ করতে পারলে গ্রীষ্মকালে আমাদের শরীরকে সতেজ রাখতে সক্ষম হবো। অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

দাদা আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। সত্যি বলেছেন দাদা আমাদের নাতিশীতোষ্ণ দেশ এখন আর নাতিশীতোষ্ণ দেশ নেই, এখন শুধুই গ্রীষ্মপ্রধান দেশ।আমাদের সুস্থ থাকার জন্য এই সকল টিপস ফলো করলে কিছুটা হলেও সুস্থ থাকা যাবে।আসলে দাদা বর্তমান বাচ্চারা মাংস ছাড়া কিছুই খেতে চায় না, এই কারণে বাচ্চারা গরমে বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

খুব ভালো লাগলো দাদা আপনার টিপসগুলো পড়ে।আমি এর সবগুলোই মোটামুটি করার চেষ্টা করি। আর করিও।আল্লাহ অনেক ভালো ও রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ। বাইরের খাবার না পারতে ছুঁয়ে ও দেখিনা।শুধু বাইরে গেলে ছাতাটা নিই না।বিরক্ত লাগে। তবে বৃষ্টি হলে বাধ্য হয়েই নিয়ে বের হই।সুন্দর কিছু টিপস দিলেন খুব ভালো লেগেছে।আমাদের সকলের এসব টিপস মেনে চলা উচিত অবশ্যই ভালো থাকতে চাইলে পরে।অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

ঠিক বলছেন দাদা, দিন দিন গরমের মাত্রা এত বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে আমার মনে হচ্ছে না আর এই তাপমাত্রা কমে যাবে দিন দিন আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে। আপনি গরমের দিনে ভালো থাকার জন্য অনেক গুলো টিপস দিলেন। টিপস গুলো পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। আসলেই এগুলো মেনে চলা আমাদের সবার জন্য উচিত তাহলে আমরা ভালো থাকতে পারবো।

 2 years ago 

দাদা খুবই উপকারী ও শিক্ষনীয় পোস্ট শেয়ার করেছেন। এবার গ্রীষ্মকালের শুরুতে আমাদের দেশেও প্রচন্ড গরম ছিল। এখন অবশ্য কিছু দিন ধরে একটু একটু বৃষ্টি হয়। তবে দিনের বেলা প্রচন্ড গরম আর রাতে একটু ঠান্ডা অনুভব হয়। আপনি এই গরমের জন্য খুবই উপকারী টিপস দিয়েছেন। আমার মনে হয় আমরা প্রতিদিন এই নিয়ম মেনে চললে এত গরমের মধ্যেও সুস্থ থাকা সম্ভব। আপনার নিয়ম গুলো অবশ্যই মেনে চলার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ দাদা গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

দাদা ঠিক বলেছেন যে এখন আবহাওয়া প্রতিনিয়ত গরম ৷ তবে কয়েক বছর আগে এরকম ছিল না ৷ বাংলাদেশের কথাই বলি ছয় ৠতু আর নেই বললেই চলে ৷
যা হোক এই গ্রীষ্মকালে শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখার জন্য অনেক কিছু টিপস শেয়ার করেছেন ৷ ভালো লাগলো দেখে ৷

 2 years ago 

গরমের সময় কি কি করা প্রয়োজন আর কি কি বর্জন করা প্রয়োজন এ সম্পর্কিত অনেক ব্লগ পড়েছি দাদা এর আগে। কিন্তু আপনার ব্লগ অনেক বেশি ইনফরমেটিভ মনে হলো।

এই প্রচন্ড গরমে ভালোই কষ্ট করেছি কিছুদিন। আমার সমস্যা হলো পানি খেতে ইচ্ছে করে না বারবার। এটাই হলো আমার মেইন সমস্যা।

 2 years ago 

দাদা আপনি তো দেখছি বেশ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানতে পারলাম। আসলে সেভাবে হয়তো নিয়মমাফিক চলা হয় না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত। অনেক ভালো লাগলো দাদা আপনার লেখাগুলো পড়ে।

 2 years ago 

বর্তমানে প্রচন্ড পরিমাণ গরম পরছে। আর এই গরমে মানুষ এক রকম হাপিয়ে উঠেছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের কিছু কিছু জেলায় যে পরিমাণ গাছ কেটে উজাড় করে ফেলেছে তাতে পুকুর রৌদ্র পড়ারই কথা। দাদা এই গরমের জন্য আপনি খুবই মহামূল্যবান কিছু টিপস দিয়েছেন। প্রতিটা মানুষের এই টিপস গুলো মেনে চলা উচিত। গরমের জন্য প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খাওয়া আমাদের খুবই প্রয়োজন। তাই আপনার টেক্স গুলো যদি সবাই মেনে চলে তাহলে সবাই খুব উপকৃত হবে ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।