ফিরে দেখা : "পুরোনো কিছু ফোটোগ্রাফি" - পর্ব ০২steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

গত পর্বেই উল্লেখ করেছিলুম আমার ফোটোগ্রাফি শখের কথা । এই শখটি আমার খুব ছোটবেলা থেকে মনের মধ্যে লালিত ছিল । ছবি তোলার প্রতি আমার প্রথম আগ্রহ জন্মে যখন আমার বয়স পাঁচ কি ছয় । ক্লাস টু তে উঠে একবার আমি আর আমার ছোট ভাইয়ের একটি রঙিন ফোটো তুলেছিলাম গ্রামের বাড়িতে ।

আমার এক মামাতো দাদা একদিন সকাল দশটার দিকে আমাদের বাড়িতে হন্তদন্ত হয়ে এসে আমার ভাই আর আমাকে বগলদাবা করে খুব তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেলো গ্রামেরই আরেকটা ছোট পাড়ার দিকে । পাড়ার নাম তেলিপাড়া । তো সেখানে আমাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আমরা উপস্থিত হতেই দেখলুম গ্রূপ ফোটো তোলার তোড়জোড় চলছে ।

ফোটোগ্রাফার তার ক্যামেরার ব্যাটারি চেঞ্জ করছে । ফ্ল্যাশ বাল্ব জ্বেলে দেখছে সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি না । এক পাশে টুলের উপর রাখা দু'তিনটি এলুমিনিয়ামের কৌটো, তাতে ফিল্ম রোল করে রাখা আছে । উঠোনের একটা কোনে ছায়াময় একটা জায়গায় পিছনে কাপড় টাঙিয়ে কয়েকটা ফুলের টব সামনে রেখে পেছনে সারি দিয়ে চেয়ার পাতা । চেয়ারে বসবে বয়স্করা আর ছোটরা, পিছনে দাঁড়িয়ে থাকবে বাকিরা ।

তো আমার সেই মামাতো দাদা ক্যামেরাম্যানের কানেকানে গিয়ে কি জানি বললো । ক্যামেরাম্যান মাথা নাড়লো দু'বার । ফোটো তোলা শুরু হলো । আমাদের দু'ভাইকে অনেকবার বললো তাদের সাথে গ্রূপ ফোটো তোলার জন্য । আমার সেই মামাতো দাদা রাজি হলো না । বললো- "আগে তোমরা ফোটো উঠে নাও, পরে আমি ওদের ফোটো তুলে দেবো ।"

তো, ওদের ফোটো তোলা শেষ হলে আমাদের দুই ভাইকে সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে দিলো আমার সেই মামাতো দাদা । ক্যামেরাম্যানের কাছ থেকে ক্যামেরা নিয়ে আমাদের দু'ভাইয়ের তিনটে ফোটো তুলে দিলো । আমাদের দু'ভাইয়ের সাজসজ্জা মারাত্মক ছিল । হাফ প্যান্ট পরা, খালি গা, খালি পা । আমার মাথায় আবার একটা লাল টুকটুকে গামছা পাগড়ির মতো করে জড়িয়ে দিলো । ছোটবেলায় আমি খুব ফর্সা ছিলাম, খালি গায়ে মাথায় পাগড়ি বেঁধে তাতে একটা ময়ূরের পালক গুঁজে হাতে একটা লাঠি দিলো । লাঠিটা যেনো বাঁশি । সেই ভাবে আমার একার দু'টো ছবি তুলে দিলো ।

প্রায় এক সপ্তাহ পরে সেই ছবির পজিটিভ প্রিন্ট হাতে পেলাম । ওয়াশ করেই অমনি খামে পুরে নিয়ে এসেছে আমার সেই দাদা একদম ডাইরেক্ট ডার্ক রুম থেকে । সেদিনই প্রথ জেনেছিলাম ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুললেই সাথে সাথে সেটা দেখা যায় না । ছবি ওঠে প্লাস্টিকের ফিল্মে । সেটাকে বলে নেগেটিভ । সেই নেগেটিভ ডার্করুমে ওয়াশ করে পাওয়া যায় পজিটিভ ছবি । সেটাই আসল জিনিস ।

এখনকার ডিজিটাল ফোটোগ্রাফির যুগে সেসব এখন অতীত । এখন ছবি তোলা যেমন সহজ সেটাকে প্রিন্ট করাও তেমনিই খুবই সোজা । আগেকার দিনে তেমন ছিল না ।

তো সেদিনের নিজের ছবি দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম । সেই থেকে ফোটোগ্রাফির ওপর একটা টান তৈরী হলো ধীরে ধীরে ।

আজকে আরো কিছু আমার তোলা পুরোনো ফোটোগ্রাফ শেয়ার করলাম আমার imgur একাউন্ট থেকে । ওখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার নিজের তোলা ফোটোগ্রাফ আছে ।


রথের মেলা থেকে তোলা, রসে ভরা মজাদার সুস্বাদু জিলিপির ফোটো ।

বৃদ্ধা চা-ওয়ালি ।

অপরাহ্ন বেলা । ছবিটি কিন্তু রঙিন, সাদা-কালো নয় ।

বালির ম্যাক্রো ফোটোগ্রাফি । বালির দানা গুলো বড় করে দেখলে এমনই দেখায় । এগুলো নদীর বালি ।

