বিরিয়ানির উৎপত্তি।।০৯ এপ্রিল ২০২৪
বিরিয়ানি হলো চাল, মশলা এবং মাংসের সুগন্ধযুক্ত মিশ্রণে তৈরি একটি অসাধারন মোঘলাই খাবার।এই খাবারের যেখানে শিকড় রয়েছে তা ইতিহাসের অনেক গভীরে প্রবেশ করে আছে।এই খাবার রন্ধনসম্পর্কীয় টেপেস্ট্রিতে সংস্কৃতি এবং রন্ধনপ্রণালীকে এর স্বাদের মতো সমৃদ্ধ এবং জটিল করে।এই প্রিয় খাবারের যাত্রাটি সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে যেমন তাৎপর্যপূর্ণ ও গল্পের মতো নাটকীয় একটি রন্ধনসম্পর্কীয় উদ্ভাবন।বহু শতাব্দী এবং মহাদেশ জুড়ে এই খাবার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
বিরিয়ানির সুনির্দিষ্ট উৎস নিয়ে রন্ধনসম্পর্কীয় ইতিহাসবিদদের মধ্যে অনেক বিতর্ক রয়েছে।বিভিন্ন বিষয়, নানান তত্ত্বগুলি বিভিন্ন সময়ের সাথে ব্যাখ্যা করে কিছু গোপন তথ্য আবিষ্কার করা গেছে।একটি জনপ্রিয় আখ্যান থেকে জানা যায় যে ১৬ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সম্রাটদের রান্নাঘরে বিরিয়ানি তৈরি করার সূত্রপাত হয়েছিল।এটি পার্সিয়ান পিলাফ (বা পিলাউ) দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে মনে করা হয়।এই খাবার মুঘলদের দ্বারা আনা ভারতীয় খাবারের উপর পারস্যের প্রভাবের একটি জ্বলন্ত প্রমাণ। "বিরিয়ানি" শব্দটি নিজেই ফার্সি শব্দ "বিরিয়ান" থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়,যার অর্থ 'রান্না করার আগে ভাজা', এটি সুগন্ধযুক্ত মশলা এবং মাংসের সাথে মেশানোর আগে ঘি (ক্লারিফাইকৃত মাখন) এ ভাজার বিশেষ পদ্ধতিকে বোঝায়।
আরেকটি তত্ত্বে বিরিয়ানির উৎপত্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় যে এটি দক্ষিণ ভারত থেকে এসেছে।যে আরব ব্যবসায়ীরা ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবসার জন্য আসতেন তারাই এই খাবারটি প্রবর্তন করেন মালাবার উপকূলে।প্রাচীন তামিল গ্রন্থে বিরিয়ানির অনুরূপ ভাত-ভিত্তিক খাবারের উল্লেখ আছে যা প্রস্তাব করে যে মুঘল যুগের অনেক আগে থেকেই এই খাবারের একটি রূপ ভারতে বিদ্যমান ছিল।
এর প্রকৃত উৎপত্তি সম্পর্কে এখনো কোনো অকাট্য প্রমাণ নেই।তবে এটাও অনস্বীকার্য যে বিরিয়ানির বিবর্তন যেহেতু এটি ভারতীয় উপমহাদেশ এবং তার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে তাই ভারতীয় মহাদেশ ই বিরিয়ানির জনক।প্রতিটি অঞ্চল স্থানীয় স্বাদ এবং উপাদানগুলির সাথে নিজেকে তুলে ধরে।উদাহরণস্বরূপ, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, বাসমতি চাল এবং ছাগলের মাংস ব্যবহার করার জন্য বিখ্যাত।এবং এটা মশলার একটি সূক্ষ্ম মিশ্রণে ম্যারিনেট করা হয় এবং তারপর উত্তম রূপে রান্না করা হয়।অন্যদিকে কলকাতার বিরিয়ানির মধ্যে রয়েছে আলু এবং ডিম,এটি একটি অনন্য খাবার যা মাংসের ঐতিহাসিক একটা পদ কে প্রতিনিধিত্ব করে।
ভারতীয় উপমহাদেশের সীমানায় বিরিয়ানির যাত্রা থেমে থাকেনি।লোকেরা ভ্রমণ এবং স্থানান্তরিত হওয়ার সাথে সাথে তারা তাদের সাথে বিরিয়ানি নিয়ে গেছে নতুন দেশ এবং সংস্কৃতির কাছে মধ্যপ্রাচ্যে এটি ভোজের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে যা প্রায়শই জাফরান এবং বাদাম দিয়ে প্রস্তুত করা হয়।
আজ বিরিয়ানি শুধু একটি খাবারের থালা নয় বরং একটি বৈশ্বিক ঘটনা যা সাংস্কৃতিক বিনিময় ও অভিযোজনের সারমর্মকে মূর্ত করে।এর আঞ্চলিক রূপের বিস্তৃত বিন্যাস খাবার টির মূল পরিচয় বজায় রেখে স্থানীয় রন্ধনসম্পর্কীয় ঐতিহ্যের সাথে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে প্রচুর পরিচয় করিয়ে দেয়।হায়দ্রাবাদের সুগন্ধযুক্ত বিরিয়ানি থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের সুস্বাদু সংস্করণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মশলাদার অভিযোজন, বিরিয়ানিকে সারা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরেছে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord
একদমই সঠিক কথা বলেছেন দাদা, ভারতীয় মহাদেশই বিরিয়ানির জনক। এটা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। বিনিয়ানি এখন দারুণ পছন্দের একটা আইটেম পুরো বাঙালি জাতির। অনেক ধন্যবাদ স্বাদের বিষয়টি নিয়ে দারুণ পোষ্ট করার জন্য।
বিরিয়ানির উৎপত্তি নিয়ে এত গোপন রহস্য রয়েছে তা আজই তোমার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম দাদা।সারা বিশ্বে বিরিয়ানির বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে,ভারত যে খাবারের জনপ্রিয়তার দিক থেকেও সবার ঊর্ধে তা আবারো প্রমানিত।জাফরানের গন্ধে ম -ম করে বিরিয়ানি।ধন্যবাদ দাদা,বিরিয়ানি সম্পর্কে নতুন ধারণা দেওয়ার জন্য।
বাহ্! বরাবরের মতো আজকেও চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দাদা। বিরিয়ানি পছন্দ করে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। আমার তো বিরিয়ানি ভীষণ পছন্দ। তবে ভারতীয় মহাদেশ যে বিরিয়ানির জনক, এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। বিরিয়ানির উৎপত্তি সম্পর্কে জানতে পেরে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি জানতাম বিরিয়ানি মোঘলদের খাবার ছিল। অর্থাৎ মোঘল আমলে এই খাবার তৈরি শুরু হয় । কিন্তু এর পেছনে এই সুন্দর সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে সেটা জানতাম না। বিশেষ করে ফার্সি শব্দ বিরিয়ানি এর যে অর্থ এটা আমার জানাই ছিল না। আপনার পোস্ট থেকে জানলাম। তবে বাঙালির মশলা আবেগ ভালোবাসা সংযোজন করার পরে বিরিয়ানি একটা মাএায় চলে যায়। দারুণ ছিল পোস্ট টা দাদা।
আসলে প্রতিটি খাবারের ব্যাপারটাই এমন।উত্তপত্তি স্থল টার শিকড় যে কতোটা বিস্তৃত তা ভাবতেও গেলেও মাথা চক্কর দিয়ে উঠে।কিন্তু, কালের বিবর্তন এ কতো দিকেই না ছড়িয়ে পরেছে।এখন তো বিরিয়ানি সবার একটা ইমোশন এর জায়গা,অন্তত আমার তো বটে।
দাদা এতো দিন শুধু বিরিয়ানি খেয়েছি ৷ কিন্তু এর যে উৎপত্তি সেটা আজ প্রথম জানলাম ৷সবচেয়ে ভালো লাগলো যেটা প্রিয় একটি খাবার বিরিয়ানি অথচ তার উৎপত্তি কথা থেকে সেটা কে বা জানে ৷ ভালো লাগলো দাদা বিরিয়ানি বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পেরে ৷
এই বিরিয়ানীরও দেখছি ইতিহাস আছে একটা 🙆♂️। আজকে আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম দাদা। বিরিয়ানী তাহলে অনেল আগে থেকে প্রসিদ্ধ একটি খাবার। পালাউ দ্বারা অনুপ্রাণিত। তবে ভারত উপমহাদেশ যে বিরিয়ানীর জনক এটা বলতেই হয়। সেখান থেকেই সর্বত্র জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিরিয়ানী।
বিরিয়ানি সম্পর্কে দারুন কিছু তথ্য পেলাম ভাই, যা পূর্বে আমার জানা ছিল না। দারুন উপভোগ করলাম ব্লগটি।
সারা জীবন তো বিরিয়ানি খেয়ে গেলাম, তবে বিরিয়ানির ইতিহাস যে এত তাৎপর্যপূর্ণ সেটা কখনো হিসাব করে দেখিনি দাদা। ১৬ শতকে ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সম্রাটদের রান্নাঘরে যে বিরিয়ানি তৈরি করার সূত্রপাত হয়েছিল, এটা আমি নিজেও কিছুটা জানতাম। তবে দক্ষিণ ভারত থেকে যে বিরিয়ানির উৎপত্তি হয়েছে, এটা আমি আজকেই প্রথম জানলাম। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, ভারতীয় উপমহাদেশ থেকেই বিরিয়ানির উৎপত্তি। বেশ তথ্যবহুল একটা পোস্ট ছিল দাদা। ভালো লাগলো নতুন কিছু জানতে পেরে।
!thumbup