কেন্নো । এটি একটি আর্থোপড প্রাণী । টোকা দিলেই গুটিয়ে গোল চাকতির মতো হয়ে যায় ।

হাতির ঠিক মাথার ওপরের গাছপালার ফাঁক দিয়ে এক ঝলক সূর্যের রশ্মি এসে পড়েছে ।

কলকাতার সায়েন্স সিটির Maze, কেয়ারী করা গাছের সারি দিয়ে তৈরী । এটি একটি বেশ মজাদার গোলকধাঁধা ।

সাদা কালোয় সূর্যমুখী ।

হলুদাভ পাতার আড়ালে হলদে-সবুজ শসা ।

চিড়িয়াখানায় জিরাফ ।

ফসলের ক্ষেত ।

কলাগাছ ।

পৃথিবীর সব চাইতে বিশ্বস্ত প্রাণী ।


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫১০ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 510 trx)


তারিখ : ০৬ মে ২০২৩

টাস্ক ২৫৭ : ৫১০ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫১০ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 690a1413b931b0b81823095c5160fd34d67a9f8e5413602df65cc8ae848be48e

টাস্ক ২৫৭ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

Sort:  
 3 years ago 

দাদা ছোট বেলার মজাই সেটা হাফ প্যান্ট পরা,খালি গা আর খালি পায়ে ছবি তোলা। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনাকে শ্রী-কৃষ্ণের মতো করে সাজানো হয়েছিল। আপনার সেই ছবি আমরা দেখিনি তবে আপনার কথা শুনে কল্পনা করতে পারছি আপনাকে কতটা সুন্দর লেগেছিল। যাই হোক জিলাপি দেখে তো জিভে জল চলে আসল। সবগুলো ফটোগ্রাফি অসম্ভব সুন্দর হয়েছে তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে কলকাতার সায়েন্স সিটির Maze। এটা দেখতে গোলকধাঁধার মতোই লাগছে। imgur একাউন্টে যেহেতু সাড়ে তিন হাজার ফটোগ্রাফি রয়েছে তাহলে নিশ্চয়ই আমরা প্রতি

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 3 years ago 

দাদা আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল। আপনার ছোটবেলার কথা জানতে পারলাম। আপনার মামাতো ভাইয়ের তোলা লাল গামছা দিয়ে পাগড়ি পড়া ছবিটা সত্যি অসাধারণ ছিল মনে হচ্ছে। আপনারা দুই ভাইয়ের বেশ ভালোই পোশাক পরেছিলেন, খালি গা ও খালি পা। যাইহোক দাদা আপনার ছবি গুলো চমৎকার ছিল। বিশেষ করে বালি ও বিশ্বস্ত প্রাণীর ।

 3 years ago 

দাদা আজকে আপনিপুরোনো কিছু ফোটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। জিলাপির ছবিটি দেখেই তো জিভে পানি চলে এসেছে। বালুর কনা গুলো ছোট পাথরের মতো লাগতেছে। সব গুলো ফটোগ্রাফি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 years ago 

হাফ প্যান্ট পরা, খালি গা, খালি পা । আমার মাথায় আবার একটা লাল টুকটুকে গামছা পাগড়ির মতো করে জড়িয়ে দিলো ।

দাদা ছোটবেলার সেই ছবিটা আছে নাকি? আমার তো খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। আসলেই দাদা এখন ছবি তোলা যেমন সহজ,প্রিন্ট করা আরো সহজ। তবে আগে একেবারেই এমন ছিলো না। যাইহোক দাদা পুরনো ফটোগ্রাফি গুলো এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। প্রতিটি ফটোগ্রাফি জাস্ট অসাধারণ হয়েছে। জিলাপির ফটোগ্রাফি দেখে তো খেতে ইচ্ছে করছে দাদা। এতো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

হাফ প্যান্ট পরে খালি গা ও খালি পা নিয়ে প্রথমবার ছবি তোলার অভিজ্ঞতার কথা জেনে সত্যিই ভালো লাগলো দাদা। ছোটবেলার এরকম অভিজ্ঞতা আমাদের সবারই আছে। তবে এখনকার সময়ে খুব সহজেই ফটোগ্রাফি করা যায়। দাদা আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি দেখে অনেক ভালো লাগলো।

 3 years ago 

সেই নায়ক নায়ক ভাব দেখছি আপনার ছোট বেলা হতেই ছিলো দাদা, পাঁচ বছর বয়স হতেই আপনি পাকা খেলোয়াড় হা হা হা। হ্যা, অতীতের সেই স্মৃতিগুলো দারুণ ছিলো, পরীক্ষার ছুটিতে আমরা রিলসহ ক্যামেরা ভাড়া নিয়ে আসতাম তারপর বন্ধুরা মিলে নিজেদের মতো করে ফটো তুলতাম কিন্তু সমস্যা হতো নেগেটিভগুলো নিয়ে কে সেগুলো রাখবে? সেই স্মৃতিগুলো আজ অতীত, ফটো তোলার পরও অপেক্ষা করতাম সেগুলো কেমন হলো সেটা জানান জন্য।

আপনার ফটোগ্রাফি বরাবরই দারুণ হয়, সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

 3 years ago 

দাদা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম ছোটবেলা থেকেই আপনার ছবি তোলার আগ্রহটা অনেক বেশি ছিল। আগেকার দিনে ছবি প্লাস্টিকের ফিল্মে ওঠতো। সেই নেগেটিভ ডার্করুমে ওয়াশ করে পাওয়া যেতো পজিটিভ ছবি । আমাদেরও ছোটবেলায় এরকম অনেক ছবি তোলা হয়েছিল। দাদা আপনার অপরাহ্ন বেলার ছবিটি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আমি প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেক বেশি পছন্দ করি। আপনার imgur একাউন্ট থেকে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।